ভলিবল থেকে ক্রিকেটার এবাদত

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জয়ের নায়ক, পেসবোলার এবাদত হোসেন ছিলেন মূলত একজন ভলিবল খেলোয়াড়। সেখান থেকে হলেন ক্রিকেটার। আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে নানা প্রশ্ন করতে গিয়ে সে প্রসঙ্গটাই এনেছিলেন সঞ্চালক।

জবাবে এবাদত বলেছিলেন, ‘ভলিবল থেকে ক্রিকেটে আসার গল্পটা অনেক লম্বা। আমি ক্রিকেটটা উপভোগ করছি। বাংলাদেশ ও বিমানবাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করাটাও।’

মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার কাঁঠালতলী গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন এবাদত হোসেন। আগে পাড়ার মাঠে মাঝে মধ্যে ক্রিকেট খেলতেন। বাবা চাকরি করতেন বিজিবিতে। ২০১২ সালে যোগ দিলেন বিমান বাহিনীতে।

চাকরির পাশাপাশি চলছিল খেলাধুলাও, ভলিবল, হ্যান্ডবল, বাস্কেটবল এসব। এরপর বিমানবাহিনীর নিয়মিত ভলিবল খেলোয়াড় হয়ে যান।

কিন্তু ভলিবলেও নিজেকে বেধে রাখতে পারলেন না। কারণ তার মন পড়ে থাকে ক্রিকেট মাঠে। তার প্রতিষ্ঠান বিমানবাহিনীও এবাদতের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসে। তার খেলাধুলায় বাধা দেয় না। যার ফলশ্রুতিতে ধীরে ধীরে ক্রিকেটে নিজেকে জড়াতে শুরু করেন। ২০১৪ সালে সিটি ক্লাবের হয়ে ঢাকায় প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান এবাদত। ক্রিকেটে পরিচিত হতে থাকেন ধীরে ধীরে। ২ বছর পর সামনে চলে আসে সূবর্ণ সুযোগ।

২০১৬ সালে রবির সহযোগিতায় বিসিবি আয়োজন করে পেসার হান্টের। সারাদেশ থেকে প্রতিভাবান পেসারদের তুলে আনার লক্ষ্য নিয়ে এই পেসার হান্টের আয়োজন করে তারা। এখানেই নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করতে যান এবাদত হোসেন। ফরিদপুর গিয়ে পেসার হান্টে অংশ নেন। নির্বাচিত হওয়ার পর পরবর্তী ধাপে পরীক্ষা দিতে এবাদত চলে আসেন ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। এখানে পেসারদের নির্বাচিত করার কাজ ছিল পাকিস্তানের সাবেক পেসার আকিব জাবেদের। বলের গতি দিয়ে কোচদের সন্তুষ্ট করতে সক্ষম হন ।

প্রায় ৬৩ জনকে বাছাই করা হয় প্রতিযোগিতাটি থেকে। এই কজনের মধ্যে ১৩৯ কিলোমিটার গতিতে বল করে প্রথমস্থান অধিকার করেন এবাদত।

এরপর তিনি চলে আসেন হাই পারফরমেন্স দলের হয়ে ট্রেনিং করতে। আকিব জাবেদও এবাদতকে নিয়ে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে যান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক হয় ২০১৯ সালের মার্চে। নিউজিল্যান্ডের মাঠেই তার অভিষেক ঘটে। কিউইদের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন তিনি।

২০১৯ সালেই কলকাতায় ভারতের বিপক্ষে ৯১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে একবার আলোচনায় আসেন এবাদত। এবার তো তিনি হয়ে গেলেন চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার। বাংলাদেশকে এনে দিলেন ঐতিহাসিক এক জয়।

বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২২ , ২২ পৌষ ১৪২৮ ২ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

ভলিবল থেকে ক্রিকেটার এবাদত

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক

image

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জয়ের নায়ক, পেসবোলার এবাদত হোসেন ছিলেন মূলত একজন ভলিবল খেলোয়াড়। সেখান থেকে হলেন ক্রিকেটার। আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে নানা প্রশ্ন করতে গিয়ে সে প্রসঙ্গটাই এনেছিলেন সঞ্চালক।

জবাবে এবাদত বলেছিলেন, ‘ভলিবল থেকে ক্রিকেটে আসার গল্পটা অনেক লম্বা। আমি ক্রিকেটটা উপভোগ করছি। বাংলাদেশ ও বিমানবাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করাটাও।’

মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার কাঁঠালতলী গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন এবাদত হোসেন। আগে পাড়ার মাঠে মাঝে মধ্যে ক্রিকেট খেলতেন। বাবা চাকরি করতেন বিজিবিতে। ২০১২ সালে যোগ দিলেন বিমান বাহিনীতে।

চাকরির পাশাপাশি চলছিল খেলাধুলাও, ভলিবল, হ্যান্ডবল, বাস্কেটবল এসব। এরপর বিমানবাহিনীর নিয়মিত ভলিবল খেলোয়াড় হয়ে যান।

কিন্তু ভলিবলেও নিজেকে বেধে রাখতে পারলেন না। কারণ তার মন পড়ে থাকে ক্রিকেট মাঠে। তার প্রতিষ্ঠান বিমানবাহিনীও এবাদতের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসে। তার খেলাধুলায় বাধা দেয় না। যার ফলশ্রুতিতে ধীরে ধীরে ক্রিকেটে নিজেকে জড়াতে শুরু করেন। ২০১৪ সালে সিটি ক্লাবের হয়ে ঢাকায় প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান এবাদত। ক্রিকেটে পরিচিত হতে থাকেন ধীরে ধীরে। ২ বছর পর সামনে চলে আসে সূবর্ণ সুযোগ।

২০১৬ সালে রবির সহযোগিতায় বিসিবি আয়োজন করে পেসার হান্টের। সারাদেশ থেকে প্রতিভাবান পেসারদের তুলে আনার লক্ষ্য নিয়ে এই পেসার হান্টের আয়োজন করে তারা। এখানেই নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করতে যান এবাদত হোসেন। ফরিদপুর গিয়ে পেসার হান্টে অংশ নেন। নির্বাচিত হওয়ার পর পরবর্তী ধাপে পরীক্ষা দিতে এবাদত চলে আসেন ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। এখানে পেসারদের নির্বাচিত করার কাজ ছিল পাকিস্তানের সাবেক পেসার আকিব জাবেদের। বলের গতি দিয়ে কোচদের সন্তুষ্ট করতে সক্ষম হন ।

প্রায় ৬৩ জনকে বাছাই করা হয় প্রতিযোগিতাটি থেকে। এই কজনের মধ্যে ১৩৯ কিলোমিটার গতিতে বল করে প্রথমস্থান অধিকার করেন এবাদত।

এরপর তিনি চলে আসেন হাই পারফরমেন্স দলের হয়ে ট্রেনিং করতে। আকিব জাবেদও এবাদতকে নিয়ে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে যান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক হয় ২০১৯ সালের মার্চে। নিউজিল্যান্ডের মাঠেই তার অভিষেক ঘটে। কিউইদের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন তিনি।

২০১৯ সালেই কলকাতায় ভারতের বিপক্ষে ৯১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে একবার আলোচনায় আসেন এবাদত। এবার তো তিনি হয়ে গেলেন চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার। বাংলাদেশকে এনে দিলেন ঐতিহাসিক এক জয়।