ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ব্র্যান্ডিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ

রেজাউল করিম খোকন

ব্র্যান্ডিং নিয়ে সাধারণভাবে বিভিন্নজন বিভিন্ন ধারণা পোষণ করেন। ফলে বাজারে ব্র্যান্ডিং নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। ব্র্যান্ডকে বলা হয় আস্থার প্রতীক। যে পণ্যের ওপর সাধারণ ক্রেতাদের আস্থা নেই সেটি কখনো ভালো পণ্য হতে পারে না। এ কথা মনে রাখতে হবে, একটি খারাপ পণ্য দীর্ঘমেয়াদে বাজারে টিকে থাকতে পারে না। পৃথিবীর বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর শত বছরের ইতিহাস রয়েছে। ওই ব্র্যান্ডগুলো ক্রেতাদের মনে আস্থার প্রতীক হয়ে উজ্জ্বল অবস্থানে ঠাঁই করে নিয়েছে। বর্তমান সামাজিক কাঠামোতে ব্যাংক একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যাংক ছাড়া এখন কোনো সমাজ এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কথা কল্পনা করা যায় না। তেমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন তোলা যায়, ব্যাংকের জন্য ব্র্যান্ডিং কতটা প্রয়োজনীয়? আদৌ এর কী কোনো প্রয়োজন আছে? এখন থেকে দুই-আড়াই দশক আগের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে তখনকার দিনে ব্যাংকগুলো ব্র্যান্ডিং নিয়ে তেমন কোনো চিন্তা-ভাবনা করেনি। তখন বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি তাদের পণ্যের ব্র্যান্ডিং নিয়ে দারুণ চিন্তা-ভাবনা করেছে।

কিন্তু এখন পরিবেশ, পরিস্থিতি, সাধারণ মানুষের রুচিবোধ, পছন্দ পাল্টে গেছে। এখন প্রতিযোগিতামূলক বাজারে একজন মানুষ ব্যাংকিং সেবা হোক, মোবাইল ফোন সেবা কিংবা চিকিৎসা সেবা হোক, তা গ্রহণ করার আগে অনেক বিষয় চিন্তা-ভাবনা করে তারপর নিজের জন্য পছন্দের কোম্পানি কিংবা ব্যাংক অথবা হাসপাতালটিকে বেছে নিচ্ছে। ব্যাংকগুলো যখন নিজেদের পারফরম্যান্স ড্রাইভেন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে তখন থেকেই দৃৃশ্যপট ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। ব্র্যান্ডিং নিয়ে ব্যাংকের আলাদা চিন্তা-ভাবনার সূত্রপাত হয়েছে। এখন তো যে কোনো ভালো ব্যাংক, পেশাদার ব্যাংক ব্র্যান্ডিং ছাড়া সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারে না।

রিটেইল ব্যাংকিংয়ের কথা বিবেচনা করলে এ ধারণাটিকে অনেকটা সুপারশপের মতো মনে হয়। সুপারশপে গেলে আমরা কী কেনাকাটা করি? সাবান, কসমেটিকস, চাল, ডাল, মাখন, দুধ, জেলি, আলু, পটোল, পেঁয়াজ, মাছ, মাংস- সবই পাওয়া যায় সুপারশপে। ঠিক অনুরূপভাবে, একটি রিটেইল ব্যাংকে যাওয়ার পর সেখানে একজন গ্রাহক কী পান? একজন গ্রাহক ব্যাংকে যাওয়ার পর তার প্রয়োজন অনুযায়ী একটি সঞ্চয়ী কিংবা চলতি অথবা ডিপিএস হিসাব খুলতে পারেন। আবার কোনো গ্রাহক কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর স্থায়ী ফিক্সড ডিপোজিট হিসাব খুলতে পারেন। আবার কেউ লকার সার্ভিস নিতে পারেন, কার লোন, হোম লোন, পারসোনাল লোন নিতে পারেন। এ ছাড়া ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড নিতে পারেন আর করপোরেট গ্রাহক কিংবা আমদানিকারক রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী এলসি খুলতে পারেন, শিল্প ঋণ নিতে পারেন।

মোটকথা গ্রাহকের লাইফস্টাইল, আর্থিক সক্ষমতা, রুচি-পছন্দ এবং চাহিদা অনুযায়ী অনেক কিছুই একটি রিটেইল ব্যাংক থেকে নেয়া সম্ভব। ব্যাংকের প্রডাক্ট বা আর্থিক সেবাগুলো যখন গ্রাহকদের লাইফস্টাইলের সঙ্গে জড়িত তখন ওই প্রডাক্টগুলো মানুষ তার প্রয়োজনেই নেবে। দেশে বর্তমানে ৬১টি ব্যাংক সাধারণ মানুষের জন্য নানা ধরনের আর্থিক সেবা পণ্য নিয়ে সদা প্রস্তুত। তারা তাদের সেবা পণ্যগুলো গ্রাহকদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। পত্রপত্রিকা, রেডিও, টিভিতে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, রাস্তায় মনোরম বিলবোর্ড, ব্যানার, হোর্ডিং সজ্জিত করছে। কোনো ব্যাংক হয়তো রিটেইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের সেবা পণ্য বিক্রির চেষ্টা করছে। আবার কোনো ব্যাংক একই পণ্য অন্য নামে বিক্রি করছে।

দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এখনও ব্যাংকিং সেবা বলয়ের বাইরে রয়েছে। এ কারণে এখানে ব্যাংকের সেবা পণ্যের বাজার এখনও একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। এ কারণে প্রতিটি ব্যাংক তাদের পণ্য বিক্রির জন্য পুশ মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করছে। যে যেভাবে পারছে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে চাইছে। শিক্ষিত জনগোষ্ঠী সাধারণত বেশি ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করে। ফলে তাদের মনোযোগ আকর্ষণে ব্যাংকগুলো এখন তাদের নিজস্ব ব্যাংকিং প্রডাক্ট বা সেবা পণ্যগুলো নিয়ে গ্রাহকদের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। তাদের সেবা পণ্য গ্রহণে তাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো বিশদভাবে তুলে ধরছে। কিন্তু গ্রাহক তো তাদের মুখের কথায় গলে পড়ছে না। গ্রাহক কোনো প্রডাক্ট গ্রহণের আগে নানা বিষয় চিন্তা-ভাবনা করছে। তুলনামূলক বিচার করছে বিভিন্ন ব্যাংকের সেবা পণ্য নিয়ে। অনেক বিচার বিশ্লেষণ করছে। গ্রাহকের আস্থার জায়গায় পৌঁছানোর জন্য তখন ব্র্যান্ডিং ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকছে না। কারণ, ব্র্যাংন্ডিংয়ের সঙ্গে আস্থা, পরিচিতি, প্রতিশ্রুতি, নির্ভরযোগ্যতা-প্রতিটি বিষয়ই জড়িত।

ব্র্যান্ডিং এখন ব্যাংকের জন্য সময়ের দাবি। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার অন্যতম শর্ত। অনেকে প্রচার ও ব্র্র্যান্ডকে একত্রে মিলিয়ে ফেলে। কোনো প্রডাক্টের বিজ্ঞাপন দিলেই মনে করে ব্র্যান্ডিং হয়ে যায়। বিষয়টি তা নয়। আগেই উল্লেখ করছি, ব্র্যান্ডিংয়ের সঙ্গে সেবার গুণগতমান, আস্থা, বিশ^াস ও প্রতিশ্রুতি জড়িত। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি তা ধারণ করতে পারে তাহলেই ওই কোম্পানির প্রডাক্ট সম্পর্কে ক্রেতাদের বা গ্রাহকদের জানানোর জন্য প্রচারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রচার প্রডাক্ট ব্র্যান্ডিংয়ের নিশ্চয়তা দেয় না। অতীতে অনেক কোম্পানি তাদের প্রডাক্ট মার্কেটিং করার জন্য ব্যাপক বিজ্ঞাপন ও অন্যান্য প্রচারণামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়ার পরেও বাজারে টিকে থাকতে পারেনি। বাজার থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য হয়েছে। কারণ, ওই প্রডাক্টগুলো ব্র্যান্ডিংয়ের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। অর্থাৎ ক্রেতাদের আস্থা, প্রতিশ্রুতি যেমন অর্জন করতে পারেনি। তেমনি পারেনি পণ্যের কোনো মান বজায় রাখতে। তাই, কোনো ব্যাংক যদি এখন বাজারে ব্যবসা করে টিকে থাকতে চায়, দীর্ঘমেয়াদে বাজারে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করতে চায়, মুনাফা সর্বোচ্চ করতে চায় তাহলে ব্র্যান্ডিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। কারণ, এটাই একটি ব্যাংককে টিকে থাকার নিশ্চয়তা দিতে পারে।

যখন দেশি-বিদেশি ব্যাংকগুলো ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে হিমশিম খাচ্ছে তখন আর্থিক খাতে ইতিবাচক ইমেজ ধরে রাখাটাই মূল লক্ষ্য। একই সঙ্গে গ্রাহকের আস্থা অর্জনও অনিবার্য। প্রতিষ্ঠানের ইমেজ এবং গ্রাহকের আস্থা ধরে রাখতে ব্যাংক খাতে ব্র্যান্ডিংয়ে বিদেশি ব্যাংকগুলো এগিয়ে থাকলেও দেশি ব্যাংকগুলো এক্ষেত্রে খুব একটা সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। দেশের ব্যাংকিং খাতে মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ আরও নানা আধুনিক ব্যাংকিং পদ্ধতি প্রবর্তনের ফলে ব্যাংকগুলোকে আরও অধিক গ্রাহকমুখী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আর এ ধারায় ব্যাংকের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজন সফল ব্যান্ডিং।

এ ক্ষেত্রে যে তিনটি জিনিসের বেশি প্রয়োজন। তা হলোÑউৎকৃষ্ট মানবসম্পদ, মানসম্পন্ন পণ্য ও ব্র্যান্ডেড গ্রাহকসেবা। ব্যাংকিং খাতে অনেকেরই ধারণা, ব্র্যান্ডিং মানে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া ও প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো, ডিপোজিট বাড়ানোর চেষ্টা করা কিংবা লোগো পরিবর্তন। প্রকৃতপক্ষে ব্র্যান্ডিং এক ধরনের কোনো বিষয় নয়। এর গভীরতা অনেক বেশি, ব্যাপ্তি অনেক বড়, যা যে কোনো একটি কোম্পানির ভিশন-মিশন এবং ব্যবসায়িক কৌশলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। একটি কোম্পানি সামগ্রিকভাবে কী করে আর কী করে না তার একটি সামগ্রিক ফলাফল এই ব্র্যান্ডিং। এ কারণে কোম্পানির মালিক এবং শীর্ষনির্বাহীর উদ্যোগ ছাড়া একটি ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। কারণ স্বল্পমেয়াদি ব্র্যান্ড কর্মসূচি দিয়ে সুদূর প্রসারী ব্যবসা হয় না। ব্যবসার ধরন অনুযায়ী কর্মীদের সংস্কৃতি, মানসিকতা, জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। পুরো প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত কোম্পানির প্রতিটি কার্যকলাপ কোম্পানির প্রতিশ্রুতির সঙ্গে (ট্যাগলাইনের) মিল থাকতে হবে। অর্থাৎ একটি কোম্পানি কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপনে যা বলেছে কাজেও তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাসে চিড় ধরতে পারে।

আবার শুধু শীর্ষ পর্যায়ের কর্মীদেরই ব্র্যান্ড সচেতন হলে চলবে না। যারা কোম্পানির নিম্নসারিতে আছে তাদেরও ব্র্যান্ডের মূল্যবোধটা বুঝতে হবে। সর্বোপরি একটি ব্র্যান্ডকে দীর্ঘমেয়াদে বাজারে টিকিয়ে রাখার জন্য ব্যাংক খাতে ভোক্তাকেন্দ্রিক এবং সেবাকেন্দ্রিক মানসিকতা তৈরির বিকল্প নেই। হাতেগোনা দু-একটি প্রতিষ্ঠান ঠিকভাবে ব্র্যান্ডিং করে স্থানীয় পণ্য সেবার বাজার বাড়াচ্ছে। তারা করর্পোরেট ইমেজটা আগে ভালো করা পর পণ্য বাজারে ছাড়ে। এ ক্ষেত্রে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বাজেট, ইমেজ ব্র্যান্ডিংয়ের বাজেট এবং সঠিক প্রচার পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন। ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যবসাজ্ঞান বাজার সম্পর্কে ধারণা, সৃজনশীল জ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক ধ্যান-ধারণা থাকতে হবে। বিবিএ এবং এমবিএ ডিগ্রি থাকলেই তিনি ব্র্যান্ডিং সম্পর্কে ভালো জানবেন তা কিন্তু নয়। তাকে মানুষের রুচি, সংস্কৃতিকে বুঝতে হবে।

ব্যাংকিং সেক্টরে ব্র্যান্ড মার্কেটিংয়ের অনেক সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শীর্ষ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের অজ্ঞতা ও উদাসীনতার কারণে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্র্যান্ডিংয়ের দিকে ঠিকমতো নজর দিচ্ছে না, এখনও টোটাল ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন না করে প্রাচীনপন্থি করপোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগ চালু রেখেছে অনেক ব্যাংক। তারা না বোঝে ব্র্যান্ড, না বোঝে প্রকৃত মার্কেটিং। ব্র্যান্ডিংয়ের নামে এসব তথাকথিত করপোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগকে ভুল বা বিকৃত লোগো দিয়ে স্পন্সরশিপ করতেও দেখা যায়, যা করপোরেট আইডেনটিটির জন্য বিশাল ঝুঁকি। ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করলে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসার উন্নতি হয়। এ জন্য বিশেষভাবে মনোযোগী হতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। ব্যাংক খাতে পজিটিভ ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করার এখনই সময়।

ব্যাংক ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়ছে ক্রমেই। বিভিন্ন ধরনের জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। অনেক ক্ষেত্রে নানা বিপর্যয় অপ্রত্যাশিত ঘটনা ব্যাংকের দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা ইমেজ, ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে মারাত্মকভাবে। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগের মত চুপচাপ বসে থাকার সুযোগ নেই। যে কোনো অবাঞ্ছিত, অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যাংকগুলোকে আগে থেকে নানা ধরনের শক্তিশালী প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। ব্যাংকগুলো যদি আগে থেকে তাদের শক্তিশালী ইমেজ ব্র্যান্ডিং করতে সক্ষম হয় এবং এর মাধ্যমে গ্রাহক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর আস্থাবোধ সৃষ্টি হয় তাহলে অবাঞ্ছিত, অপ্রত্যাশিত প্রতিকূল পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে তা অনেকটা কাজ দিতে পারে।

[ লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার ]

বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২২ , ২২ পৌষ ১৪২৮ ২ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ব্র্যান্ডিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ

রেজাউল করিম খোকন

ব্র্যান্ডিং নিয়ে সাধারণভাবে বিভিন্নজন বিভিন্ন ধারণা পোষণ করেন। ফলে বাজারে ব্র্যান্ডিং নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। ব্র্যান্ডকে বলা হয় আস্থার প্রতীক। যে পণ্যের ওপর সাধারণ ক্রেতাদের আস্থা নেই সেটি কখনো ভালো পণ্য হতে পারে না। এ কথা মনে রাখতে হবে, একটি খারাপ পণ্য দীর্ঘমেয়াদে বাজারে টিকে থাকতে পারে না। পৃথিবীর বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর শত বছরের ইতিহাস রয়েছে। ওই ব্র্যান্ডগুলো ক্রেতাদের মনে আস্থার প্রতীক হয়ে উজ্জ্বল অবস্থানে ঠাঁই করে নিয়েছে। বর্তমান সামাজিক কাঠামোতে ব্যাংক একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যাংক ছাড়া এখন কোনো সমাজ এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কথা কল্পনা করা যায় না। তেমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন তোলা যায়, ব্যাংকের জন্য ব্র্যান্ডিং কতটা প্রয়োজনীয়? আদৌ এর কী কোনো প্রয়োজন আছে? এখন থেকে দুই-আড়াই দশক আগের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে তখনকার দিনে ব্যাংকগুলো ব্র্যান্ডিং নিয়ে তেমন কোনো চিন্তা-ভাবনা করেনি। তখন বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি তাদের পণ্যের ব্র্যান্ডিং নিয়ে দারুণ চিন্তা-ভাবনা করেছে।

কিন্তু এখন পরিবেশ, পরিস্থিতি, সাধারণ মানুষের রুচিবোধ, পছন্দ পাল্টে গেছে। এখন প্রতিযোগিতামূলক বাজারে একজন মানুষ ব্যাংকিং সেবা হোক, মোবাইল ফোন সেবা কিংবা চিকিৎসা সেবা হোক, তা গ্রহণ করার আগে অনেক বিষয় চিন্তা-ভাবনা করে তারপর নিজের জন্য পছন্দের কোম্পানি কিংবা ব্যাংক অথবা হাসপাতালটিকে বেছে নিচ্ছে। ব্যাংকগুলো যখন নিজেদের পারফরম্যান্স ড্রাইভেন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে তখন থেকেই দৃৃশ্যপট ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। ব্র্যান্ডিং নিয়ে ব্যাংকের আলাদা চিন্তা-ভাবনার সূত্রপাত হয়েছে। এখন তো যে কোনো ভালো ব্যাংক, পেশাদার ব্যাংক ব্র্যান্ডিং ছাড়া সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারে না।

রিটেইল ব্যাংকিংয়ের কথা বিবেচনা করলে এ ধারণাটিকে অনেকটা সুপারশপের মতো মনে হয়। সুপারশপে গেলে আমরা কী কেনাকাটা করি? সাবান, কসমেটিকস, চাল, ডাল, মাখন, দুধ, জেলি, আলু, পটোল, পেঁয়াজ, মাছ, মাংস- সবই পাওয়া যায় সুপারশপে। ঠিক অনুরূপভাবে, একটি রিটেইল ব্যাংকে যাওয়ার পর সেখানে একজন গ্রাহক কী পান? একজন গ্রাহক ব্যাংকে যাওয়ার পর তার প্রয়োজন অনুযায়ী একটি সঞ্চয়ী কিংবা চলতি অথবা ডিপিএস হিসাব খুলতে পারেন। আবার কোনো গ্রাহক কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর স্থায়ী ফিক্সড ডিপোজিট হিসাব খুলতে পারেন। আবার কেউ লকার সার্ভিস নিতে পারেন, কার লোন, হোম লোন, পারসোনাল লোন নিতে পারেন। এ ছাড়া ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড নিতে পারেন আর করপোরেট গ্রাহক কিংবা আমদানিকারক রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী এলসি খুলতে পারেন, শিল্প ঋণ নিতে পারেন।

মোটকথা গ্রাহকের লাইফস্টাইল, আর্থিক সক্ষমতা, রুচি-পছন্দ এবং চাহিদা অনুযায়ী অনেক কিছুই একটি রিটেইল ব্যাংক থেকে নেয়া সম্ভব। ব্যাংকের প্রডাক্ট বা আর্থিক সেবাগুলো যখন গ্রাহকদের লাইফস্টাইলের সঙ্গে জড়িত তখন ওই প্রডাক্টগুলো মানুষ তার প্রয়োজনেই নেবে। দেশে বর্তমানে ৬১টি ব্যাংক সাধারণ মানুষের জন্য নানা ধরনের আর্থিক সেবা পণ্য নিয়ে সদা প্রস্তুত। তারা তাদের সেবা পণ্যগুলো গ্রাহকদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। পত্রপত্রিকা, রেডিও, টিভিতে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, রাস্তায় মনোরম বিলবোর্ড, ব্যানার, হোর্ডিং সজ্জিত করছে। কোনো ব্যাংক হয়তো রিটেইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের সেবা পণ্য বিক্রির চেষ্টা করছে। আবার কোনো ব্যাংক একই পণ্য অন্য নামে বিক্রি করছে।

দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এখনও ব্যাংকিং সেবা বলয়ের বাইরে রয়েছে। এ কারণে এখানে ব্যাংকের সেবা পণ্যের বাজার এখনও একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। এ কারণে প্রতিটি ব্যাংক তাদের পণ্য বিক্রির জন্য পুশ মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করছে। যে যেভাবে পারছে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে চাইছে। শিক্ষিত জনগোষ্ঠী সাধারণত বেশি ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করে। ফলে তাদের মনোযোগ আকর্ষণে ব্যাংকগুলো এখন তাদের নিজস্ব ব্যাংকিং প্রডাক্ট বা সেবা পণ্যগুলো নিয়ে গ্রাহকদের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। তাদের সেবা পণ্য গ্রহণে তাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো বিশদভাবে তুলে ধরছে। কিন্তু গ্রাহক তো তাদের মুখের কথায় গলে পড়ছে না। গ্রাহক কোনো প্রডাক্ট গ্রহণের আগে নানা বিষয় চিন্তা-ভাবনা করছে। তুলনামূলক বিচার করছে বিভিন্ন ব্যাংকের সেবা পণ্য নিয়ে। অনেক বিচার বিশ্লেষণ করছে। গ্রাহকের আস্থার জায়গায় পৌঁছানোর জন্য তখন ব্র্যান্ডিং ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকছে না। কারণ, ব্র্যাংন্ডিংয়ের সঙ্গে আস্থা, পরিচিতি, প্রতিশ্রুতি, নির্ভরযোগ্যতা-প্রতিটি বিষয়ই জড়িত।

ব্র্যান্ডিং এখন ব্যাংকের জন্য সময়ের দাবি। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার অন্যতম শর্ত। অনেকে প্রচার ও ব্র্র্যান্ডকে একত্রে মিলিয়ে ফেলে। কোনো প্রডাক্টের বিজ্ঞাপন দিলেই মনে করে ব্র্যান্ডিং হয়ে যায়। বিষয়টি তা নয়। আগেই উল্লেখ করছি, ব্র্যান্ডিংয়ের সঙ্গে সেবার গুণগতমান, আস্থা, বিশ^াস ও প্রতিশ্রুতি জড়িত। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি তা ধারণ করতে পারে তাহলেই ওই কোম্পানির প্রডাক্ট সম্পর্কে ক্রেতাদের বা গ্রাহকদের জানানোর জন্য প্রচারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রচার প্রডাক্ট ব্র্যান্ডিংয়ের নিশ্চয়তা দেয় না। অতীতে অনেক কোম্পানি তাদের প্রডাক্ট মার্কেটিং করার জন্য ব্যাপক বিজ্ঞাপন ও অন্যান্য প্রচারণামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়ার পরেও বাজারে টিকে থাকতে পারেনি। বাজার থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য হয়েছে। কারণ, ওই প্রডাক্টগুলো ব্র্যান্ডিংয়ের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। অর্থাৎ ক্রেতাদের আস্থা, প্রতিশ্রুতি যেমন অর্জন করতে পারেনি। তেমনি পারেনি পণ্যের কোনো মান বজায় রাখতে। তাই, কোনো ব্যাংক যদি এখন বাজারে ব্যবসা করে টিকে থাকতে চায়, দীর্ঘমেয়াদে বাজারে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করতে চায়, মুনাফা সর্বোচ্চ করতে চায় তাহলে ব্র্যান্ডিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। কারণ, এটাই একটি ব্যাংককে টিকে থাকার নিশ্চয়তা দিতে পারে।

যখন দেশি-বিদেশি ব্যাংকগুলো ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে হিমশিম খাচ্ছে তখন আর্থিক খাতে ইতিবাচক ইমেজ ধরে রাখাটাই মূল লক্ষ্য। একই সঙ্গে গ্রাহকের আস্থা অর্জনও অনিবার্য। প্রতিষ্ঠানের ইমেজ এবং গ্রাহকের আস্থা ধরে রাখতে ব্যাংক খাতে ব্র্যান্ডিংয়ে বিদেশি ব্যাংকগুলো এগিয়ে থাকলেও দেশি ব্যাংকগুলো এক্ষেত্রে খুব একটা সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। দেশের ব্যাংকিং খাতে মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ আরও নানা আধুনিক ব্যাংকিং পদ্ধতি প্রবর্তনের ফলে ব্যাংকগুলোকে আরও অধিক গ্রাহকমুখী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আর এ ধারায় ব্যাংকের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজন সফল ব্যান্ডিং।

এ ক্ষেত্রে যে তিনটি জিনিসের বেশি প্রয়োজন। তা হলোÑউৎকৃষ্ট মানবসম্পদ, মানসম্পন্ন পণ্য ও ব্র্যান্ডেড গ্রাহকসেবা। ব্যাংকিং খাতে অনেকেরই ধারণা, ব্র্যান্ডিং মানে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া ও প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো, ডিপোজিট বাড়ানোর চেষ্টা করা কিংবা লোগো পরিবর্তন। প্রকৃতপক্ষে ব্র্যান্ডিং এক ধরনের কোনো বিষয় নয়। এর গভীরতা অনেক বেশি, ব্যাপ্তি অনেক বড়, যা যে কোনো একটি কোম্পানির ভিশন-মিশন এবং ব্যবসায়িক কৌশলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। একটি কোম্পানি সামগ্রিকভাবে কী করে আর কী করে না তার একটি সামগ্রিক ফলাফল এই ব্র্যান্ডিং। এ কারণে কোম্পানির মালিক এবং শীর্ষনির্বাহীর উদ্যোগ ছাড়া একটি ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। কারণ স্বল্পমেয়াদি ব্র্যান্ড কর্মসূচি দিয়ে সুদূর প্রসারী ব্যবসা হয় না। ব্যবসার ধরন অনুযায়ী কর্মীদের সংস্কৃতি, মানসিকতা, জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। পুরো প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত কোম্পানির প্রতিটি কার্যকলাপ কোম্পানির প্রতিশ্রুতির সঙ্গে (ট্যাগলাইনের) মিল থাকতে হবে। অর্থাৎ একটি কোম্পানি কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপনে যা বলেছে কাজেও তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাসে চিড় ধরতে পারে।

আবার শুধু শীর্ষ পর্যায়ের কর্মীদেরই ব্র্যান্ড সচেতন হলে চলবে না। যারা কোম্পানির নিম্নসারিতে আছে তাদেরও ব্র্যান্ডের মূল্যবোধটা বুঝতে হবে। সর্বোপরি একটি ব্র্যান্ডকে দীর্ঘমেয়াদে বাজারে টিকিয়ে রাখার জন্য ব্যাংক খাতে ভোক্তাকেন্দ্রিক এবং সেবাকেন্দ্রিক মানসিকতা তৈরির বিকল্প নেই। হাতেগোনা দু-একটি প্রতিষ্ঠান ঠিকভাবে ব্র্যান্ডিং করে স্থানীয় পণ্য সেবার বাজার বাড়াচ্ছে। তারা করর্পোরেট ইমেজটা আগে ভালো করা পর পণ্য বাজারে ছাড়ে। এ ক্ষেত্রে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বাজেট, ইমেজ ব্র্যান্ডিংয়ের বাজেট এবং সঠিক প্রচার পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন। ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যবসাজ্ঞান বাজার সম্পর্কে ধারণা, সৃজনশীল জ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক ধ্যান-ধারণা থাকতে হবে। বিবিএ এবং এমবিএ ডিগ্রি থাকলেই তিনি ব্র্যান্ডিং সম্পর্কে ভালো জানবেন তা কিন্তু নয়। তাকে মানুষের রুচি, সংস্কৃতিকে বুঝতে হবে।

ব্যাংকিং সেক্টরে ব্র্যান্ড মার্কেটিংয়ের অনেক সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শীর্ষ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের অজ্ঞতা ও উদাসীনতার কারণে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্র্যান্ডিংয়ের দিকে ঠিকমতো নজর দিচ্ছে না, এখনও টোটাল ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন না করে প্রাচীনপন্থি করপোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগ চালু রেখেছে অনেক ব্যাংক। তারা না বোঝে ব্র্যান্ড, না বোঝে প্রকৃত মার্কেটিং। ব্র্যান্ডিংয়ের নামে এসব তথাকথিত করপোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগকে ভুল বা বিকৃত লোগো দিয়ে স্পন্সরশিপ করতেও দেখা যায়, যা করপোরেট আইডেনটিটির জন্য বিশাল ঝুঁকি। ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করলে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসার উন্নতি হয়। এ জন্য বিশেষভাবে মনোযোগী হতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। ব্যাংক খাতে পজিটিভ ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করার এখনই সময়।

ব্যাংক ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়ছে ক্রমেই। বিভিন্ন ধরনের জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। অনেক ক্ষেত্রে নানা বিপর্যয় অপ্রত্যাশিত ঘটনা ব্যাংকের দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা ইমেজ, ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে মারাত্মকভাবে। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগের মত চুপচাপ বসে থাকার সুযোগ নেই। যে কোনো অবাঞ্ছিত, অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যাংকগুলোকে আগে থেকে নানা ধরনের শক্তিশালী প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। ব্যাংকগুলো যদি আগে থেকে তাদের শক্তিশালী ইমেজ ব্র্যান্ডিং করতে সক্ষম হয় এবং এর মাধ্যমে গ্রাহক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর আস্থাবোধ সৃষ্টি হয় তাহলে অবাঞ্ছিত, অপ্রত্যাশিত প্রতিকূল পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে তা অনেকটা কাজ দিতে পারে।

[ লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার ]