রাবিতে ৪ দিনে ৩ ছিনতাই

প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গত ৪ দিনে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ৩টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন অপরাধীদের চিহ্নিত করতে না পারায় ক্যাম্পাসে জুড়ে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, সর্বশেষ গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্যারিস রোডে উপাচার্য বাসভবনের সামনে ছিনতাই হয়। এ ঘটনায় শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক্স ডিজাইন বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে সালমা বৃষ্টি। তিনি এক বান্ধবীসহ রিকশায় হলে ফিরছিলেন। একটি নীল রঙের বাইকে সাদা রঙের হুডি পরিহিত ২ জন তার হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। পরে প্রশাসন ভবনের সামনে জোহা চত্বর হয়ে বেরিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বৃষ্টি আহত হন এবং ব্যাগে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড, ডকুমেন্টস ও ২৫ হাজার টাকা দামের একটি শাওমি ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।

একই তারিখ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাই চেষ্টা করে স্থানীয় এক যুবক। পরে ঘটনাস্থলে ভুক্তভোগীর চিৎকারে লোকজন এসে ছিনতাইকারীকে আটক করে। আটক হবার পর সেই যুবক স্থানীয় পরিচয় দিয়ে পরে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। ঘটনাস্থলে ছিনতাইকারী হাত ফসকে পালিয়ে যায়। এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর দিনদুপুরে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন আরেক শিক্ষার্থী। এদিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ছিনতাইয়ের এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মাইশা জান্নাত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। বান্ধবীর সঙ্গে হলে ফেরার পথে নীল রঙের একটি বাইকে করে দুজন এসে রিকশা থামান। পরে তার ব্যাগে থাকা মোবাইল ফোন, আইডি কার্ড, নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে দ্রুতগতিতে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

এদিকে ‘অযোগ্য প্রক্টর’র পদত্যাগ দাবি করে মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে এতোগুলো ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটার পরেও আমরা দেখতে পাই কোন অপরাধী ধরা পড়ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত এই অপরাধগুলো ঘটছে। অথচ নিরাপত্তার নামে রাতে নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। তাহলে নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকার দরকার কি? এ সময় অবিলম্বে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি ‘ব্যর্থ প্রক্টর’র পদত্যাগের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। ক্ষোভ প্রকাশ করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাইদুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্ত্বেও দিনে দুপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা থাকার পরও ছিনতাই এর কারণ হিসেবে দায়ী করব প্রশাসনের অপরিকল্পনা ও অনাগ্রহকে। আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলীকে একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা এ বিষয়টি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসকে আরও নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে আমরা মিটিং করেছি। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে আমরা সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করতে প্রস্তুত।

শুক্রবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২২ , ২৩ পৌষ ১৪২৮ ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

রাবিতে ৪ দিনে ৩ ছিনতাই

প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

প্রতিনিধি, রাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গত ৪ দিনে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ৩টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন অপরাধীদের চিহ্নিত করতে না পারায় ক্যাম্পাসে জুড়ে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, সর্বশেষ গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্যারিস রোডে উপাচার্য বাসভবনের সামনে ছিনতাই হয়। এ ঘটনায় শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক্স ডিজাইন বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে সালমা বৃষ্টি। তিনি এক বান্ধবীসহ রিকশায় হলে ফিরছিলেন। একটি নীল রঙের বাইকে সাদা রঙের হুডি পরিহিত ২ জন তার হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। পরে প্রশাসন ভবনের সামনে জোহা চত্বর হয়ে বেরিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বৃষ্টি আহত হন এবং ব্যাগে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড, ডকুমেন্টস ও ২৫ হাজার টাকা দামের একটি শাওমি ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।

একই তারিখ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাই চেষ্টা করে স্থানীয় এক যুবক। পরে ঘটনাস্থলে ভুক্তভোগীর চিৎকারে লোকজন এসে ছিনতাইকারীকে আটক করে। আটক হবার পর সেই যুবক স্থানীয় পরিচয় দিয়ে পরে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। ঘটনাস্থলে ছিনতাইকারী হাত ফসকে পালিয়ে যায়। এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর দিনদুপুরে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন আরেক শিক্ষার্থী। এদিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ছিনতাইয়ের এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মাইশা জান্নাত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। বান্ধবীর সঙ্গে হলে ফেরার পথে নীল রঙের একটি বাইকে করে দুজন এসে রিকশা থামান। পরে তার ব্যাগে থাকা মোবাইল ফোন, আইডি কার্ড, নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে দ্রুতগতিতে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

এদিকে ‘অযোগ্য প্রক্টর’র পদত্যাগ দাবি করে মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে এতোগুলো ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটার পরেও আমরা দেখতে পাই কোন অপরাধী ধরা পড়ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত এই অপরাধগুলো ঘটছে। অথচ নিরাপত্তার নামে রাতে নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। তাহলে নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকার দরকার কি? এ সময় অবিলম্বে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি ‘ব্যর্থ প্রক্টর’র পদত্যাগের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। ক্ষোভ প্রকাশ করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাইদুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্ত্বেও দিনে দুপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা থাকার পরও ছিনতাই এর কারণ হিসেবে দায়ী করব প্রশাসনের অপরিকল্পনা ও অনাগ্রহকে। আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলীকে একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা এ বিষয়টি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসকে আরও নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে আমরা মিটিং করেছি। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে আমরা সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করতে প্রস্তুত।