পণ্যের মূল্য

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন

আজ থেকে তিন যুগ আগে প্রাকৃতিক ঘটনার প্রভাব পণ্যের মূল্যের ওপর পড়ত। বর্তমানে তার ব্যতিক্রম না তবে বর্তমানে প্রাকৃতিক ঘটনাকে পুঁজি করে মহল বিশেষ পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে। বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালে বন্যা হয়। বন্যার কারণে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। সেই সময় বাংলাদেশে ছিল কৃষিনির্ভর। কৃষি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয় বন্যার কারণে। এ কারণে ওই সময় দেশে দেখা দেয় মারাত্মক খাদ্যাভাব। খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিশেষ করে ধান-চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছিল। তাছাড়া তখন বিশ্বব্যাপী চলছিল খাদ্য মন্দাভাব। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশটি ছিল আন্তর্জাতিক স্নায়ু রাজনীতির বলয়ভুক্ত।

তাই খাদ্য সহায়তার বিষয়ে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিষয়গুলো খাদ্য চাহিদা মেটানোর বিষয়ে প্রভাবিত করে, আন্তর্জাতিক বাজারে কেনাবেচার বিষয়টি নির্ভর করে দুই স্নায়ুশক্তির প্রভাবের ওপর। ফলে আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ছিল নানা ধরনের মারপ্যাঁচ। বিশেষ করে মার্কিন বলয়ভুক্ত স্বাধীনতাবিরোধীরা বাংলাদেশকে তখন খাদ্য সহায়তা দেয়নি। ১৯৭০-এর সঙ্গে ১৯৭৪ সালের খাদ্য পণ্যের মূল্য ব্যবধান নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। দেশের একটি মহল এ খাদ্যাভাবকে পুঁজি করে রাজনীতির মাঠের জল ঘোলা করে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী দেশের সরকারি খাদ্য গুদামগুলো পুড়িয়ে দিয়েছিল, তাই গুদামে ছিল ধান চাল শূন্য। দেশে কোন প্রকার খাদ্য মজুদ না থাকায়, তখন মৌসুমি খাদ্য উৎপাদনের উৎসটিই ছিল খাদ্য সরবরাহের মূল জোগান।

বর্তমানে বিভিন্ন সংবাদ তথ্য থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য মজুদ আছে। এক বা দুই বছরও শস্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে না হলেও দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে না, দেখা যাবে না খাদ্যমন্দাভাব। তারপরও একটি বিষয় লক্ষ্য করা যায় যে, খাদ্যপণ্যের দাম মৌসুম বা অমৌসুমে বেড়ে যায়। তবে মূল উৎপাদক কৃষকেরা কিন্তু কারসাজি করে এই দাম বাড়ায় না। মোট উৎপাদন খরচ প্লাস সরকারি ট্যাক্স এবং উৎপাদকের লাভ যোগ করে উৎপাদক একেকটি পণ্যের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে থাকেন, এটাই হলো পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করার নিয়ম। একজন কৃষকের ধানের দামের ক্ষেত্রে তা হয় না। কিন্তু কৃষককের ধান থেকে যারা চাল উৎপাদন করে মানে চাতাল মালিক তারা মূল্য নির্ধারণের নিয়ম মেনে চালের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে থাকেন। তাই চাল এবং ধানের দামের পার্থক্যটা দেখা যায়।

বর্তমানে ধানের মূল্য মণপ্রতি একহাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হয় ১৪ থেকে ১৬ মণ। একজন বর্গাচাষি এক বিঘা জমিনে ধান চাষ করলে উৎপাদিত ধানের অর্ধেক পায়। একজন বর্গা কৃষকের এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন করতে (সার বীজ ও অন্যান্য উপকরণ বাদে) মোট শ্রম দিবসের প্রয়োজন হয় ১৪-১৭ দিন। প্রতি শ্রম দিবসের একজন শ্রমিকের মজুরি যদি ৫০০ টাকা হয় তাহলে দেখা যায় যে, বর্গাচাষি যে ধান পেলেন তা তার শ্রমিকের মূল্যই পরিশোধ হয় না, অন্য খরচ তো বাকি রইল। প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে বর্গাচাষিদের পোষায় কিভাবে, একজন বর্গাচাষি তার পরিবার-পরিজন নিয়ে এই শ্রমটা বিনিয়োগ করে থাকেন, পূর্ণ দিবস বা অর্ধ দিবস হারে তাই মোট কর্ম দিবসটিও নির্ণয় করা কঠিন। ফলে তার শ্রমের মূল্যটা যথাযথ ভাবে নির্ণয় হয় না।

রাজধানীসহ দেশের শহরগুলোতে কৃষি পণ্যের দাম বেড়ে গছে গত দুই মাসের ব্যবধানে ৩০ শতাংশ। তার কারণ হিসাবে কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে শহরে কৃষিপণ্যের দাম বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে ব্যারল প্রতি হয় গিয়েছিল ৮৪ ডলার। তখন সরকার তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশের বাজারে আর্ন্তজাতিক তেলের বাজারের প্রভাব পড়ে। ডিজেল-কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি বেড়ে গিয়ে হয়ে যায় ৮৫ টাকা। এই দাম বাড়ার কারণে পরিবহন মালিকের ব্যয় বাড়ে, ফলে পরিবহনের মূল্যটা বেড়ে যায়। তাই পাইকাররা গ্রাম থেকে কেনা কৃষি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় শহরের কাঁচাবাজারগুলোতে। গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন নামক করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ে। তা দ্রুত ইউরোপ এবং আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ছে। করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব তেলের বাজরে পড়ে। গত ৪ ডিসেম্বর শনিবার অয়েল প্রাইস ডট কমে দেখা গেছে, ওই দিন বিশ্ব বাজারে ডব্লিউ টিআইর অপরিশোধিত তেলের দাম .০৩৬ শতাংশ অর্থাৎ .০২৪ ডলার কমেছে। ফলে ওই দিন আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেল প্রতি তেলের মূল্য ছিল ৬৬. দশমিক ২৬ ডলার। ওই সময় আন্তর্জাতিক বাজারে বেঞ্চমার্ক ব্র্যান্ডের অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮ ডলারে।

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোাধিত তেলের দাম কমেছে। এ কমার হিসাব অনুযায়ী দেখা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি কমেছে ১৫ থেকে ১৯ ডলার করে। তাহলে বাংলাদেশে তেলের দাম কমার কথা। কিন্তু দেশের বাজারে কেন তেলের দাম কমল না? এর উত্তর পাওয়া যাবে কি? তেলের দাম বাড়ানোর সময় আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যবৃদ্ধিকে মানদন্ড ধরে ডিজেল এবং কেরোসিনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে তাকে হিসাবে নেয়া হয় না। ডিজেল এবং কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। দেশের অভ্যন্তরে সব পণ্যই পরিবহন করা হয়, ট্রাক ও ডিজেল চালিত বিভিন্ন পরিবহনে তাই পণ্যের মূল্যটা নির্ধারণের সময় পরিবহন খরচটা বিবেচনায় নেয়া হয়। সব উৎপাদক পরিবহন খরচ যোগ করে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেন।

তাই দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে হলে ডিজেলের দাম কমাতে হবে। সেই সঙ্গে বর্ধিত পরিবহন বাড়াও প্রজ্ঞাপন জারি করে পুণঃনির্ধারণ করার প্রয়োজন। তাহলে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরা যাবে।

[ লেখক : উন্নয়নকর্মী ]

শুক্রবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২২ , ২৩ পৌষ ১৪২৮ ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

পণ্যের মূল্য

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন

আজ থেকে তিন যুগ আগে প্রাকৃতিক ঘটনার প্রভাব পণ্যের মূল্যের ওপর পড়ত। বর্তমানে তার ব্যতিক্রম না তবে বর্তমানে প্রাকৃতিক ঘটনাকে পুঁজি করে মহল বিশেষ পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে। বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালে বন্যা হয়। বন্যার কারণে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। সেই সময় বাংলাদেশে ছিল কৃষিনির্ভর। কৃষি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয় বন্যার কারণে। এ কারণে ওই সময় দেশে দেখা দেয় মারাত্মক খাদ্যাভাব। খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিশেষ করে ধান-চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছিল। তাছাড়া তখন বিশ্বব্যাপী চলছিল খাদ্য মন্দাভাব। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশটি ছিল আন্তর্জাতিক স্নায়ু রাজনীতির বলয়ভুক্ত।

তাই খাদ্য সহায়তার বিষয়ে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিষয়গুলো খাদ্য চাহিদা মেটানোর বিষয়ে প্রভাবিত করে, আন্তর্জাতিক বাজারে কেনাবেচার বিষয়টি নির্ভর করে দুই স্নায়ুশক্তির প্রভাবের ওপর। ফলে আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ছিল নানা ধরনের মারপ্যাঁচ। বিশেষ করে মার্কিন বলয়ভুক্ত স্বাধীনতাবিরোধীরা বাংলাদেশকে তখন খাদ্য সহায়তা দেয়নি। ১৯৭০-এর সঙ্গে ১৯৭৪ সালের খাদ্য পণ্যের মূল্য ব্যবধান নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। দেশের একটি মহল এ খাদ্যাভাবকে পুঁজি করে রাজনীতির মাঠের জল ঘোলা করে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী দেশের সরকারি খাদ্য গুদামগুলো পুড়িয়ে দিয়েছিল, তাই গুদামে ছিল ধান চাল শূন্য। দেশে কোন প্রকার খাদ্য মজুদ না থাকায়, তখন মৌসুমি খাদ্য উৎপাদনের উৎসটিই ছিল খাদ্য সরবরাহের মূল জোগান।

বর্তমানে বিভিন্ন সংবাদ তথ্য থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য মজুদ আছে। এক বা দুই বছরও শস্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে না হলেও দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে না, দেখা যাবে না খাদ্যমন্দাভাব। তারপরও একটি বিষয় লক্ষ্য করা যায় যে, খাদ্যপণ্যের দাম মৌসুম বা অমৌসুমে বেড়ে যায়। তবে মূল উৎপাদক কৃষকেরা কিন্তু কারসাজি করে এই দাম বাড়ায় না। মোট উৎপাদন খরচ প্লাস সরকারি ট্যাক্স এবং উৎপাদকের লাভ যোগ করে উৎপাদক একেকটি পণ্যের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে থাকেন, এটাই হলো পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করার নিয়ম। একজন কৃষকের ধানের দামের ক্ষেত্রে তা হয় না। কিন্তু কৃষককের ধান থেকে যারা চাল উৎপাদন করে মানে চাতাল মালিক তারা মূল্য নির্ধারণের নিয়ম মেনে চালের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে থাকেন। তাই চাল এবং ধানের দামের পার্থক্যটা দেখা যায়।

বর্তমানে ধানের মূল্য মণপ্রতি একহাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হয় ১৪ থেকে ১৬ মণ। একজন বর্গাচাষি এক বিঘা জমিনে ধান চাষ করলে উৎপাদিত ধানের অর্ধেক পায়। একজন বর্গা কৃষকের এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন করতে (সার বীজ ও অন্যান্য উপকরণ বাদে) মোট শ্রম দিবসের প্রয়োজন হয় ১৪-১৭ দিন। প্রতি শ্রম দিবসের একজন শ্রমিকের মজুরি যদি ৫০০ টাকা হয় তাহলে দেখা যায় যে, বর্গাচাষি যে ধান পেলেন তা তার শ্রমিকের মূল্যই পরিশোধ হয় না, অন্য খরচ তো বাকি রইল। প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে বর্গাচাষিদের পোষায় কিভাবে, একজন বর্গাচাষি তার পরিবার-পরিজন নিয়ে এই শ্রমটা বিনিয়োগ করে থাকেন, পূর্ণ দিবস বা অর্ধ দিবস হারে তাই মোট কর্ম দিবসটিও নির্ণয় করা কঠিন। ফলে তার শ্রমের মূল্যটা যথাযথ ভাবে নির্ণয় হয় না।

রাজধানীসহ দেশের শহরগুলোতে কৃষি পণ্যের দাম বেড়ে গছে গত দুই মাসের ব্যবধানে ৩০ শতাংশ। তার কারণ হিসাবে কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে শহরে কৃষিপণ্যের দাম বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে ব্যারল প্রতি হয় গিয়েছিল ৮৪ ডলার। তখন সরকার তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশের বাজারে আর্ন্তজাতিক তেলের বাজারের প্রভাব পড়ে। ডিজেল-কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি বেড়ে গিয়ে হয়ে যায় ৮৫ টাকা। এই দাম বাড়ার কারণে পরিবহন মালিকের ব্যয় বাড়ে, ফলে পরিবহনের মূল্যটা বেড়ে যায়। তাই পাইকাররা গ্রাম থেকে কেনা কৃষি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় শহরের কাঁচাবাজারগুলোতে। গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন নামক করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ে। তা দ্রুত ইউরোপ এবং আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ছে। করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব তেলের বাজরে পড়ে। গত ৪ ডিসেম্বর শনিবার অয়েল প্রাইস ডট কমে দেখা গেছে, ওই দিন বিশ্ব বাজারে ডব্লিউ টিআইর অপরিশোধিত তেলের দাম .০৩৬ শতাংশ অর্থাৎ .০২৪ ডলার কমেছে। ফলে ওই দিন আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেল প্রতি তেলের মূল্য ছিল ৬৬. দশমিক ২৬ ডলার। ওই সময় আন্তর্জাতিক বাজারে বেঞ্চমার্ক ব্র্যান্ডের অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮ ডলারে।

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোাধিত তেলের দাম কমেছে। এ কমার হিসাব অনুযায়ী দেখা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি কমেছে ১৫ থেকে ১৯ ডলার করে। তাহলে বাংলাদেশে তেলের দাম কমার কথা। কিন্তু দেশের বাজারে কেন তেলের দাম কমল না? এর উত্তর পাওয়া যাবে কি? তেলের দাম বাড়ানোর সময় আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যবৃদ্ধিকে মানদন্ড ধরে ডিজেল এবং কেরোসিনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে তাকে হিসাবে নেয়া হয় না। ডিজেল এবং কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। দেশের অভ্যন্তরে সব পণ্যই পরিবহন করা হয়, ট্রাক ও ডিজেল চালিত বিভিন্ন পরিবহনে তাই পণ্যের মূল্যটা নির্ধারণের সময় পরিবহন খরচটা বিবেচনায় নেয়া হয়। সব উৎপাদক পরিবহন খরচ যোগ করে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেন।

তাই দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে হলে ডিজেলের দাম কমাতে হবে। সেই সঙ্গে বর্ধিত পরিবহন বাড়াও প্রজ্ঞাপন জারি করে পুণঃনির্ধারণ করার প্রয়োজন। তাহলে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরা যাবে।

[ লেখক : উন্নয়নকর্মী ]