জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ : প্রাণের খোঁজে মহাকাশে

শঙ্কর প্রসাদ দে

গ্যালিলিওর আবিষ্কৃত টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশে চোখ রেখে মানব জাতি বিষ্ময়ে হতবাক। দেখা গেল কোর্পানিকাসের কথাই সঠিক। সূর্যকে ঘিরে পৃথিবী, বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি, ইউরেনাস, নেপচুন ঘুরেই চলেছে। দেড় হাজার বছর ধরে মানুষ টলেমির বক্তব্যকে সঠিক মনে করে আবর্তিত হয়েছে। টলেমি বলেছিলেন, পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্যসহ সব গ্রহ উপগ্রহ ঘুরে।

যাই হোক মানুষ সিদ্ধান্তে এলো আমরা যে পৃথিবীতে জন্মেছি, সেটি সূর্যকেন্দ্রিক সৌর জগতের ঘূর্ণায়মান একটি গ্রহ মাত্র। চাঁদ পৃথিবীর একটি উপগ্রহ, সেটি পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে। জ্যোতির্বিদরা গ্যালিলিওর টেলিস্কোপে চোখ রেখে সুবিধা করতে পারছিলেন না। পুকুরের জলের ভেতরে ক্যামেরা দিয়ে ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগ যেমন ঝাপসা দেখা যায় তেমিন পৃথিবীর উপরি-ভাগের গ্যাসীয় আস্তরণের জন্য মহাকাশকে ঠিক পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল না। এবার প্রস্তাব এলো টেলিস্কোপ পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করা গেলে ঝাপসা দেখার সমস্যা অনেকটাই চুকে যায়। যেমন ভাবনা তেমন কাজ।

২৪ এপ্রিল ১৯৯০, প্রেরিত হলো একটি আধুনিক টেলিস্কোপ, স্থাপন করা হলো ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৫৫৯ কিমি. উপরের কক্ষপথে। মার্কিন আইনজীবী ও জ্যোতির্বিদ এডুউইন হাবলের নামে নামকরণ করা হলো হাবল টেলিস্কোপ। ছবি আসতে লাগল একেবারে ঝকঝকে তকতকে। ততদিনে আবিষ্কৃত হয়ে গেছে ইনফ্রারেড বা অবলোহিত রশ্মি (যতই এই রশ্মি দূরের পথ অতিক্রম করবে ততই লাল আকার নেয়)। হাবল টেলিস্কোপে ধরা পড়া অবলোহিত রশ্মিকে অঙ্ক কষে দেখা গেল ব্রহ্মা- সৃষ্টি হয়েছে ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে অর্থাৎ ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে বিগ ব্যাং বা প্রচন্ড বিস্ফোরণের মাধ্যমে ব্রহ্মান্ডের সৃষ্ঠি। আমাদের পৃথিবী বা সৌরজগৎ মিল্কিওয়ে নামক ছায়াপথের একটি অংশ মাত্র। ব্রহ্মান্ডে কত হাজার বা কত লাখ ছায়াপথ আছে তা এখনো অজানা রহস্য মাত্র। এবার প্রশ্ন এলো বিগ ব্যাং হওয়ার পর থেকে, কোন প্রক্রিয়ায় গ্রহ তারা নক্ষত্র বা ছায়াপথগুলো সৃষ্টি হলো। দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, ব্রহ্মান্ডের অন্য কোন গ্রহে বা অন্য কোন ছায়াপথের কোন গ্রহে প্রাণ আছে কিনা, মানুষ আছে কিনা? মানুষের মতো উন্নত কোন প্রজাতি আছে কিনা? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য চাই ব্রহ্মান্ডের বহু বহু দূরবর্তী ছায়াপথগুলো পর্যবেক্ষণ। এমনিতে হাবল টেলিস্কোপের আয়ুষ্কাল ৩০ বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। সম্প্রতি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর কিছু ফাংশন বন্ধ করে দিয়ে বিজ্ঞানীরা সেটিকে আবার চালু করে দিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, হাবল টেলিস্কোপ বড়জোর ২০২৫ সাল অবধি কর্মক্ষম থাকবে।

এ হিসাব মাথায় রেখে বিজ্ঞানীরা আরও একটি উন্নত টেলিস্কোপ প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হলেন। টাকার অভাব কখনোই হয়নি। কারণ উচ্চাভিলাষী এই প্রকল্পে নাসার সঙ্গে যুক্ত হয় ইউরোপীয় স্পেস অর্গানাইজেশন ও কানাডীয় মহাকাশ সংস্থা। দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে এই অত্যাধুনিক টেলিস্কোপটি তৈরী করতে ঝরেছে কত ঘাম। কত বিনিদ্র রজনী পার করেছেন প্রযুক্তিবিদ ও বিজ্ঞানীরা তার হিসাব নেই। মোদ্দা হিসাব হলো এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন এক হাজারের মতো বিশে^র মেধাবী কর্মী। মহতি এই কর্মযজ্ঞে বাংলাদেশের একজনের নাম আছে। পিএইচডি থিসিস করেছেন নাসাতেই স্পেস টেকনোলজির ওপর। ৫ বছর ধরে তিনি এ প্রকল্পে যুক্ত থেকে বিজ্ঞানের ইতিহাসে ঢুকে গেলেন।

হাবল টেলিস্কোপের কাচের আয়তন ছিল ৬.৫ ফুট। বর্তমান টেলিস্কোপটি আয়তনে ৩ গুণ বড় অর্থাৎ ২১ ফুট। কিন্তু কর্মক্ষমতায় দিক থেকে হাবলের চেয়ে শতগুণ শক্তিশালী। ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যে ৬টায় উৎক্ষেপিত হলো। চন্দ্রাভিযানের অ্যাপোলো মিশন পরিচালক জেমস এর সম্মানার্থে বিস্ময়কর এই দূরবীণের নাম রাখা হয়েছে, জেমস ওয়েভ টেলিস্কোপ। ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এটি স্থাপিত হবে ‘এল-২’ কক্ষপথে। এজন্য এটি কম´ হতে ২৯ দিন অপেক্ষা করতে হবে। অবারিত হবে ব্রহ্মান্ডের অনন্ত জগৎ।

আমরা এখনো সৌরজগতের রহস্যও ভেদ করতে পারিনি। গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সি ক্লাস্টার, প্যারালাল ব্রহ্মান্ড, ব্ল্যাক হোল, হোয়াইট হোল তো অনেক অনেক দূরবর্তী অজানা রহস্য ভান্ডার। এসব মহাজাগতিক অবজেক্টের পরিচয় পেতে হলে কত নতুন নতুন তথ্য ও ফর্মুলার আবির্ভাব হবে তা শুধু কল্পনাই করা যায়। আইনস্টাইন মনে করতেন আলোর চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন কোন বস্তুর অস্তিত্ব অসম্ভব। অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা জেমস ওয়েভ টেলিস্কোপ পদার্থ বিদ্যার এতদিনকার বহু সূত্র পাল্টে দেয়ার সম্ভাবনা আছে। এমনকি আলোর চেয়ে দ্রুতগতির কোন বস্তু আবিষ্কৃত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।

সে যাই হোক, গোটা পৃথিবীর বিজ্ঞানজগৎ মুখিয়ে আছে জেমস ওয়েভ কেমন তথ্য পাঠায় তা দেখার জন্য। অবলোহিত বা ইনফ্রারেড রশ্মির উৎসের দিকে দৌড়াতে দৌড়াতে জেমস ওয়েভের দৃষ্টি যদি ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগের বিগব্যাং পরবর্তী মুহূর্তগুলো ধরে ফেলতে পারে- তবে সত্যি সত্যি সৃষ্টি রহস্যের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে মানব সভ্যতা। বিজ্ঞানীদের ধারণা বিগব্যাং পরবর্তী মুহূর্তগুলোর অনেক গ্রহণযোগ্য উত্তর পাওয়া যাবেই। তবে ব্রহ্মান্ডের অন্যত্র প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা- প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে লেগে যেতে পারে আরও বহু সময়। জেমস ওয়েভ টেলিস্কোপের আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ৫ থেকে ১০ বছর। সুতরাং ধরে নেয়া যায় জেমসের জীবৎকালে প্রাণের সন্ধান নাও মিলতে পারে। তবে টেলিস্কোপটি এমন সব নতুন অনেক তথ্য হাজির করার সম্ভাবনা আছে যা মানবজাতিকে এক লাফে এগিয়ে নেবে কয়েকশ বছর। যেমনটি নিয়েছিল গ্যালিলিওর দূরবীণ।

[লেখক : আইনজীবী ]

শুক্রবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২২ , ২৩ পৌষ ১৪২৮ ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ : প্রাণের খোঁজে মহাকাশে

শঙ্কর প্রসাদ দে

image

গ্যালিলিওর আবিষ্কৃত টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশে চোখ রেখে মানব জাতি বিষ্ময়ে হতবাক। দেখা গেল কোর্পানিকাসের কথাই সঠিক। সূর্যকে ঘিরে পৃথিবী, বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি, ইউরেনাস, নেপচুন ঘুরেই চলেছে। দেড় হাজার বছর ধরে মানুষ টলেমির বক্তব্যকে সঠিক মনে করে আবর্তিত হয়েছে। টলেমি বলেছিলেন, পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্যসহ সব গ্রহ উপগ্রহ ঘুরে।

যাই হোক মানুষ সিদ্ধান্তে এলো আমরা যে পৃথিবীতে জন্মেছি, সেটি সূর্যকেন্দ্রিক সৌর জগতের ঘূর্ণায়মান একটি গ্রহ মাত্র। চাঁদ পৃথিবীর একটি উপগ্রহ, সেটি পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে। জ্যোতির্বিদরা গ্যালিলিওর টেলিস্কোপে চোখ রেখে সুবিধা করতে পারছিলেন না। পুকুরের জলের ভেতরে ক্যামেরা দিয়ে ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগ যেমন ঝাপসা দেখা যায় তেমিন পৃথিবীর উপরি-ভাগের গ্যাসীয় আস্তরণের জন্য মহাকাশকে ঠিক পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল না। এবার প্রস্তাব এলো টেলিস্কোপ পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করা গেলে ঝাপসা দেখার সমস্যা অনেকটাই চুকে যায়। যেমন ভাবনা তেমন কাজ।

২৪ এপ্রিল ১৯৯০, প্রেরিত হলো একটি আধুনিক টেলিস্কোপ, স্থাপন করা হলো ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৫৫৯ কিমি. উপরের কক্ষপথে। মার্কিন আইনজীবী ও জ্যোতির্বিদ এডুউইন হাবলের নামে নামকরণ করা হলো হাবল টেলিস্কোপ। ছবি আসতে লাগল একেবারে ঝকঝকে তকতকে। ততদিনে আবিষ্কৃত হয়ে গেছে ইনফ্রারেড বা অবলোহিত রশ্মি (যতই এই রশ্মি দূরের পথ অতিক্রম করবে ততই লাল আকার নেয়)। হাবল টেলিস্কোপে ধরা পড়া অবলোহিত রশ্মিকে অঙ্ক কষে দেখা গেল ব্রহ্মা- সৃষ্টি হয়েছে ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে অর্থাৎ ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে বিগ ব্যাং বা প্রচন্ড বিস্ফোরণের মাধ্যমে ব্রহ্মান্ডের সৃষ্ঠি। আমাদের পৃথিবী বা সৌরজগৎ মিল্কিওয়ে নামক ছায়াপথের একটি অংশ মাত্র। ব্রহ্মান্ডে কত হাজার বা কত লাখ ছায়াপথ আছে তা এখনো অজানা রহস্য মাত্র। এবার প্রশ্ন এলো বিগ ব্যাং হওয়ার পর থেকে, কোন প্রক্রিয়ায় গ্রহ তারা নক্ষত্র বা ছায়াপথগুলো সৃষ্টি হলো। দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, ব্রহ্মান্ডের অন্য কোন গ্রহে বা অন্য কোন ছায়াপথের কোন গ্রহে প্রাণ আছে কিনা, মানুষ আছে কিনা? মানুষের মতো উন্নত কোন প্রজাতি আছে কিনা? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য চাই ব্রহ্মান্ডের বহু বহু দূরবর্তী ছায়াপথগুলো পর্যবেক্ষণ। এমনিতে হাবল টেলিস্কোপের আয়ুষ্কাল ৩০ বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। সম্প্রতি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর কিছু ফাংশন বন্ধ করে দিয়ে বিজ্ঞানীরা সেটিকে আবার চালু করে দিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, হাবল টেলিস্কোপ বড়জোর ২০২৫ সাল অবধি কর্মক্ষম থাকবে।

এ হিসাব মাথায় রেখে বিজ্ঞানীরা আরও একটি উন্নত টেলিস্কোপ প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হলেন। টাকার অভাব কখনোই হয়নি। কারণ উচ্চাভিলাষী এই প্রকল্পে নাসার সঙ্গে যুক্ত হয় ইউরোপীয় স্পেস অর্গানাইজেশন ও কানাডীয় মহাকাশ সংস্থা। দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে এই অত্যাধুনিক টেলিস্কোপটি তৈরী করতে ঝরেছে কত ঘাম। কত বিনিদ্র রজনী পার করেছেন প্রযুক্তিবিদ ও বিজ্ঞানীরা তার হিসাব নেই। মোদ্দা হিসাব হলো এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন এক হাজারের মতো বিশে^র মেধাবী কর্মী। মহতি এই কর্মযজ্ঞে বাংলাদেশের একজনের নাম আছে। পিএইচডি থিসিস করেছেন নাসাতেই স্পেস টেকনোলজির ওপর। ৫ বছর ধরে তিনি এ প্রকল্পে যুক্ত থেকে বিজ্ঞানের ইতিহাসে ঢুকে গেলেন।

হাবল টেলিস্কোপের কাচের আয়তন ছিল ৬.৫ ফুট। বর্তমান টেলিস্কোপটি আয়তনে ৩ গুণ বড় অর্থাৎ ২১ ফুট। কিন্তু কর্মক্ষমতায় দিক থেকে হাবলের চেয়ে শতগুণ শক্তিশালী। ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যে ৬টায় উৎক্ষেপিত হলো। চন্দ্রাভিযানের অ্যাপোলো মিশন পরিচালক জেমস এর সম্মানার্থে বিস্ময়কর এই দূরবীণের নাম রাখা হয়েছে, জেমস ওয়েভ টেলিস্কোপ। ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এটি স্থাপিত হবে ‘এল-২’ কক্ষপথে। এজন্য এটি কম´ হতে ২৯ দিন অপেক্ষা করতে হবে। অবারিত হবে ব্রহ্মান্ডের অনন্ত জগৎ।

আমরা এখনো সৌরজগতের রহস্যও ভেদ করতে পারিনি। গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সি ক্লাস্টার, প্যারালাল ব্রহ্মান্ড, ব্ল্যাক হোল, হোয়াইট হোল তো অনেক অনেক দূরবর্তী অজানা রহস্য ভান্ডার। এসব মহাজাগতিক অবজেক্টের পরিচয় পেতে হলে কত নতুন নতুন তথ্য ও ফর্মুলার আবির্ভাব হবে তা শুধু কল্পনাই করা যায়। আইনস্টাইন মনে করতেন আলোর চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন কোন বস্তুর অস্তিত্ব অসম্ভব। অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা জেমস ওয়েভ টেলিস্কোপ পদার্থ বিদ্যার এতদিনকার বহু সূত্র পাল্টে দেয়ার সম্ভাবনা আছে। এমনকি আলোর চেয়ে দ্রুতগতির কোন বস্তু আবিষ্কৃত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।

সে যাই হোক, গোটা পৃথিবীর বিজ্ঞানজগৎ মুখিয়ে আছে জেমস ওয়েভ কেমন তথ্য পাঠায় তা দেখার জন্য। অবলোহিত বা ইনফ্রারেড রশ্মির উৎসের দিকে দৌড়াতে দৌড়াতে জেমস ওয়েভের দৃষ্টি যদি ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগের বিগব্যাং পরবর্তী মুহূর্তগুলো ধরে ফেলতে পারে- তবে সত্যি সত্যি সৃষ্টি রহস্যের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে মানব সভ্যতা। বিজ্ঞানীদের ধারণা বিগব্যাং পরবর্তী মুহূর্তগুলোর অনেক গ্রহণযোগ্য উত্তর পাওয়া যাবেই। তবে ব্রহ্মান্ডের অন্যত্র প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা- প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে লেগে যেতে পারে আরও বহু সময়। জেমস ওয়েভ টেলিস্কোপের আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ৫ থেকে ১০ বছর। সুতরাং ধরে নেয়া যায় জেমসের জীবৎকালে প্রাণের সন্ধান নাও মিলতে পারে। তবে টেলিস্কোপটি এমন সব নতুন অনেক তথ্য হাজির করার সম্ভাবনা আছে যা মানবজাতিকে এক লাফে এগিয়ে নেবে কয়েকশ বছর। যেমনটি নিয়েছিল গ্যালিলিওর দূরবীণ।

[লেখক : আইনজীবী ]