বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে ব্যবসা খরচ ৫ শতাংশ কমবে : জসিম

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো গেলে দেশে ব্যবসা করার খরচ বর্তমানের তুলনায় অন্তত ৫ শতাংশ কমবে বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। গত বৃহস্পতিবার পোর্টস অ্যান্ড শিপিং বিষয়ক এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হলে, বিদেশি উদ্যোক্তাদেরও এদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়বে। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরসহ দেশের অন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কয়েক গুণ বাড়বে। এখনই বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী যানের গতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। এই গতি দ্বিগুণ করা গেলে রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ৬ শতাংশ বাড়বে।’

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা রাসায়নিক খালাসের আগে আলাদাভাবে পরীক্ষা করাতে হয়। অথচ, চট্টগ্রাম কাস্টমসে পর্যাপ্ত পরীক্ষাগার নেই। এ পরীক্ষা করাতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগে। বন্দর সংক্রান্ত এসব সমস্যা সমাধানে ত্বরিৎ পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।’

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন এ পরিস্থিতির উত্তরণে বন্দরকেন্দ্রিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান বের করতে সংগঠনের স্ট্যান্ডিং কমিটিকেও তাগিদ দেন।

সভায় এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ‘ভবিষ্যতে আরও কিছু বন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে। পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে পারলে, এসব বন্দরের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে দেশের অগ্রগতিকে আরও ত্বরান্বিত করা যাবে।’

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি করলে মংলা বন্দরের তুলনায় দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হয় বলে অভিযোগ করেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. হাবীব উল্লাহ ডন। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন বন্দরে ভিন্ন ভিন্ন ভাড়ার হার অযৌক্তিক।’

গত কয়েক বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের মুনাফা কয়েক গুণ বেড়েছে জানিয়ে সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ এএম মাহবুব চৌধুরী বলেন, ‘অলাভজনক সেবামূলক সংস্থা হয়েও, মুনাফার পরিমান বাড়াতে আবারও ট্যারিফ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।’

ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ট্যারিফ না বাড়ানোর আহ্বান জানান কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. পারভেজ সাজ্জাদ আকতার। তিনি জানান, বেশিরভাগ ট্যারিফ ডলারে পরিশোধ করতে হয়। তাই ট্যারিফ বাড়লে, বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়ও বাড়বে। তাছাড়া বিদেশি জাহাজ মালিকরাও এ সুযোগে ভাড়া বাড়িয়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়ার শঙ্কা তৈরি হবে।

মুক্ত আলোচনায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের গতি বাড়াতে বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সহযোগিতা আশা করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা।

শনিবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২২ , ২৪ পৌষ ১৪২৮ ৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে ব্যবসা খরচ ৫ শতাংশ কমবে : জসিম

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো গেলে দেশে ব্যবসা করার খরচ বর্তমানের তুলনায় অন্তত ৫ শতাংশ কমবে বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। গত বৃহস্পতিবার পোর্টস অ্যান্ড শিপিং বিষয়ক এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হলে, বিদেশি উদ্যোক্তাদেরও এদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়বে। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরসহ দেশের অন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কয়েক গুণ বাড়বে। এখনই বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী যানের গতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। এই গতি দ্বিগুণ করা গেলে রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ৬ শতাংশ বাড়বে।’

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা রাসায়নিক খালাসের আগে আলাদাভাবে পরীক্ষা করাতে হয়। অথচ, চট্টগ্রাম কাস্টমসে পর্যাপ্ত পরীক্ষাগার নেই। এ পরীক্ষা করাতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগে। বন্দর সংক্রান্ত এসব সমস্যা সমাধানে ত্বরিৎ পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।’

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন এ পরিস্থিতির উত্তরণে বন্দরকেন্দ্রিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান বের করতে সংগঠনের স্ট্যান্ডিং কমিটিকেও তাগিদ দেন।

সভায় এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ‘ভবিষ্যতে আরও কিছু বন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে। পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে পারলে, এসব বন্দরের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে দেশের অগ্রগতিকে আরও ত্বরান্বিত করা যাবে।’

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি করলে মংলা বন্দরের তুলনায় দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হয় বলে অভিযোগ করেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. হাবীব উল্লাহ ডন। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন বন্দরে ভিন্ন ভিন্ন ভাড়ার হার অযৌক্তিক।’

গত কয়েক বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের মুনাফা কয়েক গুণ বেড়েছে জানিয়ে সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ এএম মাহবুব চৌধুরী বলেন, ‘অলাভজনক সেবামূলক সংস্থা হয়েও, মুনাফার পরিমান বাড়াতে আবারও ট্যারিফ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।’

ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ট্যারিফ না বাড়ানোর আহ্বান জানান কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. পারভেজ সাজ্জাদ আকতার। তিনি জানান, বেশিরভাগ ট্যারিফ ডলারে পরিশোধ করতে হয়। তাই ট্যারিফ বাড়লে, বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়ও বাড়বে। তাছাড়া বিদেশি জাহাজ মালিকরাও এ সুযোগে ভাড়া বাড়িয়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়ার শঙ্কা তৈরি হবে।

মুক্ত আলোচনায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের গতি বাড়াতে বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সহযোগিতা আশা করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা।