ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুই গারো কিশোরী গণধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি বখাটে সোলায়মান হোসেন রিয়াদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাবার নাম আবদুল মান্নান। সে হালুয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর সে বিভিন্ন মালবাহী ট্রাকে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছিল। এরপর গফরগাঁওয়ে গিয়ে আত্মগোপনে থাকে। তার বাবা সাবেক ইউপি মেম্বার। এ নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় ছয় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলো, শরীফ মিয়া, মিজানুর রহমান, মিয়া হোসেন, আবদুল হামিদ ও রোকন মিয়া। র্যাব মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদকে জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত সোলায়মান হোসেন রিয়াদ এলাকার চিহ্নিত বখাটে হিসেবে পরিচিত। তার পিতা এলাকার সাবেক মেম্বার। এলাকায় রিয়াদের ১০ থেকে ১৩ সদস্যের বখাটে গ্রুপ রয়েছে। রিয়াদ বাহিনীর অত্যাচারে এলাকার স্কুলপড়ুয়া মেয়েরা অতিষ্ঠ।
তাদের বিরুদ্ধে স্কুলে যাওয়া আসার সময় গারো মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার বহু অভিযোগ রয়েছে। রিয়াদের বিরুদ্ধে হালুয়াঘাটে মাদক চোরাচালানির বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাও রয়েছে। ইতোমধ্যে সে গ্রেপ্তার হয়ে জেলেও গেছে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবার এলাকায় ধর্ষণ, ছিনতাই, সন্ত্রাস মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল।
ঘটনার দিন দুই গারো কিশোরী গণধর্ষনের শিকার হলেও ১০ বছরের এক কিশোরী পালিয়ে কোনমতে পার পেয়েছেন। বখাটে রিয়াদ গ্রুপের হাতে আরও একাধিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহসও পায়নি। অভিযোগ করলে এলাকা ছাড়া করা হবে, এমনকি পরিবারের ওপর নির্যাতন করা হবে বলে হুমকি দিত। যার কারণে রিয়াদ বাহিনীর অত্যাচারের কথা এলাকাবাসীর মুখে মুখে। রিয়াদের বখাটে বাহিনীর পলাতকদের ধরতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।
আমাদের ময়মনসিংহ জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, হালুয়াঘাটের গারো সম্প্রদায়ের দুই কিশোরী ছাত্রী গণধর্ষণের মামলায় গতকাল পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব মিলে মোট ছয় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে হালুয়াঘাটে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্ত রিয়াদ ও তার বখাটে গ্রুপ রাতে তাদের গতিরোধ করে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিল। লোকলজ্জা ও হুমকির ভয়ে তারা প্রথম দিকে ঘটনা গোপন রাখে। অবশেষে গত ৩০ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে নির্যাতিত কিশোরীদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
ঘটনার পর দুই কিশোরী লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পরিবার তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে। এর আগেও বখাটে রিয়াদের বিরুদ্বে ধর্ষণ ও নির্যাতন, ইভটিজিংসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বাবা মেম্বার ও প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় আগেও এ ধরনের ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেয়ার সুযোগ না দিয়ে হুমকি দিয়ে গ্রামেই মীমাংসা করে দিত।
এখনো গারো সম্প্রদায়ের মধ্যে রিয়াদ বাহিনী আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকায় র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে। তারা গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে অন্যদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে।
রবিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২২ , ২৫ পৌষ ১৪২৮ ৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, জেলা বার্তা পরিবেশক, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুই গারো কিশোরী গণধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি বখাটে সোলায়মান হোসেন রিয়াদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাবার নাম আবদুল মান্নান। সে হালুয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর সে বিভিন্ন মালবাহী ট্রাকে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছিল। এরপর গফরগাঁওয়ে গিয়ে আত্মগোপনে থাকে। তার বাবা সাবেক ইউপি মেম্বার। এ নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় ছয় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলো, শরীফ মিয়া, মিজানুর রহমান, মিয়া হোসেন, আবদুল হামিদ ও রোকন মিয়া। র্যাব মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদকে জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত সোলায়মান হোসেন রিয়াদ এলাকার চিহ্নিত বখাটে হিসেবে পরিচিত। তার পিতা এলাকার সাবেক মেম্বার। এলাকায় রিয়াদের ১০ থেকে ১৩ সদস্যের বখাটে গ্রুপ রয়েছে। রিয়াদ বাহিনীর অত্যাচারে এলাকার স্কুলপড়ুয়া মেয়েরা অতিষ্ঠ।
তাদের বিরুদ্ধে স্কুলে যাওয়া আসার সময় গারো মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার বহু অভিযোগ রয়েছে। রিয়াদের বিরুদ্ধে হালুয়াঘাটে মাদক চোরাচালানির বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাও রয়েছে। ইতোমধ্যে সে গ্রেপ্তার হয়ে জেলেও গেছে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবার এলাকায় ধর্ষণ, ছিনতাই, সন্ত্রাস মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল।
ঘটনার দিন দুই গারো কিশোরী গণধর্ষনের শিকার হলেও ১০ বছরের এক কিশোরী পালিয়ে কোনমতে পার পেয়েছেন। বখাটে রিয়াদ গ্রুপের হাতে আরও একাধিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহসও পায়নি। অভিযোগ করলে এলাকা ছাড়া করা হবে, এমনকি পরিবারের ওপর নির্যাতন করা হবে বলে হুমকি দিত। যার কারণে রিয়াদ বাহিনীর অত্যাচারের কথা এলাকাবাসীর মুখে মুখে। রিয়াদের বখাটে বাহিনীর পলাতকদের ধরতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।
আমাদের ময়মনসিংহ জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, হালুয়াঘাটের গারো সম্প্রদায়ের দুই কিশোরী ছাত্রী গণধর্ষণের মামলায় গতকাল পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব মিলে মোট ছয় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে হালুয়াঘাটে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্ত রিয়াদ ও তার বখাটে গ্রুপ রাতে তাদের গতিরোধ করে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিল। লোকলজ্জা ও হুমকির ভয়ে তারা প্রথম দিকে ঘটনা গোপন রাখে। অবশেষে গত ৩০ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে নির্যাতিত কিশোরীদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
ঘটনার পর দুই কিশোরী লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পরিবার তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে। এর আগেও বখাটে রিয়াদের বিরুদ্বে ধর্ষণ ও নির্যাতন, ইভটিজিংসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বাবা মেম্বার ও প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় আগেও এ ধরনের ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেয়ার সুযোগ না দিয়ে হুমকি দিয়ে গ্রামেই মীমাংসা করে দিত।
এখনো গারো সম্প্রদায়ের মধ্যে রিয়াদ বাহিনী আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকায় র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে। তারা গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে অন্যদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে।