শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত নিউমোনিয়ায়
তীব্র শীতে সারা দেশে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণসহ শীতজনিত রোগে এক লাখ ৯ হাজার ৫১৯ জন আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল পর্যন্ত মারা গেছেন ১৬ জন। দেশের ৬৪ জেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। হাসপাতালের বেডেও ঠাঁই নেই। তাই বহিঃবিভাগে অনেক রোগী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বর, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি অবনতি হচ্ছে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আবার অনেকেই চিকিৎসকের গাইডলাইন নিয়ে বাসা-বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, এ শীত মৌসুমে শুধু শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৯ হাজার ৪১ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৬ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৭৯ জন। শীতজনিত অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ৫০ হাজার ৩৯৯ জন।
অন্যদিকে বিভাগভিত্তিক আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে দুই হাজার ৩৪৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে এক হাজার ৫২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে সাত হাজার ৬০১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৬৫ জন, রংপুরে ৫২২ জন, খুলনা বিভাগে তিন হাজার ৮৬৮ জন, বরিশাল বিভাগে ৪১১ জন, সিলেটে দুই হাজার ১৯৩ জন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ১ নভেম্বর থেকে গতকাল ৯ জানুয়ারি দেশের ৬৪ জেলায় খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য পোলেও বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (একাডেমি) রেসপিরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন সংবাদকে জানান, শীত মৌসুমে শিশু ও বয়স্কদের শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ বেশি হয়। এটাকে নিউমোনিয়া বলা হয়। কেউ শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনে আক্রান্ত হলে তার কোভিড-১৯ টেস্ট করা দরকার। এই সময় শীতজনিত রোগ থেকে বাঁচতে শিশু ও বয়স্কদের গরম জামা কাপড় পরতে হবে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় ঘরেই থাকতে হবে। গরম পানি পান করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক (আরপি) ডা. মোজাম্মেল হক সংবাদকে বলেন, শীতে শিশুরা নিউমোনিয়া, ভাইরাল নিউমোনিয়াসহ নানাভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে বহিঃবিভাগে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত সিট না থাকায় চিকিৎসা প্রেসক্রিপশন দেয়া হচ্ছে। এ বিশেষজ্ঞের মতে, শিশুদেরকে ঠাণ্ডা ও কুয়াশা যাতে না লাগে তার থেকে দূরে রাখতে হবে। দরকার হলে শিশু বিশেষজ্ঞ বা হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে হবে।
সোমবার, ১০ জানুয়ারী ২০২২ , ২৬ পৌষ ১৪২৮ ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৩
শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত নিউমোনিয়ায়
বাকী বিল্লাহ
তীব্র শীতে সারা দেশে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণসহ শীতজনিত রোগে এক লাখ ৯ হাজার ৫১৯ জন আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল পর্যন্ত মারা গেছেন ১৬ জন। দেশের ৬৪ জেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। হাসপাতালের বেডেও ঠাঁই নেই। তাই বহিঃবিভাগে অনেক রোগী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বর, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি অবনতি হচ্ছে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আবার অনেকেই চিকিৎসকের গাইডলাইন নিয়ে বাসা-বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, এ শীত মৌসুমে শুধু শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৯ হাজার ৪১ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৬ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৭৯ জন। শীতজনিত অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ৫০ হাজার ৩৯৯ জন।
অন্যদিকে বিভাগভিত্তিক আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে দুই হাজার ৩৪৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে এক হাজার ৫২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে সাত হাজার ৬০১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৬৫ জন, রংপুরে ৫২২ জন, খুলনা বিভাগে তিন হাজার ৮৬৮ জন, বরিশাল বিভাগে ৪১১ জন, সিলেটে দুই হাজার ১৯৩ জন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ১ নভেম্বর থেকে গতকাল ৯ জানুয়ারি দেশের ৬৪ জেলায় খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য পোলেও বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (একাডেমি) রেসপিরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন সংবাদকে জানান, শীত মৌসুমে শিশু ও বয়স্কদের শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ বেশি হয়। এটাকে নিউমোনিয়া বলা হয়। কেউ শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনে আক্রান্ত হলে তার কোভিড-১৯ টেস্ট করা দরকার। এই সময় শীতজনিত রোগ থেকে বাঁচতে শিশু ও বয়স্কদের গরম জামা কাপড় পরতে হবে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় ঘরেই থাকতে হবে। গরম পানি পান করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক (আরপি) ডা. মোজাম্মেল হক সংবাদকে বলেন, শীতে শিশুরা নিউমোনিয়া, ভাইরাল নিউমোনিয়াসহ নানাভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে বহিঃবিভাগে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত সিট না থাকায় চিকিৎসা প্রেসক্রিপশন দেয়া হচ্ছে। এ বিশেষজ্ঞের মতে, শিশুদেরকে ঠাণ্ডা ও কুয়াশা যাতে না লাগে তার থেকে দূরে রাখতে হবে। দরকার হলে শিশু বিশেষজ্ঞ বা হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে হবে।