তদন্ত কমিটি গঠন
নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি লংঘন করে বরিশাল জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার রাতে কালেক্টরেট সহকারী সমিতির নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ে সদস্যদের নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিনের পক্ষে ভোট চেয়ে সভা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটিকে আগামী দুই দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত থাকা কালেক্টরেট সহকারী সমিতির একাধিক সদস্য জানান, সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে সংগঠনের নোয়াখালীর সদস্যদের ব্রিফিং করেন, বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলএ শাখার উচ্চমান সহকারী ও বরিশাল কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সভাপতি মাহফুজুর রহমান। এ সময় তার সঙ্গে বরিশাল জেলা প্রশাসকের চতুর্থ শ্রেণীর চার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
মাহফুজুর রহমান নোয়াখালী পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী লেলিনের পক্ষে ভোট করার জন্য নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের কর্মচারীদের আহ্বান জানিয়ে কিভাবে প্রচারণা করবে তার দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। কারণ ষষ্ঠ প্রার্থী বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীমউদ্দীন হায়দারের ছোট ভাই।
সূত্র আরও জানায়, বরিশাল জেলা প্রশাসনের উচ্চমান সহকারীসহ চার সদস্যের ওই প্রতিনিধি দল সোমবার দুপুর ২টায় নোয়াখালী আসেন। তারা ওইদিন সন্ধ্যায় নোয়াখালী কালেক্টরেট সহকারী সমিতির বৈঠক করে জেলা সার্কিট হাউসে রাত যাপন করেন। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারীদের বাসায় বাসায় গিয়ে ভোটের প্রচারণায় অংশ নেয়ার কথা ছিল তাদের পরিকল্পনায়।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলএ শাখার উচ্চমান সহকারী মাহফুজুর রহমান বলেন, মূলত ১৫ তারিখে আমাদের একটা মিটিং আছে। আমাদের সাংগঠনিক বিষয়ে সে বিষয়ে নোয়াখালীতে বসেছিলাম। এখানে যেহেতু নির্বাচন চলে, নির্বাচন হচ্ছে নোয়াখালীতে, আমাদের কথায় কেউ ভোট দেবেনও না আর আমাদের কোন আত্মীয়-স্বজনও নেই।
গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজিমুল হায়দার বলেন, আমি ও সদর উপজেলার নির্বাহী কমকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাফিজুল হক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমৃত দেবনাথসহ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, এ বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে একটা তদন্ত কমিটি করেছি আজ। দুই দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। যারা যারা জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার কল করে ও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে মোবাইল প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিন। তিনি বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার নিপুর ছোট ভাই। ১৬ জানুয়ারি নোয়াখালী পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল। এ ছাড়া বিএনপি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কিরণ কম্পিউটার (স্বতন্ত্র), শহর বিএনপির সভাপতি আবু নাছের নারিকেল গাছ প্রতীকসহ (স্বতন্ত্র) মেয়র পদে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বুধবার, ১২ জানুয়ারী ২০২২ , ২৮ পৌষ ১৪২৮ ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৩
তদন্ত কমিটি গঠন
প্রতিনিধি, নোয়াখালী
নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি লংঘন করে বরিশাল জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার রাতে কালেক্টরেট সহকারী সমিতির নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ে সদস্যদের নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিনের পক্ষে ভোট চেয়ে সভা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটিকে আগামী দুই দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত থাকা কালেক্টরেট সহকারী সমিতির একাধিক সদস্য জানান, সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে সংগঠনের নোয়াখালীর সদস্যদের ব্রিফিং করেন, বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলএ শাখার উচ্চমান সহকারী ও বরিশাল কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সভাপতি মাহফুজুর রহমান। এ সময় তার সঙ্গে বরিশাল জেলা প্রশাসকের চতুর্থ শ্রেণীর চার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
মাহফুজুর রহমান নোয়াখালী পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী লেলিনের পক্ষে ভোট করার জন্য নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের কর্মচারীদের আহ্বান জানিয়ে কিভাবে প্রচারণা করবে তার দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। কারণ ষষ্ঠ প্রার্থী বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীমউদ্দীন হায়দারের ছোট ভাই।
সূত্র আরও জানায়, বরিশাল জেলা প্রশাসনের উচ্চমান সহকারীসহ চার সদস্যের ওই প্রতিনিধি দল সোমবার দুপুর ২টায় নোয়াখালী আসেন। তারা ওইদিন সন্ধ্যায় নোয়াখালী কালেক্টরেট সহকারী সমিতির বৈঠক করে জেলা সার্কিট হাউসে রাত যাপন করেন। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারীদের বাসায় বাসায় গিয়ে ভোটের প্রচারণায় অংশ নেয়ার কথা ছিল তাদের পরিকল্পনায়।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলএ শাখার উচ্চমান সহকারী মাহফুজুর রহমান বলেন, মূলত ১৫ তারিখে আমাদের একটা মিটিং আছে। আমাদের সাংগঠনিক বিষয়ে সে বিষয়ে নোয়াখালীতে বসেছিলাম। এখানে যেহেতু নির্বাচন চলে, নির্বাচন হচ্ছে নোয়াখালীতে, আমাদের কথায় কেউ ভোট দেবেনও না আর আমাদের কোন আত্মীয়-স্বজনও নেই।
গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজিমুল হায়দার বলেন, আমি ও সদর উপজেলার নির্বাহী কমকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাফিজুল হক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমৃত দেবনাথসহ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, এ বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে একটা তদন্ত কমিটি করেছি আজ। দুই দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। যারা যারা জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার কল করে ও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে মোবাইল প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিন। তিনি বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার নিপুর ছোট ভাই। ১৬ জানুয়ারি নোয়াখালী পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল। এ ছাড়া বিএনপি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কিরণ কম্পিউটার (স্বতন্ত্র), শহর বিএনপির সভাপতি আবু নাছের নারিকেল গাছ প্রতীকসহ (স্বতন্ত্র) মেয়র পদে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।