তৈমুরের ‘হাতির’ মাহুত কে?

প্রথম যেদিন নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করলেন তৈমুর আলম খন্দকার তখন থেকেই তাকে নিয়ে আলোচনা। বিএনপি নেতা হলেও তিনি প্রার্থী হলেন স্বতন্ত্র। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিএনপির পদও হারালেন। তারপরই আলোচনা উঠলো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান তাকে সমর্থন দিচ্ছেন।

তবে এই আলোচনা যখন তুঙ্গে তখন ‘জরুরি’ সংবাদ সম্মেলন করে শামীম ওসমান জানালেন, তিনি নৌকার পক্ষেই আছেন। এদিকে শুরু থেকে ‘জনগণের প্রার্থী’ বলে তৈমুর আলম নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। তবে শহরের নাগরিক কমিটি, সাংস্কৃতিক জোট থেকে শুরু করে সমমনা কোন সংগঠন তার পাশে নেই। উল্টো তারা সমর্থন দিয়েছেন সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীকে। প্রগতিশীল, বাম সংগঠনের নেতারাও আইভীকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন দিচ্ছেন।

আর তাতেই প্রশ্ন উঠেছে হাতি প্রতীকের তৈমুর আলমের ‘মাহুত’ আসলে কে?

তবে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার না নগরবাসীর কাছে। তাকে নিয়ে শুরু থেকে যে ধোঁয়াশা তা নির্বাচনী প্রচারের এই শেষ মুহূর্তে এসেও কাটেনি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হয়েও স্বতন্ত্র পদে মেয়র প্রার্থী হন তৈমুর আলম খন্দকার। এর যুক্তিতে তিনি বলেন, বিএনপি দলীয়ভাবে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোন নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে তিনি নগরবাসীর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তবে বিএনপি দলীয়ভাবে তার সঙ্গে আছে। বিএনপি নেতারাও তার পাশে আছেন।

তবে এই বক্তব্যের প্রতিফলন ভোটের মাঠে সেভাবে দেখা যায়নি। ১৫ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা আরও দুই বিএনপি নেতা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তারা বলেন, দলীয়ভাবে বিএনপি সব নির্বাচন বয়কট করেছে। দলীয় নির্দেশেই তারা সিটি নির্বাচন বয়কট করেছেন। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি তৈমুর আলম খন্দকার।

২৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের দিন ‘হাতি’ প্রতীক পান তিনি। হাতি প্রতীক তিনি নিজেই চেয়ে নেন। বিপরীতে কেউ এই প্রতীক দাবি না করায় বিনা লটারিতেই এই প্রতীক পান তিনি।

তৈমুর আলম প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই বিএনপির অবস্থান নিয়ে সমালোচনা শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতারা। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলতে শুরু করেন, বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও ‘ঘোমটা পরে নির্বাচনে নেমেছেন বিএনপি নেতা তৈমুর আলম’। এদিকে তৈমুরের প্রার্থিতার প্রসঙ্গে গণমাধ্যমেও নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় বিএনপির নেতাদের।

শুরু থেকেই বিএনপির সমর্থন আছে বলে দাবি করা তৈমুর আলম প্রথম ধাক্কা খান ২৫ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় বিএনপির এক সিদ্ধান্তে। ওইদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় তৈমুর আলমকে। তার পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি।

তখন তৈমুর আলম ও তার সমর্থকরা দাবি করেন, নির্বাচনে ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করার সুযোগ’ দিতেই দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক সপ্তাহ পর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদও হারান তৈমুর। এরপর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি পান তিনি।

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, এই নির্বাচনে তৈমুর আলমের সঙ্গে দলীয়ভাবে বিএনপি নেই অব্যাহতি দেয়ার মাধ্যমে তারই প্রমাণ হয়েছে। এমনকি কেন্দ্রীয়ভাবে যুবদল নারায়ণগঞ্জের নেতাদের নির্দেশ দেয়, তারা যেন তৈমুর আলমের কোন প্রচারণায় না যান। গেলে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারিও দেন। সংগঠনের কেউ যাতে নির্দেশনা দিতে না পারে সেজন্য মহানগর যুবদলের আওতাধীন ৩টি থানা ও ২৭টি ওয়ার্ড কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়। ছাত্রদলের নেতাদের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা আছে বলে একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বিএনপির নেতৃস্থানীয় বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে বিএনপিকে নেতৃত্ব দেন এবং প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত একাধিক বিএনপি নেতা তৈমুর আলমের পাশে নেই শুরু থেকেই। তাদের মধ্যে একজন মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) সাবেক এই সংসদ সদস্য বিএনপির নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন। নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলে তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের ৯টি ওয়ার্ডে প্রচারণা চালালেও গিয়াস উদ্দিন কিংবা তার খুব ঘনিষ্ঠ কোন নেতাকে তৈমুর আলমের সঙ্গে দেখা যায়নি।

একইভাবে সিটির কদমরসুল তথা বন্দর অঞ্চলে প্রভাব আছে বিএনপি থেকে তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালামের। তিনি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের (সদর ও বন্দর) সাবেক এমপি, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিরও সভাপতি। মহানগর বিএনপির বড় একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন তিনি। এই নির্বাচনে আবুল কালাম কিংবা তার অনুসারী নেতারা নীরব। মহানগর বিএনপির আরেকটি অংশকে নেতৃত্ব দেয়া দলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানও তৈমুরের পক্ষে নেই। তার মতে, শুধু তিনিই নন ৯০ শতাংশ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাই তৈমুর আলমের পক্ষে নেই। ২০১৬ সালে মেয়র নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সাখাওয়াত বলেন, ‘তৈমুর আলমের একান্ত ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতা ছাড়া বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল কিংবা ছাত্রদলের জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদও বলছেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে তিনি যাবেন না।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নিয়ে আলোচনা করলে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শাহ আলমের নামও সামনে আসে। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ২০১৯ সালে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেও নেপথ্যে এখনও বিএনপিসহ ছাত্রদল ও যুবদলের একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন তিনি। জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে তার অনেক অনুসারী নেতা রয়েছে। তারা কেউই তৈমুর আলমের সঙ্গে নেই। মহানগর ছাত্রদলের নেতারাও নীরব।

অন্যদিকে সিটি নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানা ও উপজেলা কমিটির নেতারা সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এমনটা দেখা যায়নি তৈমুরের বেলায়। বিএনপির সবগুলো থানা ও উপজেলা কমিটি সক্রিয় থাকলেও নেতৃস্থানীয় কোন নেতাকে গত ১৬ দিনের প্রচারণায় দেখা যায়নি। প্রচারণায় নেই শ্রমিক দল, তাঁতিদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের মতো বিএনপির আরও কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের নেতারাও।

তবে বিএনপির কয়েকজন নেতাকে নিয়মিত তৈমুর আলমের পক্ষে দেখা গেছে। তবে তাদের অনেকেরই বর্তমান কোন কমিটিতে পদ নেই। তাদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, হাজী নুরুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সবুর খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম টিটু, সদস্য রুহুল আমিন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার (তৈমুরের ছোট ভাই), মহানগর যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি রানা মুজিব, শহর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ।

‘শামীম ওসমান’ হাত ছেড়েছেন তৈমুরের

আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, দলীয় দুটি অংশের বিরোধের সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন তৈমুর আলম খন্দকার। তবে নানা কারণেই তা আর হয়ে ওঠেনি। তৈমুর আলমের হাত অর্ধেক পথেই ছেড়ে দিয়েছেন শামীম ওসমান। ‘গোপনে এখনও যোগাযোগ’ থাকতে পারে তবে সরাসরি তৈমুরের ‘হাতি’র মাহুত হচ্ছেন না শামীম ওসমান, বলেন তারা।

‘জনগণের প্রার্থী’ দাবি করা তৈমুরের সঙ্গে নেই নাগরিক নেতারা

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দিপু বলেন, তৈমুর ধানের শীষ নিয়ে দাঁড়ালে একরকম ছিল আর স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানোয় ভিন্ন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। শুরু থেকে শামীম ওসমান প্রসঙ্গে যেই আলোচনা তৈমুর আলমকে নিয়ে উঠেছিল। তা পরিষ্কার করেননি তিনি। এই অভিযোগের জোরালো প্রতিবাদও তিনি করেননি। নানা সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে বিষয়টিকে হালকাভাবে নিয়েছেন। এসব কারণে আসলেই তৈমুর আলমের হাতির ‘মাহুত’ কে তা নিয়ে মানুষের মধ্যেও সংশয় আছে।

এগুলো পাত্তা দিচ্ছেন না তৈমুর, তার সমর্থকরা

তবে এসব বিষয়কে পাত্তা দিচ্ছেন না তৈমুর আলম খন্দকার কিংবা তার সমর্থকরা। তৈমুর আলমের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল সংবাদকে বলেন, ‘বিএনপি নেতারা সবাই তৈমুর আলমের পক্ষে আছেন। গতকাল দুপুরে বিশাল শোডাউন হয়েছে।’ সেখানে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছে বলে দাবি করেন কামাল।

নাগরিক সমাজের সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এইসব নাগরিক কমিটির সমর্থন দিয়ে নির্বাচনে কাজ হয় না। জনগণ তার রায় দিবে ১৬ জানুয়ারি। জয় আমাদের হবেই।’

তৈমুর আলমও বলেন, ‘এইসব সমীকরণ ভোটের মাঠে কাজে আসবে না। এই শহরের জনগণ বিকল্প চায়।’ জনগণ তাকেই নির্বাচিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে প্রশাসন দায়ী থাকবে : তৈমুর

নগরীর প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে গতকাল বিশাল শোডাউন করেছেন তৈমুর আলম খন্দকার। তার প্রচারণায় চমক হিসেবে ছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। প্রচারণা চালিয়েছেন নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। প্রচারণাকালে তৈমুর আলম বলেছেন, নির্বাচনকে ঘিরে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটলে প্রশাসন দায়ী থাকবে। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করবো তারা যেন তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন। পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করবো আপনারা আমার সঙ্গে যে আচরণ করছেন সরকারি প্রার্থীকে জেতানোর জন্য, এটা অমানবিক। গণতন্ত্রকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে আপনারা লিপ্ত হয়েছেন। সব নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করছি। এই মুক্তি হবে গণতন্ত্রের মুক্তি। এটা না হলে পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য পুলিশ ও প্রশাসন দায়ী থাকবেন।’

তৈমুর সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, রাজনীতিবিদদের মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এতদিন পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। এখন যারা রাজনীতিবিদ তাদের মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই অবস্থার অবশ্যই নিরসন করতে হবে।’

তবে সেই নেতারা কারা সেই বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলেননি তিনি। তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মাদক মামলায় কাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নামটা আগামীকাল তিনি বলবেন।

এদিকে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন বিটুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সালাউদ্দিন বিটু নিতাইগঞ্জ শীতলক্ষ্যার নলুয়া এলাকার আবিদ আলী চৌধুরী ওরফে হাবলু চৌধুরীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। এর আগেও মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বিটু। তিনি ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২২ , ২৯ পৌষ ১৪২৮ ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

তৈমুরের ‘হাতির’ মাহুত কে?

সৌরভ হোসেন সিয়াম, নারায়ণগঞ্জ

image

আর একদিন পর নাসিক ভোট, শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় তৈমুর -সংবাদ

প্রথম যেদিন নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করলেন তৈমুর আলম খন্দকার তখন থেকেই তাকে নিয়ে আলোচনা। বিএনপি নেতা হলেও তিনি প্রার্থী হলেন স্বতন্ত্র। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিএনপির পদও হারালেন। তারপরই আলোচনা উঠলো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান তাকে সমর্থন দিচ্ছেন।

তবে এই আলোচনা যখন তুঙ্গে তখন ‘জরুরি’ সংবাদ সম্মেলন করে শামীম ওসমান জানালেন, তিনি নৌকার পক্ষেই আছেন। এদিকে শুরু থেকে ‘জনগণের প্রার্থী’ বলে তৈমুর আলম নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। তবে শহরের নাগরিক কমিটি, সাংস্কৃতিক জোট থেকে শুরু করে সমমনা কোন সংগঠন তার পাশে নেই। উল্টো তারা সমর্থন দিয়েছেন সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীকে। প্রগতিশীল, বাম সংগঠনের নেতারাও আইভীকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন দিচ্ছেন।

আর তাতেই প্রশ্ন উঠেছে হাতি প্রতীকের তৈমুর আলমের ‘মাহুত’ আসলে কে?

তবে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার না নগরবাসীর কাছে। তাকে নিয়ে শুরু থেকে যে ধোঁয়াশা তা নির্বাচনী প্রচারের এই শেষ মুহূর্তে এসেও কাটেনি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হয়েও স্বতন্ত্র পদে মেয়র প্রার্থী হন তৈমুর আলম খন্দকার। এর যুক্তিতে তিনি বলেন, বিএনপি দলীয়ভাবে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোন নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে তিনি নগরবাসীর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তবে বিএনপি দলীয়ভাবে তার সঙ্গে আছে। বিএনপি নেতারাও তার পাশে আছেন।

তবে এই বক্তব্যের প্রতিফলন ভোটের মাঠে সেভাবে দেখা যায়নি। ১৫ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা আরও দুই বিএনপি নেতা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তারা বলেন, দলীয়ভাবে বিএনপি সব নির্বাচন বয়কট করেছে। দলীয় নির্দেশেই তারা সিটি নির্বাচন বয়কট করেছেন। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি তৈমুর আলম খন্দকার।

২৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের দিন ‘হাতি’ প্রতীক পান তিনি। হাতি প্রতীক তিনি নিজেই চেয়ে নেন। বিপরীতে কেউ এই প্রতীক দাবি না করায় বিনা লটারিতেই এই প্রতীক পান তিনি।

তৈমুর আলম প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই বিএনপির অবস্থান নিয়ে সমালোচনা শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতারা। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলতে শুরু করেন, বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও ‘ঘোমটা পরে নির্বাচনে নেমেছেন বিএনপি নেতা তৈমুর আলম’। এদিকে তৈমুরের প্রার্থিতার প্রসঙ্গে গণমাধ্যমেও নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় বিএনপির নেতাদের।

শুরু থেকেই বিএনপির সমর্থন আছে বলে দাবি করা তৈমুর আলম প্রথম ধাক্কা খান ২৫ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় বিএনপির এক সিদ্ধান্তে। ওইদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় তৈমুর আলমকে। তার পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি।

তখন তৈমুর আলম ও তার সমর্থকরা দাবি করেন, নির্বাচনে ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করার সুযোগ’ দিতেই দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক সপ্তাহ পর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদও হারান তৈমুর। এরপর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি পান তিনি।

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, এই নির্বাচনে তৈমুর আলমের সঙ্গে দলীয়ভাবে বিএনপি নেই অব্যাহতি দেয়ার মাধ্যমে তারই প্রমাণ হয়েছে। এমনকি কেন্দ্রীয়ভাবে যুবদল নারায়ণগঞ্জের নেতাদের নির্দেশ দেয়, তারা যেন তৈমুর আলমের কোন প্রচারণায় না যান। গেলে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারিও দেন। সংগঠনের কেউ যাতে নির্দেশনা দিতে না পারে সেজন্য মহানগর যুবদলের আওতাধীন ৩টি থানা ও ২৭টি ওয়ার্ড কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়। ছাত্রদলের নেতাদের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা আছে বলে একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বিএনপির নেতৃস্থানীয় বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে বিএনপিকে নেতৃত্ব দেন এবং প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত একাধিক বিএনপি নেতা তৈমুর আলমের পাশে নেই শুরু থেকেই। তাদের মধ্যে একজন মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) সাবেক এই সংসদ সদস্য বিএনপির নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন। নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলে তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের ৯টি ওয়ার্ডে প্রচারণা চালালেও গিয়াস উদ্দিন কিংবা তার খুব ঘনিষ্ঠ কোন নেতাকে তৈমুর আলমের সঙ্গে দেখা যায়নি।

একইভাবে সিটির কদমরসুল তথা বন্দর অঞ্চলে প্রভাব আছে বিএনপি থেকে তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালামের। তিনি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের (সদর ও বন্দর) সাবেক এমপি, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিরও সভাপতি। মহানগর বিএনপির বড় একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন তিনি। এই নির্বাচনে আবুল কালাম কিংবা তার অনুসারী নেতারা নীরব। মহানগর বিএনপির আরেকটি অংশকে নেতৃত্ব দেয়া দলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানও তৈমুরের পক্ষে নেই। তার মতে, শুধু তিনিই নন ৯০ শতাংশ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাই তৈমুর আলমের পক্ষে নেই। ২০১৬ সালে মেয়র নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সাখাওয়াত বলেন, ‘তৈমুর আলমের একান্ত ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতা ছাড়া বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল কিংবা ছাত্রদলের জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদও বলছেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে তিনি যাবেন না।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নিয়ে আলোচনা করলে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শাহ আলমের নামও সামনে আসে। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ২০১৯ সালে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেও নেপথ্যে এখনও বিএনপিসহ ছাত্রদল ও যুবদলের একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন তিনি। জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে তার অনেক অনুসারী নেতা রয়েছে। তারা কেউই তৈমুর আলমের সঙ্গে নেই। মহানগর ছাত্রদলের নেতারাও নীরব।

অন্যদিকে সিটি নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানা ও উপজেলা কমিটির নেতারা সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এমনটা দেখা যায়নি তৈমুরের বেলায়। বিএনপির সবগুলো থানা ও উপজেলা কমিটি সক্রিয় থাকলেও নেতৃস্থানীয় কোন নেতাকে গত ১৬ দিনের প্রচারণায় দেখা যায়নি। প্রচারণায় নেই শ্রমিক দল, তাঁতিদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের মতো বিএনপির আরও কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের নেতারাও।

তবে বিএনপির কয়েকজন নেতাকে নিয়মিত তৈমুর আলমের পক্ষে দেখা গেছে। তবে তাদের অনেকেরই বর্তমান কোন কমিটিতে পদ নেই। তাদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, হাজী নুরুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সবুর খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম টিটু, সদস্য রুহুল আমিন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার (তৈমুরের ছোট ভাই), মহানগর যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি রানা মুজিব, শহর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ।

‘শামীম ওসমান’ হাত ছেড়েছেন তৈমুরের

আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, দলীয় দুটি অংশের বিরোধের সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন তৈমুর আলম খন্দকার। তবে নানা কারণেই তা আর হয়ে ওঠেনি। তৈমুর আলমের হাত অর্ধেক পথেই ছেড়ে দিয়েছেন শামীম ওসমান। ‘গোপনে এখনও যোগাযোগ’ থাকতে পারে তবে সরাসরি তৈমুরের ‘হাতি’র মাহুত হচ্ছেন না শামীম ওসমান, বলেন তারা।

‘জনগণের প্রার্থী’ দাবি করা তৈমুরের সঙ্গে নেই নাগরিক নেতারা

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দিপু বলেন, তৈমুর ধানের শীষ নিয়ে দাঁড়ালে একরকম ছিল আর স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানোয় ভিন্ন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। শুরু থেকে শামীম ওসমান প্রসঙ্গে যেই আলোচনা তৈমুর আলমকে নিয়ে উঠেছিল। তা পরিষ্কার করেননি তিনি। এই অভিযোগের জোরালো প্রতিবাদও তিনি করেননি। নানা সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে বিষয়টিকে হালকাভাবে নিয়েছেন। এসব কারণে আসলেই তৈমুর আলমের হাতির ‘মাহুত’ কে তা নিয়ে মানুষের মধ্যেও সংশয় আছে।

এগুলো পাত্তা দিচ্ছেন না তৈমুর, তার সমর্থকরা

তবে এসব বিষয়কে পাত্তা দিচ্ছেন না তৈমুর আলম খন্দকার কিংবা তার সমর্থকরা। তৈমুর আলমের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল সংবাদকে বলেন, ‘বিএনপি নেতারা সবাই তৈমুর আলমের পক্ষে আছেন। গতকাল দুপুরে বিশাল শোডাউন হয়েছে।’ সেখানে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছে বলে দাবি করেন কামাল।

নাগরিক সমাজের সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এইসব নাগরিক কমিটির সমর্থন দিয়ে নির্বাচনে কাজ হয় না। জনগণ তার রায় দিবে ১৬ জানুয়ারি। জয় আমাদের হবেই।’

তৈমুর আলমও বলেন, ‘এইসব সমীকরণ ভোটের মাঠে কাজে আসবে না। এই শহরের জনগণ বিকল্প চায়।’ জনগণ তাকেই নির্বাচিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে প্রশাসন দায়ী থাকবে : তৈমুর

নগরীর প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে গতকাল বিশাল শোডাউন করেছেন তৈমুর আলম খন্দকার। তার প্রচারণায় চমক হিসেবে ছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। প্রচারণা চালিয়েছেন নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। প্রচারণাকালে তৈমুর আলম বলেছেন, নির্বাচনকে ঘিরে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটলে প্রশাসন দায়ী থাকবে। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করবো তারা যেন তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন। পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করবো আপনারা আমার সঙ্গে যে আচরণ করছেন সরকারি প্রার্থীকে জেতানোর জন্য, এটা অমানবিক। গণতন্ত্রকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে আপনারা লিপ্ত হয়েছেন। সব নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করছি। এই মুক্তি হবে গণতন্ত্রের মুক্তি। এটা না হলে পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য পুলিশ ও প্রশাসন দায়ী থাকবেন।’

তৈমুর সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, রাজনীতিবিদদের মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এতদিন পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। এখন যারা রাজনীতিবিদ তাদের মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই অবস্থার অবশ্যই নিরসন করতে হবে।’

তবে সেই নেতারা কারা সেই বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলেননি তিনি। তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মাদক মামলায় কাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নামটা আগামীকাল তিনি বলবেন।

এদিকে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন বিটুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সালাউদ্দিন বিটু নিতাইগঞ্জ শীতলক্ষ্যার নলুয়া এলাকার আবিদ আলী চৌধুরী ওরফে হাবলু চৌধুরীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। এর আগেও মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বিটু। তিনি ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।