শামীম ওসমান প্রশ্নে বিরক্ত আইভী

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, শামীম ওসমান প্রসঙ্গে প্রশ্ন শুনতে শুনতে হয়রান হয়ে যাচ্ছি। গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের টানবাজার এলাকায় গণসংযোগের সময় তিনি এ কথা বলেন।

শামীম ওসমানের সমর্থকদের সহায়তা পাচ্ছেন কি-না, জানতে চাইলে আইভী বলেন, ‘এই কথা শুনতে শুনতে আমি তিন দিন ধরে হয়রান হয়ে গেছি। আপনারা আমাকে মাঠে কাজ করতে দিচ্ছেন না। আমার যারা নেতাকর্মী মাঠে কাজ করছেন, তাদের কথা জিজ্ঞেস করছেন না। একজনকে কেন বারবার টেনে নিয়ে আসেন আপনারা? উনি তো নৌকার লোক, নৌকার বাইরে কোথায় যাবেন?’

সেলিনা হায়াৎ আইভী সাধারণ ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘জীবনে কখনও চাঁদাবাজি করিনি। আমার কোন বাহিনী নেই। শহরে শান্তিতে থাকতে চাইলে আইভীকে বেছে নিবেন। কোন গডফাদারের উত্থান যেন নারায়ণগঞ্জে না হয়। এটা হতে দিয়েন না। ধমকের সুরে কথা বলবে এমন কাউকে আপনারা ভোট দিয়েন না।’

আইভী বলেন, ‘ভোটের মাঠে প্রতিটা মুহূর্ত চ্যালেঞ্জের। আমি জনগণের কাছে যাচ্ছি, ভোট চাচ্ছি। আমার কাছে প্রতিটা ক্ষণই চ্যালেঞ্জের। সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া, তাদের কাছে ভোট চাওয়া, এটাও চ্যালেঞ্জের অংশ। বিগত দুটি নির্বাচনের মতো এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ যাতে ভোট দিতে যেতে পারে, সেই পরিবেশ চাই। ভোটের পরিবেশ ভালো আছে। ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা এ রকম পরিবেশ চাই। সাধারণ মানুষ যাতে ভোট দিতে যেতে পারে।’

নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে কোথাও বাধার শিকার হচ্ছেন কি-না, জানতে চাইলে আইভী বলেন, ‘আমি নিজে কোথাও বাধার শিকার হইনি। তবে আমার লোকজনকে বিভিন্ন জায়গায় বাধা ও হুমকি দেয়া হয়েছে। তবে এটি ছোটখাটো বিষয়। নির্বাচন এলে এ রকম বাগবিত-া হতেই পারে। ওই রকম সিরিয়াস কিছু এখন পর্যন্ত হয়নি।’

আইভী বলেন, ‘সন্ত্রাসী যে কারও সঙ্গে থাকতে পারে। সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই, জাতও নেই। শহরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী আছেই। যারা কিশোর গ্যাংয়ের লিডার, মাদক বিক্রেতা ও হোন্ডা বাহিনী থেকে শুরি করে এই শহরে বহু কিছু আছে; তাদের ধরা হোক। আমার চাওয়া, শহরের সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ যাতে ঠিক থাকে, কেউ কাউকে যাতে ভয়ভীতি দেখাতে না পারে, সুন্দরভাবে যেন নির্বাচনটা হয়, কোন বিশৃঙ্খলা যাতে তৈরি না হয়। সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই, সে কোন দলের বা গোষ্ঠীর হতে পারে না। সে নিজের স্বার্থে কাজ করে।’

নির্বাচনে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ প্রসঙ্গে আইভী বলেন, ‘আমিও নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ির অভিযোগ পেয়েছি। এটাও বন্ধ করতে হবে প্রশাসনকে। সারা দেশের মানুষ জানে, আমি গরিব মানুষ। আমি অর্থনেতিকভাবে সাধারণ জীবন-যাপন করি। এটা আমার শত্রুও জানে, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী তৈমুর আলম খন্দকার কাকাও জানেন। আমি কখনো টাকার রাজনীতি করিনি, করবও না। সুতরাং টাকা কোত্থেকে ছড়াচ্ছে, কারা ছড়াচ্ছে, এটা আমারও প্রশাসনের কাছে জিজ্ঞাসা।’

১৬ তারিখ কেমন নির্বাচন হবে জানতে চাইলে আইভী বলেন, ‘১৬ জানুয়ারি অবশ্যই সুন্দর নির্বাচন হবে। ২০১১ সালে খুব সুন্দর নির্বাচন হয়েছিল। ওই সময় যদি সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রশাসন হেল্প না করত, তাহলে আমি মেয়র হতে পারতাম না। ২০১৬ সালেও বিএনপিদলীয় প্রার্থী সাখাওয়াতের সঙ্গে নির্বাচন করেছি। সে সময় অসম্ভব সুন্দর পরিবেশে মানুষ ভোট দিয়েছে। ১৬ তারিখেও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে। প্রশাসনের কাছে এই দাবি, মানুষ ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে যেন সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারে। হাতি তো বনেই থাকে, হাতি তো শহরে থাকে না। বনের হাতি বনেই যাবে, নৌকা মার্কা জিতে যাবে।’

সাধারণ ব্যবসায়ীদের ভয় না পাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আইভী বলেন, ‘জীবনে আপনাদের কাছ থেকে চাঁদা নেইনি। আমার কোন বাহিনী আপনাদের কাছে যায় নাই। এই নারায়ণগঞ্জ শহরে কেউ কোনদিন বলতে পারবে না যে, আমি কারও গায়ে ফুলের টোকা দিয়েছি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি করেছি। শান্তিতে থাকতে চাইলে আইভীকে বেছে নিবেন। ভয় পাবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন করে বলার কিছু নাই। আমি তো ১৮ বছর যাবত আপনাদের সঙ্গে, আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের সঙ্গে কখনও মিথ্যা কথা বলিনি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেইনি, দলবাজি করিনি। দল-মত, জাতি-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করেছি। সব ধর্মের মানুষের জন্য সমানভাবে কাজ করেছি।’

তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলেও দাবি করেন সরকারি দলের মেয়র প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘র‌্যালিবাগান তুলে দেয়ার যে মিথ্যা কথা বলতেছে, এগুলো সঠিক না। আমার বাবা আপনাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছে। নয়ামাটির পেছনে দীর্ঘদিন ছিলাম। আমার স্কুলজীবন এখানে কেটেছে। আমার বাবাও কখনো আপনাদের উচ্ছেদ কিংবা আপনাদের জায়গা নেয়ার চেষ্টা বা ইচ্ছা করেননি। আমিও করবো না। অথচ আমার বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিতভাবে অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে। আমি নাকি উত্তর ও দক্ষিণ র‌্যালিবাগান উচ্ছেদ করে দেব। এগুলো মিথ্যা প্রচারণা। শেখ হাসিনার সরকার ভূমিহীনদের জায়গার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। সেখানে আমি ওনার মনোনীত প্রার্থী হয়ে আপনাদের উচ্ছেদ করতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিমখানা বস্তিতে সরকারিভাবেই পার্ক করার কথা ছিল তাই সেই জায়গা নেয়া হয়েছে। সেখানে ৭-৮ জন মাসল ম্যানের (প্রভাবশালী ব্যক্তি) কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে লোকজন সেখানে ভাড়া থাকতেন। আপনাদের সমস্যা না থাকলে নি¤œআয়ের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্প রেখেছেন সেগুলো দিয়ে আপনাদের সুব্যবস্থা করে দেব।’

ভূমিহীনদের জন্য তিনটি ১০তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন জানিয়ে আইভী বলেন, ‘ঋষিপাড়া বস্তিতে ১০তলা ভবন করেছি তিনটা। এই ঋষিপাড়া বস্তি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৮ একর জায়গার ওপর। আমি তো কখনই এই বস্তি তুলে দেইনি। উল্টো তাদের থাকার জন্য তিনটা ভবন করে দিয়েছি। নির্বাচন আসলে যারা মিথ্যা কথা বলে তাদের কখনই বরদাস্ত করবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তা করেছি, ড্রেন করেছি। রাস্তাঘাট উন্নত হওয়ায় আপনাদের জায়গার দাম বেড়েছে। কী পরিমাণ কাজ পুরো সিটি করপোরেশনে হয়েছে তা একবার ঘুরে দেখবেন। এই উন্নয়ন কাজ করা কি আমার অপরাধ হয়েছে? যদি না হয়, তাহলে আমার ওপর বিশ্বাস রেখে আপনাদের মূল্যবান ভোটটি দিবেন। আমার কাজগুলো যেন ঠিকমতো করতে পারি সে জন্য ভোট চাইলাম। কারও কান-কথা শুনবেন না।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আদিনাথ বসু, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক রানু খন্দকার, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মরিয়ম কল্পনা, নাসিকের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী বাসদ নেতা অসিত বরণ বিশ্বাস, কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা জিএম আরমান, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী পপি রানী সরকার প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২২ , ২৯ পৌষ ১৪২৮ ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

শামীম ওসমান প্রশ্নে বিরক্ত আইভী

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

image

প্রচারে আইভী -সংবাদ

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, শামীম ওসমান প্রসঙ্গে প্রশ্ন শুনতে শুনতে হয়রান হয়ে যাচ্ছি। গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের টানবাজার এলাকায় গণসংযোগের সময় তিনি এ কথা বলেন।

শামীম ওসমানের সমর্থকদের সহায়তা পাচ্ছেন কি-না, জানতে চাইলে আইভী বলেন, ‘এই কথা শুনতে শুনতে আমি তিন দিন ধরে হয়রান হয়ে গেছি। আপনারা আমাকে মাঠে কাজ করতে দিচ্ছেন না। আমার যারা নেতাকর্মী মাঠে কাজ করছেন, তাদের কথা জিজ্ঞেস করছেন না। একজনকে কেন বারবার টেনে নিয়ে আসেন আপনারা? উনি তো নৌকার লোক, নৌকার বাইরে কোথায় যাবেন?’

সেলিনা হায়াৎ আইভী সাধারণ ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘জীবনে কখনও চাঁদাবাজি করিনি। আমার কোন বাহিনী নেই। শহরে শান্তিতে থাকতে চাইলে আইভীকে বেছে নিবেন। কোন গডফাদারের উত্থান যেন নারায়ণগঞ্জে না হয়। এটা হতে দিয়েন না। ধমকের সুরে কথা বলবে এমন কাউকে আপনারা ভোট দিয়েন না।’

আইভী বলেন, ‘ভোটের মাঠে প্রতিটা মুহূর্ত চ্যালেঞ্জের। আমি জনগণের কাছে যাচ্ছি, ভোট চাচ্ছি। আমার কাছে প্রতিটা ক্ষণই চ্যালেঞ্জের। সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া, তাদের কাছে ভোট চাওয়া, এটাও চ্যালেঞ্জের অংশ। বিগত দুটি নির্বাচনের মতো এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ যাতে ভোট দিতে যেতে পারে, সেই পরিবেশ চাই। ভোটের পরিবেশ ভালো আছে। ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা এ রকম পরিবেশ চাই। সাধারণ মানুষ যাতে ভোট দিতে যেতে পারে।’

নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে কোথাও বাধার শিকার হচ্ছেন কি-না, জানতে চাইলে আইভী বলেন, ‘আমি নিজে কোথাও বাধার শিকার হইনি। তবে আমার লোকজনকে বিভিন্ন জায়গায় বাধা ও হুমকি দেয়া হয়েছে। তবে এটি ছোটখাটো বিষয়। নির্বাচন এলে এ রকম বাগবিত-া হতেই পারে। ওই রকম সিরিয়াস কিছু এখন পর্যন্ত হয়নি।’

আইভী বলেন, ‘সন্ত্রাসী যে কারও সঙ্গে থাকতে পারে। সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই, জাতও নেই। শহরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী আছেই। যারা কিশোর গ্যাংয়ের লিডার, মাদক বিক্রেতা ও হোন্ডা বাহিনী থেকে শুরি করে এই শহরে বহু কিছু আছে; তাদের ধরা হোক। আমার চাওয়া, শহরের সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ যাতে ঠিক থাকে, কেউ কাউকে যাতে ভয়ভীতি দেখাতে না পারে, সুন্দরভাবে যেন নির্বাচনটা হয়, কোন বিশৃঙ্খলা যাতে তৈরি না হয়। সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই, সে কোন দলের বা গোষ্ঠীর হতে পারে না। সে নিজের স্বার্থে কাজ করে।’

নির্বাচনে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ প্রসঙ্গে আইভী বলেন, ‘আমিও নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ির অভিযোগ পেয়েছি। এটাও বন্ধ করতে হবে প্রশাসনকে। সারা দেশের মানুষ জানে, আমি গরিব মানুষ। আমি অর্থনেতিকভাবে সাধারণ জীবন-যাপন করি। এটা আমার শত্রুও জানে, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী তৈমুর আলম খন্দকার কাকাও জানেন। আমি কখনো টাকার রাজনীতি করিনি, করবও না। সুতরাং টাকা কোত্থেকে ছড়াচ্ছে, কারা ছড়াচ্ছে, এটা আমারও প্রশাসনের কাছে জিজ্ঞাসা।’

১৬ তারিখ কেমন নির্বাচন হবে জানতে চাইলে আইভী বলেন, ‘১৬ জানুয়ারি অবশ্যই সুন্দর নির্বাচন হবে। ২০১১ সালে খুব সুন্দর নির্বাচন হয়েছিল। ওই সময় যদি সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রশাসন হেল্প না করত, তাহলে আমি মেয়র হতে পারতাম না। ২০১৬ সালেও বিএনপিদলীয় প্রার্থী সাখাওয়াতের সঙ্গে নির্বাচন করেছি। সে সময় অসম্ভব সুন্দর পরিবেশে মানুষ ভোট দিয়েছে। ১৬ তারিখেও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে। প্রশাসনের কাছে এই দাবি, মানুষ ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে যেন সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারে। হাতি তো বনেই থাকে, হাতি তো শহরে থাকে না। বনের হাতি বনেই যাবে, নৌকা মার্কা জিতে যাবে।’

সাধারণ ব্যবসায়ীদের ভয় না পাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আইভী বলেন, ‘জীবনে আপনাদের কাছ থেকে চাঁদা নেইনি। আমার কোন বাহিনী আপনাদের কাছে যায় নাই। এই নারায়ণগঞ্জ শহরে কেউ কোনদিন বলতে পারবে না যে, আমি কারও গায়ে ফুলের টোকা দিয়েছি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি করেছি। শান্তিতে থাকতে চাইলে আইভীকে বেছে নিবেন। ভয় পাবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন করে বলার কিছু নাই। আমি তো ১৮ বছর যাবত আপনাদের সঙ্গে, আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের সঙ্গে কখনও মিথ্যা কথা বলিনি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেইনি, দলবাজি করিনি। দল-মত, জাতি-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করেছি। সব ধর্মের মানুষের জন্য সমানভাবে কাজ করেছি।’

তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলেও দাবি করেন সরকারি দলের মেয়র প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘র‌্যালিবাগান তুলে দেয়ার যে মিথ্যা কথা বলতেছে, এগুলো সঠিক না। আমার বাবা আপনাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছে। নয়ামাটির পেছনে দীর্ঘদিন ছিলাম। আমার স্কুলজীবন এখানে কেটেছে। আমার বাবাও কখনো আপনাদের উচ্ছেদ কিংবা আপনাদের জায়গা নেয়ার চেষ্টা বা ইচ্ছা করেননি। আমিও করবো না। অথচ আমার বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিতভাবে অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে। আমি নাকি উত্তর ও দক্ষিণ র‌্যালিবাগান উচ্ছেদ করে দেব। এগুলো মিথ্যা প্রচারণা। শেখ হাসিনার সরকার ভূমিহীনদের জায়গার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। সেখানে আমি ওনার মনোনীত প্রার্থী হয়ে আপনাদের উচ্ছেদ করতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিমখানা বস্তিতে সরকারিভাবেই পার্ক করার কথা ছিল তাই সেই জায়গা নেয়া হয়েছে। সেখানে ৭-৮ জন মাসল ম্যানের (প্রভাবশালী ব্যক্তি) কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে লোকজন সেখানে ভাড়া থাকতেন। আপনাদের সমস্যা না থাকলে নি¤œআয়ের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্প রেখেছেন সেগুলো দিয়ে আপনাদের সুব্যবস্থা করে দেব।’

ভূমিহীনদের জন্য তিনটি ১০তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন জানিয়ে আইভী বলেন, ‘ঋষিপাড়া বস্তিতে ১০তলা ভবন করেছি তিনটা। এই ঋষিপাড়া বস্তি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৮ একর জায়গার ওপর। আমি তো কখনই এই বস্তি তুলে দেইনি। উল্টো তাদের থাকার জন্য তিনটা ভবন করে দিয়েছি। নির্বাচন আসলে যারা মিথ্যা কথা বলে তাদের কখনই বরদাস্ত করবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তা করেছি, ড্রেন করেছি। রাস্তাঘাট উন্নত হওয়ায় আপনাদের জায়গার দাম বেড়েছে। কী পরিমাণ কাজ পুরো সিটি করপোরেশনে হয়েছে তা একবার ঘুরে দেখবেন। এই উন্নয়ন কাজ করা কি আমার অপরাধ হয়েছে? যদি না হয়, তাহলে আমার ওপর বিশ্বাস রেখে আপনাদের মূল্যবান ভোটটি দিবেন। আমার কাজগুলো যেন ঠিকমতো করতে পারি সে জন্য ভোট চাইলাম। কারও কান-কথা শুনবেন না।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আদিনাথ বসু, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক রানু খন্দকার, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মরিয়ম কল্পনা, নাসিকের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী বাসদ নেতা অসিত বরণ বিশ্বাস, কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা জিএম আরমান, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী পপি রানী সরকার প্রমুখ।