বিএনপির হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু, সাড়ে তিন মাস পর জানালো পরিবার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী যুক্তরাজ্যে মারা গেছেন। প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে তিনি মারা গেলেও তা প্রকাশ হয় গতকাল। তার চাচাতো ভাই আশিক উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মঙ্গলবার রাতে সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক উদ্দিন চৌধুরীর ফেইসবুক স্ট্যাটাসের পর বিষয়টি জানাজানি হয়।

তিনি তার ফেইসবুক আইডিতে হারিছ চৌধুরী ও তার ছবি সংযুক্ত করে লেখেন, ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। এর পর থেকে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ অনেকে মন্তব্যের ঘরে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেন।

আশিক চৌধুরী বলেন, প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে যুক্তরাজ্যে হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। যুক্তরাজ্যেই তার দাফন হয়েছে।

ওয়ান ইলেভেন বা ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমাতায় আসার পর থেকেই পলাতক ছিলেন হারিস চৌধুরী।

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর সময় আশিক চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘যে সময় তিনি মারা যান, আমি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলাম। চাচাতো ভাই মারা যাওয়ার বিষয়টি মুঠোফোনে জানতে পারি। হারিছ চৌধুরীর স্ত্রী জোসনা আরা চৌধুরী, ছেলে নায়েম শাফি চৌধুরী ও মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী যুক্তরাজ্যে অবস্থা করছেন। সিলেটের কানাইঘাটের দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের দর্পনগর গ্রামে হারিছ চৌধুরীর গ্রামের বাড়িতে কেউ থাকেন না।’

হারিছ চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানান আশিক চৌধুরী। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। পরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেপ্টেম্বর মাসের দিকে তিনি যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এত দিন পরে মৃত্যুর খবর প্রকাশের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা জিজ্ঞেস করেন, তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। হারিছ চৌধুরীর খোঁজ-খবর রাখার মতো কেউ নেই। এ জন্য বিষয়টি এত দিন জানাজানি হয়নি।’

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার মামলায় হারিছ চৌধুরীর যাবজ্জীবন সাজা হয় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর ৭ বছরের কারাদ- ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায়ও তিনি আসামি ছিলেন।

বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২২ , ২৯ পৌষ ১৪২৮ ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

বিএনপির হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু, সাড়ে তিন মাস পর জানালো পরিবার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, সিলেট

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী যুক্তরাজ্যে মারা গেছেন। প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে তিনি মারা গেলেও তা প্রকাশ হয় গতকাল। তার চাচাতো ভাই আশিক উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মঙ্গলবার রাতে সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক উদ্দিন চৌধুরীর ফেইসবুক স্ট্যাটাসের পর বিষয়টি জানাজানি হয়।

তিনি তার ফেইসবুক আইডিতে হারিছ চৌধুরী ও তার ছবি সংযুক্ত করে লেখেন, ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। এর পর থেকে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ অনেকে মন্তব্যের ঘরে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেন।

আশিক চৌধুরী বলেন, প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে যুক্তরাজ্যে হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। যুক্তরাজ্যেই তার দাফন হয়েছে।

ওয়ান ইলেভেন বা ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমাতায় আসার পর থেকেই পলাতক ছিলেন হারিস চৌধুরী।

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর সময় আশিক চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘যে সময় তিনি মারা যান, আমি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলাম। চাচাতো ভাই মারা যাওয়ার বিষয়টি মুঠোফোনে জানতে পারি। হারিছ চৌধুরীর স্ত্রী জোসনা আরা চৌধুরী, ছেলে নায়েম শাফি চৌধুরী ও মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী যুক্তরাজ্যে অবস্থা করছেন। সিলেটের কানাইঘাটের দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের দর্পনগর গ্রামে হারিছ চৌধুরীর গ্রামের বাড়িতে কেউ থাকেন না।’

হারিছ চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানান আশিক চৌধুরী। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। পরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেপ্টেম্বর মাসের দিকে তিনি যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এত দিন পরে মৃত্যুর খবর প্রকাশের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা জিজ্ঞেস করেন, তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। হারিছ চৌধুরীর খোঁজ-খবর রাখার মতো কেউ নেই। এ জন্য বিষয়টি এত দিন জানাজানি হয়নি।’

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার মামলায় হারিছ চৌধুরীর যাবজ্জীবন সাজা হয় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর ৭ বছরের কারাদ- ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায়ও তিনি আসামি ছিলেন।