নাসিক নির্বাচন : ১২ শতাংশ প্রার্থীর আয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিযোগী প্রার্থীদের হলফনামায় ১২ শতাংশের আয়ের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রার্থীরা সম্পদের যে তথ্য দিয়েছেন, তা প্রকৃত চিত্র নয় বলে দাবি করছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

গতকাল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন নিয়ে ভার্চুয়ালি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট হবে। এ নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনে ১৮৯ জন প্রার্থী। সুজন জানায়, ইসির ওয়েবসাইটে ৩ প্রার্থীর তথ্য না পাওয়ায় ১৮৬ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে।

সুজনের সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার তার উপস্থাপনায় প্রশ্ন তুলে বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আমরা নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, তারা কাদের স্বার্থে কাজ করছে। প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিশ্লেষণ করে সুজন বলছে, এবার উচ্চশিক্ষিত প্রার্থীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি ভোটে ব্যবসায়ী প্রার্থীদের প্রাধান্য বেশি। প্রার্থীদের তথ্য তুলে ধরেন।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, হলফনামায় যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে, সেগুলো বিস্তারিত নয়। হলফনামার যে ছক, তাও সঠিক নয়। এতে পরিবর্তন আনতে হবে। হলফনামাগুলো অত্যন্ত দুর্বল। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো এগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা। তথ্য গোপন করলে মনোনয়ন বাতিল করা। এই নির্বাচনে অনেক প্রার্থীই অনেক তথ্য দেননি। এগুলো অসম্পূর্ণ। এতে মনোনয়ন বাতিল হওয়ার কথা। কিন্তু সেগুলো বাতিল হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি (নির্বাচন) কমিশন ২০২০ সালে আয়োজিত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে ইসি। একই ঘটনা ঘটছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও। সম্পদের বিবরণী প্রকাশ পেলে ভোটারদের উপযুক্ত প্রার্থী বেছে নিতে সুবিধা হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ভোটারদের বঞ্চিত করছে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জনগণ যেন জেনেবুঝে ভোট দিতে পারে সেজন্য প্রার্থীদের তথ্যগুলো থাকলে ভোটারদের সুবিধা। সব তথ্য না দিয়ে কমিশন অবশ্যই ভোটারদের বঞ্চিত করছে। এ তথ্যগুলো প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক। তাছাড়া আমি দেখলাম, অনেকে করের প্রত্যয়নপত্র দিয়েও পার পেয়ে গেছেন। কিন্তু এটাও গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচন কমিশন এদিকে নজরই দিচ্ছে না কিংবা দায়সারা কাজ করছে। মানুষকে তথ্য জানানো তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

তিনি বলেন, ইভিএম দিয়ে ফলাফল যেকোন দিকে নিয়ে যেতে পারে। যেহেতু এটা কমিশনের হাতে আছে, তাই তারাও ফলাফল পাল্টে দিতে পারে। নারায়ণগঞ্জে অতীতের সিটি করপোরেশন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এবারের নির্বাচনও শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সুজন সম্পাদক।

নারায়ণগঞ্জের সাংসদ শামীম ওসমান আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, কিন্তু শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয় সিইসি নূরুল হুদার এমন বক্তব্যের জবাবে সুজন সম্পাদক বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সিইসির বক্তব্য বোধগম্য নয়। তিনি আরও বলেন, একজন প্রার্থী নিজের নেতাকর্মীদের হয়রানি, গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ইসির ভূমিকা নেই। ইসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার মাধ্যমে এর আগে খুলনা, গাজীপুরে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন দেখা গেছে।

ভোটগ্রহণে ইভিএম এখানে দুর্বল পদ্ধতি উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এটা দিয়ে ফলাফল যেকোন দিকে নিয়ে যেতে পারে। যেহেতু এটা কমিশনের হাতে আছে, তাই তারাও ফলাফল পাল্টে দিতে পারে। নারায়ণগঞ্জে অতীতের সিটি করপোরেশন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এবারের নির্বাচনও শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সুজন সম্পাদক।

শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২২ , ৩০ পৌষ ১৪২৮ ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

নাসিক নির্বাচন : ১২ শতাংশ প্রার্থীর আয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিযোগী প্রার্থীদের হলফনামায় ১২ শতাংশের আয়ের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রার্থীরা সম্পদের যে তথ্য দিয়েছেন, তা প্রকৃত চিত্র নয় বলে দাবি করছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

গতকাল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন নিয়ে ভার্চুয়ালি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট হবে। এ নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনে ১৮৯ জন প্রার্থী। সুজন জানায়, ইসির ওয়েবসাইটে ৩ প্রার্থীর তথ্য না পাওয়ায় ১৮৬ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে।

সুজনের সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার তার উপস্থাপনায় প্রশ্ন তুলে বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আমরা নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, তারা কাদের স্বার্থে কাজ করছে। প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিশ্লেষণ করে সুজন বলছে, এবার উচ্চশিক্ষিত প্রার্থীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি ভোটে ব্যবসায়ী প্রার্থীদের প্রাধান্য বেশি। প্রার্থীদের তথ্য তুলে ধরেন।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, হলফনামায় যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে, সেগুলো বিস্তারিত নয়। হলফনামার যে ছক, তাও সঠিক নয়। এতে পরিবর্তন আনতে হবে। হলফনামাগুলো অত্যন্ত দুর্বল। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো এগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা। তথ্য গোপন করলে মনোনয়ন বাতিল করা। এই নির্বাচনে অনেক প্রার্থীই অনেক তথ্য দেননি। এগুলো অসম্পূর্ণ। এতে মনোনয়ন বাতিল হওয়ার কথা। কিন্তু সেগুলো বাতিল হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি (নির্বাচন) কমিশন ২০২০ সালে আয়োজিত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে ইসি। একই ঘটনা ঘটছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও। সম্পদের বিবরণী প্রকাশ পেলে ভোটারদের উপযুক্ত প্রার্থী বেছে নিতে সুবিধা হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ভোটারদের বঞ্চিত করছে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জনগণ যেন জেনেবুঝে ভোট দিতে পারে সেজন্য প্রার্থীদের তথ্যগুলো থাকলে ভোটারদের সুবিধা। সব তথ্য না দিয়ে কমিশন অবশ্যই ভোটারদের বঞ্চিত করছে। এ তথ্যগুলো প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক। তাছাড়া আমি দেখলাম, অনেকে করের প্রত্যয়নপত্র দিয়েও পার পেয়ে গেছেন। কিন্তু এটাও গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচন কমিশন এদিকে নজরই দিচ্ছে না কিংবা দায়সারা কাজ করছে। মানুষকে তথ্য জানানো তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

তিনি বলেন, ইভিএম দিয়ে ফলাফল যেকোন দিকে নিয়ে যেতে পারে। যেহেতু এটা কমিশনের হাতে আছে, তাই তারাও ফলাফল পাল্টে দিতে পারে। নারায়ণগঞ্জে অতীতের সিটি করপোরেশন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এবারের নির্বাচনও শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সুজন সম্পাদক।

নারায়ণগঞ্জের সাংসদ শামীম ওসমান আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, কিন্তু শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয় সিইসি নূরুল হুদার এমন বক্তব্যের জবাবে সুজন সম্পাদক বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সিইসির বক্তব্য বোধগম্য নয়। তিনি আরও বলেন, একজন প্রার্থী নিজের নেতাকর্মীদের হয়রানি, গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ইসির ভূমিকা নেই। ইসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার মাধ্যমে এর আগে খুলনা, গাজীপুরে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন দেখা গেছে।

ভোটগ্রহণে ইভিএম এখানে দুর্বল পদ্ধতি উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এটা দিয়ে ফলাফল যেকোন দিকে নিয়ে যেতে পারে। যেহেতু এটা কমিশনের হাতে আছে, তাই তারাও ফলাফল পাল্টে দিতে পারে। নারায়ণগঞ্জে অতীতের সিটি করপোরেশন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এবারের নির্বাচনও শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সুজন সম্পাদক।