বাসে পেট্রোল বোমা, ৬ যাত্রী পুড়িয়ে হত্যার ৮ বছর

আজ ১৪ জানুয়ারি, ২০১৪ সালের আজকের এই দিনে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাতাসন দুর্গাপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা মেরে শিশুসহ ছয় বাসযাত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসীরা। দগ্ধ হয় অন্তত ২৫ জন যাত্রী। এই মর্মান্তিক ঘটনার আট বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মামলার বিচার শেষ হয়নি। বরং আইনের মারপ্যাচে মামলার সব কার্যক্রম উচ্চ আদালতে বন্ধ হয়ে গেছে। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে এখন বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে ১৩২ আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬০ আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তারই করতে পারেনি। এ ঘটনার জন্য আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী এবং রাজনৈতিক নেতারা সরকারের সর্বোচ্চ আইন সংস্থা এটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে দায়ী করে অভিযোগ করেছে, তারা শুনানির উদ্যোগ গ্রহণ না করায় মামলাটির স্টে অর্ডারের শুনানি হচ্ছে না। অথচ মামলার বেশির ভাগ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়ে গেছে। উচ্চ আদালতের স্টে অর্ডার উঠে গেলেই মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব বলে তারা জানান।

যেভাবে বাসে পেট্রোল বোমা

মেরে আগুন দেয়া হয়েছিল

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিহত করার নামে বিএনপি জামায়াত জোট সারা দেশে অবরোধের নামে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, তারই প্রথম বলি হয় রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাতাসন দুর্গাপুর এলাকায়। কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে ছেড়ে আসা খলিল পরিবহন নামে যাত্রীবাহী বাস ঢাকার উদ্দেশে রংপুরের বাতাসন এলাকায় আসলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসীরা চলন্ত বাসে বেশ কয়েকটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে পুরো বাসের ভেতরে আগুন ধরে যায়। এতে বাসের ভেতরে থাকা শিশুসহ ৬ যাত্রী জীবন্ত দগ্ধ হয়ে নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ২৫ বাসযাত্রী। গুরতর আহত যাত্রীদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আহতদের অনেকেই চিরদিনের মতো পঙ্গু হয়ে গেছে। বাসযাত্রীরা কাজের সন্ধানে ঢাকা যাচ্ছিল তারা সবাই সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশি কার্যক্রম ও বিচার

এ ঘটনায় এসআই আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় ৮৭ জন জামায়াত নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মিঠাপুকুর থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে তদন্ত করে মিঠাপুকুর থানার ওসি তদন্ত নজরুল ইসলাম ১৩২ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলাটির বিচার রংপুরের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালত-১ এ শুরু হয়। ইতোমধ্যে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৪ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। কিন্তু মামলাটি পুলিশের দায়িত্বহীনতা এবং তদন্তজনিত ত্রুটির সুযোগ নিয়ে আসামিপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে মামলাটির কার্যক্রমের ওপর স্টে ওর্ডার দেয়ার কারণে বিচার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হাইকোর্টের স্টে ওর্ডারের বিরুদ্ধে শুনানির জন্য এটর্নি কার্যালয় কোন পদেক্ষেপ না নেয়ায় দীর্ঘ ৪ বছর ধরে শুনানিও হচ্ছে না ফলে উচ্চ আদালতের দেয়া স্টে অর্ডার বহাল থাকায় মামলার কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে আইনজ্ঞরা জানিয়েছেন। এদিকে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় পুলিশ ১৩২ জন আসামির মধ্যে ৮ বছরেও ৬০ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

আইনজীবী মানবাধিকার কর্মী ও রাজনৈতিক নেতারা যা বলেছেন

এ ব্যাপারে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজিবীদের অন্যতম অতিরিক্ত পিপি আবদুস সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামলাটি বিচার শেষ পর্যায়ে এসে গেছে। কিন্তু আসামিপক্ষ হাইকোর্টে মামলাটি কোয়াশম্যান্ট করার জন্য আবেদন করায় মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে তবে খুব দ্রুতই হাইকোর্টে শুনানি শেষ হলে বিচার শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অন্যদিকে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী প্রধান আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এবং রংপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মালেক অ্যাডভোকেট জানান, চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি পুলিশ বাদী হয়ে ৮৭ জন আসামির নাম উল্লেখ করে মিঠাপুকুর থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করে পরবর্তীতে তদন্তকালে আরও অনেকের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়ায় ওই ৮৭ জন আসামিসহ ১৩২ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। তিনি জানান, ইতোমধ্যে মামলায় বাদীসহ ৪৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেলা সম্পন্ন হয়েছে মাত্র কয়েকজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ বাকি রয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি স্বীকার করেন, মামলাটি তদন্তে ক্রটি থাকায় এ সুযোগ নিয়েছে আসামি পক্ষ তারা হাইকোর্টে মামলাটি খারিজ করার আবেদন জানিয়ে আবেদন করায় আদালত মামলার কার্যক্রমের উপর স্টে ওর্ডার দেয়ায় বিচারে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তিনি জানান, হাইকোর্টে যাতে দ্রুত শুনানি করা হয় সে জন্য এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে তারা পদক্ষেপ নিলে দ্রুত শুনানি করে বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে ফেরত আনা সম্ভব। তবে তিনি আশা করেন বিষয়টি আর দেরি না করে দ্রুত সমাধান হবে এ প্রত্যাশা করেন তিনি।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, মূলত ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধ করার নামে বিএনপি জামায়াত শিবির চক্র পরিকল্পিতভাবে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা মেরে শিশুসহ ৬ নিরাপরাধ যাত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে অনেকেই চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে। এই মামলাটির এখনও বিচার সম্পন্ন না হওয়া অত্যান্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, আসামিরা মামলাটির বিচবার বিলম্বিত করার জন্য হাইকোর্টে স্টে ওর্ডার করিয়ে কার্যক্রম স্থগিত করেছে। এ ব্যাপারে এটর্নি জেনারেল কার্যালয় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান সেই সঙ্গে আইনমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এদিকে মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন অ্যাডভোকেট জানান, বিএনপি জামায়াত জোট যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা মেরে ৬ যাত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করার পরও মামলাটির যদি বিচার না হয় আইনের মারপ্যাচে আটকে যায় তাহলে এ দায় কার? তিনি দ্রুত মামলাটির বিচার শেষ করে দোষীদের সাজা দেয়া না হলে তারা আরও বড় ধরনের সহিংসতা করবে বলে তিনি মনে করেন।

শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২২ , ৩০ পৌষ ১৪২৮ ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

বাসে পেট্রোল বোমা, ৬ যাত্রী পুড়িয়ে হত্যার ৮ বছর

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

image

রংপুর : মিঠাপুকুরে জামায়াত-শিবিরের দেয়া আগুনে পোড়া বাসের ধ্বংসাবশেষ -সংবাদ

আজ ১৪ জানুয়ারি, ২০১৪ সালের আজকের এই দিনে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাতাসন দুর্গাপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা মেরে শিশুসহ ছয় বাসযাত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসীরা। দগ্ধ হয় অন্তত ২৫ জন যাত্রী। এই মর্মান্তিক ঘটনার আট বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মামলার বিচার শেষ হয়নি। বরং আইনের মারপ্যাচে মামলার সব কার্যক্রম উচ্চ আদালতে বন্ধ হয়ে গেছে। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে এখন বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে ১৩২ আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬০ আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তারই করতে পারেনি। এ ঘটনার জন্য আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী এবং রাজনৈতিক নেতারা সরকারের সর্বোচ্চ আইন সংস্থা এটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে দায়ী করে অভিযোগ করেছে, তারা শুনানির উদ্যোগ গ্রহণ না করায় মামলাটির স্টে অর্ডারের শুনানি হচ্ছে না। অথচ মামলার বেশির ভাগ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়ে গেছে। উচ্চ আদালতের স্টে অর্ডার উঠে গেলেই মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব বলে তারা জানান।

যেভাবে বাসে পেট্রোল বোমা

মেরে আগুন দেয়া হয়েছিল

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিহত করার নামে বিএনপি জামায়াত জোট সারা দেশে অবরোধের নামে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, তারই প্রথম বলি হয় রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাতাসন দুর্গাপুর এলাকায়। কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে ছেড়ে আসা খলিল পরিবহন নামে যাত্রীবাহী বাস ঢাকার উদ্দেশে রংপুরের বাতাসন এলাকায় আসলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসীরা চলন্ত বাসে বেশ কয়েকটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে পুরো বাসের ভেতরে আগুন ধরে যায়। এতে বাসের ভেতরে থাকা শিশুসহ ৬ যাত্রী জীবন্ত দগ্ধ হয়ে নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ২৫ বাসযাত্রী। গুরতর আহত যাত্রীদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আহতদের অনেকেই চিরদিনের মতো পঙ্গু হয়ে গেছে। বাসযাত্রীরা কাজের সন্ধানে ঢাকা যাচ্ছিল তারা সবাই সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশি কার্যক্রম ও বিচার

এ ঘটনায় এসআই আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় ৮৭ জন জামায়াত নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মিঠাপুকুর থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে তদন্ত করে মিঠাপুকুর থানার ওসি তদন্ত নজরুল ইসলাম ১৩২ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলাটির বিচার রংপুরের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালত-১ এ শুরু হয়। ইতোমধ্যে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৪ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। কিন্তু মামলাটি পুলিশের দায়িত্বহীনতা এবং তদন্তজনিত ত্রুটির সুযোগ নিয়ে আসামিপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে মামলাটির কার্যক্রমের ওপর স্টে ওর্ডার দেয়ার কারণে বিচার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হাইকোর্টের স্টে ওর্ডারের বিরুদ্ধে শুনানির জন্য এটর্নি কার্যালয় কোন পদেক্ষেপ না নেয়ায় দীর্ঘ ৪ বছর ধরে শুনানিও হচ্ছে না ফলে উচ্চ আদালতের দেয়া স্টে অর্ডার বহাল থাকায় মামলার কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে আইনজ্ঞরা জানিয়েছেন। এদিকে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় পুলিশ ১৩২ জন আসামির মধ্যে ৮ বছরেও ৬০ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

আইনজীবী মানবাধিকার কর্মী ও রাজনৈতিক নেতারা যা বলেছেন

এ ব্যাপারে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজিবীদের অন্যতম অতিরিক্ত পিপি আবদুস সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামলাটি বিচার শেষ পর্যায়ে এসে গেছে। কিন্তু আসামিপক্ষ হাইকোর্টে মামলাটি কোয়াশম্যান্ট করার জন্য আবেদন করায় মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে তবে খুব দ্রুতই হাইকোর্টে শুনানি শেষ হলে বিচার শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অন্যদিকে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী প্রধান আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এবং রংপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মালেক অ্যাডভোকেট জানান, চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি পুলিশ বাদী হয়ে ৮৭ জন আসামির নাম উল্লেখ করে মিঠাপুকুর থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করে পরবর্তীতে তদন্তকালে আরও অনেকের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়ায় ওই ৮৭ জন আসামিসহ ১৩২ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। তিনি জানান, ইতোমধ্যে মামলায় বাদীসহ ৪৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেলা সম্পন্ন হয়েছে মাত্র কয়েকজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ বাকি রয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি স্বীকার করেন, মামলাটি তদন্তে ক্রটি থাকায় এ সুযোগ নিয়েছে আসামি পক্ষ তারা হাইকোর্টে মামলাটি খারিজ করার আবেদন জানিয়ে আবেদন করায় আদালত মামলার কার্যক্রমের উপর স্টে ওর্ডার দেয়ায় বিচারে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তিনি জানান, হাইকোর্টে যাতে দ্রুত শুনানি করা হয় সে জন্য এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে তারা পদক্ষেপ নিলে দ্রুত শুনানি করে বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে ফেরত আনা সম্ভব। তবে তিনি আশা করেন বিষয়টি আর দেরি না করে দ্রুত সমাধান হবে এ প্রত্যাশা করেন তিনি।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, মূলত ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধ করার নামে বিএনপি জামায়াত শিবির চক্র পরিকল্পিতভাবে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা মেরে শিশুসহ ৬ নিরাপরাধ যাত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে অনেকেই চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে। এই মামলাটির এখনও বিচার সম্পন্ন না হওয়া অত্যান্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, আসামিরা মামলাটির বিচবার বিলম্বিত করার জন্য হাইকোর্টে স্টে ওর্ডার করিয়ে কার্যক্রম স্থগিত করেছে। এ ব্যাপারে এটর্নি জেনারেল কার্যালয় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান সেই সঙ্গে আইনমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এদিকে মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন অ্যাডভোকেট জানান, বিএনপি জামায়াত জোট যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা মেরে ৬ যাত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করার পরও মামলাটির যদি বিচার না হয় আইনের মারপ্যাচে আটকে যায় তাহলে এ দায় কার? তিনি দ্রুত মামলাটির বিচার শেষ করে দোষীদের সাজা দেয়া না হলে তারা আরও বড় ধরনের সহিংসতা করবে বলে তিনি মনে করেন।