রিভিউ খারিজ, ডেসটিনির রফিকুলকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে

চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা পাচারের দুই মামলায় জামিন চেয়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমিনের করা পৃথক দুটি রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। রিভিউ পিটিশন খারিজ হাওয়ায় তাকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদালতে রফিকুল আমিনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, আপিল বিভাগ তাকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল। কিন্তু কোন শর্তই তিনি পূরণ করতে পারেননি। পরে আপিল বিভাগ তার জামিন আবেদন খারিজ করে। সেই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করলে আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেয়।

এর আগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনি গ্রুপের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুটি মামলা করে। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ১৯ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ৪৬ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রোজেক্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে দুই হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। যার মধ্যে দুই হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী। আর মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ প্রোজেক্টের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল এক হাজার ৯০১ কোটি টাকা। সেখান থেকে এক হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। ওই অর্থ আত্মসাতের ফলে সাড়ে আট লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন।

পরে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লা ২০১৬ সালের ২৪ অগাস্ট অভিযোগ গঠনের মধ?্য দিয়ে দুই মামলায় আসামিদের বিচার শুরু করেন। তবে অভিযোগ গঠন হওয়ার আগেই ট্রি প্ল?্যান্টেশনের অর্থ আত্মসাতের মামলায় পাসপোর্ট জমা দেয়ার শর্তে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান রফিকুল আমিন। কিন্তু দুদক হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে সে জামিন স্থগিত হয়ে যায়।

এরপর হাইকোর্টে কয়েক দফা জামিন আবেদন করে ব্যর্থ হন রফিকুল আমিন। এক পর্যায়ে অর্থ পাচারের দুই মামলায় রফিকুল আমিনের জামিন আবেদন হাইকোর্ট সরাসরি খারিজ করে ছয় মাসের মধ্যে মামলা দুটি নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেয়। পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে জামিন আবেদন করলে রফিকুল আমিনের আবদন খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। তবে সে খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করলে তাও খারিজ করে দেয় আদালত।

শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২২ , ৩০ পৌষ ১৪২৮ ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

রিভিউ খারিজ, ডেসটিনির রফিকুলকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে

আদালত বার্তা পরিবেশক

চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা পাচারের দুই মামলায় জামিন চেয়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমিনের করা পৃথক দুটি রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। রিভিউ পিটিশন খারিজ হাওয়ায় তাকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদালতে রফিকুল আমিনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, আপিল বিভাগ তাকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল। কিন্তু কোন শর্তই তিনি পূরণ করতে পারেননি। পরে আপিল বিভাগ তার জামিন আবেদন খারিজ করে। সেই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করলে আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেয়।

এর আগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনি গ্রুপের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুটি মামলা করে। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ১৯ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ৪৬ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রোজেক্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে দুই হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। যার মধ্যে দুই হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী। আর মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ প্রোজেক্টের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল এক হাজার ৯০১ কোটি টাকা। সেখান থেকে এক হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। ওই অর্থ আত্মসাতের ফলে সাড়ে আট লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন।

পরে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লা ২০১৬ সালের ২৪ অগাস্ট অভিযোগ গঠনের মধ?্য দিয়ে দুই মামলায় আসামিদের বিচার শুরু করেন। তবে অভিযোগ গঠন হওয়ার আগেই ট্রি প্ল?্যান্টেশনের অর্থ আত্মসাতের মামলায় পাসপোর্ট জমা দেয়ার শর্তে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান রফিকুল আমিন। কিন্তু দুদক হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে সে জামিন স্থগিত হয়ে যায়।

এরপর হাইকোর্টে কয়েক দফা জামিন আবেদন করে ব্যর্থ হন রফিকুল আমিন। এক পর্যায়ে অর্থ পাচারের দুই মামলায় রফিকুল আমিনের জামিন আবেদন হাইকোর্ট সরাসরি খারিজ করে ছয় মাসের মধ্যে মামলা দুটি নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেয়। পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে জামিন আবেদন করলে রফিকুল আমিনের আবদন খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। তবে সে খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করলে তাও খারিজ করে দেয় আদালত।