সংশোধনের বাজারে সূচক, লেনদেন, মূলধন সবই বেড়েছে

উত্থানে আরও এশটি সপ্তাহ পার করলো শেয়ারবাজার। যদিও এ সময়ে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের মূল্য সংশোধন হয়েছে, তবু বেড়েছে সব মূল্যসূচক। একইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। গত বৃহস্পতিবার সমাপ্ত সপ্তাহে আলোচিত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৩৮৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৬টি বা ৩৮ শতাংশের দাম বেড়েছে, কমেছে ২১৯টির বা ৫৬ শতাংশের দাম। আর ১৯টির দাম ছিল অপরিবর্তিত। বেশিরভাগ কোম্পানি শেয়ারের মূল্য হারালেও বড় মূলধনসম্পন্ন কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় মূল্যসূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী।

গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৯ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে ৭ হাজার ১৭ দশমিক ২৩ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। আগের সপ্তাহে এই সূচকটি ২৩০ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়েছিল। গত সপ্তাহে বাজারমূলধনে শীর্ষ ৩০ কোম্পানির মূল্যসূচক ডিএস৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট বেড়েছে। সূচকটি আগের সপ্তাহে ৭০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বেড়েছিল। আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও বাজারে লেনদেন ও শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে সরকারি কোম্পানির আধিপত্য ছিল। সপ্তাহের মাঝখানে এই খাতের শেয়ারে বড় মূল্য সংশোধনের আভাস দেখা গেলেও শেষ দিনে এসে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠে এসব কোম্পানির শেয়ার।

এ সপ্তাহে ডিএসইতে গড়ে দৈনিক এক হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকায় নেমে এসেছে, যা আগের সপ্তাহেও ছিল এক হাজার ২৯৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সপ্তাহে ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২০ দশমিক ৭২ শতাংশ।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেল সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। এ হিসেবে নতুন বছরের প্রথম দুই সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়লো ২২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসই’র সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১৬.৮১ পয়েন্টে। যা সপ্তাহ শেষে ১৬.৯৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও ০.১৩ পয়েন্ট বা ০.৭৭ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪৬টির বা ৩৮.০২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। সপ্তাহটিতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৬৮.৩০ টাকায়। আর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ৯৮.৩০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩০ টাকা বা ৪৩.৯২ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ডিএসইর সাপ্তাহিক টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।

ডিএসইতে সাপ্তাহিক টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রংপুর ফাউন্ড্রির ৪২.০৪ শতাংশ, প্রাণের ৩৭.৬৯ শতাংশ, বসুন্ধরা পেপারের ৩২.২৩ শতাংশ, আরএকে সিরামিকের ২৩.৫০ শতাংশ, তিতাস গ্যাসের ২১.২৭ শতাংশ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ২০.৩৬ শতাংশ, লাভেলো আইসক্রিমের ১৮.৮১ শতাংশ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ১৭.৮৭ শতাংশ এবং ওয়াটা কেমিক্যালের শেয়ার দর ১৪.৯৮ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২১৯টির বা ৫৭.০৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। সপ্তাহটিতে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২১২.৪০ টাকায়। আর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ১৮৬.৩০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২৬.১০ টাকা বা ১২.২৯ শতাংশ কমেছে। এর মাধ্যমে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ডিএসইর সাপ্তাহিক টপটেন লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।

ডিএসইতে সাপ্তাহিক টপটেন লুজার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে কেডিএস এক্সেসরিজের ৯.৭৩ শতাংশ, এমারেল্ড অয়েলের ৯.৩৪ শতাংশ, এস আলমের ৮.৫৫ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের ৮.২১ শতাংশ, শ্যামপুর সুগারের ৮.১৫ শতাংশ, সি পার্লের ৭.৭৮ শতাংশ, ইজেনারেশনের ৭.৬৯ শতাংশ, অগ্নি সিস্টেমসের ৭.২৩ শতাংশ এবং আরএন স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ৭.০৪ শতাংশ কমেছে।

শনিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২২ , ০১ মাঘ ১৪২৮ ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

সংশোধনের বাজারে সূচক, লেনদেন, মূলধন সবই বেড়েছে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

উত্থানে আরও এশটি সপ্তাহ পার করলো শেয়ারবাজার। যদিও এ সময়ে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের মূল্য সংশোধন হয়েছে, তবু বেড়েছে সব মূল্যসূচক। একইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। গত বৃহস্পতিবার সমাপ্ত সপ্তাহে আলোচিত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৩৮৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৬টি বা ৩৮ শতাংশের দাম বেড়েছে, কমেছে ২১৯টির বা ৫৬ শতাংশের দাম। আর ১৯টির দাম ছিল অপরিবর্তিত। বেশিরভাগ কোম্পানি শেয়ারের মূল্য হারালেও বড় মূলধনসম্পন্ন কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় মূল্যসূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী।

গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৯ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে ৭ হাজার ১৭ দশমিক ২৩ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। আগের সপ্তাহে এই সূচকটি ২৩০ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়েছিল। গত সপ্তাহে বাজারমূলধনে শীর্ষ ৩০ কোম্পানির মূল্যসূচক ডিএস৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট বেড়েছে। সূচকটি আগের সপ্তাহে ৭০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বেড়েছিল। আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও বাজারে লেনদেন ও শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে সরকারি কোম্পানির আধিপত্য ছিল। সপ্তাহের মাঝখানে এই খাতের শেয়ারে বড় মূল্য সংশোধনের আভাস দেখা গেলেও শেষ দিনে এসে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠে এসব কোম্পানির শেয়ার।

এ সপ্তাহে ডিএসইতে গড়ে দৈনিক এক হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকায় নেমে এসেছে, যা আগের সপ্তাহেও ছিল এক হাজার ২৯৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সপ্তাহে ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২০ দশমিক ৭২ শতাংশ।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেল সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। এ হিসেবে নতুন বছরের প্রথম দুই সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়লো ২২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসই’র সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১৬.৮১ পয়েন্টে। যা সপ্তাহ শেষে ১৬.৯৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও ০.১৩ পয়েন্ট বা ০.৭৭ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪৬টির বা ৩৮.০২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। সপ্তাহটিতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৬৮.৩০ টাকায়। আর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ৯৮.৩০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩০ টাকা বা ৪৩.৯২ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ডিএসইর সাপ্তাহিক টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।

ডিএসইতে সাপ্তাহিক টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রংপুর ফাউন্ড্রির ৪২.০৪ শতাংশ, প্রাণের ৩৭.৬৯ শতাংশ, বসুন্ধরা পেপারের ৩২.২৩ শতাংশ, আরএকে সিরামিকের ২৩.৫০ শতাংশ, তিতাস গ্যাসের ২১.২৭ শতাংশ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ২০.৩৬ শতাংশ, লাভেলো আইসক্রিমের ১৮.৮১ শতাংশ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ১৭.৮৭ শতাংশ এবং ওয়াটা কেমিক্যালের শেয়ার দর ১৪.৯৮ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২১৯টির বা ৫৭.০৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। সপ্তাহটিতে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২১২.৪০ টাকায়। আর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ১৮৬.৩০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২৬.১০ টাকা বা ১২.২৯ শতাংশ কমেছে। এর মাধ্যমে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ডিএসইর সাপ্তাহিক টপটেন লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।

ডিএসইতে সাপ্তাহিক টপটেন লুজার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে কেডিএস এক্সেসরিজের ৯.৭৩ শতাংশ, এমারেল্ড অয়েলের ৯.৩৪ শতাংশ, এস আলমের ৮.৫৫ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের ৮.২১ শতাংশ, শ্যামপুর সুগারের ৮.১৫ শতাংশ, সি পার্লের ৭.৭৮ শতাংশ, ইজেনারেশনের ৭.৬৯ শতাংশ, অগ্নি সিস্টেমসের ৭.২৩ শতাংশ এবং আরএন স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ৭.০৪ শতাংশ কমেছে।