শেষ দিনের প্রচারণায় উৎসবের আমেজ

প্রচারণার শেষ দিনে বিশাল গণমিছিল বের করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। গতকাল বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় তার মিছিল চাষাঢ়ায় বঙ্গবন্ধু সড়কের পশ্চিম পাশে এসে পৌঁছালে পূর্বপাশে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ছিলেন খেলাফত মজলিশের মেয়র প্রার্থী এ বি এম সিরাজুল মামুন। কোন গোলযোগ কিংবা হট্টগোল ছাড়াই মিছিল দুটি দু’দিকে চলে যায়। রাত ৮টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত একই পরিস্থিতি ছিল নগরীর অন্যান্য এলাকাগুলোতেও। কোন ধরনের সহিংসতার ঘটনা ছাড়াই উৎসবের আমেজে প্রচারণা শেষ হয়েছে।

শেষদিনে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ছুটির দিনে প্রার্থীদের প্রচারণায় নগরীতে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী শহরে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার বন্দরে বিশাল মিছিল করেছেন। আইভী দুপুর ৩টায় শহরের দুই নম্বর রেলগেট এলাকায় পথসভা করেন। এই পথসভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। পরে হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধু সড়কে বিশাল গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়। আইভীর নেতৃত্বে মিছিলটি বঙ্গবন্ধু সড়ক, নবাব সলিমুল্লাহ সড়ক, সিরাজউদ্দোল্লা সড়ক প্রদিক্ষণ করে। ডাকঢোল পিটিয়ে নৌকার সেøাগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো শহর। সড়কের আশপাশের মানুষ আইভীকে দেখার জন্য ভিড় করেন। তিনি সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।

এদিকে নগরীর বন্দরের কবিলার মোড় থেকে মিছিল বের করেন তৈমুর আলম খন্দকার। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বন্দরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়ান তিনি। সকালে বিশাল মিছিল করেছেন ইসলামী আন্দোলন মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ। তিনি শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে মিছিল করেন। এই সময় কর্মী-সমর্থকদের হাতে হাতপাখা প্রতীক দেখা যায়। দুপুরে চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন খেলাফত মজলিশের প্রার্থী সিরাজুল মামুন। পরে বিকেলে দলীয় প্রতীক দেয়ালঘড়ির স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন সিরাজুল মামুন ও তার কর্মী-সমর্থকরা। প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিম উদ্দিন, কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌসও। তবে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের কামরুল ইসলাম বাবুকে প্রচারণার শেষদিনেও কোথাও দেখা যায়নি।

নিজ নিজ ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন ঠেলাগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী মাকছুদুল আলম খন্দকার। এই ওয়ার্ডে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেডিও প্রতীকের শাহ্ ফয়েজ উল্লাহও মিছিল ও গণসংযোগ করেছেন। নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন অসিত বরণ বিশ্বাস। তিনি লড়ছেন ঝুড়ি প্রতীকে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন কবির হোসাইন। প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন ১৩, ১৪, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে মোবাইল ফোন প্রতীকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী পপি রানী সরকার। দিনভর গণসংযোগ করেছেন ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে আনারস প্রতীকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী আফসানা আফরোজ বিভা। নদীর পূর্বপাড়ে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ফয়সাল মো. সাগর, ২২ নম্বরে সুলতান আহমেদ, ২৩ নম্বরে আবুল কাউসার আশা প্রচারণা চালিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৬ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার প্রতিটি কেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে। মেয়র ও কাউন্সিলর পদের ১৮৯ জন প্রার্থীর মধ্যে একজন মেয়রসহ নির্বাচিত হবেন ৩৭ জনের একটি পরিষদ। এই পরিষদ আগামী ৫ বছর কার্যকর থাকবে।

শনিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২২ , ০১ মাঘ ১৪২৮ ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

নাসিক নির্বাচন

শেষ দিনের প্রচারণায় উৎসবের আমেজ

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

প্রচারণার শেষ দিনে বিশাল গণমিছিল বের করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। গতকাল বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় তার মিছিল চাষাঢ়ায় বঙ্গবন্ধু সড়কের পশ্চিম পাশে এসে পৌঁছালে পূর্বপাশে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ছিলেন খেলাফত মজলিশের মেয়র প্রার্থী এ বি এম সিরাজুল মামুন। কোন গোলযোগ কিংবা হট্টগোল ছাড়াই মিছিল দুটি দু’দিকে চলে যায়। রাত ৮টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত একই পরিস্থিতি ছিল নগরীর অন্যান্য এলাকাগুলোতেও। কোন ধরনের সহিংসতার ঘটনা ছাড়াই উৎসবের আমেজে প্রচারণা শেষ হয়েছে।

শেষদিনে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ছুটির দিনে প্রার্থীদের প্রচারণায় নগরীতে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী শহরে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার বন্দরে বিশাল মিছিল করেছেন। আইভী দুপুর ৩টায় শহরের দুই নম্বর রেলগেট এলাকায় পথসভা করেন। এই পথসভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। পরে হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধু সড়কে বিশাল গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়। আইভীর নেতৃত্বে মিছিলটি বঙ্গবন্ধু সড়ক, নবাব সলিমুল্লাহ সড়ক, সিরাজউদ্দোল্লা সড়ক প্রদিক্ষণ করে। ডাকঢোল পিটিয়ে নৌকার সেøাগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো শহর। সড়কের আশপাশের মানুষ আইভীকে দেখার জন্য ভিড় করেন। তিনি সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।

এদিকে নগরীর বন্দরের কবিলার মোড় থেকে মিছিল বের করেন তৈমুর আলম খন্দকার। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বন্দরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়ান তিনি। সকালে বিশাল মিছিল করেছেন ইসলামী আন্দোলন মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ। তিনি শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে মিছিল করেন। এই সময় কর্মী-সমর্থকদের হাতে হাতপাখা প্রতীক দেখা যায়। দুপুরে চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন খেলাফত মজলিশের প্রার্থী সিরাজুল মামুন। পরে বিকেলে দলীয় প্রতীক দেয়ালঘড়ির স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন সিরাজুল মামুন ও তার কর্মী-সমর্থকরা। প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিম উদ্দিন, কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌসও। তবে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের কামরুল ইসলাম বাবুকে প্রচারণার শেষদিনেও কোথাও দেখা যায়নি।

নিজ নিজ ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন ঠেলাগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী মাকছুদুল আলম খন্দকার। এই ওয়ার্ডে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেডিও প্রতীকের শাহ্ ফয়েজ উল্লাহও মিছিল ও গণসংযোগ করেছেন। নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন অসিত বরণ বিশ্বাস। তিনি লড়ছেন ঝুড়ি প্রতীকে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন কবির হোসাইন। প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন ১৩, ১৪, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে মোবাইল ফোন প্রতীকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী পপি রানী সরকার। দিনভর গণসংযোগ করেছেন ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে আনারস প্রতীকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী আফসানা আফরোজ বিভা। নদীর পূর্বপাড়ে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ফয়সাল মো. সাগর, ২২ নম্বরে সুলতান আহমেদ, ২৩ নম্বরে আবুল কাউসার আশা প্রচারণা চালিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৬ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার প্রতিটি কেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে। মেয়র ও কাউন্সিলর পদের ১৮৯ জন প্রার্থীর মধ্যে একজন মেয়রসহ নির্বাচিত হবেন ৩৭ জনের একটি পরিষদ। এই পরিষদ আগামী ৫ বছর কার্যকর থাকবে।