প্রতিবাদী আইভীকে ঠেকাতে রাজনীতির গডফাদাররা ঐক্যবদ্ধ

‘প্রতিবাদী আইভীকে ঠেকাতে রাজনীতির গডফাদাররা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। গতকাল বিকেলে শহরের দুই নম্বর রেলগেইট এলাকায় অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী পথসভায় এই মন্তব্য করেন তারা। নেতারা আরও বলেন, তারা জানে না আইভীকে রোধ করবার শক্তি তাদের নাই। এই বিপুল জনসমাগমই বলে দিচ্ছে, নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত।

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণার শেষ দিনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে এই পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সড়কের ওপর অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা ও সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত।

সভায় নানক বলেন, আইভী এই শহরে উড়ে এসে জুড়ে বসা কেউ না। অগ্নিপরীক্ষায় পরীক্ষিত তিনি। এই নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাস ও অশান্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে আইভী। নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের জন্য আইভীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করুন। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারদলীয় এই নেতা বলেন, কেউ কেউ অশান্তি করার চেষ্টা কররবে। প্রশাসনকে এই বিষয়ে বলা হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন সন্ত্রাসীর উঁকিঝুঁকি মানা হবে না।

আবদুর রহমান বলেন, আইভী এই শহরে ত্বকী হত্যা, সাত খুনের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পাশাপাশি চাঁদাবাজ ও নতুন কোন গডফাদারের যাতে জন্ম হতে দেবেন না। প্রয়োজনে জীবন দেবেন তবু এই নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে দেবেন না। আর এ জন্যই সব অপশক্তি, নৈরাজ্যবাদীরা, সব রাজনীতির গডফাদাররা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে প্রতিবাদী আইভীর জয়যাত্রা বন্ধ করতে। কিন্তু তারা জানে না আইভীকে রোধ করবার শক্তি তাদের নেই। এই বিপুল জনসমাগমই বলে দিচ্ছে, নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত। বনের হাতি বনে ফিরে যাবে আর নৌকার বিজয় হবে।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আইভী এই নগরীতে উন্নত করেছেন। তিনি পুনরায় বিজয়ী হলে তার নেতৃত্বে এই নগরী আরও সুন্দর হবে, উন্নত হবে। সন্ত্রাসমুক্ত নগরী আইভীই গড়তে পারেন।

সভায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীও বক্তব্য রাখেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তিনি সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের অন্য নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। আইভী বলেন, ‘এ নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি, জনগণের ঘাঁটি। আমার বাবা আওয়ামী লীগের একজন কর্মী ছিলেন। তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। তিনি আমাকে শিখিয়েছেন মানুষের মাঝেই আল্লাহ বিরাজমান। মানুষকে সেবা করলেই আল্লাহকে পাওয়া যায়। আমি দীর্ঘদিন আপনাদের জন্য কাজ করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরে নারায়ণগঞ্জের আনাচে-কানাচে উন্নয়ন হয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন। আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরে দেখেছি। মাটি ও মানুষ বলছেন নৌকা, নৌকা। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে অনুরোধ করবো, আমাকে পাঁচ বছরের জন্য সুযোগ দেন। যেকোন সময় অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে। আমি আপনাদের জন্য মৃত্যুকেও বরণ করতে রাজি আছি। আমি ঘর-সংসারের দিকে তাকাইনি। আশা করি আপনারা আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।’

প্রচারণার শেষ দিনে দুপুর তিনটায় শুরু হওয়া পথসভা শেষ হয় বিকেল পাঁচটায়। পরে শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে বিশাল গণমিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। ডাকঢোল পিটিয়ে নৌকার সেøাগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো শহর। সড়কের আশপাশের মানুষ আইভীকে দেখার জন্য ভিড় করেন। তিনি সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।

শনিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২২ , ০১ মাঘ ১৪২৮ ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

প্রতিবাদী আইভীকে ঠেকাতে রাজনীতির গডফাদাররা ঐক্যবদ্ধ

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

‘প্রতিবাদী আইভীকে ঠেকাতে রাজনীতির গডফাদাররা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। গতকাল বিকেলে শহরের দুই নম্বর রেলগেইট এলাকায় অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী পথসভায় এই মন্তব্য করেন তারা। নেতারা আরও বলেন, তারা জানে না আইভীকে রোধ করবার শক্তি তাদের নাই। এই বিপুল জনসমাগমই বলে দিচ্ছে, নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত।

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণার শেষ দিনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে এই পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সড়কের ওপর অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা ও সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত।

সভায় নানক বলেন, আইভী এই শহরে উড়ে এসে জুড়ে বসা কেউ না। অগ্নিপরীক্ষায় পরীক্ষিত তিনি। এই নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাস ও অশান্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে আইভী। নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের জন্য আইভীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করুন। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারদলীয় এই নেতা বলেন, কেউ কেউ অশান্তি করার চেষ্টা কররবে। প্রশাসনকে এই বিষয়ে বলা হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন সন্ত্রাসীর উঁকিঝুঁকি মানা হবে না।

আবদুর রহমান বলেন, আইভী এই শহরে ত্বকী হত্যা, সাত খুনের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পাশাপাশি চাঁদাবাজ ও নতুন কোন গডফাদারের যাতে জন্ম হতে দেবেন না। প্রয়োজনে জীবন দেবেন তবু এই নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে দেবেন না। আর এ জন্যই সব অপশক্তি, নৈরাজ্যবাদীরা, সব রাজনীতির গডফাদাররা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে প্রতিবাদী আইভীর জয়যাত্রা বন্ধ করতে। কিন্তু তারা জানে না আইভীকে রোধ করবার শক্তি তাদের নেই। এই বিপুল জনসমাগমই বলে দিচ্ছে, নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত। বনের হাতি বনে ফিরে যাবে আর নৌকার বিজয় হবে।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আইভী এই নগরীতে উন্নত করেছেন। তিনি পুনরায় বিজয়ী হলে তার নেতৃত্বে এই নগরী আরও সুন্দর হবে, উন্নত হবে। সন্ত্রাসমুক্ত নগরী আইভীই গড়তে পারেন।

সভায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীও বক্তব্য রাখেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তিনি সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের অন্য নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। আইভী বলেন, ‘এ নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি, জনগণের ঘাঁটি। আমার বাবা আওয়ামী লীগের একজন কর্মী ছিলেন। তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। তিনি আমাকে শিখিয়েছেন মানুষের মাঝেই আল্লাহ বিরাজমান। মানুষকে সেবা করলেই আল্লাহকে পাওয়া যায়। আমি দীর্ঘদিন আপনাদের জন্য কাজ করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরে নারায়ণগঞ্জের আনাচে-কানাচে উন্নয়ন হয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন। আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরে দেখেছি। মাটি ও মানুষ বলছেন নৌকা, নৌকা। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে অনুরোধ করবো, আমাকে পাঁচ বছরের জন্য সুযোগ দেন। যেকোন সময় অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে। আমি আপনাদের জন্য মৃত্যুকেও বরণ করতে রাজি আছি। আমি ঘর-সংসারের দিকে তাকাইনি। আশা করি আপনারা আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।’

প্রচারণার শেষ দিনে দুপুর তিনটায় শুরু হওয়া পথসভা শেষ হয় বিকেল পাঁচটায়। পরে শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে বিশাল গণমিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। ডাকঢোল পিটিয়ে নৌকার সেøাগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো শহর। সড়কের আশপাশের মানুষ আইভীকে দেখার জন্য ভিড় করেন। তিনি সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।