সড়কের দু’পাশে মরা গাছ দুর্ঘটনা আতঙ্কে মানুষ

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে নানা প্রজাতির অসংখ্য মরা গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। যেকোন মুহূর্তে গাছগুলো রাস্তার ওপরে পড়ে ঘটতে পারে প্রাণহানিসহ মারাত্মক দুর্ঘটনা। অন্যদিকে মূল্যবান গাছগুলো মরে বৃষ্টিতে ভিজে রোদে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে।

জানা যায়, দশমিনা-পটুয়াখালী, দশমিনা-বাউফল,দশমিনা-বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক সহ উপজেলার সকল ইউনিয়নের সংযোগ সড়কগুলোর দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মূল্যবান মরা গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। গাছগুলো দীর্ঘদিন ধরে মরে শুকিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গাছগুলো অপসারণের ব্যবস্থা করেনি। মরে শুকিয়ে থাকায় মাঝে মধ্যেই ভেঙ্গে পড়ে রাস্তার ওপর। ফলে সড়কগুলোতে মাঝে মধ্যেই যানজট সৃষ্টিসহ চলাচলকারী যানবাহনের চালক, যাত্রী ও পথচারীরা আতঙ্কে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বটতলা-বাঁশবাড়িয়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত সংযোগ সড়কের উভয় পাশে মরা রেইন্ট্রি ও শিশু গাছ রয়েছে। দশমিনা-বাউফল মহাসড়কের দুপাশেও একই অবস্থা। উপজেলা শহরের নলখোলা এলাকা থেকে আলীপুরা ইউনিয়নের সংযোগ সড়কের উভয় পাশে কয়েকশ মরা রেইন্ট্রি, মেহগনি ও শিশু গাছ রয়েছে। কোথাওবা কাত হয়ে রাস্তার পাশে অযতœ অবহেলায় পড়ে রয়েছে। উপজেলা শহরের হাসপাতাল রোডে রয়েছে কয়েকটি মরা গাছ। এছাড়াও সড়কের দুপাশে বিভিন্ন সময়ে ঝড়ে কিংবা বাতাসে পরে যাওয়া অনেক গাছ দেখতে পাওয়া যায়।

জানা যায়, বছরের পর বছর এ মরা গাছগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে কিছু গাছ বিধি মোতাবেক বিক্রির উপযোগী থাকলেও অধিকাংশ গাছই বিক্রির অনুপযোগী হয়ে গেছে। আবার কিছু বিক্রির অনুপযোগী হতে চলছে। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

দশমিনা সদর রোডের ব্যবসায়ী নুরুল হক মীর জানান, গতবছর বর্ষায় একটি গাছ পরে আমার দোকানের কিছু মালামাল নষ্ট হয়েছিল। যানবাহন ও পথচারীরা অল্পের জন্য রক্ষা পেলেও দীর্ঘ সময়ের জন্য রাস্তায় তৈরি হয়েছিল যানজট।

উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের বগুড়া গ্রামের পথচারী ইউনুছ তালুকদার জানান, রাস্তার দুপাশের এমন মরা গাছগুলো পথচারী যানবাহন ও গৃহপালিত পশুর জন্য যথেষ্ট ঝুঁঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটতে পারে। তাই দ্রুত রাস্তার দুপাশ থেকে বিধি মোতাবেক মরা গাছগুলো অপসারণ করা উচিত।

উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গছানী বাজারের বাসিন্দা সামসুল হক রাড়ি জানান, রাস্তার দুপাশের এমন মরা গাছগুলো যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটতে পারে। তাই দ্রুত রাস্তার দুপাশ থেকে বিধি মোতাবেক মরা গাছগুলো অপসারণ করা উচিত।

দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার মো. শাহজাহান জানান, এ গাছগুলো পথচারী ও যানবাহনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। মরা গাছের ডাল পরে আমার এ্যাম্বুলেন্সের দুটো গ্লাস ভেঙ্গে গেছে। অল্পের জন্য আমি বহনকৃত রোগীসহ প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।

দশমিনা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা অমিতাভ বসু জানান, সকল রাস্তার পাশের গাছই বন বিভাগের নয়। কিছু কিছু সড়কের পাশের গাছ এলজিইডি’র তত্ত্বাবধানে রয়েছে। রাস্তার দুই পাশে বন বিভাগের মৃত ও ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অতি শীঘ্রই মার্ক করে নির্ধারিত বিধি মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে।

দশমিনা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. মকবুল হোসেন জানান, সংশ্লিষ্ট নীতিমালার বাইরে তো আমরা কিছুই করতে পারি না। সরকারি বিধি মোতাবেক অতি শীঘ্রই মরা গাছগুলো অপসারণের প্রক্রিয়া করব।

সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২ , ১০ মাঘ ১৪২৮ ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

সড়কের দু’পাশে মরা গাছ দুর্ঘটনা আতঙ্কে মানুষ

প্রতিনিধি, দশমিনা (পটুয়াখালী)

image

দশমিনা (পটুয়াখালী) : উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে নানান প্রজাতির অসংখ্য মরা গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে -সংবাদ

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে নানা প্রজাতির অসংখ্য মরা গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। যেকোন মুহূর্তে গাছগুলো রাস্তার ওপরে পড়ে ঘটতে পারে প্রাণহানিসহ মারাত্মক দুর্ঘটনা। অন্যদিকে মূল্যবান গাছগুলো মরে বৃষ্টিতে ভিজে রোদে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে।

জানা যায়, দশমিনা-পটুয়াখালী, দশমিনা-বাউফল,দশমিনা-বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক সহ উপজেলার সকল ইউনিয়নের সংযোগ সড়কগুলোর দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মূল্যবান মরা গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। গাছগুলো দীর্ঘদিন ধরে মরে শুকিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গাছগুলো অপসারণের ব্যবস্থা করেনি। মরে শুকিয়ে থাকায় মাঝে মধ্যেই ভেঙ্গে পড়ে রাস্তার ওপর। ফলে সড়কগুলোতে মাঝে মধ্যেই যানজট সৃষ্টিসহ চলাচলকারী যানবাহনের চালক, যাত্রী ও পথচারীরা আতঙ্কে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বটতলা-বাঁশবাড়িয়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত সংযোগ সড়কের উভয় পাশে মরা রেইন্ট্রি ও শিশু গাছ রয়েছে। দশমিনা-বাউফল মহাসড়কের দুপাশেও একই অবস্থা। উপজেলা শহরের নলখোলা এলাকা থেকে আলীপুরা ইউনিয়নের সংযোগ সড়কের উভয় পাশে কয়েকশ মরা রেইন্ট্রি, মেহগনি ও শিশু গাছ রয়েছে। কোথাওবা কাত হয়ে রাস্তার পাশে অযতœ অবহেলায় পড়ে রয়েছে। উপজেলা শহরের হাসপাতাল রোডে রয়েছে কয়েকটি মরা গাছ। এছাড়াও সড়কের দুপাশে বিভিন্ন সময়ে ঝড়ে কিংবা বাতাসে পরে যাওয়া অনেক গাছ দেখতে পাওয়া যায়।

জানা যায়, বছরের পর বছর এ মরা গাছগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে কিছু গাছ বিধি মোতাবেক বিক্রির উপযোগী থাকলেও অধিকাংশ গাছই বিক্রির অনুপযোগী হয়ে গেছে। আবার কিছু বিক্রির অনুপযোগী হতে চলছে। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

দশমিনা সদর রোডের ব্যবসায়ী নুরুল হক মীর জানান, গতবছর বর্ষায় একটি গাছ পরে আমার দোকানের কিছু মালামাল নষ্ট হয়েছিল। যানবাহন ও পথচারীরা অল্পের জন্য রক্ষা পেলেও দীর্ঘ সময়ের জন্য রাস্তায় তৈরি হয়েছিল যানজট।

উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের বগুড়া গ্রামের পথচারী ইউনুছ তালুকদার জানান, রাস্তার দুপাশের এমন মরা গাছগুলো পথচারী যানবাহন ও গৃহপালিত পশুর জন্য যথেষ্ট ঝুঁঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটতে পারে। তাই দ্রুত রাস্তার দুপাশ থেকে বিধি মোতাবেক মরা গাছগুলো অপসারণ করা উচিত।

উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গছানী বাজারের বাসিন্দা সামসুল হক রাড়ি জানান, রাস্তার দুপাশের এমন মরা গাছগুলো যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটতে পারে। তাই দ্রুত রাস্তার দুপাশ থেকে বিধি মোতাবেক মরা গাছগুলো অপসারণ করা উচিত।

দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার মো. শাহজাহান জানান, এ গাছগুলো পথচারী ও যানবাহনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। মরা গাছের ডাল পরে আমার এ্যাম্বুলেন্সের দুটো গ্লাস ভেঙ্গে গেছে। অল্পের জন্য আমি বহনকৃত রোগীসহ প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।

দশমিনা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা অমিতাভ বসু জানান, সকল রাস্তার পাশের গাছই বন বিভাগের নয়। কিছু কিছু সড়কের পাশের গাছ এলজিইডি’র তত্ত্বাবধানে রয়েছে। রাস্তার দুই পাশে বন বিভাগের মৃত ও ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অতি শীঘ্রই মার্ক করে নির্ধারিত বিধি মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে।

দশমিনা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. মকবুল হোসেন জানান, সংশ্লিষ্ট নীতিমালার বাইরে তো আমরা কিছুই করতে পারি না। সরকারি বিধি মোতাবেক অতি শীঘ্রই মরা গাছগুলো অপসারণের প্রক্রিয়া করব।