দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আরও কমছে তাপমাত্রা

গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, দুদিন যাবত সূর্যের দেখা নেই

ঝিরঝিরে হিমেল বাতাস, ঘণ কুয়াশার দাপট আর কনকনে শীতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নাকাল জনজীবন। বিপাকে পড়েছেন কৃষিজীবী শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। আগের দিনের তুলনায় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ঠাণ্ডা বাতাসে কাবু মানুষ। এতে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ। ঢাকা, খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আরও দু-একদিন এই আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া সর্বশেষ তথ্যমতে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৬, ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৮, চট্টগ্রামে ১৬ দশমিক ২, সিলেটে ১৩ দশমিক ৫, রাজশাহীতে ১৩ দশমিক ৭, রংপুরে ১৩ দশমিক ৪, খুলনায় ১৪ দশমিক ৮ এবং বরিশালে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

বরিশাল : বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে শনিবার থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। এদিন শেষ রাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত মাঝারি কুয়াশায় নৌ ও আকাশ পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা বিপর্যস্ত ছিল। দিনভর মেঘলা আকাশের কারণে সূর্য আড়ালে ছিল। গতকাল সকালে আকাশ কিছুটা উজ্বল থাকলেও বেলা ১২টার পর থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। এ সময় মেঘলা আকাশ ছিল। পরপর দু’দিন সূর্যের দেখা না পাওয়ায় জনজীবনেও বিরূপ প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

কুয়াশার কারণে গত শনিবার দিনের প্রথমভাগে বরিশাল সেক্টরের দুটি ফ্লাইট এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করে। দুপুরের পর হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। দিনভর সূর্যের দেখ না মেলার সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ ছিল চরমে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বেশির ভাগ মানুষই ঘর থেকে বের হননি।

এ বছর অগ্রহায়ণের শেষ থেকে পৌষের দু’দফার বৃষ্টিপাতে উঠতি আমন ধান এবং শীতকালীন শাক সবজিসহ বিভিন্ন রবি ফসলের ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১শ’ কোটি টাকার ওপরে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বরিশাল বিভাগসহ কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়ে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির পাশাপাশি দিনের তাপমাত্রা হ্রাসের কথাও বলা হয়েছে। পাশাপাশি রোববারের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

রাজশাহী

রাজশাহীতে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে। সেই সঙ্গে আকাশেও মেঘ রয়েছে। গতকাল রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া আগের দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থৎ একদিনে তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি। গত তিনদিনে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২ দশমিক ৭ মিলিলিটার। গতকাল সকাল ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে দশমিক ২ মিলিলিটার। বৃষ্টিপাত আর মেঘলা আকাশের কারণে বেড়েছে তাপমাত্রা এমনটিই বলছে রাজশাহীর আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, আকাশে মেঘ রয়েছে। আজ বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে। আকাশে মেঘ থাকার কারণে তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে বৃষ্টিপাতের পরে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। ফেলে বেশি শীত অনুভূত হতে পারে। এদিকে বৃষ্টি ঘন কুয়াশায় মুড়ি দিয়েছিল পদ্মাপাড়ের রাজশাহীতে। দিনভর বয়ে চলা ঠাণ্ডা বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষগুলো। সারাদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। রোদের উত্তাপ শীতার্ত মানুষগুলোর গায়ে লাগেনি। বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা নামতেই আবারও অসহনীয় হয়ে ওঠে মাঘের শীতের দাপট।

গাছপালা বেশি থাকায় শহর-নগরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে এখন শীতের কাঁপুনি বেশি। গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষের জন্য এই শীতের তীব্রতা বয়ে এনেছে বাড়তি কষ্ট ও দুর্ভোগ। হিমেল বাতাস আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর জনপদের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

image

প্রচ- শীতে জবুথবু অবস্থা মানুষের। রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে তোলা -সংবাদ

আরও খবর
গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে পুলিশ সদস্যরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন : প্রধানমন্ত্রী
কুচকাওয়াজে শুরু পুলিশ সপ্তাহ
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন ১৫ জন
সব জেলা পরিষদে সমান সদস্য থাকছে না
নির্বাচনে নানামুখী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেছি : আইভী
বারিধারায় ফার্নিচার দোকানে ও ভাটারায় ঝুপড়ি ঘরে আগুন, শিশু নিহত
সোনারগাঁয়ে শিক্ষক পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা
ঠাণ্ডা-জ্বর ও করোনা উপসর্গে ব্যবহৃত ওষুধের কৃত্রিম সংকট
গোয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফের বিতর্ক, উত্তরপ্রদেশে শুরু পালাবদলের রাজনীতি

সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২ , ১০ মাঘ ১৪২৮ ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আরও কমছে তাপমাত্রা

গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, দুদিন যাবত সূর্যের দেখা নেই

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

প্রচ- শীতে জবুথবু অবস্থা মানুষের। রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে তোলা -সংবাদ

ঝিরঝিরে হিমেল বাতাস, ঘণ কুয়াশার দাপট আর কনকনে শীতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নাকাল জনজীবন। বিপাকে পড়েছেন কৃষিজীবী শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। আগের দিনের তুলনায় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ঠাণ্ডা বাতাসে কাবু মানুষ। এতে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ। ঢাকা, খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আরও দু-একদিন এই আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া সর্বশেষ তথ্যমতে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৬, ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৮, চট্টগ্রামে ১৬ দশমিক ২, সিলেটে ১৩ দশমিক ৫, রাজশাহীতে ১৩ দশমিক ৭, রংপুরে ১৩ দশমিক ৪, খুলনায় ১৪ দশমিক ৮ এবং বরিশালে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

বরিশাল : বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে শনিবার থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। এদিন শেষ রাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত মাঝারি কুয়াশায় নৌ ও আকাশ পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা বিপর্যস্ত ছিল। দিনভর মেঘলা আকাশের কারণে সূর্য আড়ালে ছিল। গতকাল সকালে আকাশ কিছুটা উজ্বল থাকলেও বেলা ১২টার পর থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। এ সময় মেঘলা আকাশ ছিল। পরপর দু’দিন সূর্যের দেখা না পাওয়ায় জনজীবনেও বিরূপ প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

কুয়াশার কারণে গত শনিবার দিনের প্রথমভাগে বরিশাল সেক্টরের দুটি ফ্লাইট এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করে। দুপুরের পর হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। দিনভর সূর্যের দেখ না মেলার সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ ছিল চরমে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বেশির ভাগ মানুষই ঘর থেকে বের হননি।

এ বছর অগ্রহায়ণের শেষ থেকে পৌষের দু’দফার বৃষ্টিপাতে উঠতি আমন ধান এবং শীতকালীন শাক সবজিসহ বিভিন্ন রবি ফসলের ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১শ’ কোটি টাকার ওপরে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বরিশাল বিভাগসহ কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়ে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির পাশাপাশি দিনের তাপমাত্রা হ্রাসের কথাও বলা হয়েছে। পাশাপাশি রোববারের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

রাজশাহী

রাজশাহীতে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে। সেই সঙ্গে আকাশেও মেঘ রয়েছে। গতকাল রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া আগের দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থৎ একদিনে তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি। গত তিনদিনে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২ দশমিক ৭ মিলিলিটার। গতকাল সকাল ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে দশমিক ২ মিলিলিটার। বৃষ্টিপাত আর মেঘলা আকাশের কারণে বেড়েছে তাপমাত্রা এমনটিই বলছে রাজশাহীর আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, আকাশে মেঘ রয়েছে। আজ বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে। আকাশে মেঘ থাকার কারণে তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে বৃষ্টিপাতের পরে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। ফেলে বেশি শীত অনুভূত হতে পারে। এদিকে বৃষ্টি ঘন কুয়াশায় মুড়ি দিয়েছিল পদ্মাপাড়ের রাজশাহীতে। দিনভর বয়ে চলা ঠাণ্ডা বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষগুলো। সারাদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। রোদের উত্তাপ শীতার্ত মানুষগুলোর গায়ে লাগেনি। বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা নামতেই আবারও অসহনীয় হয়ে ওঠে মাঘের শীতের দাপট।

গাছপালা বেশি থাকায় শহর-নগরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে এখন শীতের কাঁপুনি বেশি। গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষের জন্য এই শীতের তীব্রতা বয়ে এনেছে বাড়তি কষ্ট ও দুর্ভোগ। হিমেল বাতাস আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর জনপদের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।