সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে অনায়াস জয়ে যুব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আগামী শনিবার সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে গত আসরের রানার্সআপ ভারতের মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ।
শনিবার ক্যারিবিয়ান দ্বীপ রাষ্ট্র কিটসে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে শিরোপাধারী বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী হয়।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আরব আমিরাত অলআউট হয় ১৪৮ রানে। বৃষ্টির কারণে ৩৫ ওভারে ১০৭ রানের নতুন লক্ষ্য বাংলাদেশ পেরিয়ে যায় ৬১ বল হাতে রেখে। ৬৯ বলে ৬৪ রানের দারুণ ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন মাহফিজুল।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরুর পর টানা দুই জয়ে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে শেষ আটে জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সবগুলো জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংল্যান্ড।
সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশ খেলবে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে।
বাংলাদেশ ও আরব আমিরাত দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার। সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে টস জিতে বোলিং নিয়ে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দারুণ। ইনিংসের তৃতীয় আর নিজের দ্বিতীয় ওভারে আশিকুর ফিরিয়ে দেন আরব আমিরাতের দুই ওপেনারকে।
৬ ওভারের প্রথম স্পেলে ২ মেডেনে স্রেফ ৬ রান দিয়ে আশিকুরের প্রাপ্তি ওই দুই উইকেট।
এরপরই ইনিংসের সেরা ৪৪ রানের জুটি আরব আমিরাত পায় ধ্রুব পারাশার ও আলিশান শারাফুর ব্যাটে। অধিনায়ক আলিশানকে (৬৩ বলে ২৩) কিপারের ক্যাচ বানিয়ে জুটি ভাঙেন তানজিম হাসান।
৮২ বলে ৩৩ রান করা পারাশারকে বিদায় করেন অধিনায়ক রকিবুল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় আরব আমিরাত। ৬৪ বলে ৩ চারে সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস খেলে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন পুণ্য মেহরা।
৩১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদশের সফলতম বোলার রিপন। কানাডার বিপক্ষে ৮ উইকেটে জয়ের ম্যাচে এই পেসার ২৪ রানে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
আরেক পেসার আশিকুর ৮ ওভারে ১৪ রানে নেন শুরুর পর দুই উইকেট। তানজিমেরও প্রাপ্তি দুটি।
রান তাড়ায় সতর্ক শুরু করেন মাহফিজুল ও ইফতিখার হোসেন। প্রথম ৪ ওভারে আসে কেবল ৮ রান। পরের ওভারে টানা তিনটি চার মারেন মাহফিজুল। পরে তিনি ছক্কায় ওড়ান আয়ান আফজালকে।
দ্বাদশ ওভারে দলের স্কোর স্পর্শ করে পঞ্চাশ। ৮৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ইফতিখার বোল্ড হলে। ৭০ বলে ২ চার ও একটি ছক্কায় তিনি করেন ৩৭। কানাডার বিপক্ষে অপরাজিত ৬১ রান করেছিলেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরপরই নামা বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে বেশ খানিকটা সময়। পরে নতুন লক্ষ্য প্রান্তিক নওরোজ নাবিলকে সঙ্গে নিয়ে সহজেই ছুঁয়ে ফেলেন মাহফিজুল। তার ৬৪ রানের ইনিংসটি গড়া ৬ চার ও ২ ছক্কায়।
চার গ্রুপের শীর্ষ দুটি করে দল জায়গা পেয়েছে সুপার লীগ কোয়ার্টার-ফাইনালে। বাংলাদেশ, ভারত, ইংল্যান্ডের সঙ্গে শেষ আটে ওঠা বাকি পাঁচ দল হলো দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা।
প্রতি গ্রুপের বাকি দুটি করে দল লড়বে প্লেট কোয়ার্টার-ফাইনালে।
শেষ আটের লাইনআপ
বাংলাদেশ-ভারত
ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা
শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান
পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া
সংক্ষিপ্ত স্কোর : আরব আমিরাত ৪৮.১ ওভারে ১৪৮ (পারাশার ৩৩, আলিশান ২৩, মেহরা ৪৩; আশিকুর ২/১৪, তানজিম ২/৩২, রকিবুল ১/৩৭, রিপন ৩/৩১, আরিফুল ১/৭)। বাংলাদেশ (৩৫ ওভারে লক্ষ্য ১০৭) ২৪.৫ ওভারে ১১০/১ (মাহফিজুল ৬৪*, ইফতিখার ৩৭)।
ভারত ৩২৬ রানে জয়ী
শনিবার যুব বিশ্বকাপের আরেক ম্যাচে ভারত ৩২৬ রানে হারায় উগান্ডাকে। প্রথমে ব্যাট করে ৪০৫ রান তোলে টিম ইন্ডিয়া। রাজ বাওয়া করেন ১৬২ রান। যা অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান। ১৮ বছর আগে ২০০৪ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে শিখর ধাওয়ান ১৫৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তার পাশাপাশি সেঞ্চুরি করেন ওপেনার আংক্রিশ রঘুবংশী ১৪৪ রান।
ভারতের এই বিশাল লক্ষ্যমাত্রার সামনে অনভিজ্ঞ উগান্ডার ইনিংস শেষ হয় মাত্র ৭৯ রানে। অধিনায়ক পাস্কাল মুরুঙ্গি সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন। ভারতের এ জয় এখন পর্যন্ত অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।
সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২ , ১০ মাঘ ১৪২৮ ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৩
সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে অনায়াস জয়ে যুব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আগামী শনিবার সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে গত আসরের রানার্সআপ ভারতের মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ।
শনিবার ক্যারিবিয়ান দ্বীপ রাষ্ট্র কিটসে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে শিরোপাধারী বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী হয়।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আরব আমিরাত অলআউট হয় ১৪৮ রানে। বৃষ্টির কারণে ৩৫ ওভারে ১০৭ রানের নতুন লক্ষ্য বাংলাদেশ পেরিয়ে যায় ৬১ বল হাতে রেখে। ৬৯ বলে ৬৪ রানের দারুণ ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন মাহফিজুল।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরুর পর টানা দুই জয়ে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে শেষ আটে জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সবগুলো জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংল্যান্ড।
সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশ খেলবে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে।
বাংলাদেশ ও আরব আমিরাত দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার। সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে টস জিতে বোলিং নিয়ে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দারুণ। ইনিংসের তৃতীয় আর নিজের দ্বিতীয় ওভারে আশিকুর ফিরিয়ে দেন আরব আমিরাতের দুই ওপেনারকে।
৬ ওভারের প্রথম স্পেলে ২ মেডেনে স্রেফ ৬ রান দিয়ে আশিকুরের প্রাপ্তি ওই দুই উইকেট।
এরপরই ইনিংসের সেরা ৪৪ রানের জুটি আরব আমিরাত পায় ধ্রুব পারাশার ও আলিশান শারাফুর ব্যাটে। অধিনায়ক আলিশানকে (৬৩ বলে ২৩) কিপারের ক্যাচ বানিয়ে জুটি ভাঙেন তানজিম হাসান।
৮২ বলে ৩৩ রান করা পারাশারকে বিদায় করেন অধিনায়ক রকিবুল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় আরব আমিরাত। ৬৪ বলে ৩ চারে সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস খেলে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন পুণ্য মেহরা।
৩১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদশের সফলতম বোলার রিপন। কানাডার বিপক্ষে ৮ উইকেটে জয়ের ম্যাচে এই পেসার ২৪ রানে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
আরেক পেসার আশিকুর ৮ ওভারে ১৪ রানে নেন শুরুর পর দুই উইকেট। তানজিমেরও প্রাপ্তি দুটি।
রান তাড়ায় সতর্ক শুরু করেন মাহফিজুল ও ইফতিখার হোসেন। প্রথম ৪ ওভারে আসে কেবল ৮ রান। পরের ওভারে টানা তিনটি চার মারেন মাহফিজুল। পরে তিনি ছক্কায় ওড়ান আয়ান আফজালকে।
দ্বাদশ ওভারে দলের স্কোর স্পর্শ করে পঞ্চাশ। ৮৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ইফতিখার বোল্ড হলে। ৭০ বলে ২ চার ও একটি ছক্কায় তিনি করেন ৩৭। কানাডার বিপক্ষে অপরাজিত ৬১ রান করেছিলেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরপরই নামা বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে বেশ খানিকটা সময়। পরে নতুন লক্ষ্য প্রান্তিক নওরোজ নাবিলকে সঙ্গে নিয়ে সহজেই ছুঁয়ে ফেলেন মাহফিজুল। তার ৬৪ রানের ইনিংসটি গড়া ৬ চার ও ২ ছক্কায়।
চার গ্রুপের শীর্ষ দুটি করে দল জায়গা পেয়েছে সুপার লীগ কোয়ার্টার-ফাইনালে। বাংলাদেশ, ভারত, ইংল্যান্ডের সঙ্গে শেষ আটে ওঠা বাকি পাঁচ দল হলো দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা।
প্রতি গ্রুপের বাকি দুটি করে দল লড়বে প্লেট কোয়ার্টার-ফাইনালে।
শেষ আটের লাইনআপ
বাংলাদেশ-ভারত
ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা
শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান
পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া
সংক্ষিপ্ত স্কোর : আরব আমিরাত ৪৮.১ ওভারে ১৪৮ (পারাশার ৩৩, আলিশান ২৩, মেহরা ৪৩; আশিকুর ২/১৪, তানজিম ২/৩২, রকিবুল ১/৩৭, রিপন ৩/৩১, আরিফুল ১/৭)। বাংলাদেশ (৩৫ ওভারে লক্ষ্য ১০৭) ২৪.৫ ওভারে ১১০/১ (মাহফিজুল ৬৪*, ইফতিখার ৩৭)।
ভারত ৩২৬ রানে জয়ী
শনিবার যুব বিশ্বকাপের আরেক ম্যাচে ভারত ৩২৬ রানে হারায় উগান্ডাকে। প্রথমে ব্যাট করে ৪০৫ রান তোলে টিম ইন্ডিয়া। রাজ বাওয়া করেন ১৬২ রান। যা অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান। ১৮ বছর আগে ২০০৪ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে শিখর ধাওয়ান ১৫৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তার পাশাপাশি সেঞ্চুরি করেন ওপেনার আংক্রিশ রঘুবংশী ১৪৪ রান।
ভারতের এই বিশাল লক্ষ্যমাত্রার সামনে অনভিজ্ঞ উগান্ডার ইনিংস শেষ হয় মাত্র ৭৯ রানে। অধিনায়ক পাস্কাল মুরুঙ্গি সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন। ভারতের এ জয় এখন পর্যন্ত অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।