আইওয়াশ, কূটকৌশল : সংসদে বিএনপি

মন্দের ভালো, বললেন সাখাওয়াত

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত আইন ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ গতকাল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। এই আইনটি নিয়ে সংসদের ভিতরে-বাইরে রাজনীতিক, অংশীজন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। গতকাল জাতীয় সংসদে আইনটি (বিল) পাসের আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, ইসি গঠনে সংবিধানে আইন করার কথা বলা আছে কিন্তু অংশীজনের সঙ্গে কথা না বলে তাড়াহুড়া করে আইন করা ‘আইওয়াশ’ ছাড়া কিছুই নয়। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য। স্বাধীনভাবে রাষ্ট্রপতি কোন কাজ করতে পারেন না। কিন্তু রাষ্ট্রপতিকে একটি ‘ইল্যুশন’ হিসেবে সামনে আনা হয়।

সংসদে রুমিন বলেন, এই আইনটি কেবল বিএনপি নয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা কঠোর সমালোচনা করেছেন। সার্চ কমিটিতে সরকারি দল, সংসদের প্রধান বিরোধী দল ও তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন করে প্রতিনিধি থাকলে স্বচ্ছতা থাকত। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে কেবল সরকারের ইচ্ছায় ইসি গঠন হবে। ওই কমিশন স্বাধীন হবে না, হবে সরকারের নির্বাচনবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ইসি গঠন আইন সরকারের কূটকৌশল : হারুনুর রশীদ

সংসদে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদীয় দলের নেতা হারুনুর রশীদ আইনটি পাসকে সরকারের কূটকৌশল আখ্যা দিয়ে বলেন, ২০১৪ সালে বিনাভোটের নির্বাচন হয়েছে, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে আগামীতে দিনের বেলা নতুন কৌশলে নির্বাচন করবে কি-না, তা নিয়ে মানুষের প্রশ্ন আছে। এই আইনটির সঙ্গে ২০১৭ সালের সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপনে খুব একটা অমিল নেই দাবি করে তিনি বলেন, সার্চ কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা একটি; তা হচ্ছে সরকারের অনুগত হওয়া। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সার্চ কমিটির দায়িত্ব দেয়া হলে তাদেরও বিতর্কিত করা হবে। তাছাড়া এখন যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তাতে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

জাতীয় পার্টির সদস্যদের বক্তব্য

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, সংবিধানের ৪৮নং অনুচ্ছেদ সংশোধন না করে এই আইন করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। সার্চ কমিটি সদস্য করা হবেন, সে সিদ্ধান্ত নিতে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা রাখার বিধান যুক্ত করার দাবি জানান তিনি। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, সংবিধানের ১১৮নং অনুচ্ছেদে ‘শ্যাল’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়িই কাজ করতে হবে। আইনে না থাকলেও যেটা হবে তা হলো, অনুসন্ধান কমিটি ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। সে প্যানেল যাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি পাঁচজন নির্বাচন করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন। তবে এটা যে অসাংবিধানিক তা নয়। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু স্পিকারের মাধ্যমে মনোনীত দুজন সংসদ সদস্যকে সার্চ কমিটির সদস্য হিসেবে রাখার প্রস্তাব দেন।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সার্চ কমিটির সদস্য জাতীয় সংসদ থেকে এলে বিতর্ক হতো না। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ রেখে কিভাবে আইনটি হবে জানি না। আলোচনা ছাড়া তাড়াহুড়া করে আইনটি পাস করলে দেশে আবারো অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। আশা করবো স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বজায় রেখে সরকার সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে ইসি গঠন করবেন। তাহলে দেশটি শান্ত থাকবে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, এই আইনটি নিয়ে সংসদের ভেতরে ও বাইরে যেসব রাজনৈতিক দল রয়েছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করলে আরও সমৃদ্ধ হতো। এই আইনে বিগত দুটি কমিশনকে যে হেফাজত দেয়া হয়েছে এটার দরকার ছিল না।

আইনে রাষ্ট্রপতির সংলাপের প্রতিফলন নেই : মোকাব্বির

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে গিয়ে যে আইন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি, এই আইনে তার প্রতিফলন ঘটেনি। আইনটিতে বঙ্গবন্ধুর আকাক্সক্ষার সঙ্গে মিল নেই।

‘মন্দের ভালো’ বললেন সাখাওয়াত

পাস হওয়া আইনটিকে ‘মন্দের ভালো’ হিসেবে অভিহিত করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, এই কৃতিত্ব আওয়ামী লীগের। যেহেতু তারাই আইনটি এনেছে ও সংসদে পাস করেছে। তবে অংশীজনদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা সাপেক্ষে আইনটি করা হলে আরও ভালো হতো। তবে যদি আইনটি ভালোভাবে প্রয়োগ করা হয় তাহলে ভালো। যদি কোন বিতর্ক তৈরি হয় তাহলে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা যাবে।’

‘অনুগত’ কমিটির ইসি হবে : শাহদীন মালিক

আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের খসড়া প্রকাশের পর যেসব আলোচনা হচ্ছে, তাতে ঘুরেফিরে একটাই আসছে, এটা অস্বচ্ছ। সরকারের অনুগত পক্ষের কমিটি দ্বারা কী নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, সেটা আমাদের সবার কাছে বোধগম্য।’

গতকাল রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তি ভবনে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন আইন-জনপ্রত্যাশা ও করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এই সভা চলার মধ্যেই সংসদে পাস হয় ইসি গঠনের আইন। নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজটি সরকারের ‘একক কর্তৃত্বে’ চলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্রতীর নির্বাহী পরিচালক শারমিন মুরশিদ বলেন, ‘দ্রুতগতিতে এই আইন তৈরি করা হচ্ছে। যেহেতু আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আস্থাহীনতা আছে, সেজন্য ক্ষমতাসীনরা সেই আস্থা তৈরি করে আইনটি করার উদ্যোগ নেয়ার উচিত ছিল।’

সভায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, ‘যে সংসদের কোন রাজনৈতিক বৈধতা নেই, সেই সংসদে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আইন পাস করার নৈতিক কর্তৃত্ব ও যোগ্যতা রাখে না।’ বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে, তার পক্ষে সরকারি দলের ‘নীলনকশার’ বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সংসদে আনা এই বিল প্রত্যাহার করে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বাম নেতা সাইফুল, যদিও ততক্ষণে সংসদে আইনটি পাস হয়ে যায়।

শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২২ , ১৪ মাঘ ১৪২৮, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

ইসি গঠন আইন

আইওয়াশ, কূটকৌশল : সংসদে বিএনপি

মন্দের ভালো, বললেন সাখাওয়াত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত আইন ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ গতকাল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। এই আইনটি নিয়ে সংসদের ভিতরে-বাইরে রাজনীতিক, অংশীজন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। গতকাল জাতীয় সংসদে আইনটি (বিল) পাসের আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, ইসি গঠনে সংবিধানে আইন করার কথা বলা আছে কিন্তু অংশীজনের সঙ্গে কথা না বলে তাড়াহুড়া করে আইন করা ‘আইওয়াশ’ ছাড়া কিছুই নয়। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য। স্বাধীনভাবে রাষ্ট্রপতি কোন কাজ করতে পারেন না। কিন্তু রাষ্ট্রপতিকে একটি ‘ইল্যুশন’ হিসেবে সামনে আনা হয়।

সংসদে রুমিন বলেন, এই আইনটি কেবল বিএনপি নয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা কঠোর সমালোচনা করেছেন। সার্চ কমিটিতে সরকারি দল, সংসদের প্রধান বিরোধী দল ও তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন করে প্রতিনিধি থাকলে স্বচ্ছতা থাকত। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে কেবল সরকারের ইচ্ছায় ইসি গঠন হবে। ওই কমিশন স্বাধীন হবে না, হবে সরকারের নির্বাচনবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ইসি গঠন আইন সরকারের কূটকৌশল : হারুনুর রশীদ

সংসদে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদীয় দলের নেতা হারুনুর রশীদ আইনটি পাসকে সরকারের কূটকৌশল আখ্যা দিয়ে বলেন, ২০১৪ সালে বিনাভোটের নির্বাচন হয়েছে, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে আগামীতে দিনের বেলা নতুন কৌশলে নির্বাচন করবে কি-না, তা নিয়ে মানুষের প্রশ্ন আছে। এই আইনটির সঙ্গে ২০১৭ সালের সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপনে খুব একটা অমিল নেই দাবি করে তিনি বলেন, সার্চ কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা একটি; তা হচ্ছে সরকারের অনুগত হওয়া। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সার্চ কমিটির দায়িত্ব দেয়া হলে তাদেরও বিতর্কিত করা হবে। তাছাড়া এখন যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তাতে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

জাতীয় পার্টির সদস্যদের বক্তব্য

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, সংবিধানের ৪৮নং অনুচ্ছেদ সংশোধন না করে এই আইন করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। সার্চ কমিটি সদস্য করা হবেন, সে সিদ্ধান্ত নিতে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা রাখার বিধান যুক্ত করার দাবি জানান তিনি। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, সংবিধানের ১১৮নং অনুচ্ছেদে ‘শ্যাল’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়িই কাজ করতে হবে। আইনে না থাকলেও যেটা হবে তা হলো, অনুসন্ধান কমিটি ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। সে প্যানেল যাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি পাঁচজন নির্বাচন করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন। তবে এটা যে অসাংবিধানিক তা নয়। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু স্পিকারের মাধ্যমে মনোনীত দুজন সংসদ সদস্যকে সার্চ কমিটির সদস্য হিসেবে রাখার প্রস্তাব দেন।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সার্চ কমিটির সদস্য জাতীয় সংসদ থেকে এলে বিতর্ক হতো না। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ রেখে কিভাবে আইনটি হবে জানি না। আলোচনা ছাড়া তাড়াহুড়া করে আইনটি পাস করলে দেশে আবারো অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। আশা করবো স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বজায় রেখে সরকার সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে ইসি গঠন করবেন। তাহলে দেশটি শান্ত থাকবে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, এই আইনটি নিয়ে সংসদের ভেতরে ও বাইরে যেসব রাজনৈতিক দল রয়েছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করলে আরও সমৃদ্ধ হতো। এই আইনে বিগত দুটি কমিশনকে যে হেফাজত দেয়া হয়েছে এটার দরকার ছিল না।

আইনে রাষ্ট্রপতির সংলাপের প্রতিফলন নেই : মোকাব্বির

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে গিয়ে যে আইন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি, এই আইনে তার প্রতিফলন ঘটেনি। আইনটিতে বঙ্গবন্ধুর আকাক্সক্ষার সঙ্গে মিল নেই।

‘মন্দের ভালো’ বললেন সাখাওয়াত

পাস হওয়া আইনটিকে ‘মন্দের ভালো’ হিসেবে অভিহিত করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, এই কৃতিত্ব আওয়ামী লীগের। যেহেতু তারাই আইনটি এনেছে ও সংসদে পাস করেছে। তবে অংশীজনদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা সাপেক্ষে আইনটি করা হলে আরও ভালো হতো। তবে যদি আইনটি ভালোভাবে প্রয়োগ করা হয় তাহলে ভালো। যদি কোন বিতর্ক তৈরি হয় তাহলে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা যাবে।’

‘অনুগত’ কমিটির ইসি হবে : শাহদীন মালিক

আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের খসড়া প্রকাশের পর যেসব আলোচনা হচ্ছে, তাতে ঘুরেফিরে একটাই আসছে, এটা অস্বচ্ছ। সরকারের অনুগত পক্ষের কমিটি দ্বারা কী নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, সেটা আমাদের সবার কাছে বোধগম্য।’

গতকাল রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তি ভবনে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন আইন-জনপ্রত্যাশা ও করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এই সভা চলার মধ্যেই সংসদে পাস হয় ইসি গঠনের আইন। নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজটি সরকারের ‘একক কর্তৃত্বে’ চলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্রতীর নির্বাহী পরিচালক শারমিন মুরশিদ বলেন, ‘দ্রুতগতিতে এই আইন তৈরি করা হচ্ছে। যেহেতু আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আস্থাহীনতা আছে, সেজন্য ক্ষমতাসীনরা সেই আস্থা তৈরি করে আইনটি করার উদ্যোগ নেয়ার উচিত ছিল।’

সভায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, ‘যে সংসদের কোন রাজনৈতিক বৈধতা নেই, সেই সংসদে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আইন পাস করার নৈতিক কর্তৃত্ব ও যোগ্যতা রাখে না।’ বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে, তার পক্ষে সরকারি দলের ‘নীলনকশার’ বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সংসদে আনা এই বিল প্রত্যাহার করে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বাম নেতা সাইফুল, যদিও ততক্ষণে সংসদে আইনটি পাস হয়ে যায়।