মানবাধিকার ‘লঙ্ঘনের’ অভিযোগে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যের চিঠিকে তার ‘ব্যক্তিগত’ মত হিসেবে বর্ণনা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। তিনি বলেন, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টেকে দেয়া চিঠির ব্যাপারে কোন তথ্য নেই, এটি ব্যক্তিগত চিঠি।
গতকাল ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘মিট দি রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব। সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সাতশর বেশি এমপি রয়েছেন, তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করেন। ‘ফলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কোন সদস্য ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের চিঠি লিখলে বিস্ময়ের কিছু নেই। কারা এই চিঠি লিখায় সহায়তা করেছেন, সে বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। তবে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধির কাছে তিনি এ চিঠি লিখেছেন।’
র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে গত ২০ জানুয়ারি ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তাবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি জোসেফ বোরেলকে চিঠি দেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ইভান স্টেফানিৎস। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী পদক্ষেপ নিতে পারে, সেই কথাও ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তরে জানান রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইলি।
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন কোন চিঠি পাই, তখন ভালো প্রশাসনিক ব্যবস্থা হিসেবে আমাদের চর্চা হলো ওই চিঠির উত্তর দেয়া। ফলে আমি নিশ্চিত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি যথাযথ প্রক্রিয়ায় পার্লামেন্ট সদস্যের ওই চিঠির উত্তর দেবেন।’ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমদসহ বাহিনীর ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তলব করে সরকারের অবস্থান জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠিও দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এর ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে র্যাবকে শান্তিরক্ষা মিশনে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘে চিঠি দেয়।
চার্লস হোয়াইটলি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওই অভিযোগ আর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে নিজে কোন মতামত দিতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের মতো কাজ করে, আমরা আমাদের মতো কাজ করি। তবে বাংলাদেশের মানবাধিকারবিষয়ক বিভিন্ন ইস্যুতে এর আগে উদ্বেগ জানিয়েছে ইইউ।’ আগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়েও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘আগ্রহ’ থাকার কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘বিদেশিরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসতে পারবেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েকদিন আগে যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমি তাতে স্বাগত জানাই।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা খুব খোলামেলা দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ এবং সেটা মাথায় রেখে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আমরা নিশ্চিতভাবে আগ্রহী।’
সম্প্রতি ঘটনায় ইইউ এর সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হোয়াটলি। তিনি বলেন, আমি এখন পর্যন্ত এমন কোন কিছু দেখছি না, যাতে মনে হয় ব্যবসার ওপর প্রভাব পড়েছে। নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত বলেন, রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ব্যবসার ওপর কখনও কখনও প্রভাব ফেলে, কিন্তু আমি এমন কোন ইঙ্গিত দেখছি না যাতে বুঝা যায় সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ব্যবসার ওপর পড়েছে বা এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২২ , ১৪ মাঘ ১৪২৮, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
মানবাধিকার ‘লঙ্ঘনের’ অভিযোগে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যের চিঠিকে তার ‘ব্যক্তিগত’ মত হিসেবে বর্ণনা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। তিনি বলেন, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টেকে দেয়া চিঠির ব্যাপারে কোন তথ্য নেই, এটি ব্যক্তিগত চিঠি।
গতকাল ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘মিট দি রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব। সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সাতশর বেশি এমপি রয়েছেন, তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করেন। ‘ফলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কোন সদস্য ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের চিঠি লিখলে বিস্ময়ের কিছু নেই। কারা এই চিঠি লিখায় সহায়তা করেছেন, সে বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। তবে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধির কাছে তিনি এ চিঠি লিখেছেন।’
র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে গত ২০ জানুয়ারি ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তাবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি জোসেফ বোরেলকে চিঠি দেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ইভান স্টেফানিৎস। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী পদক্ষেপ নিতে পারে, সেই কথাও ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তরে জানান রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইলি।
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন কোন চিঠি পাই, তখন ভালো প্রশাসনিক ব্যবস্থা হিসেবে আমাদের চর্চা হলো ওই চিঠির উত্তর দেয়া। ফলে আমি নিশ্চিত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি যথাযথ প্রক্রিয়ায় পার্লামেন্ট সদস্যের ওই চিঠির উত্তর দেবেন।’ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমদসহ বাহিনীর ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তলব করে সরকারের অবস্থান জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠিও দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এর ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে র্যাবকে শান্তিরক্ষা মিশনে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘে চিঠি দেয়।
চার্লস হোয়াইটলি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওই অভিযোগ আর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে নিজে কোন মতামত দিতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের মতো কাজ করে, আমরা আমাদের মতো কাজ করি। তবে বাংলাদেশের মানবাধিকারবিষয়ক বিভিন্ন ইস্যুতে এর আগে উদ্বেগ জানিয়েছে ইইউ।’ আগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়েও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘আগ্রহ’ থাকার কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘বিদেশিরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসতে পারবেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েকদিন আগে যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমি তাতে স্বাগত জানাই।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা খুব খোলামেলা দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ এবং সেটা মাথায় রেখে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আমরা নিশ্চিতভাবে আগ্রহী।’
সম্প্রতি ঘটনায় ইইউ এর সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হোয়াটলি। তিনি বলেন, আমি এখন পর্যন্ত এমন কোন কিছু দেখছি না, যাতে মনে হয় ব্যবসার ওপর প্রভাব পড়েছে। নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত বলেন, রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ব্যবসার ওপর কখনও কখনও প্রভাব ফেলে, কিন্তু আমি এমন কোন ইঙ্গিত দেখছি না যাতে বুঝা যায় সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ব্যবসার ওপর পড়েছে বা এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।