দেশের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে জাতীয় রাজনীতি। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের অন্দরে ঘটছে পট পরিবর্তনের খেলা। এরকমই এক পরির্বতন ঘটনায় বুধবার কংগ্রেস দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর বৃহস্পতিবারই বিজেপিতে যোগ দিলেন উত্তরাখ- কংগ্রেসের পুরনো ও সাবেক প্রধান কিশোর উপাধ্যায়। উত্তরাখ-ের কংগ্রেসের ইনচার্জ দেবেন্দর যাদব জানান দলবিরোধী কাজের অভিযোগে ছয় বছরের জন্য তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, উত্তরাখ- বিধানসভা নির্বাচনের আগে বুধবার কংগ্রেসে তাদের তৃতীয় দফা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় নাম ছিল না কিশোর উপাধ্যায়ের। এর পর থেকেই কংগ্রেসে কিশোর উপাধ্যায়ের ভবিষ্যত নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়। সূত্রের খবর, তিনি এই বহিষ্কারে স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন কিন্তু কংগ্রেস তার গুরুত্ব দেয়নি। দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর তার বিজেপিতে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা ছিল। যদি কিশোরকে বিজেপির তেহরি বিধানসভা আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেয়। অবশেষে সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগ দিলেন কিশোর।
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে জেতার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সব ক’টি দল। ইতোমধ্যেই কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় বড় চমক, কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করল গণধর্ষণে নির্যাতিতা উন্নাওয়ের মাকে। উত্তরপ্রদেশে উন্নাওয়ের গণধর্ষণের কথা কার্যত সারাদেশে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। খুব স্বাভাবিকভাবেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের এটি অন্যতম বিশেষ পদক্ষেপ। সাংবাদিক সম্মেলন প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে রাহুল গান্ধী জানিয়ে দেন, পরিবারের কোন সদস্য যদি নির্যাতনের শিকার হয় তাহলে যেকোনভাবে তাদের পাশে থাকবে কংগ্রেস। এবার দেখার বিষয় কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকায় এই চমকের জবাব গেরুয়া শিবির কিভাবে দেয়। ইতোমধ্যে, কংগ্রেস রামনগরের পরিবর্তে উত্তরাখ-ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হরিশ সিং রাওয়াতকে লালকুওয়া থেকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রামনগর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মহেন্দর পাল সিং। গতকাল প্রকাশিত তৃতীয় প্রার্থী তালিকায়, কংগ্রেস হরিশ সিং রাওয়াত এবং অন্য চার নেতার আসন পরিবর্তন করেছে। তৃতীয় প্রার্থী তালিকায় প্রকাশিত কংগ্রেস প্রার্থীর নাম এবং তাদের নিজ নিজ আসনগুলো হলÑ হরিশ সিং রাওয়াত (লালকুওয়া), ওম গোপাল রাওয়াত (নরেন্দ্রনগর), গৌরব চৌধুরী (ডোয়াইওয়ালা), রবি বাহাদুর (জ্বালাপুর-এসসি), যশপাল রানা (রুরকি), অনুপমা রাওয়াত (হরদ্বার-গ্রামীণ), কেসার সিং রাওয়াত (চৌবাত্তাখাল), রঞ্জিত রাওয়াত (লবণ), মহেশ শর্মা (কালাধুঙ্গি), মহেন্দর পাল সিং (রামনগর)।
উত্তরপ্রদেশের ভোটের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজবাদী পার্টি এবার তাদের দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় একাধিক চমক রেখেছেন অখিলেশ যাদব। জানা গেছে, সমাজবাদী পার্টির দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকায় জায়গা পেয়েছেন অখিলেশের ঘনিষ্ঠ পবন পান্ডে। কার্যত অযোধ্যা থেকে তিনি তৃতীয় বার টিকেট পেলেন। এছাড়া মহারাজি প্রজাপতিকে আমেঠি থেকে টিকেট দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই মহারাজি প্রজাপতির স্বামী সপা সরকারের সাবেক মন্ত্রী গায়ত্রী প্রসাদ প্রজাপতি একটি গণধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-ে দ-িত হয়েছেন। সপার প্রার্থী তালিকায় সবচেয়ে বড় চমক হলো রাকেশ প্রতাপ সিং। অক্টোবর মাসে এই রাকেশ প্রতাপ সিং গেরুয়া শিবির ছাড়েন। সমাজবাদী পার্টি তাকে এবার টিকেট দিয়েছে। সব মিলিয়ে এখনো পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের ২৩৩টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করে দিলো সমাজবাদী পার্টি। এর মধ্যে জন ১৯৮ জন প্রার্থী হচ্ছে সপার, রাষ্ট্রীয় লোক দল এর ৩৩ জন এবং এনসিপি, এসবিএসপি একটি করে আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, উত্তরপ্রদেশের বিজেপিকে আটকাতে সমাজবাদী পাটি কিন্তু কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে।
গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঘাসফুল শিবিরে বড় ধাক্কা। দল ছাড়লেন গোয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক যতীশ নায়েক। গোয়া তৃণমূলের সভাপতিকে তিনি ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘দলীয় কাজকর্ম যেভাবে চলছে, তা দেখে আমি আর এই দলে থাকার কোন উপযুক্ত কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। এই সমস্ত কিছুর জন্য অপমানিত, ক্লান্ত এবং হতাশ বোধ করছি।’ এর আগে গোয়ায় তৃণমূল ছেড়েছেন অ্যালেক্সিও রোজিনাল্ডো লোরেনকো। গত ২১ ডিসেম্বর কলকাতায় এসে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সাবেক বিধায়ক লাভো মামলেদারও তৃণমূলে যোগ দিয়ে ফের কংগ্রেসে ফিরেছেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে একের পর এক নেতা দল ছাড়ায় কিছুটা ব্যাকফুটে তৃণমূল।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই গোয়ার দিকে নজর দিয়েছে তৃণমূল। আগামী মাসেই গোয়া বিধানসভা নির্বাচন। আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল গোয়ার শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ নিয়ে দিল্লীতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্র জানায়, গোয়াতে ভোট যত এগিয়ে আসছে বিজেপি বিভিন্নভাবে তৃণমূলকে নানাভাবে বাধা দিচ্ছে। রীতিমতো তথ্য-প্রমাণসহ তৃণমূল নালিশ জানাতে চলেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে।
শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২২ , ১৪ মাঘ ১৪২৮, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৩
দীপক মুখার্জী, কলকাতা
দেশের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে জাতীয় রাজনীতি। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের অন্দরে ঘটছে পট পরিবর্তনের খেলা। এরকমই এক পরির্বতন ঘটনায় বুধবার কংগ্রেস দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর বৃহস্পতিবারই বিজেপিতে যোগ দিলেন উত্তরাখ- কংগ্রেসের পুরনো ও সাবেক প্রধান কিশোর উপাধ্যায়। উত্তরাখ-ের কংগ্রেসের ইনচার্জ দেবেন্দর যাদব জানান দলবিরোধী কাজের অভিযোগে ছয় বছরের জন্য তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, উত্তরাখ- বিধানসভা নির্বাচনের আগে বুধবার কংগ্রেসে তাদের তৃতীয় দফা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় নাম ছিল না কিশোর উপাধ্যায়ের। এর পর থেকেই কংগ্রেসে কিশোর উপাধ্যায়ের ভবিষ্যত নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়। সূত্রের খবর, তিনি এই বহিষ্কারে স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন কিন্তু কংগ্রেস তার গুরুত্ব দেয়নি। দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর তার বিজেপিতে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা ছিল। যদি কিশোরকে বিজেপির তেহরি বিধানসভা আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেয়। অবশেষে সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগ দিলেন কিশোর।
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে জেতার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সব ক’টি দল। ইতোমধ্যেই কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় বড় চমক, কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করল গণধর্ষণে নির্যাতিতা উন্নাওয়ের মাকে। উত্তরপ্রদেশে উন্নাওয়ের গণধর্ষণের কথা কার্যত সারাদেশে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। খুব স্বাভাবিকভাবেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের এটি অন্যতম বিশেষ পদক্ষেপ। সাংবাদিক সম্মেলন প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে রাহুল গান্ধী জানিয়ে দেন, পরিবারের কোন সদস্য যদি নির্যাতনের শিকার হয় তাহলে যেকোনভাবে তাদের পাশে থাকবে কংগ্রেস। এবার দেখার বিষয় কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকায় এই চমকের জবাব গেরুয়া শিবির কিভাবে দেয়। ইতোমধ্যে, কংগ্রেস রামনগরের পরিবর্তে উত্তরাখ-ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হরিশ সিং রাওয়াতকে লালকুওয়া থেকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রামনগর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মহেন্দর পাল সিং। গতকাল প্রকাশিত তৃতীয় প্রার্থী তালিকায়, কংগ্রেস হরিশ সিং রাওয়াত এবং অন্য চার নেতার আসন পরিবর্তন করেছে। তৃতীয় প্রার্থী তালিকায় প্রকাশিত কংগ্রেস প্রার্থীর নাম এবং তাদের নিজ নিজ আসনগুলো হলÑ হরিশ সিং রাওয়াত (লালকুওয়া), ওম গোপাল রাওয়াত (নরেন্দ্রনগর), গৌরব চৌধুরী (ডোয়াইওয়ালা), রবি বাহাদুর (জ্বালাপুর-এসসি), যশপাল রানা (রুরকি), অনুপমা রাওয়াত (হরদ্বার-গ্রামীণ), কেসার সিং রাওয়াত (চৌবাত্তাখাল), রঞ্জিত রাওয়াত (লবণ), মহেশ শর্মা (কালাধুঙ্গি), মহেন্দর পাল সিং (রামনগর)।
উত্তরপ্রদেশের ভোটের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজবাদী পার্টি এবার তাদের দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় একাধিক চমক রেখেছেন অখিলেশ যাদব। জানা গেছে, সমাজবাদী পার্টির দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকায় জায়গা পেয়েছেন অখিলেশের ঘনিষ্ঠ পবন পান্ডে। কার্যত অযোধ্যা থেকে তিনি তৃতীয় বার টিকেট পেলেন। এছাড়া মহারাজি প্রজাপতিকে আমেঠি থেকে টিকেট দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই মহারাজি প্রজাপতির স্বামী সপা সরকারের সাবেক মন্ত্রী গায়ত্রী প্রসাদ প্রজাপতি একটি গণধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-ে দ-িত হয়েছেন। সপার প্রার্থী তালিকায় সবচেয়ে বড় চমক হলো রাকেশ প্রতাপ সিং। অক্টোবর মাসে এই রাকেশ প্রতাপ সিং গেরুয়া শিবির ছাড়েন। সমাজবাদী পার্টি তাকে এবার টিকেট দিয়েছে। সব মিলিয়ে এখনো পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের ২৩৩টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করে দিলো সমাজবাদী পার্টি। এর মধ্যে জন ১৯৮ জন প্রার্থী হচ্ছে সপার, রাষ্ট্রীয় লোক দল এর ৩৩ জন এবং এনসিপি, এসবিএসপি একটি করে আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, উত্তরপ্রদেশের বিজেপিকে আটকাতে সমাজবাদী পাটি কিন্তু কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে।
গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঘাসফুল শিবিরে বড় ধাক্কা। দল ছাড়লেন গোয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক যতীশ নায়েক। গোয়া তৃণমূলের সভাপতিকে তিনি ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘দলীয় কাজকর্ম যেভাবে চলছে, তা দেখে আমি আর এই দলে থাকার কোন উপযুক্ত কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। এই সমস্ত কিছুর জন্য অপমানিত, ক্লান্ত এবং হতাশ বোধ করছি।’ এর আগে গোয়ায় তৃণমূল ছেড়েছেন অ্যালেক্সিও রোজিনাল্ডো লোরেনকো। গত ২১ ডিসেম্বর কলকাতায় এসে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সাবেক বিধায়ক লাভো মামলেদারও তৃণমূলে যোগ দিয়ে ফের কংগ্রেসে ফিরেছেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে একের পর এক নেতা দল ছাড়ায় কিছুটা ব্যাকফুটে তৃণমূল।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই গোয়ার দিকে নজর দিয়েছে তৃণমূল। আগামী মাসেই গোয়া বিধানসভা নির্বাচন। আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল গোয়ার শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ নিয়ে দিল্লীতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্র জানায়, গোয়াতে ভোট যত এগিয়ে আসছে বিজেপি বিভিন্নভাবে তৃণমূলকে নানাভাবে বাধা দিচ্ছে। রীতিমতো তথ্য-প্রমাণসহ তৃণমূল নালিশ জানাতে চলেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে।