ওমিক্রনে ভয় নয়, সচেতনতা জরুরি

শারফুদ্দিন আহমেদ

২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশেও এ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়-২০২০ সালের ৮ মার্চ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছে ভাইরাসটি। বিশ্বে এখনো দাপট দেখাচ্ছে করোনাভাইরাসের ডেল্টা কিংবা বিটা ভ্যারিয়েন্ট। এরই মধ্যে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে এবং বিশ্বের শতাধিক দেশে শনাক্ত হয়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট অতি সংক্রমক ওমিক্রন।

ওমিক্রনের উৎপত্তি সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত করে কিছু না জানা গেলেও এটুকু জানা যায় যে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এ ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে প্রথম জানানো হয় ২৪ নভেম্বর। বর্তমানে যেসব ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে সেগুলোর সাথে ওমিক্রনের বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। জেনেটিক বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, এটি একেবারেই ভিন্ন একটি শাখা থেকে এসেছে।

ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। ডেল্টার চেয়ে মৃত্যুর হার কম হলেও এটি সংক্রমণের দিক থেকে করেনাভাইরাসের আগের যে কোনো ভ্যারিয়েন্ট বা ধরনকে ছাড়িয়ে গেছে। ওমিক্রন নিয়ে দুশ্চিন্তা যেমন আছে, তেমনি আছে স্বস্তির কারণও। আর সেটা হলো ওমিক্রন ডেল্টার মতো প্রাণঘাতী নয়। ডেল্টায় আক্রান্ত হলে যেখানে মৃত্যুর হার শতকরা ২ থেকে ৩ জন। সেখানে ওমিক্রনে আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যুর হার মাত্র শতকরা ০.০৩ শতাংশ। অথাৎ ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে প্রায় ৩৩০০ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রেও ওমিক্রন অনেক স্বস্তিকর। কারণ যেখানে ডেল্টায় আক্রান্তদের একটা বিরাট অংশ হাসপাতালে ভর্তি হলেও ওমিক্রনে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির হার মাত্র ০.৩৯ শতাংশ।

গত ১৮ জানুয়ারি কোভিড-১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছি। গত ৮ ডিসেম্বর থেকে গত ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগৃহীত স্যাম্পলের ২০ শতাংশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং ৮০ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। গবেষণায় মোট ৭৬৯ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাযো ফ্যারিন জিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনেরেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। গবেষণায় ৯ মাস থেকে ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ২১ থেকে ৫৮ বছর বয়সের রোগীদের সংখ্যা বেশি। কোভিড আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের কো-মরডিবিটি রয়েছে, যেমন- ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি ষাটোর্ধ বয়সের রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে সেক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়।

গত জুলাইয়ে কোভিড ১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং করেছিলাম। সেখানে দেখা যায়- মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ পাওয়া যায় ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ১ শতাংশ পাওয়া যায় সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট, ১ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে আমরা পেয়েছিলাম মরিসাস বা নাইজেরিয়ান ভ্যারিয়েন্ট। এরপর জুলাই ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২১ এর প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের প্রাপ্ত ফলাফল ছিল ৯৯.৩১% ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত সংগৃহীত স্যাম্পলের ২০% ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং ৮০% ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। এই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট গুণিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে অনেক বেশি infection ছড়াচ্ছে বলে প্রতীয়মান। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাসের জেনেটিক কোডে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি ডিলিশন মিউটেশন পাওয়া গেছে, যার বেশির ভাগ ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন রয়েছে। এই স্পাইক প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে বেশির ভাগ ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। স্পাইক প্রোটিনের বদলের জন্যই প্রচলিত ভ্যাকসিনেশনের পরেও ওমিক্রন সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়। এ জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে কোনো কোনো ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া ছিল। তৃতীয়বারের মতো সংক্রমণ রোগী পাওয়া গেছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগী থেকে সংগৃহীত স্যাম্পলে জিনোম সিকোয়েন্স করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। যেহেতু ওমিক্রন সংক্রমণে মৃদু উপসর্গ হয়েছে, সেটা হাসপাতালে ভর্তি রোগীতে ওমিক্রন না পাবার কারণ হতে পারে। পাশাপাশি মৃদু উপসর্গের রোগীদের মধ্যে টেস্ট না করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। তাই প্রাপ্ত ফলাফলের চেয়েও অনেক বেশি ওমিক্রন আক্রান্ত রোগী undetected অবস্থায় আছে। প্রত্যেক করোনাভাইরাস ভ্যারিয়েন্ট বিপজ্জনক এবং তা মারাত্মক অসুস্থতা এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। পাশাপাশি ভাইরাসের নিয়মিত মিউটেশনের আমাদের প্রচলিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে পারে। তাই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

ডেল্টার চেয়ে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীর অসুস্থতা তুলনামূলক কম হলেও ওমিক্রন বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষ করে যারা ঠিকা গ্রহণ করেননি তাদের জন্য। নিজেকে, পরিবারকে এবং দেশবাসীকে করোনার ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করার জন্য সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি যে বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করতে হবে তা নিম্নরূপ-

বাসার বাহিরে গেলে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

করোনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

পরীক্ষার পর রোগ শনাক্ত হলে দ্রুত কোয়ারেন্টিনে বা আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

ঠিকা গ্রহণকারীদের সংক্রমণের হার খুব কম। তাই ঠিকা কার্যক্রমে সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে।

সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অন্যান্য জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।

সর্বশেষ সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি সবাইকে মেনে চলতে হবে। ওমিক্রন বা ডেল্টা যে ধরনই হোক না কেন, সবাইকে সতর্ক থাকতেই হবে। তা না হলে অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে আমাদের সবাইকে। আগামীর সময় করোনামুক্ত হোক ধরণী- এ প্রত্যাশা করি।

[লেখক : উপাচার্য,

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়]

শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২২ , ১৪ মাঘ ১৪২৮, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

ওমিক্রনে ভয় নয়, সচেতনতা জরুরি

শারফুদ্দিন আহমেদ

২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশেও এ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়-২০২০ সালের ৮ মার্চ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছে ভাইরাসটি। বিশ্বে এখনো দাপট দেখাচ্ছে করোনাভাইরাসের ডেল্টা কিংবা বিটা ভ্যারিয়েন্ট। এরই মধ্যে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে এবং বিশ্বের শতাধিক দেশে শনাক্ত হয়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট অতি সংক্রমক ওমিক্রন।

ওমিক্রনের উৎপত্তি সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত করে কিছু না জানা গেলেও এটুকু জানা যায় যে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এ ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে প্রথম জানানো হয় ২৪ নভেম্বর। বর্তমানে যেসব ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে সেগুলোর সাথে ওমিক্রনের বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। জেনেটিক বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, এটি একেবারেই ভিন্ন একটি শাখা থেকে এসেছে।

ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। ডেল্টার চেয়ে মৃত্যুর হার কম হলেও এটি সংক্রমণের দিক থেকে করেনাভাইরাসের আগের যে কোনো ভ্যারিয়েন্ট বা ধরনকে ছাড়িয়ে গেছে। ওমিক্রন নিয়ে দুশ্চিন্তা যেমন আছে, তেমনি আছে স্বস্তির কারণও। আর সেটা হলো ওমিক্রন ডেল্টার মতো প্রাণঘাতী নয়। ডেল্টায় আক্রান্ত হলে যেখানে মৃত্যুর হার শতকরা ২ থেকে ৩ জন। সেখানে ওমিক্রনে আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যুর হার মাত্র শতকরা ০.০৩ শতাংশ। অথাৎ ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে প্রায় ৩৩০০ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রেও ওমিক্রন অনেক স্বস্তিকর। কারণ যেখানে ডেল্টায় আক্রান্তদের একটা বিরাট অংশ হাসপাতালে ভর্তি হলেও ওমিক্রনে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির হার মাত্র ০.৩৯ শতাংশ।

গত ১৮ জানুয়ারি কোভিড-১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছি। গত ৮ ডিসেম্বর থেকে গত ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগৃহীত স্যাম্পলের ২০ শতাংশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং ৮০ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। গবেষণায় মোট ৭৬৯ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাযো ফ্যারিন জিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনেরেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। গবেষণায় ৯ মাস থেকে ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ২১ থেকে ৫৮ বছর বয়সের রোগীদের সংখ্যা বেশি। কোভিড আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের কো-মরডিবিটি রয়েছে, যেমন- ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি ষাটোর্ধ বয়সের রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে সেক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়।

গত জুলাইয়ে কোভিড ১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং করেছিলাম। সেখানে দেখা যায়- মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ পাওয়া যায় ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ১ শতাংশ পাওয়া যায় সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট, ১ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে আমরা পেয়েছিলাম মরিসাস বা নাইজেরিয়ান ভ্যারিয়েন্ট। এরপর জুলাই ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২১ এর প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের প্রাপ্ত ফলাফল ছিল ৯৯.৩১% ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত সংগৃহীত স্যাম্পলের ২০% ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং ৮০% ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। এই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট গুণিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে অনেক বেশি infection ছড়াচ্ছে বলে প্রতীয়মান। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাসের জেনেটিক কোডে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি ডিলিশন মিউটেশন পাওয়া গেছে, যার বেশির ভাগ ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন রয়েছে। এই স্পাইক প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে বেশির ভাগ ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। স্পাইক প্রোটিনের বদলের জন্যই প্রচলিত ভ্যাকসিনেশনের পরেও ওমিক্রন সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়। এ জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে কোনো কোনো ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া ছিল। তৃতীয়বারের মতো সংক্রমণ রোগী পাওয়া গেছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগী থেকে সংগৃহীত স্যাম্পলে জিনোম সিকোয়েন্স করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। যেহেতু ওমিক্রন সংক্রমণে মৃদু উপসর্গ হয়েছে, সেটা হাসপাতালে ভর্তি রোগীতে ওমিক্রন না পাবার কারণ হতে পারে। পাশাপাশি মৃদু উপসর্গের রোগীদের মধ্যে টেস্ট না করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। তাই প্রাপ্ত ফলাফলের চেয়েও অনেক বেশি ওমিক্রন আক্রান্ত রোগী undetected অবস্থায় আছে। প্রত্যেক করোনাভাইরাস ভ্যারিয়েন্ট বিপজ্জনক এবং তা মারাত্মক অসুস্থতা এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। পাশাপাশি ভাইরাসের নিয়মিত মিউটেশনের আমাদের প্রচলিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে পারে। তাই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

ডেল্টার চেয়ে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীর অসুস্থতা তুলনামূলক কম হলেও ওমিক্রন বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষ করে যারা ঠিকা গ্রহণ করেননি তাদের জন্য। নিজেকে, পরিবারকে এবং দেশবাসীকে করোনার ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করার জন্য সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি যে বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করতে হবে তা নিম্নরূপ-

বাসার বাহিরে গেলে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

করোনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

পরীক্ষার পর রোগ শনাক্ত হলে দ্রুত কোয়ারেন্টিনে বা আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

ঠিকা গ্রহণকারীদের সংক্রমণের হার খুব কম। তাই ঠিকা কার্যক্রমে সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে।

সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অন্যান্য জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।

সর্বশেষ সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি সবাইকে মেনে চলতে হবে। ওমিক্রন বা ডেল্টা যে ধরনই হোক না কেন, সবাইকে সতর্ক থাকতেই হবে। তা না হলে অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে আমাদের সবাইকে। আগামীর সময় করোনামুক্ত হোক ধরণী- এ প্রত্যাশা করি।

[লেখক : উপাচার্য,

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়]