অটিজম শিশুর মায়েদের বিষণ্ণতা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন আশাব্যঞ্জক

আইসিডিডিআর’বি গবেষণা

কম খরচে স্কুলভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে অটিজম আক্রান্ত শিশুর মায়েদের বিষন্নতার পরিবর্তন ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে আশাব্যঞ্জক ফলা পাওয়া গেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা ও সেবাদানে বৈষম্য রয়েছে। বাংলাদেশে যে শিশুদের অটিজম স্পেকট্রাম ডিস অর্ডার (এএসডি) রয়েছে, সেসব শিশুর মায়ের প্রতি দুইজনের মধ্যে একজন বিষন্নতায় ভোগেন। নানা প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করেও মায়েরা তার সন্তানের স্বাভাবিক জীবনে স্বপ্ন দেখেন।

গতকাল ছিল ১৫তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। এইবারের দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়, ‘এমন বিশ্ব গড়ি অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিভা বিকশিত করি’। এ প্রতিপাদ্য নিয়ে অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে।

মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা মাথায় রেখে ২০১৭ সালে একটি গবেষণার অংশ হিসেবে ঢাকা শহরের অটিজম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন এবং সোসাইটি ফর দ্যা ওয়েলফেয়ার অফ অটিস্টিক চিলড্রেন বিশেষায়িত বিদ্যালয়ে সাইকোলজিকাল কাউন্সিলিং সার্ভিস নামে একটি মানসিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়েছিল।

ফিজিবিলিটি অব ইমপ্লেমেন্টিং এ মেন্টাল হেলথ কেয়ার প্রোগ্রাম অ্যান্ড হোম বেসড ট্রেইনিং ফর মাদারস অব চিলড্রেন উইথ অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার ইন এন আরবান পপুলেশন ইন বাংলাদেশ (মেনথল) শিরোনামের এই গবেষণায় ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মানসিক স্বাস্থ্যসেবার একটি পদ্ধতি পরীক্ষা করা হয়।

দেশের বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল বিশেষজ্ঞ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতি প্রণয়নে সহায়তা করেছেন। সাইকোলজিক্যাল কাউন্সিলিং সার্ভিস

বিদ্যালয় দুটিতে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ছয় মাসের জন্য চালু করা হয়েছিল। বিদ্যালয় দুটিতে অধ্যয়নরত সব শিশুর মায়েদের জন্য উন্মুক্ত ছিল।

এই পদ্ধতি প্রয়োগ করার পর বেশিরভাগ মায়েদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। বিষন্নতা পরিমাপের স্কেল অনুযায়ী যেসব মায়েদের পূর্বে বিষন্নতা ছিল তাদের ৪০ ভাগ এবং যেসব মায়েদের বিষন্নতা ছিল না তাদের ২৩ ভাগ মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষ উন্নতি লক্ষ্য করা যায়।

এই সেবাটি নিতে একজন মাকে ৮০ টাকা খরচ করতে হয়েছিল। প্রায় চারটি সেশন নেয়ার পর প্রায় অর্ধেক মায়েদের মানসিক অবস্থার উন্নতি হয়। তাদের জীবনযাত্রায় উন্নতি পরিলক্ষিত হয়।

গবেষণার লেখকদের মতে, অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের বাবা-মা শুধুমাত্র শিশুকে লালন-পালনের চ্যালেঞ্জই মোকাবিলা করে না বরং প্রতিনিয়ত সামাজিক বৈষম্য, বিচ্ছিন্নতাসহ অন্যান্য প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়।

প্রফেসর কেরিম এম মুনির, বোস্টন চিলড্রেনস হসপিটাল, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল এবং মেনথল গবেষণার জ্যেষ্ঠ গবেষক বলেন, বিশ্বব্যাপী অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের মায়েদের বিষন্নতার হার বেশি। এ বিষন্নতা জীবনযাপনের মান অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। যা শিশুর যতেœর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

মেনথল সার্ভিস মডেলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এটি অটিজম এবং মায়েদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মতো দুটি অত্যান্ত সংবেদনশীল বিষয়কে একই সঙ্গে সেবা দিতে পারছে। খুব অল্প খরচে এবং খুব অল্প সময়ে এই পদ্ধতি সুফল দিয়েছে। যা সত্যিই অসাধরণ।

হার্ভাড মেডিকেল স্কুল গ্লোবাল হেলথ ডেলিভারি-দুবাই-এর ডিরেক্টর প্রফেসর সালমান এ কেশাভজি বলেছেন, অটিজমের শিশুদের মায়েদের বিষন্নতাকে প্রশমন করা বিশ্বজুড়েই একটি অতি দরকারি বিষয়।

এ গবেষণাটি দেখিয়েছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীকে কিভাবে উচ্চমানের সেবা দেয়া যায় সেটাই তাদের ভীষণ দরকার।

গবেষণাটির ফলফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এই প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. আলিয়া নাহিদ বলেছেন, আমরা একটি সাশ্রয়ী মানসিক স্বাস্থ্যসেবা মডেল খুঁজে পেয়েছি, যা বাংলাদেশ ও অন্যান্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বড় পরিসরে সহজে প্রয়োগ করার প্রচুর সম্ভবনা রয়েছে।

দেশের যেখানেই অটিজম সেবার সুযোগ রয়েছে, সেখানে দ্রুততম সময়ে মেনথন সার্ভিস মডেলটি যুক্ত করার জন্য তিনি সুপারিশ করতে চান। অনন্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে তাদের অটিজম সেবার সঙ্গে মেনথল সার্ভিস মডেলকে যুক্ত করার লক্ষ্যে সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার দরকারি সহযোগিতা দেয়ার কাজটি এখনই শুরু করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

তার মতে, স্বাস্থ্য গবেষণার আরও বরাদ্দ রাখার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবার মেনথল সার্ভিস মডেলটি যুক্ত করে নিতে পারে। এর মাধ্যমে দেশে সর্বস্তরের জনগণের কাছে মানসিক স্বাস্ব্যসেবা সহজে পৌঁছে দেয়া সম্ভব।

আইসিডিআরবির সায়েন্টিস্ট ও ইনিশিয়েটিভ ফর ননকমিউনিকেভর ডিজিজেসর হেড ড. আলিয়া নাহিদের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন চিলড্রেন্স অ্যান্ড হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল (এইচএমআর), ইউএসএ, সূচনা ফাউন্ডেশন, ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিসরডার অ্যান্ড অটিজম, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড হসপিটাল, ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের সহযোগিতায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।

রবিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২২ , ২০ চৈত্র ১৪২৮ ৩০ শাবান ১৪৪৩

অটিজম শিশুর মায়েদের বিষণ্ণতা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন আশাব্যঞ্জক

আইসিডিডিআর’বি গবেষণা

বাকী বিল্লাহ

কম খরচে স্কুলভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে অটিজম আক্রান্ত শিশুর মায়েদের বিষন্নতার পরিবর্তন ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে আশাব্যঞ্জক ফলা পাওয়া গেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা ও সেবাদানে বৈষম্য রয়েছে। বাংলাদেশে যে শিশুদের অটিজম স্পেকট্রাম ডিস অর্ডার (এএসডি) রয়েছে, সেসব শিশুর মায়ের প্রতি দুইজনের মধ্যে একজন বিষন্নতায় ভোগেন। নানা প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করেও মায়েরা তার সন্তানের স্বাভাবিক জীবনে স্বপ্ন দেখেন।

গতকাল ছিল ১৫তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। এইবারের দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়, ‘এমন বিশ্ব গড়ি অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিভা বিকশিত করি’। এ প্রতিপাদ্য নিয়ে অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে।

মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা মাথায় রেখে ২০১৭ সালে একটি গবেষণার অংশ হিসেবে ঢাকা শহরের অটিজম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন এবং সোসাইটি ফর দ্যা ওয়েলফেয়ার অফ অটিস্টিক চিলড্রেন বিশেষায়িত বিদ্যালয়ে সাইকোলজিকাল কাউন্সিলিং সার্ভিস নামে একটি মানসিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়েছিল।

ফিজিবিলিটি অব ইমপ্লেমেন্টিং এ মেন্টাল হেলথ কেয়ার প্রোগ্রাম অ্যান্ড হোম বেসড ট্রেইনিং ফর মাদারস অব চিলড্রেন উইথ অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার ইন এন আরবান পপুলেশন ইন বাংলাদেশ (মেনথল) শিরোনামের এই গবেষণায় ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মানসিক স্বাস্থ্যসেবার একটি পদ্ধতি পরীক্ষা করা হয়।

দেশের বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল বিশেষজ্ঞ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতি প্রণয়নে সহায়তা করেছেন। সাইকোলজিক্যাল কাউন্সিলিং সার্ভিস

বিদ্যালয় দুটিতে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ছয় মাসের জন্য চালু করা হয়েছিল। বিদ্যালয় দুটিতে অধ্যয়নরত সব শিশুর মায়েদের জন্য উন্মুক্ত ছিল।

এই পদ্ধতি প্রয়োগ করার পর বেশিরভাগ মায়েদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। বিষন্নতা পরিমাপের স্কেল অনুযায়ী যেসব মায়েদের পূর্বে বিষন্নতা ছিল তাদের ৪০ ভাগ এবং যেসব মায়েদের বিষন্নতা ছিল না তাদের ২৩ ভাগ মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষ উন্নতি লক্ষ্য করা যায়।

এই সেবাটি নিতে একজন মাকে ৮০ টাকা খরচ করতে হয়েছিল। প্রায় চারটি সেশন নেয়ার পর প্রায় অর্ধেক মায়েদের মানসিক অবস্থার উন্নতি হয়। তাদের জীবনযাত্রায় উন্নতি পরিলক্ষিত হয়।

গবেষণার লেখকদের মতে, অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের বাবা-মা শুধুমাত্র শিশুকে লালন-পালনের চ্যালেঞ্জই মোকাবিলা করে না বরং প্রতিনিয়ত সামাজিক বৈষম্য, বিচ্ছিন্নতাসহ অন্যান্য প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়।

প্রফেসর কেরিম এম মুনির, বোস্টন চিলড্রেনস হসপিটাল, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল এবং মেনথল গবেষণার জ্যেষ্ঠ গবেষক বলেন, বিশ্বব্যাপী অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের মায়েদের বিষন্নতার হার বেশি। এ বিষন্নতা জীবনযাপনের মান অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। যা শিশুর যতেœর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

মেনথল সার্ভিস মডেলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এটি অটিজম এবং মায়েদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মতো দুটি অত্যান্ত সংবেদনশীল বিষয়কে একই সঙ্গে সেবা দিতে পারছে। খুব অল্প খরচে এবং খুব অল্প সময়ে এই পদ্ধতি সুফল দিয়েছে। যা সত্যিই অসাধরণ।

হার্ভাড মেডিকেল স্কুল গ্লোবাল হেলথ ডেলিভারি-দুবাই-এর ডিরেক্টর প্রফেসর সালমান এ কেশাভজি বলেছেন, অটিজমের শিশুদের মায়েদের বিষন্নতাকে প্রশমন করা বিশ্বজুড়েই একটি অতি দরকারি বিষয়।

এ গবেষণাটি দেখিয়েছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীকে কিভাবে উচ্চমানের সেবা দেয়া যায় সেটাই তাদের ভীষণ দরকার।

গবেষণাটির ফলফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এই প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. আলিয়া নাহিদ বলেছেন, আমরা একটি সাশ্রয়ী মানসিক স্বাস্থ্যসেবা মডেল খুঁজে পেয়েছি, যা বাংলাদেশ ও অন্যান্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বড় পরিসরে সহজে প্রয়োগ করার প্রচুর সম্ভবনা রয়েছে।

দেশের যেখানেই অটিজম সেবার সুযোগ রয়েছে, সেখানে দ্রুততম সময়ে মেনথন সার্ভিস মডেলটি যুক্ত করার জন্য তিনি সুপারিশ করতে চান। অনন্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে তাদের অটিজম সেবার সঙ্গে মেনথল সার্ভিস মডেলকে যুক্ত করার লক্ষ্যে সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার দরকারি সহযোগিতা দেয়ার কাজটি এখনই শুরু করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

তার মতে, স্বাস্থ্য গবেষণার আরও বরাদ্দ রাখার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবার মেনথল সার্ভিস মডেলটি যুক্ত করে নিতে পারে। এর মাধ্যমে দেশে সর্বস্তরের জনগণের কাছে মানসিক স্বাস্ব্যসেবা সহজে পৌঁছে দেয়া সম্ভব।

আইসিডিআরবির সায়েন্টিস্ট ও ইনিশিয়েটিভ ফর ননকমিউনিকেভর ডিজিজেসর হেড ড. আলিয়া নাহিদের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন চিলড্রেন্স অ্যান্ড হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল (এইচএমআর), ইউএসএ, সূচনা ফাউন্ডেশন, ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিসরডার অ্যান্ড অটিজম, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড হসপিটাল, ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের সহযোগিতায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।