জনগণকে সেবা প্রদান নিশ্চিতে সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল দেশের জনগণকে সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা (কর্মকর্তারা) সব সময় মাথায় রাখবেন- জনগণ যেন আপনাদের সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, কারণ তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর শাহবাগের বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২১, ১২২ ও ১২৩ আইন ও প্রশাসন কোর্সের সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে এ নির্দেশনা দেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

শেখ হাসিনা তরুণ কর্মকর্তাদের যেখানে পোস্টিং দেয়া হবে- সে স্থান সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে এবং স্থানীয়দের ভাগ্য, জীবন ও জীবিকার উন্নয়নের ব্যাপারে সব সময় চিন্তা-ভাবনা করার নির্দেশনা দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের (প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের) দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করার সর্বোচ্চ সুযোগ রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, এই তরুণ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কর্ম অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ভবিষ্যতে উচ্চতর পদ লাভের পর, তারা বাস্তবিকভাবে কাজ করার সুযোগ পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারাই বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার সরকারের গৃহীত ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের মূল চাবিকাঠি।’

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস প্রশাসনিক একাডেমির রেক্টর মোমিনুর রশিদ আমিন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এইচ এন আশেকুর রহমান ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আলি আজম।

এ সময় বিসিএস প্রশাসনিক একাডেমির ওপর নির্মিত একটি অডিও-ভিজুয়াল প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ফরহাদ হোসেন রেক্টরের কাছে শীর্ষ স্থান অধিকারকারীদের মাঝে পুরস্কার, ক্রেস্ট ও সনদ হস্তান্তর করেন।

১২১, ১২২ ও ১২৩ কোর্সে মোট ৯৯ জন অংশ নেন।

১২১, ১২২ ও ১২৩ থেকে প্রথম স্থান অধিকারকারী রেক্টর অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত তিন জন হলেনÑ মো. নাভিদ রেজওয়ানুল কবির, মো. রাকিবুর হাসান ও রেজওয়ানা আফরিন। এ সময় তারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

পাশাপাশি, ১২১ এর মহুয়া আফরোজ ও আলাউদ্দিন, ১২২ এর সাবরিনা শারমীন ও সুমা খাতুন এবং ১২৩ এর কাজী মো. অনিক ইসলাম ও মেহেদী হাসান যথাক্রমে এই কোর্সগুলোর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষিত ও দক্ষ সিভিল সার্ভিস তার সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অন্যতম সহযোগী হাতিয়ার।

তিনি বলেন, ‘আমরা যা প্রতিশ্রুতি দিই, প্রশাসন তা বাস্তবায়ন করে। আমরা চাই আপনারা আপনাদের জ্ঞান, মেধা এবং উদ্ভাবনী দক্ষতা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন ও জনগণের সেবা করবেন।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৃহীত দ্বিতীয় বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যদি দ্বিতীয় বিপ্লব বাস্তবায়ন করতে পারতেন, তাহলে দশ বছরে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতো।

কিন্তু, বঙ্গবন্ধুকে সে সুযোগ দেয়া হয়নি। কারণ, ’৭৫ সালে তাকে এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের মানুষ বঞ্চিত ও শোষিত ছিল।

বঙ্গবন্ধু সর্বদা জনগণের সেবা করার জন্য সরকারি কর্মচারীদের নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি মনে করি যে, একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আপনাদের উচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং অসাম্প্রদায়িক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার চেতনা নিয়ে কাজ করা।

তিনি বলেন, তিনি দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে চান। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর পাঁচ বছরে সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন-সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশবাসীর সার্বিক উন্নয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসন শুরু করলেও তাকে হত্যার পর তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এখন তার সরকার দেশের কোন মানুষ যাতে গৃহহীন ও ঠিকানাহীন না থাকে তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।

সোমবার, ০৪ এপ্রিল ২০২২ , ২১ চৈত্র ১৪২৮ ০১ রমাদ্বান ১৪৪৩

জনগণকে সেবা প্রদান নিশ্চিতে সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বাসস

image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল দেশের জনগণকে সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা (কর্মকর্তারা) সব সময় মাথায় রাখবেন- জনগণ যেন আপনাদের সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, কারণ তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর শাহবাগের বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২১, ১২২ ও ১২৩ আইন ও প্রশাসন কোর্সের সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে এ নির্দেশনা দেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

শেখ হাসিনা তরুণ কর্মকর্তাদের যেখানে পোস্টিং দেয়া হবে- সে স্থান সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে এবং স্থানীয়দের ভাগ্য, জীবন ও জীবিকার উন্নয়নের ব্যাপারে সব সময় চিন্তা-ভাবনা করার নির্দেশনা দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের (প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের) দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করার সর্বোচ্চ সুযোগ রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, এই তরুণ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কর্ম অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ভবিষ্যতে উচ্চতর পদ লাভের পর, তারা বাস্তবিকভাবে কাজ করার সুযোগ পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারাই বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার সরকারের গৃহীত ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের মূল চাবিকাঠি।’

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস প্রশাসনিক একাডেমির রেক্টর মোমিনুর রশিদ আমিন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এইচ এন আশেকুর রহমান ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আলি আজম।

এ সময় বিসিএস প্রশাসনিক একাডেমির ওপর নির্মিত একটি অডিও-ভিজুয়াল প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ফরহাদ হোসেন রেক্টরের কাছে শীর্ষ স্থান অধিকারকারীদের মাঝে পুরস্কার, ক্রেস্ট ও সনদ হস্তান্তর করেন।

১২১, ১২২ ও ১২৩ কোর্সে মোট ৯৯ জন অংশ নেন।

১২১, ১২২ ও ১২৩ থেকে প্রথম স্থান অধিকারকারী রেক্টর অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত তিন জন হলেনÑ মো. নাভিদ রেজওয়ানুল কবির, মো. রাকিবুর হাসান ও রেজওয়ানা আফরিন। এ সময় তারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

পাশাপাশি, ১২১ এর মহুয়া আফরোজ ও আলাউদ্দিন, ১২২ এর সাবরিনা শারমীন ও সুমা খাতুন এবং ১২৩ এর কাজী মো. অনিক ইসলাম ও মেহেদী হাসান যথাক্রমে এই কোর্সগুলোর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষিত ও দক্ষ সিভিল সার্ভিস তার সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অন্যতম সহযোগী হাতিয়ার।

তিনি বলেন, ‘আমরা যা প্রতিশ্রুতি দিই, প্রশাসন তা বাস্তবায়ন করে। আমরা চাই আপনারা আপনাদের জ্ঞান, মেধা এবং উদ্ভাবনী দক্ষতা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন ও জনগণের সেবা করবেন।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৃহীত দ্বিতীয় বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যদি দ্বিতীয় বিপ্লব বাস্তবায়ন করতে পারতেন, তাহলে দশ বছরে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতো।

কিন্তু, বঙ্গবন্ধুকে সে সুযোগ দেয়া হয়নি। কারণ, ’৭৫ সালে তাকে এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের মানুষ বঞ্চিত ও শোষিত ছিল।

বঙ্গবন্ধু সর্বদা জনগণের সেবা করার জন্য সরকারি কর্মচারীদের নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি মনে করি যে, একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আপনাদের উচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং অসাম্প্রদায়িক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার চেতনা নিয়ে কাজ করা।

তিনি বলেন, তিনি দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে চান। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর পাঁচ বছরে সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন-সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশবাসীর সার্বিক উন্নয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসন শুরু করলেও তাকে হত্যার পর তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এখন তার সরকার দেশের কোন মানুষ যাতে গৃহহীন ও ঠিকানাহীন না থাকে তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।