যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আশাব্যঞ্জক আলোচনা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে

১৯৭৪ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুক্তরাষ্ট্র সফর এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তি পায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বৈশ্বিক ক্ষেত্রে পররাষ্ট্রনীতির অভিন্ন উদ্দেশ পূরণে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত হতে থাকে।’

গত সোমবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে বৈঠককে ফলপ্রসূ অভিহিত করে ড. মোমেন বলেন, ‘আগামী ৫০ বছরে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আমরা আশাব্যঞ্জক আলোচনা করেছি।’

তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতারা ও খ্যাতিমান ব্যক্তিদের ভূমিকা স্মরণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি জর্জ বুশ বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্যপদ দেয়া সংক্রান্ত রেজুলেশনের পক্ষে ১৬ বারের মধ্যে ১৫ বারই সমর্থন দেয়ার বিষয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্মরণ করেন।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২ দেশের অংশীদারীত্বের কথা উল্লেখ করেন ড. মোমেন বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা, আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে এক সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের ৬ কোটির বেশি ডোজ টিকা দিয়ে সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি এবং রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় এককভাবে বৃহত্তম সহায়তা দেয়ার কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

ড. মোমেন বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও অগ্রগতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া, নারীর ক্ষমতায়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় পাশে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

ও নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ইসোবেল কোলম্যান সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মাহবুবুল আলম হানিফ ও নাহিম রাজ্জাক। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি-বেসরকারি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ওয়াকার-উজ-জামান, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর বে অফ বেঙ্গল স্টাডিজের পরিচালক সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার, ০৬ এপ্রিল ২০২২ , ২৩ চৈত্র ১৪২৮ ০৪ রমাদ্বান ১৪৪৩

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আশাব্যঞ্জক আলোচনা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

১৯৭৪ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুক্তরাষ্ট্র সফর এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তি পায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বৈশ্বিক ক্ষেত্রে পররাষ্ট্রনীতির অভিন্ন উদ্দেশ পূরণে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত হতে থাকে।’

গত সোমবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে বৈঠককে ফলপ্রসূ অভিহিত করে ড. মোমেন বলেন, ‘আগামী ৫০ বছরে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আমরা আশাব্যঞ্জক আলোচনা করেছি।’

তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতারা ও খ্যাতিমান ব্যক্তিদের ভূমিকা স্মরণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি জর্জ বুশ বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্যপদ দেয়া সংক্রান্ত রেজুলেশনের পক্ষে ১৬ বারের মধ্যে ১৫ বারই সমর্থন দেয়ার বিষয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্মরণ করেন।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২ দেশের অংশীদারীত্বের কথা উল্লেখ করেন ড. মোমেন বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা, আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে এক সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের ৬ কোটির বেশি ডোজ টিকা দিয়ে সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি এবং রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় এককভাবে বৃহত্তম সহায়তা দেয়ার কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

ড. মোমেন বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও অগ্রগতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া, নারীর ক্ষমতায়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় পাশে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

ও নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ইসোবেল কোলম্যান সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মাহবুবুল আলম হানিফ ও নাহিম রাজ্জাক। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি-বেসরকারি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ওয়াকার-উজ-জামান, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর বে অফ বেঙ্গল স্টাডিজের পরিচালক সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।