রংপুরের তারাগঞ্জে পুলিশ প্রটেকশনে বিধবার জমি দখলের চেষ্টা

আদালতে মামলা থাকার পরও এমন ঘটনা ঘটায় তোলপাড়, মামলা নেয়নি থানা

সহায়-সম্বলহীন এক বিধবার জমি আদালতে মামলা থাকার পরও পুলিশ প্রটেকশনে ট্রাক্টরে ইট ও বালু নিয়ে জোর করে দখল করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

গত শুক্রবার প্রকাশ্যদিনের বেলায় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর বাঙ্গালিপুর গ্রামে। এ ঘটনায় তারাগজ্ঞ থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত মামলা নেয়নি। এমনকি যে পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে তারাগঞ্জ থানার গাড়ি ব্যবহার করে জায়গা দখল করা হয়েছে সে বিষয়টি সম্পর্কে পুলিশ কিছুই বলছে না।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর এলাকার বাঙ্গালিপুর গ্রামের বিধবা মঞ্জুয়ারা বেওয়ার ক্রয় সূত্রে ভোগদখলীয় উপজেলার ঘনিরামপুর এলাকায় অবস্থিত ৩ শতক জমি একই এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আল আমিন মিয়াসহ একটি প্রভাবশালী মহল জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী মঞ্জুয়ারা বেওয়া রংপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করার পর প্রতিপক্ষরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠে, কিছুদিন যেতে না যেতে তারা নানা প্রকার হুমকি-ধমকি দিতে থাকে।

অবশেষে পুলিশ প্রটেকশন নিয়ে গত শুক্রবার দিনদুপুরে ইট ও বালু দুই গাড়ির মাঝখানে পুলিশের গাড়ি পাহারা দিয়ে তারাগঞ্জ থানার এস আই শ্যামল রায়ের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে জমি দখল করার চেষ্টা করে। এ সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের তীব্র বাদানুবাদ হয়। এলাকাবাসী ও বিধবা মঞ্জুয়ারা বেওয়া জানান এস আই

শ্যামল কুমারের কাছে তারা জানতে কোন ক্ষমতা বলে তারা এসেছেন থানায় কোন অভিযোগ আছে কি-না এমনকি তাদের পাহারা দিয়ে মালামাল নিয়ে আসার কোন অনুমতি আছে কি-না দেখতে চাইলে এস আই শ্যামল রায় দেখাতে পারেননি।

এ সময় ওই পুলিশ, কর্মকর্তা গ্রেপ্তার করাসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী বিধবা মঞ্জুয়ারা জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি। হঠাৎ গত শুক্রবার দিনদুপুরে ইট ও বালুর দুই গাড়ি সঙ্গে থানার পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর শ্যামল রায়সহ একদল পুলিশ জমি দখল করার চেষ্টা করে। ঘটনার পুরা ভিডিও ফুটেজ ওই এলাকার সাধারণ মানুষসহ যুবক ছেলে মেয়েদের মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ আছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় এ প্রতিনিধির কাছেও ভিডিওটি এসেছে।

এলাকাবাসী জানান এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে অভিযুক্ত আর আমিনের বাবা পুলিশে চাকরি করতেন তার ছোট ভাইও পুলিশে চাকরিরত আছেন। পুলিশের প্রভাব খাটিয়ে তারাগজ্ঞ থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে তারা জমি দখল করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে তারা চলে যান।

অন্যদিকে অভিযুক্ত আল আমিন মিয়াও স্বীকার করেন জমি নিয়ে বিধবা মজ্ঞুয়ারার সঙ্গে বিরোধ চলছে চলছে। তার বাবা পুলিশ ছিলেন এবং ছোট ভাইও পুলিশে চাকরিরত ছিলেন। তিনি দাবি করেন শুক্রবার জমিতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

এদিকে তারাগঞ্জ থানার অভিযুক্ত এসআই শ্যামল কুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কেন ঘটনাস্থলে পুলিশের গাড়ি নিয়ে গিয়েছেন তা প্রথমে পুরো অস্বীকার করলেও এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে জানালে তিনি ফোন কেটে দেন।

পরে তারাগঞ্জ থানার ওসি ফারুক আহম্মেদ বলেন, নিরাপত্তাহীনতায় বিধবার পরিবার, এরকম কোন অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে সরেজমিন তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আশাব্যঞ্জক আলোচনা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে
পানি উন্নয়ন বোর্ডকে মিলিটারি কায়দায় কাজ করতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
ফ্রিল্যান্সিংয়ে বদলে যাওয়া জীবন
মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়ি থামানো যাবে না
নিরাপত্তাকর্মী-পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ছদ্মবেশে ডাকাত চক্র
উত্তীর্ণ ৭৯ হাজার ৩৩৭ জন, এগিয়ে মেয়েরা
সবার সেরা খুলনার মীম
৬ বছরেও তামাককর কাঠামো বাস্তবায়ন হয়নি, সহজ লভ্যতায় হুমকিতে জনস্বাস্থ্য
সুনামগঞ্জে আরও ২ স্থানে বাঁধ ভেঙে ফসলহানি, ঝুঁকিপূর্ণ বেশ কয়েকটি
হাওরের বাঁধ কি ফসল রক্ষায় কাজে আসছে
অনলাইনে জন্মসনদ

বুধবার, ০৬ এপ্রিল ২০২২ , ২৩ চৈত্র ১৪২৮ ০৪ রমাদ্বান ১৪৪৩

রংপুরের তারাগঞ্জে পুলিশ প্রটেকশনে বিধবার জমি দখলের চেষ্টা

আদালতে মামলা থাকার পরও এমন ঘটনা ঘটায় তোলপাড়, মামলা নেয়নি থানা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক রংপুর ও প্রতিনিধি, তারাগঞ্জ

সহায়-সম্বলহীন এক বিধবার জমি আদালতে মামলা থাকার পরও পুলিশ প্রটেকশনে ট্রাক্টরে ইট ও বালু নিয়ে জোর করে দখল করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

গত শুক্রবার প্রকাশ্যদিনের বেলায় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর বাঙ্গালিপুর গ্রামে। এ ঘটনায় তারাগজ্ঞ থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত মামলা নেয়নি। এমনকি যে পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে তারাগঞ্জ থানার গাড়ি ব্যবহার করে জায়গা দখল করা হয়েছে সে বিষয়টি সম্পর্কে পুলিশ কিছুই বলছে না।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর এলাকার বাঙ্গালিপুর গ্রামের বিধবা মঞ্জুয়ারা বেওয়ার ক্রয় সূত্রে ভোগদখলীয় উপজেলার ঘনিরামপুর এলাকায় অবস্থিত ৩ শতক জমি একই এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আল আমিন মিয়াসহ একটি প্রভাবশালী মহল জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী মঞ্জুয়ারা বেওয়া রংপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করার পর প্রতিপক্ষরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠে, কিছুদিন যেতে না যেতে তারা নানা প্রকার হুমকি-ধমকি দিতে থাকে।

অবশেষে পুলিশ প্রটেকশন নিয়ে গত শুক্রবার দিনদুপুরে ইট ও বালু দুই গাড়ির মাঝখানে পুলিশের গাড়ি পাহারা দিয়ে তারাগঞ্জ থানার এস আই শ্যামল রায়ের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে জমি দখল করার চেষ্টা করে। এ সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের তীব্র বাদানুবাদ হয়। এলাকাবাসী ও বিধবা মঞ্জুয়ারা বেওয়া জানান এস আই

শ্যামল কুমারের কাছে তারা জানতে কোন ক্ষমতা বলে তারা এসেছেন থানায় কোন অভিযোগ আছে কি-না এমনকি তাদের পাহারা দিয়ে মালামাল নিয়ে আসার কোন অনুমতি আছে কি-না দেখতে চাইলে এস আই শ্যামল রায় দেখাতে পারেননি।

এ সময় ওই পুলিশ, কর্মকর্তা গ্রেপ্তার করাসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী বিধবা মঞ্জুয়ারা জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি। হঠাৎ গত শুক্রবার দিনদুপুরে ইট ও বালুর দুই গাড়ি সঙ্গে থানার পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর শ্যামল রায়সহ একদল পুলিশ জমি দখল করার চেষ্টা করে। ঘটনার পুরা ভিডিও ফুটেজ ওই এলাকার সাধারণ মানুষসহ যুবক ছেলে মেয়েদের মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ আছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় এ প্রতিনিধির কাছেও ভিডিওটি এসেছে।

এলাকাবাসী জানান এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে অভিযুক্ত আর আমিনের বাবা পুলিশে চাকরি করতেন তার ছোট ভাইও পুলিশে চাকরিরত আছেন। পুলিশের প্রভাব খাটিয়ে তারাগজ্ঞ থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে তারা জমি দখল করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে তারা চলে যান।

অন্যদিকে অভিযুক্ত আল আমিন মিয়াও স্বীকার করেন জমি নিয়ে বিধবা মজ্ঞুয়ারার সঙ্গে বিরোধ চলছে চলছে। তার বাবা পুলিশ ছিলেন এবং ছোট ভাইও পুলিশে চাকরিরত ছিলেন। তিনি দাবি করেন শুক্রবার জমিতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

এদিকে তারাগঞ্জ থানার অভিযুক্ত এসআই শ্যামল কুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কেন ঘটনাস্থলে পুলিশের গাড়ি নিয়ে গিয়েছেন তা প্রথমে পুরো অস্বীকার করলেও এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে জানালে তিনি ফোন কেটে দেন।

পরে তারাগঞ্জ থানার ওসি ফারুক আহম্মেদ বলেন, নিরাপত্তাহীনতায় বিধবার পরিবার, এরকম কোন অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে সরেজমিন তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।