আইডিআরএ’র মূলধন সংক্রান্ত নির্দেশনার স্থগিতাদেশ চায় বিআইএ

দেশে নিবন্ধিত লাইফ ও নন-লাইফ ইন্সুরেন্সগুলোকে আগামী এক মাসের মধ্যে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণ এবং পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণ আইন পরিপালনের নির্দেশনা জারি করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। আর এই নির্দেশনা স্থগিত রাখতে আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। সম্প্রতি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’কে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির মূলধন ও শেয়ারধারণ সম্পর্কিত পূরণীয় শর্তের বিষয়ে নির্দেশনা দেয় আইডিআরএ। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দেশে নিবন্ধিত লাইফ বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন হবে ৩০ কোটি টাকা, যার ৬০ শতাংশ আসবে উদ্যোক্তাদের কাছ থাকে। আর বাকি ৪০ শতাংশ নেয়া হবে জনসাধারণের কাছ থেকে। আর দেশে নিবন্ধিত নন-লাইফ বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, পরিশোধিত মূলধন হবে ৪০ কোটি টাকা, যার ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তারা দেবেন আর ৪০ শতাংশ উন্মুক্ত থাকবে জনসাধারণের জন্য।

তবে বিআইএ বলছে, ২০১০ সালের পূর্বে লাইসেন্স প্রাপ্ত লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিসমূহ কী পদ্ধতিতে এবং কোন সময় সীমার মধ্যে তফসিল-১ এ বিধৃত মূলধন থাকার শর্ত পূরণ করবে- এই সংশ্লিষ্ট ধারা-২১(৩) এর বিধিটি অদ্যবধি গেজেট নোটিফিকেশন হয়নি।

এমতাবস্থায় বীমা আইন ২০১০ এর ধারা ২১(৩) অনুযায়ী বিধি প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত উপর্যুক্ত স্মারকদ্বয়ের নির্দেশনা স্থগিত রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে বীমা মালিকদের এ সংগঠন। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আলোচনার প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে উপযুক্ত প্রতিনিধি পাঠানো হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছে বিআইএ।

উল্লেখ্য, বীমা আইন ২০১০ এর ২১ ধারায় বলা হয়েছে, (১) এই আইন বলবৎ হইবার পূর্বে বাংলাদেশে যেকোন শ্রেণীর বীমা ব্যবসায়ে নিয়োজিত ছিল এইরূপ বীমাকারী ব্যতীত, অন্য কোন বীমাকারী এই আইন বলবৎ হইবার পর কোন শ্রেণীর বীমা ব্যবসা পরিচালনার জন্য নিবন্ধীকৃত হইবে না, যদি তাহার তফসিল ১ এ বিধৃত পরিমাণ পরিশোধিত মূলধন না থাকে এবং তাহার শেয়ারসমূহ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী পরিশোধিত না হইয়া থাকে : তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধি বা হ্রাস করিতে পারিবে : আরও শর্ত থাকে যে, উদ্যোক্তারা নিবন্ধনের আবেদন করার পূর্বে পরিশোধিত মূলধনে তাহাদের নিজ নিজ অংশ দায় মুক্তভাবে বাংলাদেশে কোন তফসিলী ব্যাংকে কোম্পানির নামে জমা করিবেন এবং উক্ত অর্থ দায়মুক্তভাবে জমা হিসাবে থাকিবে।

বীমাকারী কর্তৃক নিবন্ধনের আবেদন দাখিলের পর বা ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত পরিশোধিত মূলধন জমার হিসাব হইতে জমার উপর অর্জিত সুদ ব্যতীত কোন অর্থ উত্তোলন করা যাইবে না এবং কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে কর্তৃপক্ষের অনুকূলে ছাড়া পরিশোধিত মূলধনের উপর কোনরূপ লিয়েন লিপিবদ্ধ করা যাবে না।

এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে বাংলাদেশে বা বাংলাদেশের বাহিরে নিয়মিত কোন বীমাকারীকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও সময়সীমার মধ্যে উপ-ধারা (১) এর অধীনে উহার মূলধন থাকার শর্ত পূরণ করিতে হইবে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আলোচনার প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে উপযুক্ত প্রতিনিধি পাঠানো হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছে বিআইএ।

শুক্রবার, ০৮ এপ্রিল ২০২২ , ২৫ চৈত্র ১৪২৮ ০৬ রমাদ্বান ১৪৪৩

আইডিআরএ’র মূলধন সংক্রান্ত নির্দেশনার স্থগিতাদেশ চায় বিআইএ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

দেশে নিবন্ধিত লাইফ ও নন-লাইফ ইন্সুরেন্সগুলোকে আগামী এক মাসের মধ্যে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণ এবং পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণ আইন পরিপালনের নির্দেশনা জারি করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। আর এই নির্দেশনা স্থগিত রাখতে আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। সম্প্রতি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’কে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির মূলধন ও শেয়ারধারণ সম্পর্কিত পূরণীয় শর্তের বিষয়ে নির্দেশনা দেয় আইডিআরএ। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দেশে নিবন্ধিত লাইফ বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন হবে ৩০ কোটি টাকা, যার ৬০ শতাংশ আসবে উদ্যোক্তাদের কাছ থাকে। আর বাকি ৪০ শতাংশ নেয়া হবে জনসাধারণের কাছ থেকে। আর দেশে নিবন্ধিত নন-লাইফ বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, পরিশোধিত মূলধন হবে ৪০ কোটি টাকা, যার ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তারা দেবেন আর ৪০ শতাংশ উন্মুক্ত থাকবে জনসাধারণের জন্য।

তবে বিআইএ বলছে, ২০১০ সালের পূর্বে লাইসেন্স প্রাপ্ত লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিসমূহ কী পদ্ধতিতে এবং কোন সময় সীমার মধ্যে তফসিল-১ এ বিধৃত মূলধন থাকার শর্ত পূরণ করবে- এই সংশ্লিষ্ট ধারা-২১(৩) এর বিধিটি অদ্যবধি গেজেট নোটিফিকেশন হয়নি।

এমতাবস্থায় বীমা আইন ২০১০ এর ধারা ২১(৩) অনুযায়ী বিধি প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত উপর্যুক্ত স্মারকদ্বয়ের নির্দেশনা স্থগিত রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে বীমা মালিকদের এ সংগঠন। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আলোচনার প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে উপযুক্ত প্রতিনিধি পাঠানো হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছে বিআইএ।

উল্লেখ্য, বীমা আইন ২০১০ এর ২১ ধারায় বলা হয়েছে, (১) এই আইন বলবৎ হইবার পূর্বে বাংলাদেশে যেকোন শ্রেণীর বীমা ব্যবসায়ে নিয়োজিত ছিল এইরূপ বীমাকারী ব্যতীত, অন্য কোন বীমাকারী এই আইন বলবৎ হইবার পর কোন শ্রেণীর বীমা ব্যবসা পরিচালনার জন্য নিবন্ধীকৃত হইবে না, যদি তাহার তফসিল ১ এ বিধৃত পরিমাণ পরিশোধিত মূলধন না থাকে এবং তাহার শেয়ারসমূহ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী পরিশোধিত না হইয়া থাকে : তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধি বা হ্রাস করিতে পারিবে : আরও শর্ত থাকে যে, উদ্যোক্তারা নিবন্ধনের আবেদন করার পূর্বে পরিশোধিত মূলধনে তাহাদের নিজ নিজ অংশ দায় মুক্তভাবে বাংলাদেশে কোন তফসিলী ব্যাংকে কোম্পানির নামে জমা করিবেন এবং উক্ত অর্থ দায়মুক্তভাবে জমা হিসাবে থাকিবে।

বীমাকারী কর্তৃক নিবন্ধনের আবেদন দাখিলের পর বা ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত পরিশোধিত মূলধন জমার হিসাব হইতে জমার উপর অর্জিত সুদ ব্যতীত কোন অর্থ উত্তোলন করা যাইবে না এবং কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে কর্তৃপক্ষের অনুকূলে ছাড়া পরিশোধিত মূলধনের উপর কোনরূপ লিয়েন লিপিবদ্ধ করা যাবে না।

এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে বাংলাদেশে বা বাংলাদেশের বাহিরে নিয়মিত কোন বীমাকারীকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও সময়সীমার মধ্যে উপ-ধারা (১) এর অধীনে উহার মূলধন থাকার শর্ত পূরণ করিতে হইবে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আলোচনার প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে উপযুক্ত প্রতিনিধি পাঠানো হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছে বিআইএ।