টিপ পরায় হেনস্তা, অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি

পুলিশ বলছে, কনস্টেবলের সঙ্গে রং সাইডে বাইক চালানো নিয়ে বির্তক হয়

রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দারকে হেনস্তার ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশের তদন্ত কমিটি। তদন্তে তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রোটেকশন বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল নাজমুল তারেকের বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে হেনস্তা করার প্রমাণ পেয়েছে। তবে হেনস্তা শুধু কপালে টিপ পরা নিয়ে হয়েছিল কি-না তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল পুলিশের তদন্ত কমিটির। তবে ‘টিপ নিয়ে হেনস্তা’ হয়েছিল কি-না এ বিষয়টি পরিষ্কার না হওয়ায় প্রতিবেদন জমা দেয়নি তারা। আজ বা আগামী প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য আরও সময় চাওয়া হতে পারে।

ডিএমপি সদরদপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় দুই সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তবে তারা মৌখিকভাবে জানিয়েছে যে প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে তাদের আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে। তারা পরবর্তী কার্যদিবসে ডিএমপির কাছে লিখিতভাবে সময় আবেদন করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, তদন্তে কমিটি নিশ্চিতভাবে জানতে পেরেছে যে সেদিন কনস্টেবল তারেক ও শিক্ষিকার মধ্যে বাগবিত-া হয়েছিল। তবে এর সূত্রপাত্র হয়েছিল রং সাইডে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে। সেদিন সকালে কনস্টেবল রং সাইডে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমে তাকে ডাক দেন লতা। পুলিশের লোক হয়েও কেন রং সাইড দিয়ে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন, এমন জানতে চান তিনি। এতেই তাদের দুইজনের মধ্যে বাগবিত-া শুরু হয়। তবে টিপ নিয়ে কনস্টেবল লতাকে অপমান করেছিল কি-না এ বিষয়ে কমিটি সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। সিসিটিভি ফুটেজেও বিষয়টি ধরা পড়েনি। এছাড়া তদন্তের সময় জিজ্ঞাসাবাদে কনস্টেবল ও লতা দুইজনই ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেছেন। দুইজনের বক্তব্যে বিন্দুমাত্র মিল না থাকায় কমিটি তদন্তের জন্য আরও সময় চাইতে পারে।

এর আগে গত ২ এপ্রিল তেজগাঁও

কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার শেরেবাংলা নগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি পায়ে হেঁটে তেজগাঁও কলেজের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় মধ্যবয়সী ও লম্বা দাড়ি টুপিওয়ালা পুলিশের পোশাক পরিহিত এক সদস্য তাকে দেখে বলে ওঠেন- এই টিপ পরছস কেন? তিনি দাবি করেছেন, তিনি পুলিশের পোশাক পরিহিত এক সদস্য দ্বারা ইভটিজিং ও প্রাণনাশের চেষ্টার শিকার হয়েছেন। যার ঘটনাস্থল তিনি ফার্মগেটের সেজান পয়েন্টের কাছাকাছি বলে উল্লেখ করেছেন। তার এমন অভিযোগের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ঝড় ওঠে। সেটি জাতীয় সংসদ পর্যন্ত গড়ায়। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক পুরুষও টিপ পরে এর প্রতিবাদ জানান। পুলিশ অভিযুক্ত কনস্টেবলকে চিহ্নিত করে। পরে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় দুই সদস্যের কমিটিও গঠন করেছে ডিএমপি।

শনিবার, ০৯ এপ্রিল ২০২২ , ২৬ চৈত্র ১৪২৮ ০৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

টিপ পরায় হেনস্তা, অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি

পুলিশ বলছে, কনস্টেবলের সঙ্গে রং সাইডে বাইক চালানো নিয়ে বির্তক হয়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দারকে হেনস্তার ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশের তদন্ত কমিটি। তদন্তে তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রোটেকশন বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল নাজমুল তারেকের বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে হেনস্তা করার প্রমাণ পেয়েছে। তবে হেনস্তা শুধু কপালে টিপ পরা নিয়ে হয়েছিল কি-না তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল পুলিশের তদন্ত কমিটির। তবে ‘টিপ নিয়ে হেনস্তা’ হয়েছিল কি-না এ বিষয়টি পরিষ্কার না হওয়ায় প্রতিবেদন জমা দেয়নি তারা। আজ বা আগামী প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য আরও সময় চাওয়া হতে পারে।

ডিএমপি সদরদপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় দুই সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তবে তারা মৌখিকভাবে জানিয়েছে যে প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে তাদের আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে। তারা পরবর্তী কার্যদিবসে ডিএমপির কাছে লিখিতভাবে সময় আবেদন করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, তদন্তে কমিটি নিশ্চিতভাবে জানতে পেরেছে যে সেদিন কনস্টেবল তারেক ও শিক্ষিকার মধ্যে বাগবিত-া হয়েছিল। তবে এর সূত্রপাত্র হয়েছিল রং সাইডে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে। সেদিন সকালে কনস্টেবল রং সাইডে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমে তাকে ডাক দেন লতা। পুলিশের লোক হয়েও কেন রং সাইড দিয়ে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন, এমন জানতে চান তিনি। এতেই তাদের দুইজনের মধ্যে বাগবিত-া শুরু হয়। তবে টিপ নিয়ে কনস্টেবল লতাকে অপমান করেছিল কি-না এ বিষয়ে কমিটি সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। সিসিটিভি ফুটেজেও বিষয়টি ধরা পড়েনি। এছাড়া তদন্তের সময় জিজ্ঞাসাবাদে কনস্টেবল ও লতা দুইজনই ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেছেন। দুইজনের বক্তব্যে বিন্দুমাত্র মিল না থাকায় কমিটি তদন্তের জন্য আরও সময় চাইতে পারে।

এর আগে গত ২ এপ্রিল তেজগাঁও

কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার শেরেবাংলা নগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি পায়ে হেঁটে তেজগাঁও কলেজের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় মধ্যবয়সী ও লম্বা দাড়ি টুপিওয়ালা পুলিশের পোশাক পরিহিত এক সদস্য তাকে দেখে বলে ওঠেন- এই টিপ পরছস কেন? তিনি দাবি করেছেন, তিনি পুলিশের পোশাক পরিহিত এক সদস্য দ্বারা ইভটিজিং ও প্রাণনাশের চেষ্টার শিকার হয়েছেন। যার ঘটনাস্থল তিনি ফার্মগেটের সেজান পয়েন্টের কাছাকাছি বলে উল্লেখ করেছেন। তার এমন অভিযোগের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ঝড় ওঠে। সেটি জাতীয় সংসদ পর্যন্ত গড়ায়। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক পুরুষও টিপ পরে এর প্রতিবাদ জানান। পুলিশ অভিযুক্ত কনস্টেবলকে চিহ্নিত করে। পরে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় দুই সদস্যের কমিটিও গঠন করেছে ডিএমপি।