পাবনায় ভুয়া সংগঠনের নামে সড়কের শতাধিক গাছ নিধন

পাবনার সুজানগর উপজেলায় সাকো ‘প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্প’ নামে একটি সংগঠন উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দুই পাশ থেকে শতাধিক গাছ কেটে ফেলে রাখে। এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ইমান আলী খানকে গ্রেপ্তার করেছে। সংগঠনটির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে জেলা সমাজসেবা অফিস জানায়, এ নামে কোন সংগঠনের অনুমোদন নেই।

জানা গেছে, কয়েক মাস আগে থেকে সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের নাম ব্যবহার করে সুজানগর উপজেলা সদরের ভবানীপুর এলাকার ইমান আলী নামের এক ব্যক্তি উপজেলার দুলাই, সাতবাড়িয়া, ভায়না ইউনিয়নের কয়েক কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটা শুরু করে।

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হলে গত বুধবার সুজানগর পৌর ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু বকর বাদী হয়ে ইমান আলীর বিরুদ্ধে সুজানগর থানায় সড়কের ৭০টি গাছ চুরির অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেন।

সুজানগর থানার ওসি আবদুল হান্নান জানান, অভিযোগ দায়েরের পর সেটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে ইমান আলী খানকে গ্রেপ্তার করে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে

চুরি যাওয়া কয়েকটি গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি গাছগুলো উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। আশা করা হচ্ছে দ্রুতই গাছগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রওশন আলী বলেন, পুরোপুরি অবৈধভাবে ওই ব্যক্তি সড়কের গাছ কেটেছেন। ঘটনা জানার পর তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত কয়েক মাসে সে সড়কের কত গাছ কেটেছেন, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পাবনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বলেন, ইমান আলী নামের কোনো ব্যক্তি বা সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্প নামের কোন সংগঠন সড়কের গাছ কাটার কোন অনুমতিই নেননি। বা কোন আবেদন করেননি। গাছ কাটার অনুমতি নিতে হলে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বিষয় রয়েছে।

জেলা সমাজসেবা অফিসের উপপরিচালক রাশেদুল কবির বলেন, সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্প নামে কোন সংগঠনের অস্তিত্ব তাদের জানা নেই। এ নামে কোন সংগঠন নিবন্ধনের আবেদন পর্যন্ত করেনি। তিনি আরও বলেন, কোন সংগঠনের নামে প্রকল্প শব্দ থাকলে সমাজসেবা থেকে সেটি অনুমোদন দেয়ার কোন সুযোগ নেই।

স্থানীয়রা জানান, ইমান আলী বন বিভাগের বাগানের মালি ছিলেন। বছর দেড়েক আগে তিনি অবসরে গেছেন।

অন্য একটি সূত্র জানায়, গেল বছরের মাঝামাঝি সময় সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান, ভায়না ইউনিয়ন, দুলাই সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে কয়েকজন চেয়ারম্যানের সুপারিশসহ গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করে সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক পরিচয়ে ইমান আলী। সেই চিঠি দেখিয়েই তিনি এতদিন ধরে গাছগুলো কেটে এসেছেন।

শনিবার, ০৯ এপ্রিল ২০২২ , ২৬ চৈত্র ১৪২৮ ০৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

পাবনায় ভুয়া সংগঠনের নামে সড়কের শতাধিক গাছ নিধন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, পাবনা

image

পাবনার সুজানগর উপজেলায় সাকো ‘প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্প’ নামে একটি সংগঠন উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দুই পাশ থেকে শতাধিক গাছ কেটে ফেলে রাখে। এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ইমান আলী খানকে গ্রেপ্তার করেছে। সংগঠনটির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে জেলা সমাজসেবা অফিস জানায়, এ নামে কোন সংগঠনের অনুমোদন নেই।

জানা গেছে, কয়েক মাস আগে থেকে সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের নাম ব্যবহার করে সুজানগর উপজেলা সদরের ভবানীপুর এলাকার ইমান আলী নামের এক ব্যক্তি উপজেলার দুলাই, সাতবাড়িয়া, ভায়না ইউনিয়নের কয়েক কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটা শুরু করে।

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হলে গত বুধবার সুজানগর পৌর ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু বকর বাদী হয়ে ইমান আলীর বিরুদ্ধে সুজানগর থানায় সড়কের ৭০টি গাছ চুরির অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেন।

সুজানগর থানার ওসি আবদুল হান্নান জানান, অভিযোগ দায়েরের পর সেটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে ইমান আলী খানকে গ্রেপ্তার করে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে

চুরি যাওয়া কয়েকটি গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি গাছগুলো উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। আশা করা হচ্ছে দ্রুতই গাছগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রওশন আলী বলেন, পুরোপুরি অবৈধভাবে ওই ব্যক্তি সড়কের গাছ কেটেছেন। ঘটনা জানার পর তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত কয়েক মাসে সে সড়কের কত গাছ কেটেছেন, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পাবনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বলেন, ইমান আলী নামের কোনো ব্যক্তি বা সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্প নামের কোন সংগঠন সড়কের গাছ কাটার কোন অনুমতিই নেননি। বা কোন আবেদন করেননি। গাছ কাটার অনুমতি নিতে হলে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বিষয় রয়েছে।

জেলা সমাজসেবা অফিসের উপপরিচালক রাশেদুল কবির বলেন, সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্প নামে কোন সংগঠনের অস্তিত্ব তাদের জানা নেই। এ নামে কোন সংগঠন নিবন্ধনের আবেদন পর্যন্ত করেনি। তিনি আরও বলেন, কোন সংগঠনের নামে প্রকল্প শব্দ থাকলে সমাজসেবা থেকে সেটি অনুমোদন দেয়ার কোন সুযোগ নেই।

স্থানীয়রা জানান, ইমান আলী বন বিভাগের বাগানের মালি ছিলেন। বছর দেড়েক আগে তিনি অবসরে গেছেন।

অন্য একটি সূত্র জানায়, গেল বছরের মাঝামাঝি সময় সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান, ভায়না ইউনিয়ন, দুলাই সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে কয়েকজন চেয়ারম্যানের সুপারিশসহ গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করে সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক পরিচয়ে ইমান আলী। সেই চিঠি দেখিয়েই তিনি এতদিন ধরে গাছগুলো কেটে এসেছেন।