শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা না থাকলে মহামারীর প্রভাব বাংলাদেশে ধ্বংসাত্মক হতো : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছু দেশকে, যারা এখনও টিকা দেয়ার লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে, তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের অবদান বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, কিছু দেশ এখনও তাদের টিকা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন থেকে অনেক দূরে রয়ে গেছে। এই দেশগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশেষ মনোযোগ এবং সমর্থন পাওয়ার যোগ্য।’

তিনি মনে করিয়ে দেন যে আমাদের একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা না থাকলে মহামারীর প্রভাব বাংলাদেশে ধ্বংসাত্মক হতে পারত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারীতে আমরা সংক্রমণকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি এবং এখন সংক্রমণ অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানি এবং ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গ্যাভী আয়োজিত ‘২০২২ গ্যাভী কোভ্যাক্স এএমসি সামিট: ব্রেক কোভিড নাও’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনে পূর্বধারণকৃত ভিডিও বার্তায় একথা বলেন।

গ্যাভি কোভ্যাক্স অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্ট দ্বারা সমর্থিত নিম্নআয়ের দেশগুলোর জন্য দাতা তহবিলে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ইউএস ডলারসহ কোভ্যাক্সের জন্য জরুরি আর্থিক সহায়তায় কমপক্ষে ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ইউএস ডলার সংগ্রহে সহায়তা করার লক্ষ্যে নেতা-স্তরের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

শেখ হাসিনা স্টেকহোল্ডারদের সব দেশে টিকা প্রদানে সাহায্য করতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি উন্নয়ন অংশীদারদের কোভ্যাক্স এএমসিতে তাদের অবদান এবং ভ্যাকসিন বাড়ানোর জন্যও আহ্বান জানাচ্ছি।’

তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে তার দেশ ভ্যাকসিনের সমতা নিশ্চিত করতে তার অংশটি করতে প্রস্তুত এবং গ্যাভী ও কোভ্যাক্সের সঙ্গে সর্বদা কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে কোভিড-১৯

মহামারী জনস্বাস্থ্যের জরুরি পরিস্থিতিতে কার্যকরভাবে সাড়া দিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তাকে শক্তিশালী করেছে।

তিনি বলেন, ‘কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি এই উদ্দেশে আমাদের একটি বিশ্বব্যাপী প্লাটফর্ম অফার করেছে। ভবিষ্যতের মহামারী মোকাবিলা করার জন্য আমাদের এই প্লাটফর্মটিকে প্রয়োজনীয় সংস্থান এবং দক্ষতার সঙ্গে সমর্থন করতে হবে’।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বাংলাদেশ তার লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশের বেশি জনসংখ্যাকে বিনামূল্যে টিকা দিয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, ‘গ্যাভীর সঙ্গে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব এই সাফল্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কোভ্যাক্স এএমসি প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহত সমর্থনের জন্য উন্মুখ।’

তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভ্যাকসিনকে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।

ভার্চুয়াল ইভেন্টের সহ-সভাপতি ছিলেন জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নমন্ত্রী সোভেনজা শুলজে এবং গাভি বোর্ডের চেয়ারম্যান জোসে ম্যানুয়েল বারোসো।

প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন তহবিল এবং দান করা ডোজ এখন গ্যাভী কোভ্যাক্স এএমসির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে নিম্নআয়ের দেশ এবং অঞ্চলগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে এবং ২০২১ সালের শেষের দিকে ডেলিভারি দ্রুত বৃদ্ধি করা দেশগুলোকে ভ্যাকসিনের ইক্যুইটি ব্যবধান কমাতে সাহায্য করেছে। সরবরাহের ওপর সমালোচনামূলক দীর্ঘমেয়াদী দৃশ্যমানতা— কিন্তু উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে।

উদ্বোধনী অধিবেশনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল এবং গ্যাভি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জোসে ম্যানুয়েল বারোসো বক্তব্য রাখেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন, তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. নাজলা বাউডেন এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।

শনিবার, ০৯ এপ্রিল ২০২২ , ২৬ চৈত্র ১৪২৮ ০৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা না থাকলে মহামারীর প্রভাব বাংলাদেশে ধ্বংসাত্মক হতো : প্রধানমন্ত্রী

বাসস

image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছু দেশকে, যারা এখনও টিকা দেয়ার লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে, তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের অবদান বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, কিছু দেশ এখনও তাদের টিকা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন থেকে অনেক দূরে রয়ে গেছে। এই দেশগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশেষ মনোযোগ এবং সমর্থন পাওয়ার যোগ্য।’

তিনি মনে করিয়ে দেন যে আমাদের একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা না থাকলে মহামারীর প্রভাব বাংলাদেশে ধ্বংসাত্মক হতে পারত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারীতে আমরা সংক্রমণকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি এবং এখন সংক্রমণ অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানি এবং ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গ্যাভী আয়োজিত ‘২০২২ গ্যাভী কোভ্যাক্স এএমসি সামিট: ব্রেক কোভিড নাও’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনে পূর্বধারণকৃত ভিডিও বার্তায় একথা বলেন।

গ্যাভি কোভ্যাক্স অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্ট দ্বারা সমর্থিত নিম্নআয়ের দেশগুলোর জন্য দাতা তহবিলে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ইউএস ডলারসহ কোভ্যাক্সের জন্য জরুরি আর্থিক সহায়তায় কমপক্ষে ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ইউএস ডলার সংগ্রহে সহায়তা করার লক্ষ্যে নেতা-স্তরের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

শেখ হাসিনা স্টেকহোল্ডারদের সব দেশে টিকা প্রদানে সাহায্য করতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি উন্নয়ন অংশীদারদের কোভ্যাক্স এএমসিতে তাদের অবদান এবং ভ্যাকসিন বাড়ানোর জন্যও আহ্বান জানাচ্ছি।’

তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে তার দেশ ভ্যাকসিনের সমতা নিশ্চিত করতে তার অংশটি করতে প্রস্তুত এবং গ্যাভী ও কোভ্যাক্সের সঙ্গে সর্বদা কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে কোভিড-১৯

মহামারী জনস্বাস্থ্যের জরুরি পরিস্থিতিতে কার্যকরভাবে সাড়া দিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তাকে শক্তিশালী করেছে।

তিনি বলেন, ‘কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি এই উদ্দেশে আমাদের একটি বিশ্বব্যাপী প্লাটফর্ম অফার করেছে। ভবিষ্যতের মহামারী মোকাবিলা করার জন্য আমাদের এই প্লাটফর্মটিকে প্রয়োজনীয় সংস্থান এবং দক্ষতার সঙ্গে সমর্থন করতে হবে’।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বাংলাদেশ তার লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশের বেশি জনসংখ্যাকে বিনামূল্যে টিকা দিয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, ‘গ্যাভীর সঙ্গে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব এই সাফল্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কোভ্যাক্স এএমসি প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহত সমর্থনের জন্য উন্মুখ।’

তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভ্যাকসিনকে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।

ভার্চুয়াল ইভেন্টের সহ-সভাপতি ছিলেন জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নমন্ত্রী সোভেনজা শুলজে এবং গাভি বোর্ডের চেয়ারম্যান জোসে ম্যানুয়েল বারোসো।

প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন তহবিল এবং দান করা ডোজ এখন গ্যাভী কোভ্যাক্স এএমসির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে নিম্নআয়ের দেশ এবং অঞ্চলগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে এবং ২০২১ সালের শেষের দিকে ডেলিভারি দ্রুত বৃদ্ধি করা দেশগুলোকে ভ্যাকসিনের ইক্যুইটি ব্যবধান কমাতে সাহায্য করেছে। সরবরাহের ওপর সমালোচনামূলক দীর্ঘমেয়াদী দৃশ্যমানতা— কিন্তু উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে।

উদ্বোধনী অধিবেশনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল এবং গ্যাভি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জোসে ম্যানুয়েল বারোসো বক্তব্য রাখেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন, তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. নাজলা বাউডেন এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।