পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আবদুল মোমেন বলেছেন, বিশ্বের ৭৫ মিলিয়নের বেশি অটিস্টিক মানুষ যেন তাদের প্রতিভাকে সর্বোত্তমভাবে কাজে লাগাতে পারে, সমাজে যাতে পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে তা নিশ্চিতে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল ইভেন্টে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

গতকাল জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানায়। জাতিসংঘে বাংলাদেশ, কাতার স্থায়ী মিশন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অটিজম স্পিক্সস যৌথভাবে এই ইভেন্টটির আয়োজন করে। উদ্বোধনী অংশে বক্তব্য রাখেন কাতারের সামাজিক উন্নয়ন ও পরিবারমন্ত্রী মরিয়ম বিনতে আলী বিন নাসার আল মিসনাদ, জাতিসংঘের গ্লোবাল কমিউনিকেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিজ মেলিসসা ফ্লেমিং, জাতিসংঘের ডেসার পরিচালক ড্যানিয়েলা ব্যাস এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিউইয়র্ক অফিসের পরিচালক ওয়েরনার ওবারমিয়ের। প্যানেল আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অটিজবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। প্যানেল আলোচনা ছাড়াও অটিজমের শিকার ব্যক্তির পিতামাতা ও পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব রাখা হয়।

ড. মোমেন কোভিড-১৯ অতিমারীর সময় অটিজম আক্রান্ত শিশু ও তাদের পরিবারের জন্য বিশেষ সহায়তা পদক্ষেপ গ্রহণ ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারসহ বাংলাদেশের উত্তম অনুশীলনগুলো তুলে ধরেন। অতিমারীকালে শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা বিঘিœত হওয়ার ফলে সারাবিশ্বে অটিজমের শিকার শিশুরা সামঞ্জস্যহীনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদ্যমান সামাজিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শক্তিশালী তথ্য-প্রযুক্তি অবকাঠামো এবং বিস্তৃত কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা অনেক পরিবারকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করেছে।’

ড. মোমেন আরও বলেন, ‘জাতীয় প্রচেষ্টার পাশাপাশি জাতিসংঘের উদ্যোগে ২০০৭ সালে শুরু হওয়া ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’সহ জাতিসংঘের অটিজম সংক্রান্ত

পদক্ষেপসমূহে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশ ২০১৩ সালে ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার, নিউরোডেভোলপমেন্ট ডিসঅর্ডারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিবন্ধীতার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের আর্থসামাজিক চাহিদার সমাধান করা’ শীর্ষক সাধারণ-পরিষদ রেজুলেশন-৬৭/৮২ জাতিসংঘে পেশ করে, যা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, অটিস্টিক ব্যক্তিদের সর্বোত্তম জীবনযাপনের সুযোগ করে দিতে সমাজ আরও উদারভাবে এগিয়ে আসবে যেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

এছাড়া অটিজমের শিকার ব্যক্তিসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন পেশার মানুষ ভার্চুয়াল এই ইভেন্টটিতে অংশগ্রহণ করেন।