ঘন ঘন লোডশেডিং বিপর্যস্ত জনজীবন

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সেহরি, ইফতার ও তারাবির নামাজের সময়ে লোডশেডিং হওয়ায় জনসাধারণে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রথম রোজা থেকে পর্যন্ত উপজেলার সদর, জালালপুর, লোহাজুড়ি, মসুয়া, বনগ্রাম, সহস্র্রাম ধুলদিয়া, চান্দপুর, আচমিতা, করগাও ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম মহল্লায় লোডশেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের অভিযোগ, ইফতার ও তারাবির নামাজ পর্যন্ত অনেক স্থানে বিদ্যুত থাকে না। আবার কিছু স্থানে বিদ্যুৎ এসেই চলে যায়।

বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যুতের এমন আচরণে রাতের বেলা একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন না গ্রাহকরা। শিক্ষার্থীরা রাতের বেলা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছেন না। শুধু তাই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি কল-কারখানা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা, ব্যাংকিং সেবা, শিক্ষা ও গৃহস্থালির কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুত নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য দেখা দিয়েছে চরম স্থবিরতা। সন্ধ্যার পর পরই উপজেলার প্রায় অধিকাংশ গ্রাম ও হাটবাজারে বিদ্যুৎ না থাকায় জনশূন্য হয়ে পড়ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ফ্রিজ, মোটর, কম্পিউটার, বাল্বসহ যান্ত্রিক ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে রাতে চার্জ দিতে না পারায় উপজেলার অসংখ্য ইজিবাইক চালকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দিন-রাত যে কতবার বিদ্যুত আসে যায় তা হিসেব পাওয়া যায় না। এই আছে তো এই নেই। বিদ্যুতের এমন লুকোচুরি খেলা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

কটিয়াদী সদর বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, সারাদিনে বিদ্যুত কতবার আসে যায় তার হিসেব নেই। সন্ধ্যায় বিদ্যুত না থাকাতে বাজারে মানুষই থাকে না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। আমরা এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চাই। চরঝাকালিয়া গ্রামের আনোয়ার উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন দিনে বিদ্যুৎ থাকেই না বেশিরভাগ সময় আবার তারাবি নামাজের আযান দিলেই বিদ্যুৎ চলে যায় আর আসে না একবারে মাঝরাতে আসে তাও আবার সেহরির আগে চলে যায়। বিদ্যুৎ ছিল না ভালো ছিলাম।

ফেকামারা মসজিদের মুসল্লি ওমর আলী বলেন, রাতে তারাবির নামাজে দাঁড়ালে গরমে শরীর দিয়ে ঘাম পড়ে। অথচ রমজান মাসে নিয়মিত কারেন্ট থাকার কথা কিন্তু একদিনও ঠিকমতো পেলাম না।’

পল্লী বিদ্যুত সমিতির আওতাধীন কটিয়াদী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ নাইমুল আহসান বলেন,গ্যাস সঙ্কটে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না। বিধায় আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ প্রাপ্ত না হওয়ায় সরবরাহে ঘাটতি হচ্ছে। রমজানে এমন পরিস্থিতির জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতিশ^র পাল বলেন, আমরা কটিয়াদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে অনুরোধ করেছি যেন সেহেরি ও ইফতার সময়ে বিদ্যুৎ সচল থাকে। তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন সঙ্কটের কথা জানিয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছে, সেহেরি ও ইফতার সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

রবিবার, ১০ এপ্রিল ২০২২ , ২৭ চৈত্র ১৪২৮ ০৮ রমাদ্বান ১৪৪৩

ঘন ঘন লোডশেডিং বিপর্যস্ত জনজীবন

প্রতিনিধি, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সেহরি, ইফতার ও তারাবির নামাজের সময়ে লোডশেডিং হওয়ায় জনসাধারণে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রথম রোজা থেকে পর্যন্ত উপজেলার সদর, জালালপুর, লোহাজুড়ি, মসুয়া, বনগ্রাম, সহস্র্রাম ধুলদিয়া, চান্দপুর, আচমিতা, করগাও ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম মহল্লায় লোডশেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের অভিযোগ, ইফতার ও তারাবির নামাজ পর্যন্ত অনেক স্থানে বিদ্যুত থাকে না। আবার কিছু স্থানে বিদ্যুৎ এসেই চলে যায়।

বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যুতের এমন আচরণে রাতের বেলা একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন না গ্রাহকরা। শিক্ষার্থীরা রাতের বেলা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছেন না। শুধু তাই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি কল-কারখানা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা, ব্যাংকিং সেবা, শিক্ষা ও গৃহস্থালির কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুত নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য দেখা দিয়েছে চরম স্থবিরতা। সন্ধ্যার পর পরই উপজেলার প্রায় অধিকাংশ গ্রাম ও হাটবাজারে বিদ্যুৎ না থাকায় জনশূন্য হয়ে পড়ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ফ্রিজ, মোটর, কম্পিউটার, বাল্বসহ যান্ত্রিক ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে রাতে চার্জ দিতে না পারায় উপজেলার অসংখ্য ইজিবাইক চালকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দিন-রাত যে কতবার বিদ্যুত আসে যায় তা হিসেব পাওয়া যায় না। এই আছে তো এই নেই। বিদ্যুতের এমন লুকোচুরি খেলা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

কটিয়াদী সদর বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, সারাদিনে বিদ্যুত কতবার আসে যায় তার হিসেব নেই। সন্ধ্যায় বিদ্যুত না থাকাতে বাজারে মানুষই থাকে না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। আমরা এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চাই। চরঝাকালিয়া গ্রামের আনোয়ার উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন দিনে বিদ্যুৎ থাকেই না বেশিরভাগ সময় আবার তারাবি নামাজের আযান দিলেই বিদ্যুৎ চলে যায় আর আসে না একবারে মাঝরাতে আসে তাও আবার সেহরির আগে চলে যায়। বিদ্যুৎ ছিল না ভালো ছিলাম।

ফেকামারা মসজিদের মুসল্লি ওমর আলী বলেন, রাতে তারাবির নামাজে দাঁড়ালে গরমে শরীর দিয়ে ঘাম পড়ে। অথচ রমজান মাসে নিয়মিত কারেন্ট থাকার কথা কিন্তু একদিনও ঠিকমতো পেলাম না।’

পল্লী বিদ্যুত সমিতির আওতাধীন কটিয়াদী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ নাইমুল আহসান বলেন,গ্যাস সঙ্কটে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না। বিধায় আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ প্রাপ্ত না হওয়ায় সরবরাহে ঘাটতি হচ্ছে। রমজানে এমন পরিস্থিতির জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতিশ^র পাল বলেন, আমরা কটিয়াদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে অনুরোধ করেছি যেন সেহেরি ও ইফতার সময়ে বিদ্যুৎ সচল থাকে। তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন সঙ্কটের কথা জানিয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছে, সেহেরি ও ইফতার সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।