প্রাইভেট পড়ানো নিয়ে দ্বন্দ্ব, শিক্ষকদের মধ্যে রেষারেষির জেরকে কেন্দ্র করে কেউ হয়তো শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে মামলা করিয়েছে বলে মনে করছেন মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল।
গতকাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পাবার
পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সেখানে হৃদয় মণ্ডলের স্ত্রী ববিতা হাওলাদার, তাদের দুই সন্তান, আইনজীবীসহ গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ১৯ দিন কারাবাস শেষে মুক্তি পেয়ে আবেগে আপ্লুত ছিলেন হৃদয় মণ্ডল।
হৃদয় মণ্ডল বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে মামলাটি করা হয়েছে সেটি মিথ্যা। এর পেছেনে স্কুলের নানা বিষয় জড়িত থাকতে পারে। তাছাড়া স্কুলে রেষারেষিও আছে। আমি আসলে বলতে পারছি না। তবে প্রাইভেট পড়ানো নিয়েও এই ঘটনা ঘটতে পারে। জেলে নেয়ার কী কারণ থাকতে পারে জানতে চাইলে হৃদয় মণ্ডল বলেন, হয়তো আমার নিরাপত্তার কথা ভেবেই আমাকে কারাগারে রেখেছে। এ সময় রাষ্ট্রের কাছে পরিবারের নিরাপত্তা চান এই শিক্ষক।
এমন ষড়যন্ত্রের কী কারণ থাকতে পারে প্রশ্নের জবাবে বিজ্ঞানের এই শিক্ষক বলেন, কিছু বিপথগামী পোলাপান আছে যারা লেখাপড়া করে না, তারা হয়তো বিপথগামী স্যারদের সঙ্গে মিলে এটা করেছে। আমি এই মুহূর্তে কারও নাম বলতে পারছি না। এখানে টিউশনির ব্যাপার আছে। আশপাশের অনেকেই আছে।
তিনি আরও বলেন, ওই দিন আমি ক্লাসে বিজ্ঞান পড়াচ্ছিলাম। ওরা আমাকে ধর্মীয় বিষয়ে প্রশ্ন করছিল, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। আমি এমন কোন কথা বলিনি যেটা সমস্যা হতে পারে। আমি বুঝতে পারিনি ওরা মোবাইলে রের্কড করছিল।
ছাত্রদের গণিত ও বিজ্ঞান দুটো বিষয়ই পড়াতেন হৃদয় মণ্ডল। তার ওপর প্রথম হামলা হয় বছর দুয়েক আগে, টিউশনি থেকে বাসায় ফেরার পথে। সর্বশেষ মাস দেড়েক আগেও হামলাকারীরা হৃদয়ের গায়ে ইটের টুকরো ছুড়ে মারে, ঘরে দরজায় লাথিও মারে বলে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী ববিতা হাওলাদার। তাছাড়া, প্রায়ই দরজায় লাথি মেরে ‘মণ্ডল মণ্ডল’ বলে তিরস্কার করত কে বা কারা, এখন তা আরও বেড়ে গেছে।
হৃদয় মণ্ডল বলেন, এর আগেও আমাকে ঢিল মেরেছিল। মনে হয় ছাত্ররাই। আমি দেখতে পাইনি।
গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণীর একটি অনির্ধারিত ক্লাসে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করছিলেন হৃদয় মণ্ডল। সেখানে একজন ছাত্র বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের তুলনা করে কিছু প্রশ্ন করলে সেগুলোর জবাব দেন হৃদয়। ক্লাসের এক ছাত্র ওই আলোচনা মোবাইলে রেকর্ড করে এবং তা ছড়িয়ে দেয়া। দুদিন পর কিছু ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন মিলে হৃদয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ হৃদয়কে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
ওই রাতেই স্কুলের অফিস সহকারী আসাদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা করলে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে।
সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২ , ২৮ চৈত্র ১৪২৮ ০৯ রমাদ্বান ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
প্রাইভেট পড়ানো নিয়ে দ্বন্দ্ব, শিক্ষকদের মধ্যে রেষারেষির জেরকে কেন্দ্র করে কেউ হয়তো শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে মামলা করিয়েছে বলে মনে করছেন মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল।
গতকাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পাবার
পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সেখানে হৃদয় মণ্ডলের স্ত্রী ববিতা হাওলাদার, তাদের দুই সন্তান, আইনজীবীসহ গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ১৯ দিন কারাবাস শেষে মুক্তি পেয়ে আবেগে আপ্লুত ছিলেন হৃদয় মণ্ডল।
হৃদয় মণ্ডল বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে মামলাটি করা হয়েছে সেটি মিথ্যা। এর পেছেনে স্কুলের নানা বিষয় জড়িত থাকতে পারে। তাছাড়া স্কুলে রেষারেষিও আছে। আমি আসলে বলতে পারছি না। তবে প্রাইভেট পড়ানো নিয়েও এই ঘটনা ঘটতে পারে। জেলে নেয়ার কী কারণ থাকতে পারে জানতে চাইলে হৃদয় মণ্ডল বলেন, হয়তো আমার নিরাপত্তার কথা ভেবেই আমাকে কারাগারে রেখেছে। এ সময় রাষ্ট্রের কাছে পরিবারের নিরাপত্তা চান এই শিক্ষক।
এমন ষড়যন্ত্রের কী কারণ থাকতে পারে প্রশ্নের জবাবে বিজ্ঞানের এই শিক্ষক বলেন, কিছু বিপথগামী পোলাপান আছে যারা লেখাপড়া করে না, তারা হয়তো বিপথগামী স্যারদের সঙ্গে মিলে এটা করেছে। আমি এই মুহূর্তে কারও নাম বলতে পারছি না। এখানে টিউশনির ব্যাপার আছে। আশপাশের অনেকেই আছে।
তিনি আরও বলেন, ওই দিন আমি ক্লাসে বিজ্ঞান পড়াচ্ছিলাম। ওরা আমাকে ধর্মীয় বিষয়ে প্রশ্ন করছিল, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। আমি এমন কোন কথা বলিনি যেটা সমস্যা হতে পারে। আমি বুঝতে পারিনি ওরা মোবাইলে রের্কড করছিল।
ছাত্রদের গণিত ও বিজ্ঞান দুটো বিষয়ই পড়াতেন হৃদয় মণ্ডল। তার ওপর প্রথম হামলা হয় বছর দুয়েক আগে, টিউশনি থেকে বাসায় ফেরার পথে। সর্বশেষ মাস দেড়েক আগেও হামলাকারীরা হৃদয়ের গায়ে ইটের টুকরো ছুড়ে মারে, ঘরে দরজায় লাথিও মারে বলে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী ববিতা হাওলাদার। তাছাড়া, প্রায়ই দরজায় লাথি মেরে ‘মণ্ডল মণ্ডল’ বলে তিরস্কার করত কে বা কারা, এখন তা আরও বেড়ে গেছে।
হৃদয় মণ্ডল বলেন, এর আগেও আমাকে ঢিল মেরেছিল। মনে হয় ছাত্ররাই। আমি দেখতে পাইনি।
গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণীর একটি অনির্ধারিত ক্লাসে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করছিলেন হৃদয় মণ্ডল। সেখানে একজন ছাত্র বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের তুলনা করে কিছু প্রশ্ন করলে সেগুলোর জবাব দেন হৃদয়। ক্লাসের এক ছাত্র ওই আলোচনা মোবাইলে রেকর্ড করে এবং তা ছড়িয়ে দেয়া। দুদিন পর কিছু ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন মিলে হৃদয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ হৃদয়কে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
ওই রাতেই স্কুলের অফিস সহকারী আসাদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা করলে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে।