সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাওরের বাঁধ ভেঙে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত ৩শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, দিরাই ও শাল্লা এই ৫ উপজেলার হাওরের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
উল্লেখ্য, যোগ্য হাওরগুলোর মধ্যে দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর, ধর্মপাশার চন্দ্র সোনার থাল হাওরে সাড়ে তিন হাজার হেক্টর, শাল্লার ছায়ার হাওরেরসহ জেলার ছোট বড় অন্তত ২০টি হাওরের ২০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে ৩শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে সরকারি হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত আরও অনেক কম। তাদের হিসাব মতে জেলার ১৪টি হাওরের ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ১শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর বোরো ফসল চাষাবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার ২২০ মেট্রিক টন ধান। কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর আরও জানান এ পর্যন্ত ২৬০২ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আরও কাটা হবে। আমরা নির্দেশ দিয়েছি ৮০ ভাগ ধান পাকা হলেই যেন ধান কাটা শুরু করেন।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের মতে আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের
মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই খবরে সুনামগঞ্জ জেলার হাওর পাড়ের কৃষকদের মাঝে আবার আতংক দেখা দিয়েছে। গত কদিন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। তাই হাওর পাড়ের কৃষকরা জমির কাঁচা ও আধা পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন ফসল হারানোর ভয়ে। তাদের মতে নিজে না খেতে পারলেও গবাদি পশুর খাদ্যতো যোগাড় হলো।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা পাড়া ইউনিয়নের দেখার হাওর পাড়ের আবদুল্লাহ পুরের বাসিন্দা কৃষক মঙ্গল মিয়া বলেন অনেক কষ্ট করে অন্যের কিছু জমি বর্গা চাষ করেছিলাম। আশা ছিল ধান ঘরে তোলে আগামী ঈদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুন্দরভাবে করব। কিন্ত পানি আসার আতংকে কাঁচা আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছি। একই এলাকার দড়িয়াবাজ গ্রামের কৃষক জইন উদ্দিন বলেন পানি আসার খবর শুনে তাড়াহুড়ো করে ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছি কারণ নিজে না খেতে পারলে ও গরুর বাছুড় তো খেতে পারবে।
সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২ , ২৮ চৈত্র ১৪২৮ ০৯ রমাদ্বান ১৪৪৩
লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ
সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাওরের বাঁধ ভেঙে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত ৩শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, দিরাই ও শাল্লা এই ৫ উপজেলার হাওরের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
উল্লেখ্য, যোগ্য হাওরগুলোর মধ্যে দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর, ধর্মপাশার চন্দ্র সোনার থাল হাওরে সাড়ে তিন হাজার হেক্টর, শাল্লার ছায়ার হাওরেরসহ জেলার ছোট বড় অন্তত ২০টি হাওরের ২০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে ৩শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে সরকারি হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত আরও অনেক কম। তাদের হিসাব মতে জেলার ১৪টি হাওরের ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ১শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর বোরো ফসল চাষাবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার ২২০ মেট্রিক টন ধান। কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর আরও জানান এ পর্যন্ত ২৬০২ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আরও কাটা হবে। আমরা নির্দেশ দিয়েছি ৮০ ভাগ ধান পাকা হলেই যেন ধান কাটা শুরু করেন।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের মতে আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের
মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই খবরে সুনামগঞ্জ জেলার হাওর পাড়ের কৃষকদের মাঝে আবার আতংক দেখা দিয়েছে। গত কদিন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। তাই হাওর পাড়ের কৃষকরা জমির কাঁচা ও আধা পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন ফসল হারানোর ভয়ে। তাদের মতে নিজে না খেতে পারলেও গবাদি পশুর খাদ্যতো যোগাড় হলো।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা পাড়া ইউনিয়নের দেখার হাওর পাড়ের আবদুল্লাহ পুরের বাসিন্দা কৃষক মঙ্গল মিয়া বলেন অনেক কষ্ট করে অন্যের কিছু জমি বর্গা চাষ করেছিলাম। আশা ছিল ধান ঘরে তোলে আগামী ঈদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুন্দরভাবে করব। কিন্ত পানি আসার আতংকে কাঁচা আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছি। একই এলাকার দড়িয়াবাজ গ্রামের কৃষক জইন উদ্দিন বলেন পানি আসার খবর শুনে তাড়াহুড়ো করে ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছি কারণ নিজে না খেতে পারলে ও গরুর বাছুড় তো খেতে পারবে।