নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার অনেকটাই নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শঙ্কা কিছুটা কমলেও আবারও পানি আসতে পারে এমন আশঙ্কায় আধা পাকা ধান কাটছেন কৃষকরা। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন হাওরাঞ্চলের কৃষকেরা। দ্রুত ধান কাটতে শ্রমিক ও কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা আসলেও বাজারে ধানের মূল্য কম থাকায় পুষিয়ে উঠতে পারছেন না কেউই। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মধ্য ও নি¤œবিত্ত চাষিরা। অনেকেই শুধুমাত্র গো-খাদ্য সংগ্রহ করতেই কাটছেন কাঁচা ধান ।
জানা গেছে, এক রকম ধার দেনা করেই হাওরাঞ্চলের একমাত্র ফসল বোরো ধানের আবাদ করেন মধ্য ও নিম্নœবিত্ত কৃষকেরা। হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যার শঙ্কার কথা মাথায় রেখেই একমাত্র ফসল আবাদ করেন হাওরবাসী। খালিয়াজুরীর চাকুয়া ইউনিয়নের কৃষক সুবেন্দু কান্তি, সুকুমার সরকার, খালিয়াজুরীর রসুলপুর গ্রামের সুজন মিয়া, কদ্দুস মিয়াসহ অসংখ্য কৃষকের অভিযোগ প্রতিবছরই হাওরে ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। গেল কয়েকবছর অনেকটা স্বস্তিতেই পাকা ধান ঘরে তুলেছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু এ বছর আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে হাওরের সবচেয়ে বড় নদ ধনুসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে তলিয়ে যায় নদীর তীরবর্তী কয়েকশ’ হেক্টর জমির কাঁচা ধান ও সবজির ঘের। ক্ষতিগ্রস্ত হয় খালিয়াজুরীর কীর্তনখোলা বাঁধের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। দেখা দেয় ফাটল। এমন অবস্থায় জরুরী বরাদ্দ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় কৃষকদের স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করায় সাময়কিভাবে শঙ্কা কিছুটা কমেছে।
নদ-নদীর পানি ইতোমধ্যেই কমতে শুরু করেছে। কিন্তু আবারো পানি আসার শঙ্কায় কাঁচা ধানই কাটছেন কৃষকরা। দ্রুত ধান কাটতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন। কিন্তু ধানের বাজার মূল্য নিম্নœমুখী হওয়ায় কোনভাবেই পোষাতে পারছেন না জানান, রাজশাহী থেকে আগত হারভেস্টার মেশিন মালিক পারভেজ চালক রবিউল মিয়া। তারা বলেন, আধা কাচা ধান কাটার ফলে এর চাহিদা নেই বললেই চলে। নাম মাত্র ৪ থেকে ৫শ টাকা মূল্যে প্রতিমণ ধান বিক্রি করছেন চাষিরা। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকসহ ধান কাটতে আসা শ্রমিকেরা। কোনভাবেই খরচ উঠছে না তাদের।
এদিকে পানি নেমে যাওয়ায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পাকা ফসলই ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা, জানালেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা এফ এম মোবারক আলী। তিনি জানান, পাহাড়ি ঢলে নেত্রকেনার নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হয়ে কয়েকশত হেক্টও জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। তবে এখন পানি নিম্নমুখী। বৃষ্টি না হলে ক্ষতি পুষিয়ে সম্পূর্ণ ধান কাটতে পারবেন কৃষকরা। এ বছর জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মাঝে শুধু হাওর অঞ্চলেই আবাদ হচ্ছে ৪১ হাজার ৮শ ৮১ হেক্টর। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, ইতোমধ্যে ২০ ভাগ ধান কর্তন করা হয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা।
নেত্রকোনা : নদ-নদীতে পানি বাড়ার আশংকায় আধাপাকা ধান কাটছেন কৃষক -সংবাদ
আরও খবরমঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২ , ২৯ চৈত্র ১৪২৮ ১০ রমাদ্বান ১৪৪৩
প্রতিনিধি, নেত্রকোনা
নেত্রকোনা : নদ-নদীতে পানি বাড়ার আশংকায় আধাপাকা ধান কাটছেন কৃষক -সংবাদ
নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার অনেকটাই নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শঙ্কা কিছুটা কমলেও আবারও পানি আসতে পারে এমন আশঙ্কায় আধা পাকা ধান কাটছেন কৃষকরা। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন হাওরাঞ্চলের কৃষকেরা। দ্রুত ধান কাটতে শ্রমিক ও কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা আসলেও বাজারে ধানের মূল্য কম থাকায় পুষিয়ে উঠতে পারছেন না কেউই। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মধ্য ও নি¤œবিত্ত চাষিরা। অনেকেই শুধুমাত্র গো-খাদ্য সংগ্রহ করতেই কাটছেন কাঁচা ধান ।
জানা গেছে, এক রকম ধার দেনা করেই হাওরাঞ্চলের একমাত্র ফসল বোরো ধানের আবাদ করেন মধ্য ও নিম্নœবিত্ত কৃষকেরা। হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যার শঙ্কার কথা মাথায় রেখেই একমাত্র ফসল আবাদ করেন হাওরবাসী। খালিয়াজুরীর চাকুয়া ইউনিয়নের কৃষক সুবেন্দু কান্তি, সুকুমার সরকার, খালিয়াজুরীর রসুলপুর গ্রামের সুজন মিয়া, কদ্দুস মিয়াসহ অসংখ্য কৃষকের অভিযোগ প্রতিবছরই হাওরে ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। গেল কয়েকবছর অনেকটা স্বস্তিতেই পাকা ধান ঘরে তুলেছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু এ বছর আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে হাওরের সবচেয়ে বড় নদ ধনুসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে তলিয়ে যায় নদীর তীরবর্তী কয়েকশ’ হেক্টর জমির কাঁচা ধান ও সবজির ঘের। ক্ষতিগ্রস্ত হয় খালিয়াজুরীর কীর্তনখোলা বাঁধের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। দেখা দেয় ফাটল। এমন অবস্থায় জরুরী বরাদ্দ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় কৃষকদের স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করায় সাময়কিভাবে শঙ্কা কিছুটা কমেছে।
নদ-নদীর পানি ইতোমধ্যেই কমতে শুরু করেছে। কিন্তু আবারো পানি আসার শঙ্কায় কাঁচা ধানই কাটছেন কৃষকরা। দ্রুত ধান কাটতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন। কিন্তু ধানের বাজার মূল্য নিম্নœমুখী হওয়ায় কোনভাবেই পোষাতে পারছেন না জানান, রাজশাহী থেকে আগত হারভেস্টার মেশিন মালিক পারভেজ চালক রবিউল মিয়া। তারা বলেন, আধা কাচা ধান কাটার ফলে এর চাহিদা নেই বললেই চলে। নাম মাত্র ৪ থেকে ৫শ টাকা মূল্যে প্রতিমণ ধান বিক্রি করছেন চাষিরা। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকসহ ধান কাটতে আসা শ্রমিকেরা। কোনভাবেই খরচ উঠছে না তাদের।
এদিকে পানি নেমে যাওয়ায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পাকা ফসলই ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা, জানালেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা এফ এম মোবারক আলী। তিনি জানান, পাহাড়ি ঢলে নেত্রকেনার নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হয়ে কয়েকশত হেক্টও জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। তবে এখন পানি নিম্নমুখী। বৃষ্টি না হলে ক্ষতি পুষিয়ে সম্পূর্ণ ধান কাটতে পারবেন কৃষকরা। এ বছর জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মাঝে শুধু হাওর অঞ্চলেই আবাদ হচ্ছে ৪১ হাজার ৮শ ৮১ হেক্টর। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, ইতোমধ্যে ২০ ভাগ ধান কর্তন করা হয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা।