শেরপুরের শ্রীবরদীতে পুলিশের সামনেই শেখবর আলী (৪৫) নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গত ২৩ মার্চ বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার হালুহাটি গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। তবে এ হত্যাকা-ের ভিডিওটি গত ১০ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাকির হোসেন জিকোসহ ৪-৫ জন শেখবর আলীকে রাম দা, গরু জবাই করার ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের সামনেই রাম দা, গরু

জবাই করার ছুরি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে শেখবর আলীর ওপর হামলা করে জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ অন্যরা। ঘটনার আকস্মিকতায় পুলিশ হতবিহ্বল হয়ে যায়। পরে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে তাদের প্রতিও তেড়ে আসে হত্যাকারীরা। মাত্র এক মিনিট কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পুরো হত্যাকা- এবং পুলিশের প্রতি তেড়ে আসার ঘটনা ঘটে।

এদিকে এ ঘটনায় শেখবর আলীর ছোটভাই মাহফুজ বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। ইতোমধ্যে প্রধান আসামি জিকোসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবেশী জাকির হোসেন জিকোর সঙ্গে শেখবর আলীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এরই জেরে ২২ মার্চ প্রতিপক্ষ জিকোসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শেখবর আলী। ঘটনা তদন্তে পরদিন ২৩ মার্চ ঘটনাস্থলে যান থানা পুলিশের এসআই ওয়ারেসসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তাদের সামনেই জিকোসহ ৪-৫ জন অতর্কিতে রাম দা, গরু জবাই করার ছুরি দিয়ে শেখবর আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে এ ঘটনায় জিকোর স্ত্রীসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান রাজাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। একই দিন শ্রীবরদীর বালিজুড়ি এলাকার গহীন অরণ্য থেকে মামলার প্রধান আসামি জিকোকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১৪। এ নিয়ে ওই মামলায় মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, এ ঘটনায় প্রধান আসামি জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যাকা-ে জড়িতের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে জিকো ও সাইফুল। এছাড়া এ ঘটনায় পুলিশের এসআই ওয়ারেস আলীকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।