ঢাকার যানজট নিরসনে কাজে আসছে না মেগা প্রকল্প

যত্রতত্র পার্কিং ও রাস্তায় দোকানপাটে যানজট হয়, বললেন মন্ত্রী

সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ঢাকার যানজট নিরসনে নেয়া মেগা প্রকল্পগুলো কোন কাজে আসবে না। সমস্যা সমাধানে গণপরিবহন নির্ভর পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণের পরামর্শ একজন পরিবহন বিশেষজ্ঞের। তবে যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংকে দায়ী করেছেন স্থানীয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

তার মতামত, ‘ভবিষ্যতে ঢাকাসহ উপজেলা পর্যায়ে যেন যানজট আর সৃষ্টি না হয় সেজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।’ কিন্তু যানজট নিরসনে দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। তাই ঢাকায় গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা নীতিমালা তৈরির সুপারিশ করেন বিশিষ্টজন।

গতকাল রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা)’র ‘অসহনীয় যানজট : সমাধান কী’ শীর্ষক এক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্যে পরিবহন বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল হক বলেন, ‘আমি অনেক বিনিয়োগ করতে পারি, কিন্তু রাস্তা ঠিক নাই, ভূমি ব্যবহারের কোন পথ আমরা রাখিনি। সে কারণে এসব প্রকল্পের সুফল পাচ্ছি না। সমস্যা সমাধানে গণপরিবহনের অবকাঠামো বানাতে হবে, কোনভাবেই ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য নয়। ফ্রাঞ্চাইজির আওতায় এসব বাস চালাতে হবে। আমাদের পথ খোলা আছে সফল যারা হয়েছে তাদের পথে হাঁটলে গণপরিবহনের জোর দিয়ে যদি আমরা আমাদের উন্নয়ন কাজ করি তাহলে সমাধান সম্ভব।’

যত্রতত্র পার্কিং ও রাস্তায় দোকানপাট

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে ঢাকাসহ উপজেলা পর্যায়ে যেন যানজট আর সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমরা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত হবে। তখন মাথাপিছু আয় সাড়ে ১২ হাজার ডলার হবে। মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়বে। সবার গাড়ি কেনার সামর্থ্য হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি এখন থেকে পরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট নির্মাণ না করি তাহলে উপজেলাতেও ট্রাফিক জ্যাম হতে পারে বলে আমি বলেছিলাম। এখন থেকে প্রস্তুতি না নিলে এই সমস্যা দেখা দিবেই।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর অধিকাংশ জায়গায় দেখা যায় রাস্তা দখল করে দোকানপাট বসানো হয়েছে। রাস্তার ওপরে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। যা ট্রাফিক

জ্যামের অন্যতম কারণ। যারা রাস্তার ওপরে গাড়ি রাখবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে।’

তিনি জানান, ‘ট্রাফিক জ্যাম বিশ্বের সব দেশেই আছে। অনেক দেশ কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যে প্রক্রিয়ায় ট্রাফিক জ্যাম সমাধান করেছে সেভাবে হুবহু আমাদের করা সম্ভব নয়। কারণ তাদের দেশের চিত্র আর আমাদের দেশের চিত্র এক না। সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে সবার আগে এরপর সমাধান খুঁজতে হবে। আমরাও বসে নেই। কাজ করছি। তবে ট্র্যাফিক জ্যাম নিরসন একক কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। সমন্বিতভাবে কাজ করলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব এজন্য সবার অংশগ্রহণ দরকার।’

ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের কাছে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা হস্তান্তর করা হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিটি করপোরেশন নিজেদের অর্থায়নে এয়ারপোর্ট বানিয়েছে, সাবওয়ে নির্মাণ করেছে। আমাদের দুই সিটি করপোরেশন অনেক দায়িত্ব পালন করছে। দুই মেয়রের কাজ করার অনেক আগ্রহ রয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করার সক্ষমতা আছে কি-না তা দেখতে হবে।’

রাস্তায় রাখা হয় সরকারি গাড়ি

যানজট নিরসনে দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আমাদের সরকারি সংস্থাগুলো যদি রাস্তায় গাড়ি রাখে, আপনারা পার্কিংয়ের কথা বলছেন? কাকে পার্কিংয়ে বাধা দেবেন তাহলে? সরকারের দায়িত্বটা কে নেবে এটা আমি বুঝতে পারলাম না।’

নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি চিন্তা করছিলাম এখানে এসে আমি গাড়িটা রাখবো কোথায়। আপনাদের এখানে কি পার্কিংয়ের সুবিধা আছে। মন্ত্রী সাহেব যে গাড়ি রেখে এসেছেন, তিনি কি পার্কিংয়ে রেখে এসেছেন? মন্ত্রী সাহেব তো রাস্তার ওপর গাড়ি রেখে এখানে চলে এসেছেন।’

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘মন্ত্রীর বক্তব্য আমি শুনছিলাম। তিনি বলছিলেন, করতে হবে? কিন্তু কে করবে? আমাদেরও দায়িত্ব আমরা পালন করছি না। আমরা শুধু বলে যাচ্ছি করতে হবে। কিন্তু আমরা কেউ দায়িত্ব নিচ্ছি না। এই যে আপনারা বললেন সকলে মিলে করতে হবে, এখন একটা জিনিস আমরা করতে পারি। সেটি হলো আপনারা পুলিশ দিয়ে রাস্তার উল্টাপাশ দিয়ে চলে যেতে পারেন। আমরা এটা বন্ধ করে দিব, নিজেদের গাড়ি নিয়ে রাস্তার মধ্যে ২-৩ দিন বসে থাকবো। উনারা যখন যেতে পারবে না তখন সমাধান হবে।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আপনারা শুধু বলেন-১৩ বছর ধরে আছেন। ১৩ বছর ধরে তো আমরা শুধু ধুলাবালি, এয়ারপোর্ট রোডের ওপর পাঁচ বছর ধরে একটা পিলার ফেলে রেখে দিয়েছেন। কেন পিলার ফেলে রেখেছেন এতদিন ধরে। কাজটি তো প্রপারলি করতে হবে।’

তিনি বলেন, একটা দেশের উদাহরণ দিতে পারবেন। যে একটা প্রকল্প পাঁচ বছরের শেষ করবেন। কিন্তু কন্ট্রাকটার শেষ করবে না, ইঞ্জিনিয়ার শেষ করবে না, কিন্তু তাকে উল্টা আবার টাকা দেবেন। এমন পৃথিবীর কোথায় আছে? শুধু লন্ডনের উদাহরণ দিলে হবে না। লন্ডনের তো রাস্তার ওপরে এভাবে গাড়ি রেখে দেয় না।

সচিবদের জন্য থাকবে আধুনিক বাস

অনুষ্ঠানে স্থপতি মোবাশে^র হোসেন বলেন, ‘বেইলি রোডে সচিবদের জন্য আবাসন করা হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিদিন সকালে একসঙ্গে ১১৪ জন সচিব-অতিরিক্ত সচিব গাড়ি নিয়ে বের হন। সচিবদের যদি বিশ্বমানের অত্যাধুনিক বাস বা মিনিবাসে করে সচিবালয়ে নিয়ে আসেন তাহলে এসব গাড়ি রাস্তায় বের হবে না। প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে কাজ করতে হয়।’

ডুরার সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও রাখেন ভোরের কাগজ সম্পাদ শ্যামল দত্ত, ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম ও ট্রাফিক প্ল্যানার আসাদুর রহমান মোল্লা ও ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আবুল কালাম।

মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২ , ২৯ চৈত্র ১৪২৮ ১০ রমাদ্বান ১৪৪৩

ঢাকার যানজট নিরসনে কাজে আসছে না মেগা প্রকল্প

যত্রতত্র পার্কিং ও রাস্তায় দোকানপাটে যানজট হয়, বললেন মন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

রাজধানীর সড়কে যানজট -সংবাদ

সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ঢাকার যানজট নিরসনে নেয়া মেগা প্রকল্পগুলো কোন কাজে আসবে না। সমস্যা সমাধানে গণপরিবহন নির্ভর পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণের পরামর্শ একজন পরিবহন বিশেষজ্ঞের। তবে যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংকে দায়ী করেছেন স্থানীয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

তার মতামত, ‘ভবিষ্যতে ঢাকাসহ উপজেলা পর্যায়ে যেন যানজট আর সৃষ্টি না হয় সেজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।’ কিন্তু যানজট নিরসনে দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। তাই ঢাকায় গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা নীতিমালা তৈরির সুপারিশ করেন বিশিষ্টজন।

গতকাল রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা)’র ‘অসহনীয় যানজট : সমাধান কী’ শীর্ষক এক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্যে পরিবহন বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল হক বলেন, ‘আমি অনেক বিনিয়োগ করতে পারি, কিন্তু রাস্তা ঠিক নাই, ভূমি ব্যবহারের কোন পথ আমরা রাখিনি। সে কারণে এসব প্রকল্পের সুফল পাচ্ছি না। সমস্যা সমাধানে গণপরিবহনের অবকাঠামো বানাতে হবে, কোনভাবেই ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য নয়। ফ্রাঞ্চাইজির আওতায় এসব বাস চালাতে হবে। আমাদের পথ খোলা আছে সফল যারা হয়েছে তাদের পথে হাঁটলে গণপরিবহনের জোর দিয়ে যদি আমরা আমাদের উন্নয়ন কাজ করি তাহলে সমাধান সম্ভব।’

যত্রতত্র পার্কিং ও রাস্তায় দোকানপাট

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে ঢাকাসহ উপজেলা পর্যায়ে যেন যানজট আর সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমরা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত হবে। তখন মাথাপিছু আয় সাড়ে ১২ হাজার ডলার হবে। মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়বে। সবার গাড়ি কেনার সামর্থ্য হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি এখন থেকে পরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট নির্মাণ না করি তাহলে উপজেলাতেও ট্রাফিক জ্যাম হতে পারে বলে আমি বলেছিলাম। এখন থেকে প্রস্তুতি না নিলে এই সমস্যা দেখা দিবেই।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর অধিকাংশ জায়গায় দেখা যায় রাস্তা দখল করে দোকানপাট বসানো হয়েছে। রাস্তার ওপরে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। যা ট্রাফিক

জ্যামের অন্যতম কারণ। যারা রাস্তার ওপরে গাড়ি রাখবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে।’

তিনি জানান, ‘ট্রাফিক জ্যাম বিশ্বের সব দেশেই আছে। অনেক দেশ কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যে প্রক্রিয়ায় ট্রাফিক জ্যাম সমাধান করেছে সেভাবে হুবহু আমাদের করা সম্ভব নয়। কারণ তাদের দেশের চিত্র আর আমাদের দেশের চিত্র এক না। সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে সবার আগে এরপর সমাধান খুঁজতে হবে। আমরাও বসে নেই। কাজ করছি। তবে ট্র্যাফিক জ্যাম নিরসন একক কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। সমন্বিতভাবে কাজ করলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব এজন্য সবার অংশগ্রহণ দরকার।’

ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের কাছে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা হস্তান্তর করা হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিটি করপোরেশন নিজেদের অর্থায়নে এয়ারপোর্ট বানিয়েছে, সাবওয়ে নির্মাণ করেছে। আমাদের দুই সিটি করপোরেশন অনেক দায়িত্ব পালন করছে। দুই মেয়রের কাজ করার অনেক আগ্রহ রয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করার সক্ষমতা আছে কি-না তা দেখতে হবে।’

রাস্তায় রাখা হয় সরকারি গাড়ি

যানজট নিরসনে দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আমাদের সরকারি সংস্থাগুলো যদি রাস্তায় গাড়ি রাখে, আপনারা পার্কিংয়ের কথা বলছেন? কাকে পার্কিংয়ে বাধা দেবেন তাহলে? সরকারের দায়িত্বটা কে নেবে এটা আমি বুঝতে পারলাম না।’

নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি চিন্তা করছিলাম এখানে এসে আমি গাড়িটা রাখবো কোথায়। আপনাদের এখানে কি পার্কিংয়ের সুবিধা আছে। মন্ত্রী সাহেব যে গাড়ি রেখে এসেছেন, তিনি কি পার্কিংয়ে রেখে এসেছেন? মন্ত্রী সাহেব তো রাস্তার ওপর গাড়ি রেখে এখানে চলে এসেছেন।’

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘মন্ত্রীর বক্তব্য আমি শুনছিলাম। তিনি বলছিলেন, করতে হবে? কিন্তু কে করবে? আমাদেরও দায়িত্ব আমরা পালন করছি না। আমরা শুধু বলে যাচ্ছি করতে হবে। কিন্তু আমরা কেউ দায়িত্ব নিচ্ছি না। এই যে আপনারা বললেন সকলে মিলে করতে হবে, এখন একটা জিনিস আমরা করতে পারি। সেটি হলো আপনারা পুলিশ দিয়ে রাস্তার উল্টাপাশ দিয়ে চলে যেতে পারেন। আমরা এটা বন্ধ করে দিব, নিজেদের গাড়ি নিয়ে রাস্তার মধ্যে ২-৩ দিন বসে থাকবো। উনারা যখন যেতে পারবে না তখন সমাধান হবে।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আপনারা শুধু বলেন-১৩ বছর ধরে আছেন। ১৩ বছর ধরে তো আমরা শুধু ধুলাবালি, এয়ারপোর্ট রোডের ওপর পাঁচ বছর ধরে একটা পিলার ফেলে রেখে দিয়েছেন। কেন পিলার ফেলে রেখেছেন এতদিন ধরে। কাজটি তো প্রপারলি করতে হবে।’

তিনি বলেন, একটা দেশের উদাহরণ দিতে পারবেন। যে একটা প্রকল্প পাঁচ বছরের শেষ করবেন। কিন্তু কন্ট্রাকটার শেষ করবে না, ইঞ্জিনিয়ার শেষ করবে না, কিন্তু তাকে উল্টা আবার টাকা দেবেন। এমন পৃথিবীর কোথায় আছে? শুধু লন্ডনের উদাহরণ দিলে হবে না। লন্ডনের তো রাস্তার ওপরে এভাবে গাড়ি রেখে দেয় না।

সচিবদের জন্য থাকবে আধুনিক বাস

অনুষ্ঠানে স্থপতি মোবাশে^র হোসেন বলেন, ‘বেইলি রোডে সচিবদের জন্য আবাসন করা হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিদিন সকালে একসঙ্গে ১১৪ জন সচিব-অতিরিক্ত সচিব গাড়ি নিয়ে বের হন। সচিবদের যদি বিশ্বমানের অত্যাধুনিক বাস বা মিনিবাসে করে সচিবালয়ে নিয়ে আসেন তাহলে এসব গাড়ি রাস্তায় বের হবে না। প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে কাজ করতে হয়।’

ডুরার সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও রাখেন ভোরের কাগজ সম্পাদ শ্যামল দত্ত, ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম ও ট্রাফিক প্ল্যানার আসাদুর রহমান মোল্লা ও ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আবুল কালাম।