এমসিসিআই এবং বিইএফ’র আয়োজনে

সাপ্লাই চেইনের করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন বিষয়ক সেমিনার

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এমসিসিআই এবং বাংলাদেশ অ্যামপ্লয়ার্স ফেডারেশন-বিইএফ মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে সাপ্লাই চেইনের করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশনের ওপর গতকাল একটি সেমিনার আয়োজন করে। সেমিনারের উদ্দেশ ছিল জার্মান সরকারের সাম্প্রতিক ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন বিষয়ে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে পরিচিত করানো এবং বাংলাদেশের বাস্তবায়ন।

সম্প্রতি জার্মানি করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন ইন সাপ্লাই চেইন বিষয়ে একটি আইন প্রণয়ন করেছে।

এছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাসটেইনেবল করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশনের ওপর একটি দিক নির্দেশনামূলক প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। এই জার্মান আইনটি ২০২৩ সালে কার্যকরী হবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের গাইডলাইন বা দিকনির্দেশনাটি ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ প্রস্তাবিত হয়েছিল।

এমসিসিআই সভাপতি মো. সায়ফুল ইসলাম সবাইকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। সভাপতি বলেন, ‘যেহেতু বর্তমান বিশ্ব কঠোর মানবাধিকার ডিউ ডিলিজেন্স চাহিদার দিকে যাচ্ছে, বাংলাদেশের ব্যবসাকেও সেভাবেই এর মোকাবিলা করতে হবে। ডিউ ডিলিজেন্স মেনে চলার ক্ষেত্রে ব্যবসার খরচ বাড়ার ব্যাপার আসবে। তবে এর মাঝেই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন একসঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে।’

বিইএফ-এর সভাপতি আরদাশির কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের মালিক পক্ষ শ্রমিকদের মূল্য বোঝে এবং তাদের রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মানবাধিকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করার জন্য এবং তা রক্ষায় সরকারের সাম্প্রতিক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ প্রশংসনীয়। যে দেশে ৮০ শতাংশের ওপরে মানুষ ইনফরমাল ইকোনোমিতে কাজ করে, সেক্ষেত্রে ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশনগুলো ক্রমান্বয়ে সম্পৃক্ত করলেই বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আকিম ট্রোস্টার ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন বিষয়ে জার্মান আইন এবং ইউরোপিয়ান প্রোপোজালের ওপর সংক্ষিপ্তভাবে মতামত ব্যক্ত করেন। এরপর বাংলাদেশের জিএসপি প্লাস নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। এছাড়া গ্রিভেন্স হ্যান্ডেলিং, রিপোর্টিং এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হয়। রাষ্ট্রদূত নতুন জার্মান আইনের দায়বদ্ধতা যে সরাসরি জার্মান কোম্পানির ওপরেই পড়বে, তা তুলে ধরেন। এছাড়া বাংলাদেশি সাপ্লাই চেইন মেম্বারদের কাছ থেকে জার্মান ক্রেতারা তাদের প্রয়োজন নিজেরাই জানাবেন, বলে উল্লেখ করেন।

আইএলও বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাব টুওমো পুতিআইনেন হিউম্যান রাইটস ডিউ ডিলিজেন্স বিষয়ে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি মনে করেন, ‘বাংলাদেশ ডিউ ডিলিজেন্স বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত কিন্তু এর রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড উন্নত করতে হবে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘যদিও জার্মান আইন বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে প্রয়োগ হবে না, কিন্তু এই বিষয়টি মানতে হবে। কেননা এর উপাদানগুলো জিএসপি প্লাস ইনসেনটিভের সঙ্গে গৃহীত হবে। আমি আশাবাদী, জার্মানি এই অবলিগেশনের দায়বদ্ধতা মেনে চলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।’

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহসান-ই-এলাহী বাংলাদেশের ডিউ ডিলিজেন্স স্টান্ডার্ডের উন্নয়নে সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, ‘সরকার শ্রমজীবী মানুষকে এবং মানবাধিকার রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

উক্ত অনুষ্ঠানটি এমসিসিআই এর সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট জনাব কামরান টি. রহমান কর্তৃক ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে এবং ইফতার গ্রহণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।

মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২ , ২৯ চৈত্র ১৪২৮ ১০ রমাদ্বান ১৪৪৩

এমসিসিআই এবং বিইএফ’র আয়োজনে

সাপ্লাই চেইনের করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন বিষয়ক সেমিনার

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এমসিসিআই এবং বাংলাদেশ অ্যামপ্লয়ার্স ফেডারেশন-বিইএফ মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে সাপ্লাই চেইনের করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশনের ওপর গতকাল একটি সেমিনার আয়োজন করে। সেমিনারের উদ্দেশ ছিল জার্মান সরকারের সাম্প্রতিক ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন বিষয়ে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে পরিচিত করানো এবং বাংলাদেশের বাস্তবায়ন।

সম্প্রতি জার্মানি করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন ইন সাপ্লাই চেইন বিষয়ে একটি আইন প্রণয়ন করেছে।

এছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাসটেইনেবল করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশনের ওপর একটি দিক নির্দেশনামূলক প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। এই জার্মান আইনটি ২০২৩ সালে কার্যকরী হবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের গাইডলাইন বা দিকনির্দেশনাটি ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ প্রস্তাবিত হয়েছিল।

এমসিসিআই সভাপতি মো. সায়ফুল ইসলাম সবাইকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। সভাপতি বলেন, ‘যেহেতু বর্তমান বিশ্ব কঠোর মানবাধিকার ডিউ ডিলিজেন্স চাহিদার দিকে যাচ্ছে, বাংলাদেশের ব্যবসাকেও সেভাবেই এর মোকাবিলা করতে হবে। ডিউ ডিলিজেন্স মেনে চলার ক্ষেত্রে ব্যবসার খরচ বাড়ার ব্যাপার আসবে। তবে এর মাঝেই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন একসঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে।’

বিইএফ-এর সভাপতি আরদাশির কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের মালিক পক্ষ শ্রমিকদের মূল্য বোঝে এবং তাদের রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মানবাধিকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করার জন্য এবং তা রক্ষায় সরকারের সাম্প্রতিক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ প্রশংসনীয়। যে দেশে ৮০ শতাংশের ওপরে মানুষ ইনফরমাল ইকোনোমিতে কাজ করে, সেক্ষেত্রে ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশনগুলো ক্রমান্বয়ে সম্পৃক্ত করলেই বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আকিম ট্রোস্টার ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন বিষয়ে জার্মান আইন এবং ইউরোপিয়ান প্রোপোজালের ওপর সংক্ষিপ্তভাবে মতামত ব্যক্ত করেন। এরপর বাংলাদেশের জিএসপি প্লাস নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। এছাড়া গ্রিভেন্স হ্যান্ডেলিং, রিপোর্টিং এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হয়। রাষ্ট্রদূত নতুন জার্মান আইনের দায়বদ্ধতা যে সরাসরি জার্মান কোম্পানির ওপরেই পড়বে, তা তুলে ধরেন। এছাড়া বাংলাদেশি সাপ্লাই চেইন মেম্বারদের কাছ থেকে জার্মান ক্রেতারা তাদের প্রয়োজন নিজেরাই জানাবেন, বলে উল্লেখ করেন।

আইএলও বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাব টুওমো পুতিআইনেন হিউম্যান রাইটস ডিউ ডিলিজেন্স বিষয়ে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি মনে করেন, ‘বাংলাদেশ ডিউ ডিলিজেন্স বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত কিন্তু এর রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড উন্নত করতে হবে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘যদিও জার্মান আইন বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে প্রয়োগ হবে না, কিন্তু এই বিষয়টি মানতে হবে। কেননা এর উপাদানগুলো জিএসপি প্লাস ইনসেনটিভের সঙ্গে গৃহীত হবে। আমি আশাবাদী, জার্মানি এই অবলিগেশনের দায়বদ্ধতা মেনে চলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।’

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহসান-ই-এলাহী বাংলাদেশের ডিউ ডিলিজেন্স স্টান্ডার্ডের উন্নয়নে সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, ‘সরকার শ্রমজীবী মানুষকে এবং মানবাধিকার রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

উক্ত অনুষ্ঠানটি এমসিসিআই এর সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট জনাব কামরান টি. রহমান কর্তৃক ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে এবং ইফতার গ্রহণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।