নেশা ও ঋণ পরিশোধে ফুপাকে হত্যা করে তানভীর

ঘাতক পালিয়ে ভারতে

আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়ায় ফুফু এবং ফুফাতো ভাইয়ের টাকায় চলতো সংসার তানভীর আহম্মেদের পরিবারের। ফুফাতো ভাইয়ের মাধ্যমে একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে চাকরি হলেও বেশিদিন টেকেনি চুরির দায়ে। একদিকে বেকার অন্যদিকে ঋণগ্রস্থ। হতাশা আর বেকার জীবনে জড়িয়ে পড়েন মাদকের নেশায়।

নেশা ও ঋণের টাকা জোগাতে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। আর ডাকাতির টার্গেট করে যে ফুফুর দেয়া সাহায্যে সংসার চলতো সেই ফুফুর বাড়িতেই। ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলে খুন করেন ফুফা শামছুদ্দিনকে। রাজধানীর উত্তরায় ব্যবসায়ী শামছুদ্দিন হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে এমন কারণ পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

হত্যাকা-ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মো. মুসলিম ও আবু সাফি নামের দুই যুবককে। তবে ঘটনার মূল

পরিকল্পনাকারী খুন হওয়া শামছুদ্দিনের শ্যালকের ছেলে তানভীর আহমেদসহ দু’জনকে এখনও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে তানভীর আহমেদের অবস্থান ভারতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি। হত্যকা-ের পরপরই সে ভারতে পালিয়ে যায়। তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে ডিবি।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, উত্তরায় নিজ বাসায় ব্যবসায়ী মো. শামসুদ্দিন আহমেদ (৭৫) হত্যাকা-ের ঘটনায় জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে মূল পরিকল্পনাকারী নিহত ব্যবসায়ীর শ্যালকের ছেলেকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তানভির আহমেদ ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

‘মূলত নেশার টাকা জোগাড় করতে ও পাওনাদারদের দেনা পরিশোধের জন্য আপন ফুপা শামসুদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করে তানভির আহম্মেদসহ তার দুই সহযোগী। হত্যার পর তারা স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় বলে অতিরিক্ত কমিশনার জানান।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, রাজধানীতে প্রতিনিয়ত অপরাধের ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। নিকট আত্মীয়রা বাসায় প্রায়শই আসে। ঢাকা শহরে অনেক বাসায় একজনের পরিচয়ে আরও কয়েকজন বাসায় আসে। আত্মীয়ের সঙ্গে অপরিচিত কেউ বাসায় এলে সবাই সাবধানে থাকবেন। প্রতিটি পরিবারের সচেতন থাকা উচিত। নিজের সন্তান কি করছে খোঁজ নেয়া উচিত।

গত ১৫ মার্চ দুপুরে রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে ৮০ নম্বর বাড়ির পাঁচতলায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় শামছুদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ীকে। রক্তাক্ত অবস্থায় শামসুদ্দিনকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তানভীর আহমেদসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। মামলার পর পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে। ডিবির উত্তরা বিভাগের উপ কমিশনার কাজী শফিকুল আলমের তত্বাবধায়নে এডিসি বদরুজ্জামান জিল্লুর নেতৃত্বাধীন টিম অভিযান চালিয়ে হত্যাকা-ে জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মো. মুসলিম (২০), ও মো. আবু সাফি (২৫)। গ্রেপ্তার ২ জনের কাছ থেকে একটি শাটার গান, ৪ রাউন্ড গুলি, লুণ্ঠিত অলঙ্কার ও নগদ ৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২ , ২৯ চৈত্র ১৪২৮ ১০ রমাদ্বান ১৪৪৩

নেশা ও ঋণ পরিশোধে ফুপাকে হত্যা করে তানভীর

ঘাতক পালিয়ে ভারতে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়ায় ফুফু এবং ফুফাতো ভাইয়ের টাকায় চলতো সংসার তানভীর আহম্মেদের পরিবারের। ফুফাতো ভাইয়ের মাধ্যমে একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে চাকরি হলেও বেশিদিন টেকেনি চুরির দায়ে। একদিকে বেকার অন্যদিকে ঋণগ্রস্থ। হতাশা আর বেকার জীবনে জড়িয়ে পড়েন মাদকের নেশায়।

নেশা ও ঋণের টাকা জোগাতে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। আর ডাকাতির টার্গেট করে যে ফুফুর দেয়া সাহায্যে সংসার চলতো সেই ফুফুর বাড়িতেই। ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলে খুন করেন ফুফা শামছুদ্দিনকে। রাজধানীর উত্তরায় ব্যবসায়ী শামছুদ্দিন হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে এমন কারণ পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

হত্যাকা-ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মো. মুসলিম ও আবু সাফি নামের দুই যুবককে। তবে ঘটনার মূল

পরিকল্পনাকারী খুন হওয়া শামছুদ্দিনের শ্যালকের ছেলে তানভীর আহমেদসহ দু’জনকে এখনও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে তানভীর আহমেদের অবস্থান ভারতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি। হত্যকা-ের পরপরই সে ভারতে পালিয়ে যায়। তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে ডিবি।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, উত্তরায় নিজ বাসায় ব্যবসায়ী মো. শামসুদ্দিন আহমেদ (৭৫) হত্যাকা-ের ঘটনায় জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে মূল পরিকল্পনাকারী নিহত ব্যবসায়ীর শ্যালকের ছেলেকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তানভির আহমেদ ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

‘মূলত নেশার টাকা জোগাড় করতে ও পাওনাদারদের দেনা পরিশোধের জন্য আপন ফুপা শামসুদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করে তানভির আহম্মেদসহ তার দুই সহযোগী। হত্যার পর তারা স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় বলে অতিরিক্ত কমিশনার জানান।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, রাজধানীতে প্রতিনিয়ত অপরাধের ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। নিকট আত্মীয়রা বাসায় প্রায়শই আসে। ঢাকা শহরে অনেক বাসায় একজনের পরিচয়ে আরও কয়েকজন বাসায় আসে। আত্মীয়ের সঙ্গে অপরিচিত কেউ বাসায় এলে সবাই সাবধানে থাকবেন। প্রতিটি পরিবারের সচেতন থাকা উচিত। নিজের সন্তান কি করছে খোঁজ নেয়া উচিত।

গত ১৫ মার্চ দুপুরে রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে ৮০ নম্বর বাড়ির পাঁচতলায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় শামছুদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ীকে। রক্তাক্ত অবস্থায় শামসুদ্দিনকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তানভীর আহমেদসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। মামলার পর পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে। ডিবির উত্তরা বিভাগের উপ কমিশনার কাজী শফিকুল আলমের তত্বাবধায়নে এডিসি বদরুজ্জামান জিল্লুর নেতৃত্বাধীন টিম অভিযান চালিয়ে হত্যাকা-ে জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মো. মুসলিম (২০), ও মো. আবু সাফি (২৫)। গ্রেপ্তার ২ জনের কাছ থেকে একটি শাটার গান, ৪ রাউন্ড গুলি, লুণ্ঠিত অলঙ্কার ও নগদ ৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।