সার সংকট নেই দেশে : কৃষিমন্ত্রী

দেশে এই মুহূর্তে সারের কোন সংকট নেই বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতি বছর ২৬ লাখ টন ইউরিয়া প্রয়োজন, টিএসপি সাড়ে ৭ লাখ টন, ডিএপিপি সাড়ে ১৬ লাখ টন, এমওপি সাড়ে ৭ লাখ টন লাগে। আজ পর্যন্ত আমাদের মজুদে কোন সমস্যা হয়নি।’

সরকার বন্যায় হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেবে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে সরকার। আউশ মৌসুমে এ প্রণোদনা দেয়ার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।’

গতকাল সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সারবিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। এ সময় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, কৃষিমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, কমিটির সদস্য ও জাতীয় সংসদ সদস্য জহিরুল ইসলাম, কৃষি সচিব মো. সাইদুল ইসলাম ও শিল্প মন্ত্রণালয় সচিব, সার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা আজকে দীর্ঘক্ষণ পর্যালোচনা করেছি সার নিয়ে। আমাদের এ মুহূর্তে সারের কোন সংকট নেই। আমাদের প্রতি বছর ২৬ লাখ টন ইউরিয়া সার প্রয়োজন। টিএসপি সাড়ে ৭ লাখ টন, ডিএপি সাড়ে ১৬ লাখ টন, এমওপি সাড়ে ৭ লাখ টন লাগে। আজ পর্যন্ত আমাদের মজুদে কোন সমস্যা হয়নি।

এ পর্যন্ত টিএসপি, এমওপি ও ডিএপির মজুদ আগের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি আছে। ইউরিয়া যেটুকু প্রয়োজন সেটাই আছে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বছরই অর্থবছরের শেষে আমরা আগামী অর্থবছরের জন্য কী পরিমাণ সার প্রয়োজন সেটি নির্ধারণ করি। এই বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য কী ধরনের নীতি বা কৌশল নেব। যাতে করে কৃষি উৎপাদন কোনভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়। সার নিয়ে আমাদের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। সার না পেয়ে ১৯৯৫ সালে ১৮ জন কৃষককে জীবন দিতে হয়েছে। তারা কোন সাহায্য চাননি, তারা শুধু ন্যায্যমূল্যে সার চেয়েছিলেন এজন্য তাদের রক্ত দিতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এরপর ২০০৩,৪,৫সহ প্রায় প্রতি বছর সারের সংকট হয়েছে। ডিলারদের কারসাজিসহ সব কিছুর মধ্যেই ত্রুটি ছিল। ফলে সার সংগ্রহ ও বিতরণে চরম অব্যবস্থাপনা ছিল। তবে বর্তমান সরকার তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনা করছে। খাদ্য নিরাপত্তা আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের অর্থনীতির তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে একটি হলো কৃষি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষির গুরুত্ব অতীতেও ছিল, আগামীতেও থাকবে। দেশের প্রায় ৭০ ভাগ মানুষের জীবিকা কোন না কোনভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। এজন্য সারের বিষয়টি অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে নির্দেশ দিয়েছেন সার ব্যবস্থাপনা যাতে কোন সমস্যা না হয়।’

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারী ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের বিভিন্ন উপকরণ ও কাঁচামাল শিপিং নিয়ে অনেক সংকট তৈরি হয়েছে। তাই বলা হচ্ছে সারাবিশ্বে খাদ্য ঘাটতির সমস্যা দেখা দেবে। কানাডার মতো দেশে মানুষ লাইন ধরে রুটি কিনছে, কাউকে ৫ লিটারের বেশি ভোজ্যতেল দেয় না। এই পরিস্থিতিতে আজকের সভাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কৃষির উৎপাদন আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে, কোনক্রমেই আমরা বিদেশের ওপর নির্ভরশীল না হই।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আজকে দীর্ঘক্ষণ পর্যালোচনা করেছি সার নিয়ে। এ পর্যন্ত মজুদ অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে টিএসপি, এমওপি ও ডিএপিপি বেশি আছে। ইউরিয়া যেটুকু দরকার সেটাই আছে। তবে সামনে কী হবে সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই সারের দাম বাড়লেও বাংলাদেশে সারের দাম বাড়েনি। আজকে আমরা সংগ্রহের পরিমাণ সমান রেখে দাম ঠিক রেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এটাই মূল কথা। ৩০ হাজার কোটি টাকা সার সংগ্রহ করতে এ বছর দিতে হবে। আগামী বছর পরিস্থিতি কী হবে আমি জানি না।’

আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, ‘কৃষির উৎপাদন আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে, কোনক্রমেই যেন আমরা বিদেশের ওপর নির্ভরশীল না হই।’

আরও খবর
বৈদেশিক ঋণ, বর্তমান অবস্থান ধরে রাখতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর
বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান বাহিনীর ওপর হামলা-সংঘর্ষ
‘নব আনন্দে জাগো’, ফের বটতলায় ছায়ানট
বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর তথ্যে এবার বর্ষবরণে বিশেষ নিরাপত্তা
আগামী বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা ও কৃষি খাতকে গুরুত্ব দেয়ার সুপারিশ সিপিডির
নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা ও বিধানসভা উপনির্বাচন
মৌলভীবাজারের ৩ রাজাকারের রায় যেকোন দিন
করোনা চিকিৎসায় ২২ দশমিক ২ শতাংশ সেবাগ্রহীতা দুর্নীতির শিকার : সিপিডি
পাহাড়ে নদীতে ফুল ভাসিয়ে বৈসাবি উৎসব
শত কোটি টাকা আত্মসাৎ জামান নামে প্রতারক গ্রেপ্তার

বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২ , ৩০ চৈত্র ১৪২৮ ১১ রমাদ্বান ১৪৪৩

সার সংকট নেই দেশে : কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দেশে এই মুহূর্তে সারের কোন সংকট নেই বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতি বছর ২৬ লাখ টন ইউরিয়া প্রয়োজন, টিএসপি সাড়ে ৭ লাখ টন, ডিএপিপি সাড়ে ১৬ লাখ টন, এমওপি সাড়ে ৭ লাখ টন লাগে। আজ পর্যন্ত আমাদের মজুদে কোন সমস্যা হয়নি।’

সরকার বন্যায় হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেবে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে সরকার। আউশ মৌসুমে এ প্রণোদনা দেয়ার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।’

গতকাল সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সারবিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। এ সময় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, কৃষিমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, কমিটির সদস্য ও জাতীয় সংসদ সদস্য জহিরুল ইসলাম, কৃষি সচিব মো. সাইদুল ইসলাম ও শিল্প মন্ত্রণালয় সচিব, সার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা আজকে দীর্ঘক্ষণ পর্যালোচনা করেছি সার নিয়ে। আমাদের এ মুহূর্তে সারের কোন সংকট নেই। আমাদের প্রতি বছর ২৬ লাখ টন ইউরিয়া সার প্রয়োজন। টিএসপি সাড়ে ৭ লাখ টন, ডিএপি সাড়ে ১৬ লাখ টন, এমওপি সাড়ে ৭ লাখ টন লাগে। আজ পর্যন্ত আমাদের মজুদে কোন সমস্যা হয়নি।

এ পর্যন্ত টিএসপি, এমওপি ও ডিএপির মজুদ আগের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি আছে। ইউরিয়া যেটুকু প্রয়োজন সেটাই আছে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বছরই অর্থবছরের শেষে আমরা আগামী অর্থবছরের জন্য কী পরিমাণ সার প্রয়োজন সেটি নির্ধারণ করি। এই বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য কী ধরনের নীতি বা কৌশল নেব। যাতে করে কৃষি উৎপাদন কোনভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়। সার নিয়ে আমাদের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। সার না পেয়ে ১৯৯৫ সালে ১৮ জন কৃষককে জীবন দিতে হয়েছে। তারা কোন সাহায্য চাননি, তারা শুধু ন্যায্যমূল্যে সার চেয়েছিলেন এজন্য তাদের রক্ত দিতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এরপর ২০০৩,৪,৫সহ প্রায় প্রতি বছর সারের সংকট হয়েছে। ডিলারদের কারসাজিসহ সব কিছুর মধ্যেই ত্রুটি ছিল। ফলে সার সংগ্রহ ও বিতরণে চরম অব্যবস্থাপনা ছিল। তবে বর্তমান সরকার তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনা করছে। খাদ্য নিরাপত্তা আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের অর্থনীতির তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে একটি হলো কৃষি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষির গুরুত্ব অতীতেও ছিল, আগামীতেও থাকবে। দেশের প্রায় ৭০ ভাগ মানুষের জীবিকা কোন না কোনভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। এজন্য সারের বিষয়টি অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে নির্দেশ দিয়েছেন সার ব্যবস্থাপনা যাতে কোন সমস্যা না হয়।’

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারী ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের বিভিন্ন উপকরণ ও কাঁচামাল শিপিং নিয়ে অনেক সংকট তৈরি হয়েছে। তাই বলা হচ্ছে সারাবিশ্বে খাদ্য ঘাটতির সমস্যা দেখা দেবে। কানাডার মতো দেশে মানুষ লাইন ধরে রুটি কিনছে, কাউকে ৫ লিটারের বেশি ভোজ্যতেল দেয় না। এই পরিস্থিতিতে আজকের সভাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কৃষির উৎপাদন আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে, কোনক্রমেই আমরা বিদেশের ওপর নির্ভরশীল না হই।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আজকে দীর্ঘক্ষণ পর্যালোচনা করেছি সার নিয়ে। এ পর্যন্ত মজুদ অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে টিএসপি, এমওপি ও ডিএপিপি বেশি আছে। ইউরিয়া যেটুকু দরকার সেটাই আছে। তবে সামনে কী হবে সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই সারের দাম বাড়লেও বাংলাদেশে সারের দাম বাড়েনি। আজকে আমরা সংগ্রহের পরিমাণ সমান রেখে দাম ঠিক রেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এটাই মূল কথা। ৩০ হাজার কোটি টাকা সার সংগ্রহ করতে এ বছর দিতে হবে। আগামী বছর পরিস্থিতি কী হবে আমি জানি না।’

আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, ‘কৃষির উৎপাদন আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে, কোনক্রমেই যেন আমরা বিদেশের ওপর নির্ভরশীল না হই।’