নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা ও বিধানসভা উপনির্বাচন

আসানসোলের বারাবনিতে অগ্নিমিত্রার গাড়িতে হামলা! বালিগঞ্জে সাউথ পয়েন্ট বাবুলকে ঢুকতে বাধা, কোম্পানির পর কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী দিয়ে উপনির্বাচন করানো হলেও আসানসোল এবং বালিগঞ্জে বিতর্ক এড়ানো গেল না। সকাল থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ, সাংবাদিকদের গাড়ি ভাঙচুর, ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট বসতে না দেয়া, রিগিং, জালভোট দেয়া, ভোটারদের ভোটার কার্ড ছিনিয়ে ভোটদানে বাধাসহ দিনভর বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় উপনির্বাচন।

আসানসোলে বেশি ঝামেলার খবর পাওয়া গেছে. এদিন সকাল থেকে আসানসোলের বারাবনিতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেখানে বিজেপি পোলিং এজেন্টদের বুথে বসতে না দেয়ার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। এই নিয়ে সকাল থেকেই বেশ কয়েকবার পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়াতে দেখা গেছে বিজেপি লোকসভা প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালকে। অভিযোগ করেন, বুথের মধ্যে রাজ্য পুলিশের লোক কেন থাকবে? এর পরই বারাবনি ভোটকেন্দ্র ঘিরে বিক্ষোভ করে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। এ সময় সংঘর্ষে জড়ায় দু’দলই। বিজেপি প্রার্থীর গাড়িতে হামলা করার কথা জানিয়ে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, আমার নিরাপত্তারক্ষীকেও মারধর করা হয়। বারাবনির ১৭৫ নম্বর বুথে বাঁশ নিয়ে হামলা করা হয়। তাকে ধাক্কা দেয়া হয়। তার নিরাপত্তারক্ষীরা কোন ক্রমে তার গাড়ি বের করে নিয়ে যান। পিছন থেকে তৃণমূল কর্মী হিসেবে দাবি করা বেশ কয়েকজন ইট ছোড়েন। তাদের অভিযোগ, অগ্নিমিত্রা পাল গুন্ডা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভোটকেন্দ্রে। অন্যদিকে কলকাতার বালিগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়কে কেন্দ্রীয় বাহিনী সাউথ পয়েন্ট স্কুলের বুথে ঢুকতে দেয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। এদিন সকালে বালিগঞ্জের পাঠভবন এবং সাউথ পয়েন্ট স্কুলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পাঠভবন স্কুলের ভেতরে কেন কলকাতার পুলিশের কর্মীরা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষ। মডার্ন হাইস্কুলেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই উভয় ঘটনাতেই রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব ঘটনায় অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।

অন্যদিকে, লাউদোহার কাছে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির গাড়ি আটকানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর তাকে ছাড়া হয়।

দুপুরের পর বালিগঞ্জের বেশ কয়েকটি জায়গায় ফের গ-গোলের ছবি দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বুথে ছাপ্পাভোটের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়াতে দেখা গেছে বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষকে। এক মহিলা ভুয়া ভোটারকে ধরার দাবি করেন বাম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। ক্যামেরা দেখতেই ছুটে পালান ওই মহিলা। এদিকে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে সায়রার গাড়িতে হামলারও অভিযোগ উঠেছে।

উল্লেখ্য, তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত মুখার্জির প্রয়াণের ফলে বালিগঞ্জ বিধানসভার আসনটি বিধায়ক শূন্য হয়ে পড়ে এবং আসানসোল লোকসভার সাবেক সংসদ সদস্য বাবুল সুপ্রিয় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয়ার ফলে এই আসনটিও শূন্য হয়ে যায়। ফলে এই দুই কেন্দ্রে ফের উপনির্বাচন হলো।

বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২ , ৩০ চৈত্র ১৪২৮ ১১ রমাদ্বান ১৪৪৩

নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা ও বিধানসভা উপনির্বাচন

দীপক মুখার্জী, কলকাতা

আসানসোলের বারাবনিতে অগ্নিমিত্রার গাড়িতে হামলা! বালিগঞ্জে সাউথ পয়েন্ট বাবুলকে ঢুকতে বাধা, কোম্পানির পর কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী দিয়ে উপনির্বাচন করানো হলেও আসানসোল এবং বালিগঞ্জে বিতর্ক এড়ানো গেল না। সকাল থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ, সাংবাদিকদের গাড়ি ভাঙচুর, ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট বসতে না দেয়া, রিগিং, জালভোট দেয়া, ভোটারদের ভোটার কার্ড ছিনিয়ে ভোটদানে বাধাসহ দিনভর বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় উপনির্বাচন।

আসানসোলে বেশি ঝামেলার খবর পাওয়া গেছে. এদিন সকাল থেকে আসানসোলের বারাবনিতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেখানে বিজেপি পোলিং এজেন্টদের বুথে বসতে না দেয়ার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। এই নিয়ে সকাল থেকেই বেশ কয়েকবার পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়াতে দেখা গেছে বিজেপি লোকসভা প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালকে। অভিযোগ করেন, বুথের মধ্যে রাজ্য পুলিশের লোক কেন থাকবে? এর পরই বারাবনি ভোটকেন্দ্র ঘিরে বিক্ষোভ করে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। এ সময় সংঘর্ষে জড়ায় দু’দলই। বিজেপি প্রার্থীর গাড়িতে হামলা করার কথা জানিয়ে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, আমার নিরাপত্তারক্ষীকেও মারধর করা হয়। বারাবনির ১৭৫ নম্বর বুথে বাঁশ নিয়ে হামলা করা হয়। তাকে ধাক্কা দেয়া হয়। তার নিরাপত্তারক্ষীরা কোন ক্রমে তার গাড়ি বের করে নিয়ে যান। পিছন থেকে তৃণমূল কর্মী হিসেবে দাবি করা বেশ কয়েকজন ইট ছোড়েন। তাদের অভিযোগ, অগ্নিমিত্রা পাল গুন্ডা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভোটকেন্দ্রে। অন্যদিকে কলকাতার বালিগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়কে কেন্দ্রীয় বাহিনী সাউথ পয়েন্ট স্কুলের বুথে ঢুকতে দেয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। এদিন সকালে বালিগঞ্জের পাঠভবন এবং সাউথ পয়েন্ট স্কুলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পাঠভবন স্কুলের ভেতরে কেন কলকাতার পুলিশের কর্মীরা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষ। মডার্ন হাইস্কুলেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই উভয় ঘটনাতেই রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব ঘটনায় অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।

অন্যদিকে, লাউদোহার কাছে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির গাড়ি আটকানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর তাকে ছাড়া হয়।

দুপুরের পর বালিগঞ্জের বেশ কয়েকটি জায়গায় ফের গ-গোলের ছবি দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি বুথে ছাপ্পাভোটের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়াতে দেখা গেছে বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষকে। এক মহিলা ভুয়া ভোটারকে ধরার দাবি করেন বাম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। ক্যামেরা দেখতেই ছুটে পালান ওই মহিলা। এদিকে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে সায়রার গাড়িতে হামলারও অভিযোগ উঠেছে।

উল্লেখ্য, তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত মুখার্জির প্রয়াণের ফলে বালিগঞ্জ বিধানসভার আসনটি বিধায়ক শূন্য হয়ে পড়ে এবং আসানসোল লোকসভার সাবেক সংসদ সদস্য বাবুল সুপ্রিয় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয়ার ফলে এই আসনটিও শূন্য হয়ে যায়। ফলে এই দুই কেন্দ্রে ফের উপনির্বাচন হলো।