গৌরীপুর স্টেশনে ট্রেন থামে এক কিমি. দূরে!

স্টেশন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়েছে একটি ট্রেন! মোহনগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ৪৪নং মহুয়া কমিউটার ট্রেনটি গৌরীপুর জংশনে ঢুকতে পারেনি । এ নিয়ে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গৌরীপুর জংশনে ৬টি রেললাইনের মধ্যে মাত্র ৩টি লাইন সচল রয়েছে। ৩নং লাইনে দাঁড়িয়ে আছে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস। এ ট্রেনের ইঞ্জিন পরিবর্তনের জন্য ২নং লাইনটি তখন ব্যস্ত ছিল। আর ১নং লাইনে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা জারিয়াগামী ট্রেনটি দাঁড়ানো ছিল। ফলে স্টেশনে মহুয়া কমিউটার ট্রেনটি প্রবেশ করার মতো কোন লাইনে ঠাঁই নেই।

মোহনগঞ্জের আনোয়ার হোসেন জানান, ট্রেনটি প্রায় ১৫-১৭ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল আউটার সিগন্যালের বাহিরে। সিগন্যাল না দেয়ায় ট্রেনটি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। পূর্বভালুকার জয়নাল আবেদিন জানান, শুধু আজ নয়, প্রতিদিন এ সময় নয়, সকালেও ট্রেন আউটার সিগন্যালের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকে। মহুয়া কমিউটার ট্রেনের এটেনডেন্ট সোহেল মিয়া জানান, ট্রেনটি ৭-৮ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল।

গৌরীপুর জংশনের কেবিনের স্টেশন মাস্টার আতাউল করিম জানান, বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে আন্তঃনগর বিজয় স্টেশনে প্রবেশ করে। ইঞ্জিন পরিবর্তন করে ট্রেনটি ছেড়ে যায় ৫টা ৫ মিনিটে। যে কারণে ৩নং ও ২নং লাইন তখন ব্যস্ত ছিল। জারিয়াগামী লোকাল ট্রেনটি প্রবেশ করে ৫টায়, ছেড়ে যায় ৫টা ৭ মিনিটে। সে কারণে ১নং লাইন ব্যস্ত ছিল। ফলে লাইন ফাকা না থাকায় ৪৪নং মহুয়া কমিউটার ট্রেনটিকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া সম্ভব হয়নি। এ ট্রেনটি প্রবেশ করে ৫টা ২ মিনিটে। গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম মিন্টু জানান, আউটার সিগন্যালের বাহিরে দাঁড়ানো যাত্রীদের নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েন। রাতে এ সমস্যা থেকে বড় বিপদও হতে পারে। দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।

অপরদিকে প্রায় ৫ বছর পূর্বে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের ভিতরের দু’রেল লাইন সংস্কার ও মেরামত করা হয়। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয় হয়। সংস্কারের পরের রেলওয়ে জংশনের ভেতরে ৪নং, ৫নং দু’রেলপথ কোন কাজে আসছে না। আজও অচলাবস্থায় পড়ে রয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীপনা দপ্তরে দপ্তরে দায়িত্ব বণ্টনের কারণেই এ দুটি রেলপথ সচল হচ্ছে না বলে রেলওয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে।

গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার অখিল চন্দ্র দাস জানান, স্টেশনের ভিতরে লাইন ফাঁকা ছিল না। বিজয়ের ইঞ্জিনটা ঘুরিয়ে তারপর ৪৪নং মহুয়া কমিউটার ট্রেনটিকে প্রবেশ করানো হয়েছে। একসঙ্গে ট্রেনের আগমনের কারণে এমনটা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২২ , ০১ বৈশাখ ১৪২৮ ১২ রমাদ্বান ১৪৪৩

গৌরীপুর স্টেশনে ট্রেন থামে এক কিমি. দূরে!

প্রতিনিধি, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)

image

স্টেশন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়েছে একটি ট্রেন! মোহনগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ৪৪নং মহুয়া কমিউটার ট্রেনটি গৌরীপুর জংশনে ঢুকতে পারেনি । এ নিয়ে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গৌরীপুর জংশনে ৬টি রেললাইনের মধ্যে মাত্র ৩টি লাইন সচল রয়েছে। ৩নং লাইনে দাঁড়িয়ে আছে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস। এ ট্রেনের ইঞ্জিন পরিবর্তনের জন্য ২নং লাইনটি তখন ব্যস্ত ছিল। আর ১নং লাইনে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা জারিয়াগামী ট্রেনটি দাঁড়ানো ছিল। ফলে স্টেশনে মহুয়া কমিউটার ট্রেনটি প্রবেশ করার মতো কোন লাইনে ঠাঁই নেই।

মোহনগঞ্জের আনোয়ার হোসেন জানান, ট্রেনটি প্রায় ১৫-১৭ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল আউটার সিগন্যালের বাহিরে। সিগন্যাল না দেয়ায় ট্রেনটি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। পূর্বভালুকার জয়নাল আবেদিন জানান, শুধু আজ নয়, প্রতিদিন এ সময় নয়, সকালেও ট্রেন আউটার সিগন্যালের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকে। মহুয়া কমিউটার ট্রেনের এটেনডেন্ট সোহেল মিয়া জানান, ট্রেনটি ৭-৮ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল।

গৌরীপুর জংশনের কেবিনের স্টেশন মাস্টার আতাউল করিম জানান, বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে আন্তঃনগর বিজয় স্টেশনে প্রবেশ করে। ইঞ্জিন পরিবর্তন করে ট্রেনটি ছেড়ে যায় ৫টা ৫ মিনিটে। যে কারণে ৩নং ও ২নং লাইন তখন ব্যস্ত ছিল। জারিয়াগামী লোকাল ট্রেনটি প্রবেশ করে ৫টায়, ছেড়ে যায় ৫টা ৭ মিনিটে। সে কারণে ১নং লাইন ব্যস্ত ছিল। ফলে লাইন ফাকা না থাকায় ৪৪নং মহুয়া কমিউটার ট্রেনটিকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া সম্ভব হয়নি। এ ট্রেনটি প্রবেশ করে ৫টা ২ মিনিটে। গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম মিন্টু জানান, আউটার সিগন্যালের বাহিরে দাঁড়ানো যাত্রীদের নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েন। রাতে এ সমস্যা থেকে বড় বিপদও হতে পারে। দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।

অপরদিকে প্রায় ৫ বছর পূর্বে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের ভিতরের দু’রেল লাইন সংস্কার ও মেরামত করা হয়। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয় হয়। সংস্কারের পরের রেলওয়ে জংশনের ভেতরে ৪নং, ৫নং দু’রেলপথ কোন কাজে আসছে না। আজও অচলাবস্থায় পড়ে রয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীপনা দপ্তরে দপ্তরে দায়িত্ব বণ্টনের কারণেই এ দুটি রেলপথ সচল হচ্ছে না বলে রেলওয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে।

গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার অখিল চন্দ্র দাস জানান, স্টেশনের ভিতরে লাইন ফাঁকা ছিল না। বিজয়ের ইঞ্জিনটা ঘুরিয়ে তারপর ৪৪নং মহুয়া কমিউটার ট্রেনটিকে প্রবেশ করানো হয়েছে। একসঙ্গে ট্রেনের আগমনের কারণে এমনটা হয়েছে।