বাংলাদেশে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির অগ্রদূত হতে যাচ্ছে রানার

টেকসই ও পরিবেশবান্ধব যানবাহনের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেড। এবার প্রতিষ্ঠানটি দেশের বাজারে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি আনতে এটুআইয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে থ্রি হুইলার গাড়ি বাজারে আনতে যাচ্ছে। এরপর এই ইঞ্জিনচালিত গাড়ির বদলে বিদ্যুৎচালিত থ্রি হুইলার বাজারে আনবে। এতে বাংলাদেশকে আর বিদেশ থেকে সিএসজি আমদানি করতে হবে না। পরে ধাপে ধাপে সাশ্রয়ী মূল্যের টেকসই বিদ্যুৎচালিত দুই চাকা ও চার চাকার গাড়ি আসবে।

এ প্রসঙ্গে রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ‘শীঘ্রই আমরা দেশে ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল তৈরি করার সব কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবো। এটি উৎপাদিত হলে প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণ রক্ষায় অবদান রাখতে পারবে। দেশের জন্য এটি হবে একটি মাইলফলক।’

এই যানবাহন উৎপাদিত হলে প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণ রক্ষায় রানার গ্রুপ বড় অবদান রাখতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সম্প্রতি ভালুকায় অবস্থিত বাংলাদেশের প্রথম মোটরসাইকেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেডের টু-হুইলার ও নির্মাণাধীন থ্রি-হুইলার ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট ও ইলেকট্রিক ভেহিক্যালের আরএন্ডডি ফেসিলিটি পরিদর্শনকালে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন গ্রাম হবে শহর। সরকারের পাশাপাশি একই লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে বাংলাদেশের একমাত্র এবং প্রথম সম্পূর্ণ মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেড। বাংলাদেশের সব রাস্তা, হাইওয়ে, জেলা পর্যায়, গ্রাম পর্যায়ের রাস্তার ৭০ শতাংশের বেশি রুরাল ট্রান্সপোর্টেশন। এই ট্রান্সপোর্টেশন এবং রুরাল রোডের ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতির সিংহভাগ নির্ভরশীল। বাংলাদেশের চলমান অর্থনীতির গতিকে উন্নত করার লক্ষ্যে রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেড বিভিন্নভাবে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে এবং একই লক্ষ্যে রুরাল ট্রান্সপোর্টেশনের উন্নয়নে ইলেট্রিক ভেহিক্যাল (ইভি) তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে।’

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০৪১-এর স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে প্রযুক্তি খাত অনেক দূর এগিয়ে গেছে এবং এই যাত্রায় রানার গ্রুপের মতো বেসরকারি খাতগুলোর অবদান অনস্বীকার্য। আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প যেমন-এটুআই, স্টার্ট-আপ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে একত্রিত করে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’

এই প্রক্রিয়ার অধীনে এটুআই আই-ল্যাব এবং রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেড যৌথভাবে কাজ করছে। সফরকালে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য মনিরা সুলতানা মনি, আইসিটি ডিভিশন এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী, এটুআই আই ল্যাবের হেড অব টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি (ডুয়েট)-এর সাবেক ডিন প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিনসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায় ও রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড ২০০০ সালের জুলাইয়ে একটি প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং ২০০০ এর পর থেকে মোটরসাইকেলের আমদানিকারক এবং ব্যবসায়ী হিসেবে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। পরে এটি ২০১২ সালের জানুয়ারিতে পাবলিক লিমিটেড সংস্থা হিসেবে রূপান্তরিত হয় এবং মোটরসাইকেলের উৎপাদন ও বিক্রয় ব্যবসা শুরু করে। এরপর সংস্থাটি ইঞ্জিন একত্রিত করার এবং মোটরসাইকেলের অন্যান্য অংশগুলো তৈরির সুবিধা স্থাপন করে। রানার্স মোটরসাইকেলের পরিসীমা ৮০ সিসি থেকে শুরু করে ১৫০ সিসি পর্যন্ত এবং প্রায় ১২টি মডেল রয়েছে।

রানার অটোমোবাইলস কারখানা। অবস্থিত ময়মনসিংহ, ভালুকা। রাজধানী ঢাকা শহর থেকে প্রায় ৭০ উত্তরে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকাতে রানার অটোমোবাইলের নিজস্ব উৎপাদন কারখানাটি অবস্থিত। বিশাল এই কারখানাটি কোম্পানির নিজস্ব জমিতে প্রিফ্যাব্রিকেটেড ইস্পাত কাঠামোয় নির্মিত। কারখানাটি চারটি সিরিজের বারোটি মডেল উৎপাদন করে। প্রতিদিন মোটরসাইকেল উৎপাদন সক্ষমতা ৫০০টি। রানার একটি প্রস্তুতকারক হিসেবে বিশেষত পণ্য বিকাশ এবং পরীক্ষার ক্ষেত্রগুলোতে তার গবেষণা এবং বিকাশ সুবিধাগুলো বাড়াচ্ছে।

রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২ , ০৪ বৈশাখ ১৪২৮ ১৫ রমাদ্বান ১৪৪৩

বাংলাদেশে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির অগ্রদূত হতে যাচ্ছে রানার

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

টেকসই ও পরিবেশবান্ধব যানবাহনের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেড। এবার প্রতিষ্ঠানটি দেশের বাজারে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি আনতে এটুআইয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে থ্রি হুইলার গাড়ি বাজারে আনতে যাচ্ছে। এরপর এই ইঞ্জিনচালিত গাড়ির বদলে বিদ্যুৎচালিত থ্রি হুইলার বাজারে আনবে। এতে বাংলাদেশকে আর বিদেশ থেকে সিএসজি আমদানি করতে হবে না। পরে ধাপে ধাপে সাশ্রয়ী মূল্যের টেকসই বিদ্যুৎচালিত দুই চাকা ও চার চাকার গাড়ি আসবে।

এ প্রসঙ্গে রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ‘শীঘ্রই আমরা দেশে ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল তৈরি করার সব কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবো। এটি উৎপাদিত হলে প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণ রক্ষায় অবদান রাখতে পারবে। দেশের জন্য এটি হবে একটি মাইলফলক।’

এই যানবাহন উৎপাদিত হলে প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণ রক্ষায় রানার গ্রুপ বড় অবদান রাখতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সম্প্রতি ভালুকায় অবস্থিত বাংলাদেশের প্রথম মোটরসাইকেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেডের টু-হুইলার ও নির্মাণাধীন থ্রি-হুইলার ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট ও ইলেকট্রিক ভেহিক্যালের আরএন্ডডি ফেসিলিটি পরিদর্শনকালে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন গ্রাম হবে শহর। সরকারের পাশাপাশি একই লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে বাংলাদেশের একমাত্র এবং প্রথম সম্পূর্ণ মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেড। বাংলাদেশের সব রাস্তা, হাইওয়ে, জেলা পর্যায়, গ্রাম পর্যায়ের রাস্তার ৭০ শতাংশের বেশি রুরাল ট্রান্সপোর্টেশন। এই ট্রান্সপোর্টেশন এবং রুরাল রোডের ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতির সিংহভাগ নির্ভরশীল। বাংলাদেশের চলমান অর্থনীতির গতিকে উন্নত করার লক্ষ্যে রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেড বিভিন্নভাবে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে এবং একই লক্ষ্যে রুরাল ট্রান্সপোর্টেশনের উন্নয়নে ইলেট্রিক ভেহিক্যাল (ইভি) তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে।’

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০৪১-এর স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে প্রযুক্তি খাত অনেক দূর এগিয়ে গেছে এবং এই যাত্রায় রানার গ্রুপের মতো বেসরকারি খাতগুলোর অবদান অনস্বীকার্য। আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প যেমন-এটুআই, স্টার্ট-আপ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে একত্রিত করে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’

এই প্রক্রিয়ার অধীনে এটুআই আই-ল্যাব এবং রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেড যৌথভাবে কাজ করছে। সফরকালে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য মনিরা সুলতানা মনি, আইসিটি ডিভিশন এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী, এটুআই আই ল্যাবের হেড অব টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি (ডুয়েট)-এর সাবেক ডিন প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিনসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায় ও রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড ২০০০ সালের জুলাইয়ে একটি প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং ২০০০ এর পর থেকে মোটরসাইকেলের আমদানিকারক এবং ব্যবসায়ী হিসেবে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। পরে এটি ২০১২ সালের জানুয়ারিতে পাবলিক লিমিটেড সংস্থা হিসেবে রূপান্তরিত হয় এবং মোটরসাইকেলের উৎপাদন ও বিক্রয় ব্যবসা শুরু করে। এরপর সংস্থাটি ইঞ্জিন একত্রিত করার এবং মোটরসাইকেলের অন্যান্য অংশগুলো তৈরির সুবিধা স্থাপন করে। রানার্স মোটরসাইকেলের পরিসীমা ৮০ সিসি থেকে শুরু করে ১৫০ সিসি পর্যন্ত এবং প্রায় ১২টি মডেল রয়েছে।

রানার অটোমোবাইলস কারখানা। অবস্থিত ময়মনসিংহ, ভালুকা। রাজধানী ঢাকা শহর থেকে প্রায় ৭০ উত্তরে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকাতে রানার অটোমোবাইলের নিজস্ব উৎপাদন কারখানাটি অবস্থিত। বিশাল এই কারখানাটি কোম্পানির নিজস্ব জমিতে প্রিফ্যাব্রিকেটেড ইস্পাত কাঠামোয় নির্মিত। কারখানাটি চারটি সিরিজের বারোটি মডেল উৎপাদন করে। প্রতিদিন মোটরসাইকেল উৎপাদন সক্ষমতা ৫০০টি। রানার একটি প্রস্তুতকারক হিসেবে বিশেষত পণ্য বিকাশ এবং পরীক্ষার ক্ষেত্রগুলোতে তার গবেষণা এবং বিকাশ সুবিধাগুলো বাড়াচ্ছে।