আইডিআরএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কমিটি

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করছে। তদন্তের শুরুর দিকে ড. মোশাররফ হোসেনসহ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে সাক্ষ্য নেয়া হয়। তদন্তে শুরুর দিকে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হলেও পরে আরও একজন অভিজ্ঞ সদস্যকে সংযুক্ত করা হয়েছে। কমিটির প্রধান অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হারুন অর রশিদ মোল্লা ও জয়েন্ট সেক্রেটারি মৃত্যুঞ্জয় সাহা। সংযুক্ত ব্যক্তি বলেন, বিশেষজ্ঞকে সদস্য।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হারুন অর রশিদ মোল্লা সংবাদকে জানান, বিষয়টি এখনো তদন্ত পর্যায়ে আছে।

তদন্তের শুরুতে আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনসহ কয়েকজনের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। পুরো তদন্ত এখন চলমান আছে। আরও অনেক কাজ শেষ করতে হবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, ড. মোশাররফ হোসেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হয়ে তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে নিজেই বিভিন্ন বীমা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন। তার বিনিয়োগের নানা কাহিনী বেরিয়ে আসছে। নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে নিজেকে ডিরেক্টর ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে উল্লেখ করে দুটি কোম্পানি গঠন, ফান্ড গঠন, এমনকি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানও হন তিনি।

তার ৪টি বিও একাউন্ট খুলে শেয়ার মার্কেটে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় আইন ও বিধি বহির্ভূতভাবে বীমা কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করেন। শুধু তাই না, বীমা কোম্পানির আইপওতেও তিনি ওই ফান্ডগুলোর নামে যোগ্য বিনিয়োগকারী বা ইলিজিবল ইনভেস্টর কোটায় অনেক সুবিধা ভোগের উদ্দেশে অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার মার্কেটের একজন বিনিয়োগকারী তার অনিয়মের বিষয়গুলো নিয়ে জনস্বার্থে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেন। রিটকারীর নাম আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদী।

রিট পিটিশনে বলা হয়েছে, বীমা কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ পদে থেকে ওই সেক্টরের তিনি শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করার অভিযোগ করেন। যে অপরাধ তার চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণযোগ্য।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, লাভস অ্যান্ড লাইভস অর্গানিকস লিমিটেড এমপ্লয়িজ কন্টিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিও একাউন্টে ডেল্টা লাইফসহ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা করেন। ২০২০ সাল ৩০ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ও ২০২১ সালের বিভিন্ন সময় একাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেচাকেনা করছেন বলে জানা গেছে। শুধু তাই না

আইডিআরএ চেয়ারম্যান হিসেবে তার কাছে বীমা কোম্পানির শেয়ারগুলোর সম্পর্কে ইনসাইডার ইনফরমেশন থাকায় ক্যাপিটাল মার্কেটের কিছুসংখ্যক ম্যানুপুলেটরের যোগসাজশে শেয়ার মার্কেট থেকে অনৈতিক সুবিধা ভোগ করেছেন।

২০২১ সালে ফেব্রুয়ারি ডেল্টা লাইফে প্রশাসক বসানোর পর জুন-২০২১ এ প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ৯৬ দশমিক ৪০ টাকা। পরবর্তীতে জুলাই মাসে তা সর্বোচ্চ ১৬৪ দশমিক ২০ টাকা দরে লেনদেন হয়। এসব আইডিআরএ চেয়ারম্যান উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ডেল্টার শেয়ার লেনদেন করেন। শুধু তাই না তার গঠিত একাধিক ফান্ডের নামে নিয়মিত শেয়ার লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।

ডেল্টা লাইফের মালিক পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ড. মোশাররফ হোসেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হওয়ার পর দেশের শীর্ষ স্থানীয় বীমা কোম্পানি ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির কাছে ঘুষ দাবি করেছেন। তার ঘুষ কেলেঙ্কারির বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে এখন তদন্ত পর্যায়ে আছে।

ড. মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ না দেয়ায় ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্যদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন অভিযোগ সাজান ড. মোশাররফ নিজেই। ডেল্টা লাইফের গ্রাহক ও শেয়ার হোল্ডারদের নাম ভাঙিয়ে এ অভিযোগ করার ব্যবস্থা করেন।

আবার সেই ভিত্তিহীন অভিযোগের তদন্ত করে পরিচালনা পর্যদ ভেঙে দিয়ে নিজের পছন্দের লোকদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন। অথচ যাদের নাম ব্যবহার করে অভিযোগ দেয়া হয়েছে তারা কেউই এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

সর্বশেষ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ডেল্টা লাইফের ডাটাবেইজ তথ্য মুছে ফেলা বা ডিলেট করার অভিযোগ এনে আইডিআরএ একজন অফিস সহকারী বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ওই মামলায় ডেল্টা লাইফের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা ও আইটি শাখার কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। অথচ ডাটা ডিলেটের মতো কোন ঘটনা ঘটেছে কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে ডেল্টা লাইফের হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা (বাড়ি ফেনী) আইডিআর এ চেয়ারম্যান মোশাররফের আস্থাভাজন হয়ে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন। তারা তাকে ব্যবহার করে প্রশাসনে দাপট খাটানোর চেষ্টা করছেন। মূলত ডেল্টা লাইফের কর্মকর্তারা মোশাররফের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার ঘটনা প্রকাশ করায় তিনি এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগেন।

এ সম্পর্কে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের আইটি শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী এহতেশাম ফয়সাল সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, ডাটা মুছে ফেলা বা ডিলেট করার অভিযোগ সঠিক নয়। অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

প্রতিটি পলিসির ম্যানুয়াল ফাইল প্রতিটি শাখা অফিসে সংরক্ষিত থাকে। পলিসির কোন তথ্য ডাটা বেইস থেকে প্রকৃতপক্ষে মুছে ফেলা হলে তা এতদিনে অবশ্যই শনাক্ত করা সম্ভব হত। এ বিষয় অভ্যন্তরীণ অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি।

ডেল্টা লাইফের আইটি শাখায় তারা পেশাদারিত্বের মনোভাব নিয়ে কাজ করছেন। কম্পিউটার থেকে ডাটা ডিলেটের অভিযোগ সঠিক নয়। এটা ষড়যন্ত্র বা প্রতিহিংসার বশীভূত হয়ে একটি মহল এ চক্রান্ত করছে।

ডাটা ডিলেট সম্পর্কে ডেল্টা লাইফের স্থগিতকৃত পর্ষদ সদস্য জেয়াদ রহমান সংবাদিকদের জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মনজুরুর রহমানকে। অথচ তিনি চার বছর ধরে কোম্পানির পর্ষদে নাই। গত দেড় বছর আগে পর্ষদ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে তাকে। তা হলে আমরা কীভাবে ডাটা ডিলেট করেছি। যে সময়ের কথা বলা হয়েছে তখন কোম্পানি আইডিআরের নিয়োগ করা প্রশাসকের মাধ্যমে চলছিল।

তাছাড়া সিসি টিভির রেকর্ড পরীক্ষা করলে বুঝা যাবে কেউ ডাটা ডিলেট করেনি।

ড. মোশাররফের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া দুদকও এ বিষয় তদন্ত করছেন।

আর বীমা কোম্পানিতে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের আইন বহির্ভূত অবৈধ বিনিয়োগের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তদন্ত কমিটি তদন্ত করছেন। এসব কারণে ড. মোশাররফ তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিহিংসা থেকে বানোয়াট অভিযোগের ভিত্তিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২ , ০৪ বৈশাখ ১৪২৮ ১৫ রমাদ্বান ১৪৪৩

আইডিআরএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কমিটি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করছে। তদন্তের শুরুর দিকে ড. মোশাররফ হোসেনসহ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে সাক্ষ্য নেয়া হয়। তদন্তে শুরুর দিকে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হলেও পরে আরও একজন অভিজ্ঞ সদস্যকে সংযুক্ত করা হয়েছে। কমিটির প্রধান অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হারুন অর রশিদ মোল্লা ও জয়েন্ট সেক্রেটারি মৃত্যুঞ্জয় সাহা। সংযুক্ত ব্যক্তি বলেন, বিশেষজ্ঞকে সদস্য।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হারুন অর রশিদ মোল্লা সংবাদকে জানান, বিষয়টি এখনো তদন্ত পর্যায়ে আছে।

তদন্তের শুরুতে আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনসহ কয়েকজনের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। পুরো তদন্ত এখন চলমান আছে। আরও অনেক কাজ শেষ করতে হবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, ড. মোশাররফ হোসেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হয়ে তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে নিজেই বিভিন্ন বীমা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন। তার বিনিয়োগের নানা কাহিনী বেরিয়ে আসছে। নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে নিজেকে ডিরেক্টর ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে উল্লেখ করে দুটি কোম্পানি গঠন, ফান্ড গঠন, এমনকি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানও হন তিনি।

তার ৪টি বিও একাউন্ট খুলে শেয়ার মার্কেটে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় আইন ও বিধি বহির্ভূতভাবে বীমা কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করেন। শুধু তাই না, বীমা কোম্পানির আইপওতেও তিনি ওই ফান্ডগুলোর নামে যোগ্য বিনিয়োগকারী বা ইলিজিবল ইনভেস্টর কোটায় অনেক সুবিধা ভোগের উদ্দেশে অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার মার্কেটের একজন বিনিয়োগকারী তার অনিয়মের বিষয়গুলো নিয়ে জনস্বার্থে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেন। রিটকারীর নাম আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদী।

রিট পিটিশনে বলা হয়েছে, বীমা কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ পদে থেকে ওই সেক্টরের তিনি শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করার অভিযোগ করেন। যে অপরাধ তার চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণযোগ্য।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, লাভস অ্যান্ড লাইভস অর্গানিকস লিমিটেড এমপ্লয়িজ কন্টিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিও একাউন্টে ডেল্টা লাইফসহ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা করেন। ২০২০ সাল ৩০ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ও ২০২১ সালের বিভিন্ন সময় একাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেচাকেনা করছেন বলে জানা গেছে। শুধু তাই না

আইডিআরএ চেয়ারম্যান হিসেবে তার কাছে বীমা কোম্পানির শেয়ারগুলোর সম্পর্কে ইনসাইডার ইনফরমেশন থাকায় ক্যাপিটাল মার্কেটের কিছুসংখ্যক ম্যানুপুলেটরের যোগসাজশে শেয়ার মার্কেট থেকে অনৈতিক সুবিধা ভোগ করেছেন।

২০২১ সালে ফেব্রুয়ারি ডেল্টা লাইফে প্রশাসক বসানোর পর জুন-২০২১ এ প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ৯৬ দশমিক ৪০ টাকা। পরবর্তীতে জুলাই মাসে তা সর্বোচ্চ ১৬৪ দশমিক ২০ টাকা দরে লেনদেন হয়। এসব আইডিআরএ চেয়ারম্যান উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ডেল্টার শেয়ার লেনদেন করেন। শুধু তাই না তার গঠিত একাধিক ফান্ডের নামে নিয়মিত শেয়ার লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।

ডেল্টা লাইফের মালিক পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ড. মোশাররফ হোসেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হওয়ার পর দেশের শীর্ষ স্থানীয় বীমা কোম্পানি ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির কাছে ঘুষ দাবি করেছেন। তার ঘুষ কেলেঙ্কারির বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে এখন তদন্ত পর্যায়ে আছে।

ড. মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ না দেয়ায় ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্যদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন অভিযোগ সাজান ড. মোশাররফ নিজেই। ডেল্টা লাইফের গ্রাহক ও শেয়ার হোল্ডারদের নাম ভাঙিয়ে এ অভিযোগ করার ব্যবস্থা করেন।

আবার সেই ভিত্তিহীন অভিযোগের তদন্ত করে পরিচালনা পর্যদ ভেঙে দিয়ে নিজের পছন্দের লোকদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন। অথচ যাদের নাম ব্যবহার করে অভিযোগ দেয়া হয়েছে তারা কেউই এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

সর্বশেষ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ডেল্টা লাইফের ডাটাবেইজ তথ্য মুছে ফেলা বা ডিলেট করার অভিযোগ এনে আইডিআরএ একজন অফিস সহকারী বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ওই মামলায় ডেল্টা লাইফের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা ও আইটি শাখার কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। অথচ ডাটা ডিলেটের মতো কোন ঘটনা ঘটেছে কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে ডেল্টা লাইফের হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা (বাড়ি ফেনী) আইডিআর এ চেয়ারম্যান মোশাররফের আস্থাভাজন হয়ে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন। তারা তাকে ব্যবহার করে প্রশাসনে দাপট খাটানোর চেষ্টা করছেন। মূলত ডেল্টা লাইফের কর্মকর্তারা মোশাররফের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার ঘটনা প্রকাশ করায় তিনি এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগেন।

এ সম্পর্কে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের আইটি শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী এহতেশাম ফয়সাল সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, ডাটা মুছে ফেলা বা ডিলেট করার অভিযোগ সঠিক নয়। অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

প্রতিটি পলিসির ম্যানুয়াল ফাইল প্রতিটি শাখা অফিসে সংরক্ষিত থাকে। পলিসির কোন তথ্য ডাটা বেইস থেকে প্রকৃতপক্ষে মুছে ফেলা হলে তা এতদিনে অবশ্যই শনাক্ত করা সম্ভব হত। এ বিষয় অভ্যন্তরীণ অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি।

ডেল্টা লাইফের আইটি শাখায় তারা পেশাদারিত্বের মনোভাব নিয়ে কাজ করছেন। কম্পিউটার থেকে ডাটা ডিলেটের অভিযোগ সঠিক নয়। এটা ষড়যন্ত্র বা প্রতিহিংসার বশীভূত হয়ে একটি মহল এ চক্রান্ত করছে।

ডাটা ডিলেট সম্পর্কে ডেল্টা লাইফের স্থগিতকৃত পর্ষদ সদস্য জেয়াদ রহমান সংবাদিকদের জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মনজুরুর রহমানকে। অথচ তিনি চার বছর ধরে কোম্পানির পর্ষদে নাই। গত দেড় বছর আগে পর্ষদ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে তাকে। তা হলে আমরা কীভাবে ডাটা ডিলেট করেছি। যে সময়ের কথা বলা হয়েছে তখন কোম্পানি আইডিআরের নিয়োগ করা প্রশাসকের মাধ্যমে চলছিল।

তাছাড়া সিসি টিভির রেকর্ড পরীক্ষা করলে বুঝা যাবে কেউ ডাটা ডিলেট করেনি।

ড. মোশাররফের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া দুদকও এ বিষয় তদন্ত করছেন।

আর বীমা কোম্পানিতে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের আইন বহির্ভূত অবৈধ বিনিয়োগের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তদন্ত কমিটি তদন্ত করছেন। এসব কারণে ড. মোশাররফ তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিহিংসা থেকে বানোয়াট অভিযোগের ভিত্তিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন।