ঈদযাত্রায় ভোগান্তি বাড়বে ২২ জেলার ঘরমুখী মানুষের

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিরাজগঞ্জের নলকা থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত মহাসড়কের চারলেনের কাজ ঈদের আগে শেষ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এই পথে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের ২২ জেলার যাত্রীদের এবারও ঈদ যাত্ররায় ভোগান্তি আরও বাড়বে। ইতোমধ্যে এই সড়ক পথে যানবাহনের চাপ প্রতিদিন বাড়তে থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ১১ কিলোমিটার দূরত্ব পার হতে এখন প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগছে। ঈদের আগে যানজট আরো বাড়বে । এতে করে যাতায়াতে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে ।

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ঈদে এসব জেলার ঘরমুখো মানুষকে বাড়ি ফিরতে হবে এ মহাসড়ক দিয়েই। দীর্ঘ দিন থেকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক প্রশস্ত করার কাজ চলছে। যার কারণে মহাসড়কের অনেক জাগায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে আবার কোথাও রাস্তা ঘুরিয়ে বিপরীত দিক দিয়ে রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে খানাখন্দে ভরপুর থাকায় যানবাহন চলাচলে চরম বিঘœ ঘটছে। ফলে প্রায়ই বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পার মহাসড়ক থেকে শুরু করে সিরাজগঞ্জ অংশের হাটিকুমরুল গোল চত্বর হয়ে চান্দাইকোনা পর্যন্ত যানবাহনে ধীরগতি আবার কখনও এই অংশের ১৫-২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এমনিতেই প্রতিবছর এই মহাসড়কের যাত্রীরা যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তির শিকার হন। তার সাথে এ বছর যুক্ত হয়েছে সড়ক উন্নয়নের কাজ, যা ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়তি ভোগান্তির কারণ হবে বলে মনে করছেন যাত্রী ও চালকরা।

মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পার, সয়দাবাদ, কড্ডার মোড় থেকে হাটিকুমরুল গোল চত্বর পর্যন্ত প্রায় ৩২ কিলোমিটার এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কে যথারীতি কাজ চলছে। এর ফলে যানবাহনের গতিরোধ হচ্ছে। এর সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে সড়কের নলকা সেতুর নির্মাণের কাজ। তাতে আরও স্বাভাবিক গতিরোধ হয়ে সড়কের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনের জটলা সৃষ্টি হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ সড়কে উন্নয়ন কাজের জন্য গাড়ি থেমে থেমে চলছে। ঈদের আগেই রাস্তায় যে ভোগান্তি ঈদের সময় কী হবে তা নিয়ে চিন্তিত তারা ।

বাস চালক হাফিজুর রহমান বাবু বলেন, বর্তমান মহাসড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। যদি নতুন নলকা সেতু খুলে না দেওয়া হয় এবং মহাসড়কের কাজ শেষ না হয় তাহলে এই আসন্ন রোজার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।

ট্রাক চালক সালাম বলেন, নলকা সেতু নিয়ে আমরা অনেক চিন্তিত । মহাসড়কটিতে দীর্ঘ সময় ধরে উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় মাঝে মাঝেই যানজটের সৃষ্টি হয়। সামনে আসন্ন ঈদে নতুন নলকা সেতু এবং মহাসড়কের কাজ শেষ না হলে জনজটের সৃষ্টি হতে পারে ।

সিরাজগঞ্জের সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম জানান, মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। তবে নলকা থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত সড়কের চার লেনের কাজ ঈদের আগে শেষে হবে না। সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় চলছে ঈদের ঘরমুখ মানুষের যাতায়াত যাতে বাঁধাগ্রস্ত এবং দুভোর্গ পোহাতে না হয় তার জন্য সড়কের খারাপ অংশ স্থানীয়ভাবে সংস্কার করা হচ্ছে। খুব দ্রুতই সংস্কার কাজ শেষ হবে। এতে করে ঘরমুখ মানুষের ভোগান্তিও কমবে। তিনি বলেন নলকা সেতু নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। কিছু আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। কয়েকদিনের মধ্যে নলকার সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে । এতে করে যাত্রীদের ভোগান্তিও অনেকাংশেই কমে যাবে।

মহাসড়কের কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার জয়েন্ট ভেঞ্চারের জেনারেল ম্যানেজার আখলাস উদ্দিন বলেন, কাজের গতি ঠিকই আছে। এসব কাজ দৃশ্যমান হতে সময় লাগে। তাছাড়া ঈদে ঘরমুখো মানুষের স্বাভাবিক গতি নিশ্চিত করার ব্যবস্থারও আশ্বাস দিলেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতায়তকে নির্ভিঘœ করতে জেলা ট্রাফিক পুলিশ তৎপর রয়েছে। যাত্রীরা যেন যানজটমুক্ত ভাবে গন্তব্যে পৌঁছতে পারে সেদিকে আমাদের নজর থাকবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।

এদিকে ঈদে ঘরমুখো ও ঈদ পরবর্তী কর্মমুখো মানুষদের নির্ভিঘেœ চলাচলের জন্য জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বিপিএম বলেন, মহাসড়কের কাজ কচ্ছপের গতিতে চলছে।

রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২ , ০৪ বৈশাখ ১৪২৮ ১৫ রমাদ্বান ১৪৪৩

ঈদযাত্রায় ভোগান্তি বাড়বে ২২ জেলার ঘরমুখী মানুষের

জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ

image

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিরাজগঞ্জের নলকা থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত মহাসড়কের চারলেনের কাজ ঈদের আগে শেষ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এই পথে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের ২২ জেলার যাত্রীদের এবারও ঈদ যাত্ররায় ভোগান্তি আরও বাড়বে। ইতোমধ্যে এই সড়ক পথে যানবাহনের চাপ প্রতিদিন বাড়তে থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ১১ কিলোমিটার দূরত্ব পার হতে এখন প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগছে। ঈদের আগে যানজট আরো বাড়বে । এতে করে যাতায়াতে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে ।

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ঈদে এসব জেলার ঘরমুখো মানুষকে বাড়ি ফিরতে হবে এ মহাসড়ক দিয়েই। দীর্ঘ দিন থেকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক প্রশস্ত করার কাজ চলছে। যার কারণে মহাসড়কের অনেক জাগায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে আবার কোথাও রাস্তা ঘুরিয়ে বিপরীত দিক দিয়ে রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে খানাখন্দে ভরপুর থাকায় যানবাহন চলাচলে চরম বিঘœ ঘটছে। ফলে প্রায়ই বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পার মহাসড়ক থেকে শুরু করে সিরাজগঞ্জ অংশের হাটিকুমরুল গোল চত্বর হয়ে চান্দাইকোনা পর্যন্ত যানবাহনে ধীরগতি আবার কখনও এই অংশের ১৫-২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এমনিতেই প্রতিবছর এই মহাসড়কের যাত্রীরা যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তির শিকার হন। তার সাথে এ বছর যুক্ত হয়েছে সড়ক উন্নয়নের কাজ, যা ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়তি ভোগান্তির কারণ হবে বলে মনে করছেন যাত্রী ও চালকরা।

মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পার, সয়দাবাদ, কড্ডার মোড় থেকে হাটিকুমরুল গোল চত্বর পর্যন্ত প্রায় ৩২ কিলোমিটার এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কে যথারীতি কাজ চলছে। এর ফলে যানবাহনের গতিরোধ হচ্ছে। এর সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে সড়কের নলকা সেতুর নির্মাণের কাজ। তাতে আরও স্বাভাবিক গতিরোধ হয়ে সড়কের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনের জটলা সৃষ্টি হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ সড়কে উন্নয়ন কাজের জন্য গাড়ি থেমে থেমে চলছে। ঈদের আগেই রাস্তায় যে ভোগান্তি ঈদের সময় কী হবে তা নিয়ে চিন্তিত তারা ।

বাস চালক হাফিজুর রহমান বাবু বলেন, বর্তমান মহাসড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। যদি নতুন নলকা সেতু খুলে না দেওয়া হয় এবং মহাসড়কের কাজ শেষ না হয় তাহলে এই আসন্ন রোজার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।

ট্রাক চালক সালাম বলেন, নলকা সেতু নিয়ে আমরা অনেক চিন্তিত । মহাসড়কটিতে দীর্ঘ সময় ধরে উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় মাঝে মাঝেই যানজটের সৃষ্টি হয়। সামনে আসন্ন ঈদে নতুন নলকা সেতু এবং মহাসড়কের কাজ শেষ না হলে জনজটের সৃষ্টি হতে পারে ।

সিরাজগঞ্জের সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম জানান, মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। তবে নলকা থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত সড়কের চার লেনের কাজ ঈদের আগে শেষে হবে না। সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় চলছে ঈদের ঘরমুখ মানুষের যাতায়াত যাতে বাঁধাগ্রস্ত এবং দুভোর্গ পোহাতে না হয় তার জন্য সড়কের খারাপ অংশ স্থানীয়ভাবে সংস্কার করা হচ্ছে। খুব দ্রুতই সংস্কার কাজ শেষ হবে। এতে করে ঘরমুখ মানুষের ভোগান্তিও কমবে। তিনি বলেন নলকা সেতু নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। কিছু আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। কয়েকদিনের মধ্যে নলকার সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে । এতে করে যাত্রীদের ভোগান্তিও অনেকাংশেই কমে যাবে।

মহাসড়কের কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার জয়েন্ট ভেঞ্চারের জেনারেল ম্যানেজার আখলাস উদ্দিন বলেন, কাজের গতি ঠিকই আছে। এসব কাজ দৃশ্যমান হতে সময় লাগে। তাছাড়া ঈদে ঘরমুখো মানুষের স্বাভাবিক গতি নিশ্চিত করার ব্যবস্থারও আশ্বাস দিলেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতায়তকে নির্ভিঘœ করতে জেলা ট্রাফিক পুলিশ তৎপর রয়েছে। যাত্রীরা যেন যানজটমুক্ত ভাবে গন্তব্যে পৌঁছতে পারে সেদিকে আমাদের নজর থাকবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।

এদিকে ঈদে ঘরমুখো ও ঈদ পরবর্তী কর্মমুখো মানুষদের নির্ভিঘেœ চলাচলের জন্য জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বিপিএম বলেন, মহাসড়কের কাজ কচ্ছপের গতিতে চলছে।