অভিযুক্তরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

কক্সবাজার শহরে সদর থানা থেকে প্রায় ৫০০ মিটার উত্তরে বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকা। নদীর অপর পাশে খুরুশকুল। মাঝখানে বাঁকখালী নদীর ওপর তৈরি হচ্ছে ৫৯৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু। সেতু নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই শুরু হয়েছে নদী ও তীরের প্যারাবন দখল। প্রথমে প্যারাবন নিধন করে পরে বালু ফেলে নদী ভরাট করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে সংযোগ সড়কের পাশে প্রায় ৬’শ হেক্টর এলাকার প্যারাবন উজাড় করে তৈরি করা হচ্ছে শতাধিক ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা বলেন, বাঁকখালী নদীর প্যারাবন দখল ও ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবুও প্যারাবন দখল ও দূষণ বন্ধ করা যাচ্ছে না। নিয়মিত অভিযান চালানোর মতো পর্যাপ্ত লোকবলও নেই আমাদের।

গতকাল সকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিন আল পারভেজ এর নেতৃত্বে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একটি দল সরেজমিন পরিদর্শনে নদী দখল করে ভরাট ও প্যারাবনের গাছ নিধনের সত্যতা পান। এ সময় উপস্থিত লোকজন ও দখলদারের পাহারাদারদের সঙ্গে কথা বলে পরিবেশ বিধ্বংসী এসব কাজে জড়িতদের পরিচয় সর্ম্পকে অবগত হন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিন আল পারভেজ বলেন, নদী দখল ও প্যারাবন নিধনের অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সরেজমিন পরিদর্শন করতে এসেছি। পরিদর্শন করে নদী দখল করে ভরাট ও প্যারাবনের গাছ নিধন অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছি।

এছাড়া নদী দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হাইকোর্টের নিদের্শনাও রয়েছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী দখলকারী ও প্যারাবনের গাছ নিধন করে স্থাপনা নির্মাণকারী এবং প্লট বাণিজ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকায় গত দুই মাসে প্রায় ৬শ’ হেক্টর এলাকায় নদী দখল ও ভরাট করে ৪০ হাজার কেওড়া ও বাইনগাছ কেটে শতাধিক টিনের ঘর ও পাকা ভবন তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে। গাছপালা উজাড় হওয়ায় দুই শতাধিক প্রজাতির পাখির আবাসস্থল ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া নদীর অন্যান্য এলাকায়ও দখলও ভরাটের কারণে নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২ , ০৪ বৈশাখ ১৪২৮ ১৫ রমাদ্বান ১৪৪৩

বাঁকখালী দখল-প্যারাবন উজাড় করে ঘরবাড়ি

অভিযুক্তরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

প্রতিনিধি, কক্সবাজার

কক্সবাজার শহরে সদর থানা থেকে প্রায় ৫০০ মিটার উত্তরে বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকা। নদীর অপর পাশে খুরুশকুল। মাঝখানে বাঁকখালী নদীর ওপর তৈরি হচ্ছে ৫৯৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু। সেতু নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই শুরু হয়েছে নদী ও তীরের প্যারাবন দখল। প্রথমে প্যারাবন নিধন করে পরে বালু ফেলে নদী ভরাট করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে সংযোগ সড়কের পাশে প্রায় ৬’শ হেক্টর এলাকার প্যারাবন উজাড় করে তৈরি করা হচ্ছে শতাধিক ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা বলেন, বাঁকখালী নদীর প্যারাবন দখল ও ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবুও প্যারাবন দখল ও দূষণ বন্ধ করা যাচ্ছে না। নিয়মিত অভিযান চালানোর মতো পর্যাপ্ত লোকবলও নেই আমাদের।

গতকাল সকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিন আল পারভেজ এর নেতৃত্বে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একটি দল সরেজমিন পরিদর্শনে নদী দখল করে ভরাট ও প্যারাবনের গাছ নিধনের সত্যতা পান। এ সময় উপস্থিত লোকজন ও দখলদারের পাহারাদারদের সঙ্গে কথা বলে পরিবেশ বিধ্বংসী এসব কাজে জড়িতদের পরিচয় সর্ম্পকে অবগত হন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিন আল পারভেজ বলেন, নদী দখল ও প্যারাবন নিধনের অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সরেজমিন পরিদর্শন করতে এসেছি। পরিদর্শন করে নদী দখল করে ভরাট ও প্যারাবনের গাছ নিধন অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছি।

এছাড়া নদী দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হাইকোর্টের নিদের্শনাও রয়েছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী দখলকারী ও প্যারাবনের গাছ নিধন করে স্থাপনা নির্মাণকারী এবং প্লট বাণিজ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকায় গত দুই মাসে প্রায় ৬শ’ হেক্টর এলাকায় নদী দখল ও ভরাট করে ৪০ হাজার কেওড়া ও বাইনগাছ কেটে শতাধিক টিনের ঘর ও পাকা ভবন তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে। গাছপালা উজাড় হওয়ায় দুই শতাধিক প্রজাতির পাখির আবাসস্থল ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া নদীর অন্যান্য এলাকায়ও দখলও ভরাটের কারণে নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে।