লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর তালিকায় বিএনপির পদধারী ২৭ নেতাকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী এই তালিকা করেন।
এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ওই ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. আবদুর রব দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ করেন। এর আগে এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। তাদের দেয়া প্রতিবেদনে তালিকায় অসঙ্গতি ও অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়। ১ মার্চ তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একটি ওয়ার্ডে সম্মেলন ও দুটি ওয়ার্ডে সভা করে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। ইউনিয়নের অন্য ছয় ওয়ার্ডে কোন কমিটি করা হয়নি কিন্তু ওই ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনগড়া ৯টি ওয়ার্ডের কমিটি করে উপজেলায় জমা দিয়েছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, ওই ইউনিয়নে সম্মেলনের জন্য ২৫১ জনকে কাউন্সিলর করা হয়। এর মধ্যে ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মজিবুর রহমানকে একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দেখিয়ে কাউন্সিলর করা হয়। ১ নম্বর ওয়ার্ডে আনোয়ার হোসেন, আবদুল কুদ্দুস, আবদুল হাসিমকে কাউন্সিলর করা হয়েছে। তাঁরা সবাই ওই ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য। ২ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির সহসভাপতি জয়নাল আবেদিন ও আবুল কাশেমকে কাউন্সিলর করা হয়। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মো. সেলিমকে কাউন্সিলর করা হয়েছে। তিনি ওই ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য। ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজকেও কাউন্সিলর করা হয়। এছাড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুর রব, আবুল কাশেম, মো. দিদার, বেলাল উদ্দিন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মো. জামাল, আবদুজ জাহের, মো. মোস্তফা, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মো. কামাল, মো. সিরাজ, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মহিউদ্দিন হেজু, জাহের উদ্দিন, মো. নিজাম (আবদুল মুন্সি), সাইফ উদ্দিন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে শেখ ফরিদ ও মো. লিটনকে কাউন্সিলর করা হয়। তারা প্রত্যেকেই ওয়ার্ড বিএনপির দায়িত্বশীল নেতা। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নতুন কাউন্সিলর হওয়া আট নেতা তাদের মধ্যে তিন নেতা বলেন, আগে বিএনপি করলেও এখন তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বাকি পাঁচজন বলেন, তাদের নাম কে রেখেছেন বা কেন রাখা হয়েছে, তা তারা জানেন না। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের নেতা কর্মীদের কাউন্সিলর না করে পদধারী বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাউন্সিলর করায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. আবদুর রব।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, কাউন্সিলর তালিকায় অনিয়মের অভিযোগটি পেয়েছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেয়েছি। দলের পরবর্তী সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক বলেন, বিষয়টি তারাও জেনেছেন। ওই ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. আবদুর রব কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২ , ০৫ বৈশাখ ১৪২৮ ১৬ রমাদ্বান ১৪৪৩
জেলা বার্তা পরিবেশক, লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর তালিকায় বিএনপির পদধারী ২৭ নেতাকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী এই তালিকা করেন।
এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ওই ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. আবদুর রব দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ করেন। এর আগে এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। তাদের দেয়া প্রতিবেদনে তালিকায় অসঙ্গতি ও অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়। ১ মার্চ তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একটি ওয়ার্ডে সম্মেলন ও দুটি ওয়ার্ডে সভা করে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। ইউনিয়নের অন্য ছয় ওয়ার্ডে কোন কমিটি করা হয়নি কিন্তু ওই ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনগড়া ৯টি ওয়ার্ডের কমিটি করে উপজেলায় জমা দিয়েছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, ওই ইউনিয়নে সম্মেলনের জন্য ২৫১ জনকে কাউন্সিলর করা হয়। এর মধ্যে ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মজিবুর রহমানকে একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দেখিয়ে কাউন্সিলর করা হয়। ১ নম্বর ওয়ার্ডে আনোয়ার হোসেন, আবদুল কুদ্দুস, আবদুল হাসিমকে কাউন্সিলর করা হয়েছে। তাঁরা সবাই ওই ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য। ২ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির সহসভাপতি জয়নাল আবেদিন ও আবুল কাশেমকে কাউন্সিলর করা হয়। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মো. সেলিমকে কাউন্সিলর করা হয়েছে। তিনি ওই ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য। ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজকেও কাউন্সিলর করা হয়। এছাড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুর রব, আবুল কাশেম, মো. দিদার, বেলাল উদ্দিন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মো. জামাল, আবদুজ জাহের, মো. মোস্তফা, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মো. কামাল, মো. সিরাজ, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মহিউদ্দিন হেজু, জাহের উদ্দিন, মো. নিজাম (আবদুল মুন্সি), সাইফ উদ্দিন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে শেখ ফরিদ ও মো. লিটনকে কাউন্সিলর করা হয়। তারা প্রত্যেকেই ওয়ার্ড বিএনপির দায়িত্বশীল নেতা। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নতুন কাউন্সিলর হওয়া আট নেতা তাদের মধ্যে তিন নেতা বলেন, আগে বিএনপি করলেও এখন তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বাকি পাঁচজন বলেন, তাদের নাম কে রেখেছেন বা কেন রাখা হয়েছে, তা তারা জানেন না। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের নেতা কর্মীদের কাউন্সিলর না করে পদধারী বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাউন্সিলর করায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. আবদুর রব।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, কাউন্সিলর তালিকায় অনিয়মের অভিযোগটি পেয়েছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেয়েছি। দলের পরবর্তী সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক বলেন, বিষয়টি তারাও জেনেছেন। ওই ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. আবদুর রব কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।